My_Mafia_Boss পর্ব-৪৫

0
5146

My_Mafia_Boss পর্ব-৪৫
Writer: Tabassum Riana

স্যার রুহান আসলাম আর তার পরিবার বনানী থাকে।ওনার একটা ছেলে আছে।সে কোন কাজ করেনা। সারাক্ষন আড্ডা দিতে থাকে আর বিভিন্ন নেশায় মেতে থাকে।আরেকটা কথা ভাবির মা ওনার দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলো।সম্পত্তির লোভে বিয়ে করেছিলেন ওনাকে রুহান আসলাম।স্যার কুমিল্লা চিটাগং ওনার কালো টাকার কয়েকটা গুদাম ঘর আছে।রোয়েন ভ্রু নাচিয়ে বাঁকা হাসি দিলো।উঠে দাঁড়িয়ে লোকটির কাঁধে হাত রাখলো রোয়েন।গুড জব। এবার আমার কাজ আমি করবো।বলে উঠলো রোয়েন।লোকটি চলে গেল।রোয়েন সিড়ির দিকে পা বাড়ালো।রুহী রুম থেকে বেরিয়ে সিড়ির কাছে এগুতেই মেয়েলি কন্ঠ শুনতে পেল।রুহীর বুক ধুক করে উঠে।সিড়ির থেকে নামতেই রোয়েন প্রথম দিন যে মেয়েকে ঘরে এনেছিলো তাকে দেখতে পায়। মেয়েটা রোয়েনের কাছে বারবার যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু রোয়েন সরিয়ে দিচ্ছে।রুহীর দিকে চোখ পড়ে রোয়েনের।রুহীর থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে রক্তচক্ষু দিয়ে সামিয়ার দিকে তাকায় রোয়েন।Get out, I said get out চিৎকার করে বলে উঠে রোয়েন।সামিয়া চলে যায়।রোয়েন রুহীর দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে রুহী কথা বলার সুযোগ না দিয়ে পিছনে ফিরে বারান্দায় চলে আসে।রোয়েন রুহীর পিছু নিতে নিতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়।রুহী যা ভাবছো তেমন কিছু হয়নি ঐদিন।রুহী চুপচাপ দাড়িয়ে দূর আকাশের দিকে চেয়ে আছে।জবাব না পেয়ে রোয়েন রাগী গলায় বলে উঠলো কিছু বলছি তোমাকে।রুহী চুপচাপ থাকায় রোয়েনের সহ্য হচ্ছে না।রুহী কিছু বলো খুব খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু।

রুহী চলে যেতে নিলে ওর দুই কাঁধ চেপে ধরে রোয়েন।চোখ দুটো ভীষন লাল হয়ে আছে রোয়েনের।কিছু বলছি তোমাকে।জবাব না দিয়ে কোথায় যাচ্ছো?চিৎকার করে উঠে রোয়েন।রুহী ছলছল চোখে চেয়ে আছে রোয়েনের দিকে।আমি জানি আপনি কিছু করেননি।করতে ও পারেননা। এতোদিন আপনার সাথে ছিলাম কিছুই করেননি আপনি।কাছে এসে ও সরে গেছেন শুধুমাত্র আমার জন্য।আপনি এমন করতে পারেননা।কথা গুলো বলার সময় রুহীর চোখের কোনা বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো।রোয়েন রুহীকে বুকে জোরে জড়িয়ে নিলো।রুহী রোয়েনের বুকে অাশ্রয় পেয়ে চোখ বুজে নিয়েছে। মায়াবতীর প্রতি আজ আরো বেশি টান অনূভব করছে রোয়েন।বেশ কিছুক্ষণ পর রুহীকে সামনে আনে রোয়েন।রুহী মাথা নিচু করে আছে।রোয়েন বেশ খানিকটা নিচু হয়ে রুহীর গালে চুমো খায়। রুহীর গাল দুটো লাল হয়ে উঠে।রোয়েন ওর গাল ধরে আস্তে করে টান দেয়।রুহী একনজর রোয়েনের দিকে তাকিয়ে গালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো।রোয়েন আবারো নিচু হয়ে রুহীর গলায় মুখ ডুবালো।উষ্ণ পরশে ভরিয়ে দিতে লাগলো ওর মায়াবতীকে।

রোয়েনের শার্টের হাতা চেপে ধরেছে রুহী।রোয়েন রুহীর কাঁধে গভীর চুমো দিয়ে কোলে তুলে নিলো রুহীকে।মাথা নিচু করে দুহাত দিয়ে রোয়েনের গলা জড়িয়ে ধরে আছে।রুহীকে নিয়ে সিড়ির দিকে এগোলো রোয়েন।
আনিলা বেগম অবন্তীকে কল দিয়ে দিয়ে পাগল বানিয়ে দিচ্ছে।ফোনের দিকে জ্বলজ্বলে চোখে তাকিয়ে আছে রুহী।চোখ ভরে গেছে ওর।যে মা এমন তার সাথে কোন কথা নেই ওর।নুহাশ অবন্তীর পাশে এসে দাঁড়ালো । কি হলো কে কল দিচ্ছে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো নুহাশ?প্লিজ কল রিসিভ করোনা।মায়ের সাথে কথা নেই বলে কেঁদে দিলো অবন্তী।নুহাশ অবন্তীকে বুকে জড়িয়ে নিলো।

রুহীকে রুমে নিয়ে এলো রোয়েন।খাটে শুইয়ে দিলো রুহীকে।রুহীর ওপর আধশোয়া হলো।রুহী রোয়েনের দিকে তাকাতে পারছেনা।বুকের ভিতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে রুহীর।রোয়েন রুহীর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে চুমো খেতে শুরু করলো।রোয়েনের প্রত্যেকটি ছোঁয়ায় রুহীর মাতাল হয়ে যাওয়ার জোগাড়। রোয়েন তো সে কবে থেকেই মায়াবতীর নেশায় আসক্ত।ভালবাসার রঙ্গীন দুনিয়ায় পাড়ি দিয়েছে ওরা। একে অপরকে আপন করে নেয়ার খেলায় মেতে উঠেছে।রুহীর হাত রোয়েনের শার্টের বোতাম গুলো খুলতেই রোয়েন উঠে শার্ট খুলে ফ্লোরে ছুড়ে দিয়ে রুহীর উড়নার দিকে হাত বাড়ালো।রুহী তার নগ্ন শরীর রোয়েনের কাঁধ ধরে ঢেকে নিয়েছে।রুহী আজ তোমাকে নিজের করে চাই। রোয়েনের কাঁধে থুতনি রাখলো রুহী। রোয়েনের সাথে আজ ভালবাসার সাগরে ডুব দিতে চায় রুহী নিজে ও।
পুরো পরিবেশ ঘনঘন নিশ্বাসের শব্দে ভরে গেছে।

পরদিন সকাল রুহীর বুকে রোয়েন নিজেকে খুঁজে পায়।মাথা উঠিয়ে মায়াবতীর দিকে তাকায় রোয়েন।ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে রোয়েনের।এমন অনুভূতি আগে কখনোই হয়নি।মায়াবতীকে ভালবাসতো পেরেছে কাল রাত।ভাবতেই বুক ভরে উঠে রোয়েনের।রুহীর ঠোঁটে আলতো করে চুমো দিয়ে উঠে পড়ে রোয়েন। বিছানা ছেড়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
রুহী ঘুম থেকে উঠে বসে বুকে ভালো মতো চাদর টেনে নেয়।আশেপাশে তাকিয়ে রোয়েনকে খুঁজতে থাকে।ঝড়নার শব্দে রুহী বুঝতে পারে ফ্রেশ হচ্ছে রোয়েন।চাদর দিয়ে ভালমতো ঢেকে নিয়ে পাশের রুমে চলে আসে রুহী।জামা নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায় ও।
রোয়েন ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এসে রুহীকে রুমে না পেয়ে চুল শুকোতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।ঠিক তখনই ফোন বেজে উঠে রোয়েনের। ফোন হাতে নিতেই রাগ চরম পর্যায়ে চলে যায় ওর।রুহান আসলাম কল করছে কেন এখন।ফোন রিসিভ করে কানে ধরে রোয়েন।চাপ লাগতেই লাউড স্পিকার অন হয়ে যায়। হ্যালো!!
কালকের সারপ্রাইজ কেমন লাগলো জামাইবাবু?
এতো সাহস কি করে হলো তোর?আমার বাসায় মেয়ে পাঠানোর?

মাইন্ড ইউর ল্যাঙ্গুয়েজ রোয়েন।আমি তোমার শ্বশুর।
যখন তোর আসল রুপ বেরিয়ে যাবে।রুহী তোকে বাপ বলতে ও ঘিন্না করবে।চিৎকার করে বলে উঠে রোয়েন।
সো স্যাড জামাই বাবু।আমার মেয়ে রুহী।আমাকে বিশ্বাস করে ও।এতোটাই বিশ্বাস করে যে ওর মাকে মেরেছি জানলে ও বিশ্বাস করবেনা।বলেই হেসে উঠে রুহান আসলাম।
রেয়েনের রুমের দিকে আসতেই থেমে যায় রুহী।চোখ দুটো ভরে আসে ওর।
ওর সামনে আসার চেষ্টা ও করবিনা।দূরে থাকবি আমার বৌ থেকে। রাগী গলায় বলল রোয়েন।
উফ জামাইবাবু ওর থেকে দূরে থাকলে তোমাকে ধ্বংস করবো কি করে?ওকে তো আমি হাতিয়ার হিসেবে ইউজ করছি তোমাকে শেষ করার জন্য।
রুহী আর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা।দৌড়ে রুমে এসে দরজা লাগিয়ে কেঁদে উঠে মুখ চেপে ধরে। বাবা নিজ হাতে মাকে খুন করেছে।মার আদর থেকে বঞ্চিত করেছে ওরই নিজের বাবা।খাটের গা ঘেষে নিচে বসে কাঁদতে থাকে রুহী।কিছুক্ষণ পর দরজায় নক শুনতে পায় রুহী।
রুহী!!!দরজা খুলো। কি করছো তুমি?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।চোখ মুছে রুহী উঠে দাঁড়ায়। মুখ ধুয়ে দরজা খুলে। মুখ ধুচ্ছিলাম।মাথা নিচু করে বলে রুহী।রুহীর হাত ধরে নিচে চলে আসে রোয়েন।

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে