MEANINGLESS LIFE PARTNER Part-09

0
1997

#MEANINGLESS_LIFE_PARTNER (অর্থহীন জীবন সঙ্গী)
পর্ব:9
#লেখিকা_Arshi_khan

(TIME TO GET MARRIED:সময় এসেছে বিয়ের)

(আমার আইডিটা গতো পাচঁদিন যাবত লকড হয়ে ছিল। আজকে অনেক কষ্টের পর আইডি টা ঠিক করেছি।তাই গল্প দেরিতে দেওয়ার জন্য আমাকে মাফ করে দিয়েন।)

রুতের লেখা চিঠি পরে হাসতে হাসতেই আমার অনেকক্ষন কেটে গেল। এদিকে কফি ও ঠান্ডা হয়ে গেছে।তাই কফি গরম করার উদ্দেশ্য নিচে নেমে আসলাম। বাড়ির সবাই অনেক খাটাখাটনির পর রেস্ট নিতে গেছে।তাই আপাতত রান্নাঘর খালি।এখন বাজে রাত দশটা।গ্রামে সবাই আটটা নয়টার মধ্যেই ঘুমিয়ে যায়।তবে আজকে খাওয়ার পর এই ঘুমাতে চলে গেছে সবাই।আমি রান্নাঘরে গিয়ে কফি গরম করে নিলাম এলপি গেসে।তারপর সেই কফি নিয়ে আবার রুমের গিকে হাটা দিলাম। রুমে পৌঁছানোর পথে আয়েশার রুম।এখন আয়েশা আছে শশুর বাড়িতে।রুত এর একা থাকার সম্ভবনা 80%।তাই আস্তে করে ওর রুমে টোকা দিলাম। একটু পর রুত চোখ ঢলতে ঢলতে এসে গেট খুলে আমাকে দেখেই চোখ বড় করে ফেলল।আমি আস্তে করে উকি দিতেই দেখি রুম খালি এই আছে।
আমি আসি ভিতরে?(আয়ান গেটের উপর হাত রেখে)

কেন আসবে এত্ত রাতে?(রুতবা ব্রু কুচকে)

এমনেই একটু সময়ই থাকব তারপর আবার চলে যাব।আসি না এমন করো কেন?(আয়ান রুতবার হাত ধরেই)

আয়ান ভাই তোমাকে আমার এই মুহূর্তে একটুও বিশ্বাস হচ্ছে না।আর তোমাকে এত্ত রাতে এই রুমে কেউ দেখলে আমাকে সবাই খারাপ ভাববে।তাই এখন তুমি তোমার রুমে যাবে।আর আমি ঘুমাব। (রুতবা একটু রাগি সুরে)

কে কি বলবে তার পরোয়া আয়ান করেনা রুত।হ্যা আমি আমার ফেমেলির জন্য কষ্ট করে বিদেশ ছিলাম ঠিকি।তবে ভুলে যেওনা আমি এই বাড়ির একমাত্র ছেলে আর আমার উপর কেউ কথা বলেনা।আর তাছাড়া তোমাকে কেউ খারাপ বললে সেই মানুষটার কি হবে তা তোমার ও ধারণার বাইরে।আর হ্যা ভালোবাসি তোমাকে বউ হিসাবেই।বউ বলেই ভালোবাসি।নাহলে সিঙ্গাপুর এ হাজার সুন্দর নারীর সাথে আমি সম্পর্ক চাইলে করতে পারতাম। শুধু তোমার জন্য আমি কারো দিকে খারাপ নজর এ তাকাইনি এই ভেবে আমার দেশে বউ আছে।আর তুমি শুধু মাত্র কালকের করা কিস এর জন্য আমাকে বলছ এই মুহূর্তে আমাকে বিশ্বাস করতে পারছ না।ঠিক আছে বিশ্বাস করতে হবেনা।আমি আয়ান কথা দিচ্ছি যেই আমি ছোট বেলাতে বিয়ে টা কে MEANINGLESS মনে করতাম, তোমাকে আমার #MEANINGLESS_LIFE_PARTNER মনে হতো সেই আমি তোমাকে আবার তোরজোর করে বিয়ে করে ঘরে তুলে একজন আদর্শ স্বামী এবং তোমাকে আমার MEANINGFUL LIFE PARTNER বানিয়ে ছাড়ব।আর ঠিক যতোদিন আমি তোমাকে বিয়ে করে আমার বাসর ঘরে না তুলব ততদিন তোমার কাছে না থাকবে আমার কোন আবদার আর না থাকবে কোন দাবি। (আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য বলেই রুমে চলে গেল)

তুমি কেন বোঝনা আয়ান ভাই তোমার আমার বিয়ের মূল্য নেই। আর তাই কালকে রাতে তোমার রুমে যাওয়া নিয়ে তোমার চাচিমা রা আমাকে অনেক কথা শুনিয়েছে।কিন্ত আমি কিভাবে এসব তোমাকে বলি বল?এমনেই তোমরা আলাদা হয়ে গেছ।এখন এসব বলে একেবারেই সম্পর্ক ছিন্ন করতে আমি চাইনা।আমি সত্যি চাই তোমার বউ হয়ে একেবারে তোমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে।তুমি এই যে আমার সব আয়ান ভাই।আমার প্রথম ও শেষ ভালোবাসা আমার স্বামী তুমিই। তবে তার জন্য আমাদের সমাজের সকলের সামনে আবার বিয়ে করে কাছাকাছি যেতে হবে।ততদিন নাহয় এই রাগটা নিয়ে থাক।সময় আসলে রাগ ভাঙ্গাব আয়ান ভাই আমার ভালোবাসা দিয়ে।(রুতবা আয়ান এর দিকে তাকিয়েই মনে মনে)

রুত এর সাথে এত্ত রুডলি কথা বলা আমার পছন্দের বাইরে।ওকে আমি এখন ও সেই ছোট বাচ্চার মতো এই ভালোবাসতে চাই।কিন্ত আমার বয়স তা মানতে নারাজ। ঠিক আছে রুত তোমার ইচ্ছে এই পূরণ করা হবে।সমাজের কেউ তোমার দিকে আঙ্গুল তুলার সাহস পাবেনা।আমাকে দুই দিন এর সময় দাও।এসব ভাবনার মধ্যেই পুরো রাত পেরিয়ে গেল। ভোরের দিকে হয়তো চোখ লেগে গেছে।ঘুম ভাঙ্গল অনেক বেলা করে।উঠে হাত ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল এগারোটার কাছাকাছি।উঠে ওয়াশরুম দিকে যেতেই দেখি গেট লক। আমার রুমের ওয়াশরুম এ আবার কে গেল?পানির আওয়াজ বন্ধ হওয়ার অপেক্ষা করতে লাগলাম। আমি বেডে বসে আব্বুকে কিভাবে বলব আমার আর রুত এর বিয়ের কথা সেই চিন্তাকে আছি।হঠাৎই গেট খোলার আওয়াজ এ সামনে তাকাতেই আমার চোখ ধাদিয়ে গেল।কারণ আমার সামনে রুত পেটিকোট আর ব্লাউজ পরে অর্ধ শারি পেঁচিয়ে দাড়িয়ে আছে।আমি সাথে সাথেই দাড়িয়ে ঘুরে গেলাম।
এভাবে আমার সামনে আসার মানেকি রুত?(আয়ান হালকা চিৎকার করে)

আমি বউ ভাত এ যাব তাই গোসল করতে এসেছিলাম।কিন্ত শারি ওয়াশরুম এ পরলে ভিজে যাবে তাই এভাবে বেরিয়ে এসেছি।তুমি জেগে গেছ আমি বুঝতে পারিনি।(রুতবা শাড়ি পেচিয়ে ঘুরে দাড়িয়ে)

জলদি শাড়ি পরে ঘর থেকে যাও।(আয়ান হাতের মুটি বন্ধ করে)

যাচ্ছি আয়ান ভাই পাচঁমিনিট লাগবে।তুমি বরং শাওয়ার নিতে যাও।তারপর রেডি হয়ে নাও আয়েশাকে আনতে যাবে না?(রুতবা আয়ান এর উদ্দেশ্য)

হুম।
বলেই ওর দিকেই এক পলক তাকিয়েই ওয়াশরুম ঢুকে গেলাম। আমার বউ কে দেখার অধিকার টুকু ও আমার নেই।আরো হাজার চিন্তার পর ফ্রেস হয়ে বাইরে এসে দেখি রুত রুমে নেই।টেবিলের উপর একটা চিরকুট সাথে এককাপ চা।চিরকুট এ লেখা
আয়ান ভাই আমার রাতে ঘুম আসেনা বালিশে কারণ আমার খুব করে তোমার ঐ প্রশস্ত বুকটাতে ঘুমানোর তীব্র ইচ্ছে জেগেছে।বিয়ের ব্যবস্থা কর নাহলে সত্যি বলছি তোমার থেকে দূরে থাকার পণ করে বসলে আমাকে আর খুঁজে ও পাবেনা।রাগ যখন করেছ বাসর ছাড়া কোন দাবি করবেনা তখন সেই বাসর টা জলদি করার দ্বায়িত্ব ও কিন্ত তোমার। আর আরেকটা কথা আমার শাড়ির সাথে মেচিং করে শার্ট পরে তারপর নেমে এসো।আমি নিচেই তোমার অপেক্ষাতে থাকব।ইতি তোমার রুত ।
ঢং এর কারখানা।খালি বিয়ে কর বিয়ে কর বললেই কি বিয়ে করা যায়। ফেমেলির পিপারেসন বলে ও একটা কথা আছে তা কেন বোঝেনা আমার বাচ্চা বউ টা?ঠিক আছে বিয়ে আমি করব সেই ছোট বেলার মতো।এক কাপরে তোমাকে আমার ঘরে এনে তুলব।আমি রুত এর শাড়ির কালার এর পারপেল কালার একটা শার্ট পরে রেডি হয়ে নিলাম। তারপর নিচে এসে হালকা নাস্তা করলাম। রুত সোফায় বসে সিঁড়ির দিকে তাকিয়েই ছিল আমার আসার অপেক্ষাতে।আমাকে দেখে মুচকি মুচকি হাসছিল।আমি নাস্তা করার পর সাড়ে বারোটার দিকে আয়েশার শশুর বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম সবাই। দুইটা মাইক্রো নেওয়ার পর ও একটু চাপাচাপি ছিল। মেয়েরা সব এক সাথে আমরা ছেলেরা এক সাথে ছিলাম। বউ ভাত অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পর আয়েশা ওর হাজব্যান্ড আরো ঐ বাড়ির চারজন আসল।এখন আয়েশা আর ওর হাজব্যান্ড রা আসার কারণে পাচঁজন বাসে করে বাড়িতে চলে গেল। এখন যাওয়ার সময় সবাই কাপল বসে যাচ্ছে। একটা ছেলে আয়েশার চাচাতো দেবর ও রুত এর পাশে বসে যেতে চাইছে।তাই আমি রুতকে উঠিয়ে আমরা যেই গাড়িতে যাচ্ছি ঐটাতে নিয়ে আসলাম ।সামনে সব গুরুজন বসার কারণে আমার আর রুতকে পেছনে বসতে হল।সাথে বসল আমার একটা বোনের হাজবেন্ড আর ছেলে মেয়ে দুইটা। চারজন এর সিটে প্রায় ছয়জন বসার কারণে একটু চাপাচাপি ছিল। রুতকে কিনারে দিয়ে আমি বসেছি তারপর বাচ্চারা আর আছমার হাজব্যান্ড। তো গাড়ি চলতে শুরু করল। এই গাড়িতে সব মেজ,সেজ,ছোট বাবা ও আব্বু থাকার কারণে সবাই চুপচাপ এই থাকল।যেহেতু বউভাত শেষ করে বের হতে সন্ধা হয়ে গেছে।সে জন্য অন্ধকারে ছেয়ে গেছে।হঠাৎই রুত আমার হাতটা আকরে ধরে আমার কাধে মাথা রাখল।আমি পাশে তাকাতেই দেখি ও ঘুমুঘুমু চোখে আমার দিকে তাকিয়েই আছে।এদিকে বাচ্চারা ও ঘুম এ আমার উপর ও বাবু(আছমার হাজব্যান্ড)এর উপর ঢলে পরেছে।
ঘুম আসছে?(আয়ান আস্তে)

হুম। (ঠোঁট উল্টে রুতবা)

ঘুমাও। (রুতবার মাথার হাত রেখে আয়ান)

আচ্ছা।
ঘুম তো পায়নি আয়ান ভাই তবে তোমার বুকে নাহোক ঘারে শোয়ার একটা সুযোগ তো এসেছে।আমি আয়ান ভাই এর হাত টা শক্ত করে দুইহাতে জড়িয়ে কাধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে রাখলাম। বেশ কিছুক্ষন এভাবেই কেটে গেল। হঠাৎই মনে হল আয়ান ভাই আমার একটা হাত তার হাতে নিয়ে মুষ্টি বদ্ধ করল।এবং তার আঙ্গুলের ফাকে আমার আঙ্গুল গুলো দিয়ে হঠাৎই হাত
টা কাছে নিয়ে ক্ষণিকের জন্য ঠোঁট স্পর্শ করল।আমি খিচে চোখ বন্ধ করেই রাখলাম। এই অনুভূতি গুলো এত্তটাই স্পর্শ কাতর যে মনকে উতলা করে তুলে।আরো কিছুক্ষণ কেটে গেল। হঠাৎই মনে হল আমার কপালে কারো ভেজা ঠোঁট এর পরশ একে দিল।সেই মুহূর্তেই আমি চোখ খুলে তার দিকে তাকালাম।আয়ান ভাই এর সাথে আমার চোখ পড়তেই ও সাথে সাথেই মুখটা ঘুরিয়ে নিল।আমি আস্তে করে সোজা হয়ে আয়ান ভাই এর হাত ছেড়ে বসে পড়লাম। ও সেই মুহূর্তে আবার আমার দিকে একবার তাকিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে নিল।(রুতবা মনে মনে)

আরেকটু ঘুমালে কি হতো?ধরা খেয়ে গেলাম দুর।
বাড়িতে পৌঁছানোর পর নানান রকমের নিয়ম পালন করে আয়েশা ও ওর হাজব্যান্ড কে বরণ করে নিল।তারপর সবাই মিলে কিছুক্ষণ আনন্দ করে রাতের খাবার খেতে লাগল। হঠাৎই আম্মুর কথাতে রুত এর গলাতে খাবার আটকে গেল। উপস্থিত সবাই বিশেষ করে আয়েশার দেবর টা যেন বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়েই রইল। (আয়ান মনে মনে)

রুতবা আজকে তো আয়েশার ঘরে তুমি ঘুমাতে পারবেনা।এক কাজ কর তোমার ব্যাগ নিয়ে তোমার আয়ান ভাই এর ঘরে চলে যাও।আর যেকদিন থাকবে আয়ান এর সাথেই থাকবে।(আম্মু রুতবার উদ্দেশ্য)

আমি কিভাবে তার ঘরে ঘুমাবো?(রুত অবাক চোখে)

ওমা যেভাবে আগে ঘুমাতে সেভাবেই ঘুমাবে।(আম্মু খাবার বাড়তে বাড়তে)

আপনাদের ফেমেলির নিয়ম বুঝি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের রুমে ঘুমাতে দেওয়া?যদি ঘুমের জায়গার অভাব হয়।তাহলে ওকে আমাকে যেই রুমে দিবেন সেখানে ঘুমাতে দিলেই পারেন।(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে মনির(আয়েশার দেবর))

আহ মনির এসব কোন ধরনের ব্যবহার?(লিমন(আয়েশার বর)ঝাড়ি মেরে)

দেখুন ভাইয়া এমন বড় বাড়ির মেয়ে বউ দের সম্পর্কে না যেনে মন্তব্য করা ঠিক নয়।আম্মু বা আমার শশুর আব্বুর মেনটালিটি এত্ত টাও নিচু নয় যে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক কারো সাথে আমাকে গিয়ে থাকতে বলবে।আয়ান ভাই থুরি আয়ান আমার হাজবেন্ড হয়।ওর সাথে ছোট্ট বেলাতে আমার বিয়ে হয়েছিল। আর আয়েশার বিয়ের চারদিন আগেও আমাদের আবার বিয়ে হয়েছিল। কিন্ত আমাকে এখন ও অনুষ্ঠান করে তুলে আনে নাই বলে আমার হাজবেন্ড আমাকে আয়েশার সাথে থাকার জন্য বলেছে।এখন আম্মু যেহেতু চায় তাই আমি আমার হাজবেন্ড এর রুমে এই থাকব তো আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্ত ভাগ্য ভাল যে আমার হাজবেন্ড খুব ভাল মানুষ নাহলে আজকে এত্তক্ষণ আপনি সুস্থ বসে থাকতেন না বেয়াই।(রুতবা শান্ত কন্ঠে)

আমি সরি ভাবি ওর পক্ষের থেকে।ও আসলে বুঝতে পারেনি।(লিমন মাথা নিচু করে)

আমার খাওয়া শেষ আমি উঠলাম। আব্বু তোমার সাথে কিছু কথা আছে একটু তোমার রুমে আস।রুত তুমি ঘরে যাও খাওয়ার পর আমি ব্যাগ নিয়ে আসছি।
বলেই সেখান থেকে উঠে আব্বুর রুমের দিকে চলে আসলাম। আব্বু আর আম্মু ও পেছনে আসল।আমি তাদের বসতে বলে পাইচারী করে যাচ্ছি। রাগে আমার মন চাইছে ঐ ছেলের মাথা ফাটায় ফেলি।আফসোস ও আমার ছোট্ট বোনের দেবর। আর কটুম দের সাথে মারামারি করা আমার কাছে বেশ বিরক্তির একটা জিনিস। তবে ও আমার আম্মু ও বউ কে অপমান করে কথা বলেছে।ওর ব্যবস্থা পরে করব।আপাতত আমার বউ কে একেবারেই ঘরে তোলার ব্যবস্থা করে নেই।(মনে মনে)
কালকের মধ্যেই আমার আর রুত এর বিয়ের ব্যবস্থা করবে। আংকেল আন্টি কে কল করে শ্রীনগর কাজি অফিস আসতে বল।আমি আপাতত বিয়েটা সেরে রাখতে চাই। অনুষ্ঠান পরেও করা যাবে।(আয়ান আব্বু ও আম্মুর উদ্দেশ্য)

ঠিক আছে বাবা।এখন রাগ না করে রুমে যা অনেক রাত হয়েছে। (আম্মু আয়ান এর উদ্দেশ্য)

ওকে।
বলেই বের হয়ে আয়েশার রুমে চলে গেলাম সেখান থেকে রুত এর ব্যাগ নিয়ে আমার রুমে চলে আসলাম।রুত চেয়ারে বসে আছে।আমি ব্যাগ টা টেবিল এর উপর রেখে ওয়াশরুম চলে গেলাম। এই রাতের বেলাতেই শাওয়ার নিলাম প্রচুর মাথা গরম আছে সেই জন্য। ঐ ছেলের কথা বারবার কানে এসে লাগছে আর রাগটা বেড়ে যাচ্ছে। শাওয়ার নিয়ে একটা টাওয়াল পেঁচিয়ে বের হয়ে আসলাম। রুত এখন ও একি জায়গাতেই বসে আছে।
ঘুমাতে আসোনি কেন?নাকি দাওয়াত করে ঘুমাতে বলতে হবে?(রুতবার উদ্দেশ্য চেঁচিয়ে আয়ান)

তোমার ঘুম আসলে তুমি ঘুমাও। আমার চিন্তা করতে হবেনা।(রুতবা চিৎকার করে)

বেশি কথা এই মুহূর্তে ভাল লাগছেনা রুত।মাথা গরম করাবি না।ঘুমাতে যা এখনই। (আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য চিৎকার করে)

তুমি আমাকে তুই করে কথা বললে আয়ান ভাই?(ছলছল চোখে রুতবা)

এই মুহূর্তেই তোকে খাটে না দেখলে বারান্দার থেকে নিচে ফেলে দিব।(আয়ান রাগি লুক দিয়ে)

উঠবনা কি করবে?(দাঁতে দাঁত চেপে রুতবা)

রাগ মাথায় চেপে আছে রুত তা তোর উপর প্রয়োগ করতে চাইছিনা।তাই যা বলছি কর।(আয়ান রুতবার হাত ধরে)

তুমি খুব খুব খুব খারাপ আয়ান ভাই।
বলেই কান্না করতে করতেই খাটের এক কিনারে গিয়ে কাথা মুরি দিয়ে শুয়ে পড়লাম। রাগ করবে একজনের উপর, আর রাগ দেখাবে আরেকজন এর উপর। তুইতোকারি করলে তো দেখ তোমার সাথে আর কোন কথা নেই আমার। (রুতবা বিরবির করে)

আমি একটা টাওজার পরে নিলাম। তারপর লাইট অফ করে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। বেশ কিছুক্ষন পর হঠাৎই ফুফানির শব্দে পাশে ফিরে চাইলাম। অন্যের রাগ রুত এর উপর উঠানোর কোন মানে এই হয়না।আমি আস্তে করে ওকে পেছনের থেকে আমার সাথে জড়িয়ে ধরলাম। ও নিশ্চুপ হয়ে থাকল।আমি ওকে আরেকটু গভীর ভাবে জড়িয়ে ধরলাম এবার ও ওর নিশ্চুপ। আমি আস্তে ওর পিঠে একটা চুম্বন করে সেভাবেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালের সোনালী রোদের উত্তাপ এ ঘুমটা ভেঙ্গে গেল। রুতকে ছেড়ে উঠে দাড়ালাম। (মনে মনে)
রুত উঠে পড়।তোমাকে আংকেল নিতে আসবে।(আয়ান রুতবার উদ্দেশ্য)

মানে!(আড়মোরা দিয়ে রুতবা)

আংকেল নিতে আসবে তোমাকে কল করেছিল। জলদি রেডি হয়ে নাও।আমি তোমাকে দিয়ে আসব স্টান এ।(আয়ান বলেই হাটা দিল)

আমি তোমাকে কিছু বলেছিলাম আয়ান ভাই। (রুতবা ছলছল চোখে)

রেডি হয়ে নাও।
বলেই ওয়াশরুম চলে গেলাম। বের হতেই দেখি রুত কেদে কেদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে।ঝাড়ি মেরে রেডি করালাম রুতকে।ও একটা থ্রিপিস পরে রেডি হয়ে নিল।ওকে ধরে নিচে নিয়ে আসলাম। তারপর ব্রেকফাস্ট করে নিলাম। রুত কান্নার জন্য একটু খানি খেল।ওকে নিয়ে বের হয়ে গেলাম। আব্বু আম্মু একটু পরে আসবে।ওকে নিয়ে আমি আমার একটা ফ্রেন্ড এর বাসায় বসিয়ে সামনের শপিং মল থেকে একটা শাড়ি কিনে নিলাম।সেই ব্যাগ নিয়ে আমি আমার ফ্রেন্ড এর বোনের হাতে দিয়ে ওকে রেডি করাতে বললাম। রুত কোন মতে রেডি হবেনা।আমি গিয়ে আবার ঝাড়ি মারতেই ও রেডি হয়ে নিল।রেডি হয়ে যাওয়ার পর ওকে নিয়ে কাজি অফিস আসলাম। ও অবাক হয়ে আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।
TIME TO GET MARRIED রুত পাখি।(আয়ান রুতবার হাত ধরেই মুচকি হেসে)

তুমি খুব খারাপ আয়ান ভাই। (কান্না করে রুতবা)

রুত পাখি কান্না করেনা।মেকাপ নষ্ট হলে পেতনি দেখা যাবে। তখন তোমার শশুর শাশুরী ভয় পেয়ে পালাবে। আর আমাদের বিয়ে আরো দেরি হয়ে যাবে।(আয়ান মুচকি হেসে)

আব্বু আম্মু আংকেল আন্টির উপস্থিতিতে আমাদের বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ করা হল। আংকেল রুতকে আমার হাতে তুলে দিতেই কান্না তে ভেঙ্গে পড়ল।আন্টির সাথে রুতবার ও কান্না যেন থামছেই না।অনেক বোঝানোর পর কান্না থামল।এখন রুত আমার সাথেই থাকবে। কিন্ত পনের দিন পর ওদের বাড়ির থেকে অনুষ্ঠান করে ওকে আমার হাতে তুলে দিবে।এসব কথার পর আংকেল আন্টি সহ সবাই বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলাম।যাওয়ার আগে রুতকে চেঞ্জ করতে বললাম লিমন আর মনিরকে এসব বুঝতে দেওয়া যাবেনা। রুত কালকে বড় মুখ করে যা বলেছে তাই ওরা জানুক।বাড়িতে ফিরে আমি উপরে চলে আসলাম শাওয়ার নেওয়ার জন্য। রুত নিচে আন্টির সাথে বসে কথা বলছে।(আয়ান)

আয়ান ভাই কে বারবার বলে বিয়ে তো করে নিলাম। এখন ওর সামনে যেতে খুব ভয় লাগছে।সারাদিন যেমন তেমন বাইরেই কাটালাম। এখন রাতের খাবার খাওয়ার সময়।খাওয়ার পর তো আমার রুমে যেতেই হবে তখন কি হবে ভাবতেই আমার সারা শরীর ঝংকার দিয়ে উঠছে?(রুতবা আয়ান দিকে তাকিয়েই মনে মনে)

কি?(আয়ান ব্রু নাচিয়ে)

কিছুনা।(রুতবা মাথা নামিয়ে)

খাওয়ার পর রুতকে নিয়ে রুমে চলে আসলাম।ও ভয় পেয়ে আছে ওর মুখ দেখলেই বোঝা যায়।আমি ওর দিকে তাকিয়েই মুচকি হাসতেই ও আমার দিকে বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে রইল। (আয়ান মনে মনে)

হঠাৎই আয়ান ভাই আমার দিকে অগ্রসর হতে লাগল। আমি ভয়ে একপা একপা পেছনে যেতে লাগলাম।তারপর!(রুতবা)

********************(চলবে)*****************

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে