My_Mafia_Boss পর্ব-৫০

0
5323

My_Mafia_Boss পর্ব-৫০
Writer: Tabassum Riana

সকালে ঘুম ভেঙ্গে উঠে পড়ে রুহীকে বালিশে শুইয়ে উঠে পড়ে রোয়েন।রুহীর দিকে এক নজর তাকায়। চোখ মুখ ফুলে আছে ওর।রুহীর গালের ওপর থেকে চুল সরিয়ে চুমো খেয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায় রোয়েন।রুহী ঘুম থেকে উঠে পাশের রুমে ফ্রেশ হতে চলে যায।ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে রোয়েন।ড্রেসিংটেবিলের সামনে চুল ঠিক করতে করতে দরজার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকাতে থাকে বার বার।

রুহি ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে চুল গুলো আছড়ে নিয়ে রোয়েনের রুমের দিকে এগোতে থাকে।দরজার সামনে আসতেই ওর হাত টেনে ধরে কাছে নিয়ে আসে রোয়েন।কই ছিলে?ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করলো রোয়েন।আ আম আমি তো ফ্রেশ হচ্ছিলাম মাথা নিচু করে বলল রুহী।এখন কেমন লাগছে?প্রশ্ন করে উঠলো রোয়েন।
ক কক কি কেমন………. থামিয়ে দিলো রোয়েন থাক আর বলতে হবেনা।নিচে নাস্তা করতে চলো। রুহির হাত ধরে বলল রোয়েন।

মামী তো ঘুমাচ্ছে।রুহী বলে উঠলো। যাও ডেকে আনো রুহীর দিকে তাকিয়ে বলল রোয়েন।মাথা ঝাকিয়ে পাশের রুমে চলে গেল রুহী।মামী!!!! মামী উঠেন আনিলা বেগম কে ডাকতে ডাকতে বলল রুহী।আনিলা বেগম চোখ খুলে তাকালেন কয়টা বাজেরে মা?ঘুম ঘুম গলায় প্রশ্ন করলেন আনিলা বেগম।৮টা বাজে।চোখ বড় বড় করলেন আনিলা বেগম জামাই উঠেছে?হুম সেই সাতটা বাজে উঠলো। ওহ লাফিয়ে উঠলেন আনিলা বেগম।মামী কি হলো?অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো রুহী।

নারে মা তেমন কিছুনা তোরা নিচে চলে যা আমি আসছি বলে আনিলা বেগম ফ্রেশ হতে চলে গেলেন।

রুহী বেরিয়ে রোয়েনকে দরজার সামনে দেখতে পেল।রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ালো রুহী।মামী বলেছেন আমাদের নিচে নামতে।উনি ফ্রেশ হতে গেছেন।

রুহীর হাত নিচে সিড়ির দিকে এগোলো।ডাইনিং টেবিলে খাবার সার্ভ করছে কাজের লোক গুলো। রোয়েন রুহী কে নিয়ে খেতে বসে পড়লো।কিছুক্ষন পর আনিলা বেগম ও নিচে নেমে এলেন।তিনজনে নাস্তা সেড়ে উঠে পড়লো।রুহী আমার কফি দিয়ে যাও। সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে রোয়েন বলল।রুহী তৎখনাৎ উঠে পাকঘরে এসে কফি বানিয়ে সিড়ির দিকে পা বাড়ালো।রুহী রুমে যেতেই রোয়েন কি যেন সরিয়ে নিলো পিছে।কিছু টা অবাক হয়ে রোয়েনের কাছে দাঁড়ায় রুহী।আ আপ আপনার ক কক কফি মাথা নিচু করে বলতে থাকে রুহী।রোয়েন রুহীর হাত থেকে মগ নিয়ে মগে চুমুক দেয়।রুহী মাথা নিচু করে আছে।মা মাম মামীর কা কাক কাছে যে যেতে হবে। কাঁপা কাঁপা গলায় বলল রুহী।

তুমি তো এখনো খাওনি। বাঁকা হাসলো রোয়েন।

আমা আমার খেতে হব…………থামিয়ে দিয়ে কাছে টেনে নিলো রোয়েন।রুহীকে সরিয়ে দিলো। তবে এখনো ওর হাত ধরে আছে রোয়েন।রুহী ঠোঁটে হাত রেখে আবার ছেড়ে দিয়ে মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো।
এবার যাও। গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন।

হুম!!!!রোয়েনের দিকে তাকালো রুহী।

রুহীর দুকাঁধ ধরে বের করে দিলো রোয়েন।দাঁতে দাঁত চেপে বলতে লাগলো বলার আগে আসবানা।দরজা লাগিয়ে দিলো রোয়েন।এনার আবার হলো টা কি?ভাবতে ভাবতে নিচে এলো রুহী।

রুহী দরজার কাছ থেকে সরে এসে খাটে বসে গেঞ্জীর ভিতর থেকে একটা নীল ডায়েরী বের করলো।উপরে লেখা রুহীর ডায়েরী।ডায়েরীটি খুলল রোয়েন।একটা তারিখটি দেখে বেশ অবাক হলো রোয়েন।এ দিন তো ওকে প্রথম দেখে রোয়েন।

ডায়েরী ১.১০২০১৮
রাত বারোটা বাজে।আমি আর স্নিগ্ধা ছাদে বসে আছি।কোনমতেই ঘুম হচ্ছেনা।কাল পিকনিক তাই বেশি এক্সাইটেড।
সকাল
বাসে উঠলাম।ভীষন মজা হচ্ছে। সবাই গান করছে।আমরাও সবার সাথে গান করলাম।
আজ বড় অভুত কাহিনী ঘটেছে।স্নিগ্ধার সাথে হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যাই।একটা বন্দুকের শব্দ পেয়ে দাঁড়িয়ে গেছি।লম্বা কালো কোট ওয়ালা কয়েকজন লোক একজনকে গুলি করে মেরেছে।ভীষন ভয় লাগছে।লোকটি আমার সামনে এসে বসলো।গুন্ডা গুন্ডা ভাব তার চেহারায়।সে আমাকে কোলে উঠিয়ে নিলো।তার দিকে আড়চোখে তাকিয়েছি।রাগের মাঝে ও ভীষন মায়াবী তার মুখ।একদম প্রিন্স চার্মিং।হি হি হি।

রোয়েন হালকা হাসে।তারপর আবার পৃষ্ঠা উল্টায়।

মার দেয়া কানের দুল ফিরে পেয়েছি।প্রিন্স চার্মিং পরিয়ে দিয়েছে।তাকে দেখে খুব ভয় লাগে।শুধু ধমক দেয়।তিতা করলা একটা।চকোলেট কালারের শার্টে দারুন লাগছে তাকে।
২.১০.২০১৮
আজ স্কুলে ভর্তি করিয়েছে আমায়।আবার পড়াশুনা করবো।অনুভূতি টাই আলাদা।তিতা করলাটা বেশ ভালো।সেলাই মেশিন ও পাঠিয়েছো কাল।তার সাথে কারে জার্নি করেছি আজ।ভালো লেগেছে।তবে বাইক হলে আরো ভালো হতো মনে হয়।
রোয়েন মুচকি হাসে।আমার মায়াবতীর বাইকে উঠতে মন চায়।
পৃষ্ঠা উল্টায় রোয়েন।
১০.১০.১৮
অনেকদিন লেখা হয়নি।আজ মামা বাড়িতে এলাম।তিতা করলা টা বিয়ের সম্বন্ধ এনেছে।রাজি না হয়ে ও তো লাভ নেই মামীর বকা গুলো ভালো লাগেনা আর।জ্বর লাগছে খুব।সে বিরিয়ানী খাইয়েছে,শপিং করে দিয়েছে।তবে খাওয়ার দোকানে থাপড় দিবে বলেছে।খুব খারাপ লাগছিলো।সবাই তাকিয়েছিলো।কাঁদতে চেয়ে ও পারিনি।
সে বলেছে চুল কখনো বাঁধতেনা।হয়ত সুন্দর লাগে আমায়।

রোয়েন ডায়েরী টেবিলের নিচের ড্রয়ারে রেখে দরজা খুলে দিলো।চকোলেট কালারের শার্ট পরে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।নিচে এসে দেখে রুহী মামীর পাশে বসে আছে।রুহী রেডি হও।কল দিলে বের হবা। গম্ভীর গলায় বলল রোয়েন।ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
রুহী কিছুক্ষণ রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থেকে উপরে চলে আসে।গোসল করে চকোলেট কালারের একটি শাড়ী পরে নিলো রুহী।চুল গুলো কে আঁচড়ে পিঠে ছড়িয়ে দিলো।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক লাগিয়ে নিলো।চোখে কাজল দিয়ে নিজেকে আয়নায় দেখতে লাগলো।

কিছুক্ষন ফোন বেজে উঠে রুহীর। দৌড়ে গিয়ে কল রিসিভ করে রুহী।ওপাশ থেকে বলছে হ্যালো মিসেস রোয়েন আহমেদ।

হ্যালো কাঁপা কাঁপা গলায় বলল রুহী।

নিচে আসো। জলদি।

ও ও ওকে।ফোন ব্যাগে ঢুকিয়ে নিচে নেমে এলো রুহী।মামী আমি আসছি বলে দুরজা খুলে অবাক হয়ে যায় রুহী।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে