অবেলায় ভালোবাসা পর্ব-১৯
লেখা –সুলতানা ইতি
মিথ্যা কথা বলবেন না আপনি ইচ্ছে করে এমন করেছেন
চুহেস- তুমি ভুল বুঝতেছো আমাকে গাইথি
গাইথি- ভুল বুঝিনি আমি,আসল কথা হলো আপনি আমায় ভালো ই বাসেন না
চুহেস আর কোন কথা বল্লো না
একটা নিরিবিলি জায়গা দেখে গাড়ি থামিয়ে চুহেস বল্লো
– নেমে এসো গাইথি
গাইথি- আমি নামবো না, আমি বাসায় যাবো
চুহেস গাড়ির দরজা খুলে হাত ধরে টেনে নামালো গাইথি কে, তার পর সবুজ ঘাসের উপর বসে পড়লো
গাইথিকে ও টেনে বসালো
তার পর গাইথির একটা হাত ধরে বল্লো
– কবিতা শুনবে
গাইথি মুখ অন্যদিকে ফিরিয়ে বল্লো
– না শুনবো না
চুহেস- রাগ করে আছো
গাইথি- না রাগ করিনি
চুহেস- অভিমান করেছো
গাইথি- যখন রাগ করিনি,তখন অভিমান করতে যাবো কেনো
চুহেস গাইথির হাত ধরে বল্লো
– দেখো আমি তোমার সাথে কফিশপে যেতেই পারতাম, কিন্তু কোন লাভ হতো না, সাইমুম আনইজি ফিল করতো,যার ফলে সে তার কথা গুলো তোমায় বলতে পারতো না
আর তুমি ও ঠিক ভাবে তার কথার জবাব দিতে পারতে না,
যার অর্থ হলো, সাইমুম এটা বুঝতো না যে তুমি তাকে কেনো বিয়ে করতে চাও না
গাইথি চুহেসের দিকে মুখ ফিরিয়ে বল্লো
– সত্যি আমি এতো টা ভেবে দেখিনি
তা ছাড়া এখন সাইমুম জানে ওকে আমার পছন্দ নয়,তখন বুঝতো আমি আপনার কারনে, তাকে রিজেক্ট করেছি,ফলে তোমার প্রতি একটা ক্ষভ সৃষ্টি হতো
চুহেস- এই তো লক্ষিটি সব বুঝেছে,ওতো রেগে না গিয়ে ঠান্ডা মাথায় ভাবলে আর ও আগে পুরো ব্যাপার টা ক্লিয়ার হয়ে যেত
গাইথি কথা ঘুরিয়ে বল্লো
– আপনার সাথে বের হলে আপনি কখনো আমাকে কোন পার্কে ঘুরতে নিয়ে যান না,শুধু নিরিবিলি প্রাকৃতিক সুন্দর্য ভরা,এমন জায়গা বেছে নেন কেনো
চুহেস- এমন জায়গা ই কথা বলার জন্য উপযুক্ত, আর পার্ক আমার কাছে ভালো লাগে না
গাইথি- ভালো লাগে না কেনো
চুহেস- অনেক কারন আছে, এখন ওসব বলতে ভালো লাগছে না,,,জানো আমি তোমাকে নিয়ে দু লাইনের একটা কবিতা লিখেছি
গাইথি হেসে ফেল্লো
– দুই লাইনের কবিতা হয় নাকি,বিশেষ উক্তি গুলো হয় দুই লাইনের
চুহেস- আহ শুনো ই না আগে,শুনার পর যদি বিশেষ উক্তি মনে হয় তা হলে সেটা বিশেষ উক্তি
গাইথি -ঠিক আছে বলো
চুহেস-
‘তোমার রুপে মুগ্ধতায়
আমি যে হয়েছি সারা
কাজল কালো আখি তোমার
করেছে আমায় পাগল পারা
এলোকেশী তুমি
করেছো আমায় পাগল ‘
গাইথি- তার পর
চুহেস- এই টুকুই আর নাই
গাইথি- হুম, একেবারে ভালো হয়………….নি
চুহেস- হা কি বললে তুমি
গাইথি- ঠিক ই বলেছি
চুহেস আচ্ছা দেখাচ্ছি মজা এই বলে গাইথির মাথার চুল এলোমেলো করে দিলো
গাইথি- এটা কি হলো
চুহেস- এলোকেশী হলো,হা হা হা
গাইথি- হি হি হি, চলো অনেক হয়েছে এবার বাসায় যাই
চুহেস চলো
চুহেস গাইথি কে নামিয়ে দিয়ে গেলো
গাইথি বাসায় যেয়ে তো আনন্দের চিৎকার করে উঠলো
– আরেহ নিধি তুই,এখানে
নিধিপা-তোকে সার্প্রাইজ দিতে এলাম
গাইথি সত্যি- আমি সার্প্রাইজড,তবে তুই না এলে আমি তোকে ফোন করে নিয়ে আসতাম
নিধিপা- তাই,আমার কথা তোর মনে হতো
গাইথি- মনে না হওয়ার কি আছে
নিধিপা- নাহ মনে এখন তো অন্য কেউ গুর গুর করে তাই বললাম আর কি
গাইথি- চুপ কর ফাজিল একটা
নিধিপা- এংগেজমেন্টের শপিং করে ফেলেছিস নাকি
গাইথি- নাহ করিনি
নিধি- কখন করবি,সময় তো বেশি নেই
গাইথি- আচ্ছা দেখি উনাকে বলি
নিধিপা- উনি কে
গাইথি- ইসস এমন ভাব করছিস মনে হয় তুই কিচ্ছু জানিস না
এখন চলতো আমার সাথে
নিধি- কোথায়
গাইথি- আমার রুমে, অনেক কথা আছে তোর সাথে, সব বলবো
চুহেস বাসায় যেয়ে ফ্রেশ হয়ে রেষ্ট নিচ্ছিলো এমন সময় মোবাইল টা সংকেত দিয়ে উঠলো, হুম গাইথি কল করেছে
হ্যালো মাই ডিয়ার জানু
গাইথি- ডার্লিং আমরা কি শপিং করবো না
চুহেস- ইয়েস মাই ডিয়ার, কখন করতে চাও
গাইথি – আজ ই
চুহেস- তা হলে লিস্ট করতে হয়
গাইথি- হুম আমি আসছি,আচ্ছা নিহার কি বাসায়
চুহেস- না তো,সে অফিসে
গাইথি- ওকে, তা হলে চলে আসতে বলুন আমাদের সাথে সে ও যাবে
চুহেস- ওকে মাই ডিয়ার তুমি এসো
চুহেস মোবাইলের কল অফ করে দিয়ে নিহার কে কল দিয়ে আসতে বলে,নিহার শপিং এর কথা শুনে চলে আসে
চুহেস আর নিহার বসে বসে গল্প করছিলো,কলিংবেল বেজে উঠলো এমন সময়
চুহেস উঠতে যাচ্ছিলো নিহার চুহেস কে থামিয়ে দিয়ে বল্লো স্যার আমি যাচ্ছি
চুহেস- আবার স্যার? তুমি তো দেখছি আমার বাড়ি টা কে অফিস বানিয়ে ছাড়বে নিহার
নিহার- অনেক দিনের অভ্যাস তো চেঞ্জ হতে সময় লাগবে,
নিহার যাচ্ছিলো দরজার দিকে আর ভাবছে, পরিস্থিতি মানুষকে কতো টা বদলে দেয়,তা স্যার কে না দেখলে বুঝা ই যেতো না
এক সময় অফিস বাড়ি এই দুয়ের মধ্যে স্যারের কাছে সবটা ই সমান ছিলো,
ভাবতে,ভাবতেই দরজা খুলে দিলো, নিহার
দরজা খুলেই সামনে নিধিপা কে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে উঠে
নিহার- তু তুমি
নিহারের নার্ভাসনেস দেখে গাইথি আর নিধিপা দুজনের শব্দ করে হেসে উঠলো
নিধিপা- ভয় পেয়েছো নাকি নিহার
নিহার দরজার পাশ থেকে সরে দাড়াতে দাড়াতে বল্লো ভয় পায় নি আকস্মিক দেখতে পেয়ে এমন হয়েছে,,তুমি যে এখানে আসবে সেটা বলো নি কেনো
নিধিপা- বলে আসলে কি আর এই মজার দৃশ্য টা দেখতে পেতাম
গাইথি আর নিধিপা এসে বসলো ড্রইং রুমে
চুহেস গাইথির দিকে তাকিয়ে বল্লো
– তো এই জন্য বুঝি নিহার কে অফিস থেকে এতো তাড়া দিয়ে আনালে
গাইথি- হুম ঠিক ধরেছেন,কিন্তু শপিং এ যাওয়ার ব্যাপার টা ও সত্ত, চলুন যাওয়া যাক
চুহেস- হুম, চলো
সবাই মিলে শপিং এ গেলো,গাইথির ড্রেস চুহেস পছন্দ করে দিয়েছে, চুহেসের ড্রেস গাইথি পছন্দ করেছে
পাক্কা চার ঘন্টা লাগিয়ে শপিং করলো গাইথি,চুহেস তো ক্লান্ত গাইথির পিছু পিছু হাটতে হাটতে
শপি শেষে সবাই বেরিয়ে এলো
চুহেস – শপিং করতে এতো টাইম লাগে তোমার
গাইথি- এতো টাইম কোথায় মাত্র তো চার ঘন্টা
চুহেস অবাক হয়ে বল্লো
– চার ঘন্টা আবার মাত্র
গাইথি – দেখুন আমার শপিং করতে খুব কম সময় লাগে,তার পরে ও যদি….
চুহেস গাইথিকে কথা শেষ করতে না দিয়ে বলে,চলো গাড়িতে বসি
নিহার আর নিধিপা এসে গাড়িতে বসলো
কিছুক্ষন পর চুহেসরা ও এলো
নিধিপা- এই গাইথি এই অনুষ্ঠানে কি কি আয়োজন করবি
গাইথি- নাচ গান সব হবে
চুহেস – কি বলছো, এংগেজমেন্টে নাচ গান, হয় নাকি
গাইথি- হয় না তবে এবার হবে ,
চুহেস- নাচবে কে
গাইথি- কেনো আমার নিহার ভাইয়া আর মিসেস নিহার ভাবি
নিধিপা- গাইথি এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।
গাইথি-ওকে ফাইন, ফাজলামি বাদ,সিরিয়েস ভাবে বলছি তোরা নাচবি
নিহার- ঠিক আছে আমরা রাজি তবে একটা শর্তে
চুহেস- কি শর্ত
নিহার- আপনাদের ও নাচতে হবে
নিধিপা নিহারের সাথে এক যোগ হয়ে বলে,হুমম নিহার ঠিক বলেছে এটা আমার ও ইচ্ছে
চুহেস- এই প্রথম শুনলাম, নিজেদের এংগেজ মেন্ট অনুষ্ঠানে নিজেদের কে ই নাচতে হবে
গাইথি- আমি কিন্তু নাচতে পারি না
নিধিপা- তা বললে ও শুনছি না
to be continue