Love Marriage
পর্ব ১৩
মুমতাহিনা জান্নাত মৌ
ইশান পরের দিন আবার গেলো দিশার কাছে।
কিন্তু দিশা জানালো তার সময় হলে সে এমনি যাবে।
আপনাকে বার বার আসতে হবে না।
এই বলে সে রুমে চলে গেলো।
ইশান দিশার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলো।।
তবুও দিশা ইশান কে একটিবারের জন্য ভিতরে আসতে বললো না।
ইশান কিছুক্ষন দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলো।
হঠাৎ সীমা এলো বাসায়।
তুই এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো?
ভেতরে যা?
ইশান রুমের ভিতর গেলো।
সীমাঃআমি একটু বাহিরে গেছিলাম।
ইশানঃআজকে না দিশার যাওয়ার কথা ছিলো?
যাবে না?
সীমাঃতুই চিন্তা করিস না।
আমরা ঠিক সময়ে পৌঁছে যাবো।
ইশানঃআমরা মানে?
দিশা আর কাকে নিয়ে যাবে?
সীমাঃতুই নাকি অপরাধী খোঁজার জন্য দিশাকে নিতে এসেছিস?
তাই দিশা আমাদের সবাই কে একটা প্লান বলেছে।
ইশানঃতারমানে দিশা শুধুমাত্র অপরাধী খুঁজতেই যাবে?
ও আর আমার সাথে থাকবে না?
সীমাঃতা আমি কি করে জানবো?
দিশার থেকে শুনিস।
ইশানঃসে তো আমার সাথে ঠিক করে কথাই বলে না।
কি জিজ্ঞেস করবো?
সীমাঃআচ্ছা ওসব পরে দেখা যাবে।
আগে ক্রিমিনাল টাকে খুঁজে বের করি।
এখন তুই বাসায় যা।
আমরা দিশা কে নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে রওনা দিবো।
আর তুই আমাদের কে না চেনার ভান করবি।
শুধু বলবি কে আপনারা?
তখন আমরা আমাদের পরিচয় দেবো।
ইশান আস্তে করে মাথা নাড়লো।
আর বার বার রুমের দিকে তাকাতে লাগলো।
কিন্তু দিশা আর একবারের জন্যও বাহিরে এলো না।
সীমা বুঝতে পারলো ইশান দিশার সাথে কথা বলার জন্য উঁকি মারছে।
তবুও সে ইশান কে বললো দেরী করছিস কেনো?
বাসায় যা।
ইশান চলে গেলো।
ইশানের মুখচোখ দেখে সীমার খুব খারাপ লাগলো।।।
বেচারা বউ এর টেনশনে কখন যে পাগল হয়ে যায়?
সীমা দিশা কে বললো যা করবি ভেবেচিন্তে করবি।
আর আমার মনে হয় ইশান ওর শাস্তি পেয়ে গেছে।
ওর মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না।
তাছাড়া ওর তখন মন মানসিকতা ঠিক ছিলো না।
তাই না বুঝেই তোর সাথে অন্যায় করেছে।
আর তুই কিন্তু বুঝেশুনে অন্যায় করছিস?
দিশাঃপ্লিজ সীমা।।
এ ব্যাপারে আর আমি কথা বলতে চাই না।
আমি ইশান কে চিনি না।
ওর সাহায্যের দরকার সাহায্য করতে যাচ্ছি।
Just এটাই।
সীমাঃযা ভালো মনে করো তোমরা।
তোদের দেখে সবাই এতোদিন শিক্ষা নিবে ভাবতাম।
এখন তো দেখছি সব love marriage এ same কাহিনী।
আগে ইচ্ছেমতো ভালোবাসে।
দুইজন দুইজনকে না দেখতে পেরে পাগল হয়ে যায়।
অবশেষে বিয়ে করে।
ভাবে বিয়ে করে অনেক সুখী হবে।
কিন্তু সেই Others Couple দের মতো তারাও আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়।।।
দিশা কোন উত্তর না দিয়ে রুমে চলে গেলো।
ইশান বাসাতেই থাকলো।।।
আর বার বার বাহিরের জানালা দিয়ে তাকাতে লাগলো।
হঠাৎ দেখতে পেলো একটা গাড়ি তাদের বাসার দিকেই আসছে।
ইশান বুঝতে পারলো না গাড়ি নিয়ে আবার কে এলো?
সে তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলে দিলো।
গাড়ি থেকে নেমে এলো তার কয়েকজন ফ্রেন্ড সীমা আর দিশা।
কিন্তু আরো কয়েকজন অচেনা ছেলে।
তারা বাড়ির ভিতর ঢুকলো।
ইশান হা করে তাকিয়ে থাকলো।
তাকে সীমা যে কি শিখিয়ে দিয়েছে তা আর মনে নেই।
এক এক করে ইশানের বাবা,বোন,তানিয়া আর ইশানের দুলাভাই,বাড়ির দারোয়ান সবাই কে দাঁড় করানো হলো।
অচেনা এক ছেলে বললো আমার নাম তারেক।
আমি অপরাধ তদন্ত বিভাগ থেকে এসেছি।
আপনাদের বাসার গার্ডিয়ান এর উপর খুব অন্যায় করা হয়েছে।
কে করলো?
কেনো করলো?
আপনারা সেটা না খুঁজে দিশাকে অনেক অপমান করেছেন।।।
এইজন্য দিশা আমাদের অফিসে গিয়ে সব বলে দেয়।
তাই আমরা তদন্ত করার জন্য এসেছি।
একজন সদস্যও বাড়ির বাহিরে যেতে পারবেন না।
ইশানের বাবা বললো আমার অফিস আছে।
–দুই এক দিন ছুটি নিয়ে নিন।
আপনি কি চান না আপনার বউ এর উপর যারা এই অন্যায় করেছে তাদের শাস্তি হোক।
–অপরাধী তো দিশাই।
তাছাড়া আর কে করবে এমন জঘন্য কাজ?
–আবার একটা Crime করলেন আপনি।
একজন নির্দোষ মানুষকে দোষ দেওয়া অনেক বড় Crime.
ইশানের বাবা চুপ হয়ে গেলো।
ইশান দিশাকে টেনে অন্যখানে নিয়ে গেলেন।
কে ইনি?
দিশাঃআমাকে ধরছেন কেনো?
যা বলার সরাসরি বলেন।
ইনি একজন অপরাধ তদন্ত বিভাগের অফিসার।
এনার কাজই হলো অপরাধীকে খুঁজে পুলিশের হাতে দেওয়া।
তারেক বললো আমার একটা আলাদা রুম চাই।
আমি এক এক করে জিজ্ঞেস করবো সবাই কে।
ইশান তারেক কে একটা রুমে নিয়ে গেলো।
আর তারেক প্রথমেই ইশানের বাবা কে প্রশ্ন করতে লাগলো।
তারেক এক এক করে সবাই কে জিজ্ঞেস করতে লাগলো।
কারন যে অপরাধী তার গলার স্বর শুনেই বোঝা যায় যে সে অপরাধ করেছে।
কারন অপরাধী ভয় পেলে তাদের গলার স্বর পরিবর্তন হয়।
তারেকের সন্দেহ হলো ইরার উপর।
কিন্তু তানিয়া কে দেখে মনে হলো সে খুব ভয় পাচ্ছে।
তাহলে ইরা না তানিয়া এই কাজ টি করেছে?
দিশা তারেকের কানে কানে বললো তানিয়া কে দুই চার টা ভয়ের কথা বলেন তাহলেই সব বলে দেবে।
তারেক তানিয়া কে আবার রুমে ডাকলো।
তারেকঃতুমি এতো ভয় পাচ্ছো কেনো?
তানিয়াঃনা তো?
তারেকঃএই ম্যাশিন টা আগে কখনো দেখেছো?
তানিয়াঃনা।
তারেকঃএটা হলো সত্য কথা বলার মেশিন।
যতই মিথ্যা বলো না কেনো আমি সত্য টা শুনতে পাবো।
তানিয়াঃবললাম তো আমি খালার সাথে কোনো অন্যায় করি নি।
আপনি যতই ভয় দেখান আমি এই কথাই বলবো।
তারেকঃখালার সাথে কিছু করো নি মানলাম।
কিন্তু দিশার সাথে তো করেছো।
আমি মেশিনে স্পর্শ দেখতে পাচ্ছি।
তানিয়া সেই কথা শুনে ভয় পেয়ে গেলো।
তারেকঃতুমি যদি সত্যি বলো তাহলে তোমার কোনো শাস্তি হবে না।
তানিয়া কাঁদতে লাগলো।
স্যার,আমি খালার তেলে কোন ক্যামিকেল মেশায় নি।
বিশ্বাস করেন।
তারেকঃকরলাম বিশ্বাস।
কিন্তু তুমি এখনো কিছু লুকাচ্ছো।
বলো আমাকে আমি সাহায্য করবো তোমাকে।
তানিয়াঃস্যার যখন দেখলাম বাড়ির সবাই দিশা কে দোষারোপ করছে তখন আমার মাথায় বুদ্ধি এলো যে এই সুযোগে দিশাকে সবার সামনে অপরাধী করলে ব্যাপার টা আরো ক্লিয়ার হবে।
তাই আমি সায়ানাইড দিশার Nail Polish remover এর বোতলে রাখি।
তারেকঃWait,Wait.
সায়ানাইড তুমি কই পেলে?
তুমি নাকি তেলে মেশাও নি সায়ানাইড?
তানিয়াঃআমি ময়লা ফেলতে গিয়েছিলাম সেখানে গিয়ে দেখি ইরা আপার স্বামী একটা বোতল গর্ত করে পুতে রাখছে।
আমি বললাম ওটা কি দুলাভাই?
তখন উনি বললেন কে জানি এই ক্যামিকেল টা এখানে ফেলে রেখেছে।
অন্য কেউ ধরলে তো বিপদ হয়ে যাবে।
তাই পুঁতে ফেলছি।
দুলাভাই চলে যাওয়ার পর আমি বোতল টা সাবধানে তুলে ঘরে নিয়ে যায় তারপর এই কাজ টা করি।
কিন্তু আমি খালার তেলে মেশায় নি সায়ানাইড।
তারেক তানিয়া কে বললো বাহিরে যাও আর আমাকে যা যা বললে তা আর কাউকে বলবে না।
–ঠিক আছে।
তারেক এবার ইশানের দুলাভাই কে ডাক দিলো।
তারেকঃআপনি ভালো আছেন?
দুলাভাইঃহ্যাঁ আছি।
তারেকঃআপনি তো জানেন আপনার শাশুড়ীর সাথে অনেক বড় অন্যায় হয়েছে।
দুলাভাইঃহ্যাঁ জানি।
তারেকঃআপনি সেদিন কই ছিলেন?
দুলাভাইঃবাহিরে।
তারেকঃতাহলে তো আপনাকে দোষ দেওয়ার কোনো উপাই নাই।
দুলাভাইঃহ্যাঁ।
তারেকঃসায়ানাইড আপনি দেখেছেন কখনো?
দুলাভাইঃনা,
আমি কিভাবে দেখবো?
তারেকঃঠিক আছে যান আপনি।
আর হ্যাঁ শুনুন।
যদি কোথাও পড়ে থাকতে দেখেন অবশ্যয় আমাদের জানাবেন।
ইশানের দুলাভাই হা করে তারেকের দিকে তাকিয়ে রইলো।
তারেক বললো যান আপনি।
আপনার বউ কে ডাকুন।
ইরাঃআপনি কি আমাকে সন্দেহ করছেন?
তারেকঃনা।
আপনি কি করে আপনার মাকে মারতে পারেন?
ইরাঃহ্যাঁ,সেটাই।
তারেকঃকিন্তু আপনার মা অসুস্থ হওয়াতে তো আপনি খুব খুশি হয়েছেন।
পুরো সংসার টা নিজের আন্ডারে নিয়েছেন।
আর স্বামীর বাড়ি যেতে হবে না।
এখন এখানেই থাকবেন।
ইরাঃতাছাড়া আর কে আছে?
মার অনুপস্থিতিতে তো আমাকেই দেখতে হবে এখন।
তারেকঃকেনো দিশা আছে না?
আপনার চেয়ে তার অধিকার কিন্তু বেশি।
ইরাঃসে আমার মায়ের সাথে অন্যায় করেছে।
তারপরেও বলছেন সে সংসারের দায়িত্ব নেবে?
তারেকঃআমি যদি বলি আপনি করেছেন?
আপনি এই সংসারে থাকার জন্য এমন জঘন্য কাজ করেছেন।
ইরাঃকি বলছেন এসব?
আমি করি নি।
তারেকঃআপনার চোখ মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে আপনি অপরাধী।
যেহেতু আমরা এর আগেও অনেক অপরাধী ধরেছি।
ইরাঃআপনি বললেই হলো নাকি?
তারেকঃতাহলে আপনি দিশার সাথে এতো খারাপ ব্যবহার কেনো করেছেন?
বার বার ওর দোষ কেনো দিচ্ছিলেন?
ইরাঃও অপরাধী।
তাই ওর দোষ দিচ্ছিলাম।
তারেকঃএই যন্ত্র টা দেখছেন?
সত্য কথা বলার মেশিন।
একবার মাথায় সেট করলে এ যাবতে যত অন্যায় করেছেন সব বেরিয়ে আসবে।
এখন ভেবে দেখুন।
সব অপরাধের শাস্তি ভোগ করবেন।
না এখন সত্য বলবেন?
ইরাঃবিশ্বাস,করুন আমি কিছু করি নি।
আমি শুধু দিশাকে অপমান করেছি।
কারন যখন দেখলাম মা অসুস্থ।
এদিকে আবার দিশা অপরাধী।
তাই এই সংসারের দায়িত্ব তো এখন আমার ই পাওয়ার কথা।।
তাই দিশাকে অপমান করেছি আর কিছু না।
তারেকঃকিন্তু আমি তো দেখতে পাচ্ছি আপনি অনেক আগে থেকেই দিশার উপর শত্রুতা করেছেন।
দিশা রান্না শেষ করে ঘরে গেলে আপনি তরকারি তে লবন ঝাল দিয়ে যেতেন।
তাই না?
আবার আপনার মা যে পিছলে পরে গেছিলো সে তেল টাও আপনি ফালায়ছেন।
তাই না?
ইরা চুপ করে আছে।
তারেকঃচুপ করে আছেন কেনো?
সত্য বলুন।
ইরাঃহ্যাঁ।
তারেকঃআপনি যদি এতো অন্যায় করতে পারেন আর এই কাজ টা করতে কতক্ষণ?
ইরাঃআপনি ভুল ভাবছেন।
আমার উদ্দেশ্য ছিলো দিশাকে অপমান করা।
কারন সবাই ওকে হঠাৎ করে খুব ভালোবাসতে শুরু করলো।
তাই এমন করেছি।
কিন্তু মার সাথে আমি একাজ করি নি।
তারেকঃআপনার হাজব্যান্ড কি সেদিন বাসায় ছিলো যেদিন এই ঘটনা ঘটেছিলো?
ইরাঃনা ছিলো না।
তারেকঃভালো করে ভেবে বলুন।
ইরাঃসকালে উঠেই ও বাহিরে গিয়েছিলো।
পরের দিন এসেছে।
তারেকঃযান আপনি।
তারেক আর তার সহকর্মী রা মিলে ভাবতে লাগলো।
এদিকে ইশান দিশাকে ঘরে আটকিয়ে রেখেছে।
দিশা শুধু বলছে ইশান বাহিরে যেতে দাও আমাকে।
ইশানঃনা।
আগে বলো এমন করছো কেনো তুমি?
আমি তো সরি বলেছি।
ভুল হয়ে গেছে সেটাও বলেছি।
দিশাঃসরি বললেই কি ক্ষমা করে দেবো নাকি?
তুমি আমার সাথে অনেক অন্যায় করেছো।
আমাকে বিশ্বাস না করে আমাদের ভালোবাসার অপমান করেছো।
আমাকে অনেক মেরেছো যেমন করে অন্যান্য পুরুষ মানুষ বউ দের উপর নির্যাতন করে।
আর আমি বউ হয়ে থাকা অবস্থাতেও তুমি অন্য মেয়ে কে বিয়ে করবে বলে জানিয়ে দিয়েছো।
আমি কি ভুলে গেছি সব?
কিছুই ভুলি নি।
আমি কখনোই তোমাকে ক্ষমা করবো না।
ইশান দিশাকে জড়িয়ে ধরলো।
প্লিজ দিশা।
প্লিজ।
আমার মনমানসিকতা ভালো ছিলো না।
প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো।
আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারছি না।
দিশাঃছাড়ো বলছি।
চিৎকার করবো কিন্তু।
ইশানঃকোনো লাভ নাই।
সবাই জানে আমরা স্বামী স্ত্রী।
দিশাঃবাহিরে সবাই অপেক্ষা করছে।
আমাকে যেতে দাও।
ইশানঃনা,
আমি তোমাকে আর যেতে দেবো না।
দেখি তুমি কি করে যাও?
এই বলে ইশান দিশার ঠোঁটে কিস করতে গেলো।
আর দিশা ইশান কে দিলো জোরে এক কামড়।
ইশানঃউহঃ
কি হলো এটা?
দিশাঃশত্রুর হাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার নিনজা টেকনিক।
এই বলে দিশা রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
ইশান ও পিছু পিছু গেলো।
দিশা দাঁড়াও।
দিশা,,,,,,,
দিশা তারেকের কাছে গেলো।
কি হলো পেলেন কোন তথ্য?
–হ্যাঁ অনেক তথ্যই তো পেলাম।
আসল ক্রিমিনাল কে এখনো বুঝতেছি না।
তারেক দিশা কে সব কাহিনী বললো।
দিশা শোনার সাথে সাথে বললো তাহলে তো পেয়েই গেছেন আসামী।
তারেকঃকিভাবে?
দিশাঃআমাদের দুলাভাই জীবনেও তো ময়লা ফেলার জায়গায় যায় না।
আর উনি নাকি আবার নিজেই পুঁতে রাখছেন ক্যামিকেল।
ব্যাপার টা সন্দেহজনক।
তা উনি সেদিন কেনো গেছিলেন জিজ্ঞেস করেছিলেন?
তারেকঃওনাকে তো আমিও সন্দেহের লিস্টেই রেখেছি।
এখনো জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নি।
দিশাঃওনাকে ডাকেন।
জিজ্ঞেস করেন।
তারেক ইশানের দুলাভাই কে ডাকতে পাঠালো।
কিন্তু তাকে কেউ খুঁজে পেলো না।
সবাই খুঁজতে লাগলো।
এদিকে ইরা শুধু তার স্বামীকে বকতে লাগলো।
মা সেই জন্য একে বোকা বলে।
তা না হলে কেউ আসামীর মতো পালিয়ে বেড়ায়?
এখন তো সবাই তাকেই সন্দেহ করবে???
ইশানের দুলাভাই পালায়ছে।
কিন্তু কিভাবে পালায়লো?
চারিদিকে সবাই খুঁজতে লাগলো।
এদিকে তারেক ইশান কেও সমস্ত কাহিনী বলে দিলো।
ইশান তানিয়া কে বললো তুই ও আছিস এর ভিতর?
তানিয়া মাথা নিচু করে উত্তর দিলো তোরা তো সবাই দিশার দোষ দিচ্ছিলি তাই আমি এই কাজ করেছি।
ইশান তানিয়া কে একটা চড় মারলো।
তানিয়া কাঁদতে লাগলো।
আর বললো এই দিশার কারনে বার বার আমার বিয়ে ভেংগে যাচ্ছে।
এই দিশাই আমার জীবনের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে।
ইশানঃবের হ।
বাড়ি থেকে বের হ।
ইরাঃতানিয়া তুই এতো শয়তান কেমনে হলি?
ছিঃ
বিশ্বাসই হচ্ছে না।
তানিয়াঃআপনি মনে হয় খুব সাধু।
দিনেরাতে অপমান করতেন দিশাকে।
আপনার কথা শুনেই তো দিশা বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলো।
ইরাঃছোট মুখে এতো বড় কথা?
ইশানঃচুপ কর তুই।
আর তোর স্বামী কই?
তাড়াতাড়ি ডেকে আন।
তা না হলে তুই ও কিন্তু আর রেহাই পাবি না।
দুইজনকেই পুলিশে দেবো।
ইশানের বাবা ইতোমধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।
কি বলছে এরা এসব?
ইরার স্বামী কেনো এ কাজ করলো,?
বিয়ে হওয়ার পর থেকে এই বাড়িতেই থাকতেছে,খাচ্ছে।
আর এই বাড়ির সাথেই এতো বড় বেঈমানি?
ইশানের বাবা দিশার কাছে অনেক ক্ষমা চাইলো।
দিশা বললো ঠিক আছে বাবা।
আমি কিছু মনে করে নি।
মানুষের ভুল হতেই পারে।
ইশানঃআমারও তো ভুল হয়েছে।
আমাকেও ক্ষমা করে দাও।
দিশাঃনা।
তোমার ক্ষমা নাই।
তুমি আমাকে সবার থেকে বেশি চিনতে।
অনেকদিন ধরে চিনতে।
সবাই যে ভুল করেছে তুমিও কেনো সে ভুল করলে?
এই জবাব আগে দাও।
ইশান কি করবে এখন?
কারন দিশা ঠিকই বলেছে।
সবাই যে ভুল করতে পারে সে সেই ভুল করতে পারে না।
কারন সে দিশাকে অনেক বছর থেকে চেনে।
তবুও কেনো যে এই ভুল টা করলো নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো।
সবাই চলে গেলো।
এদিকে ইশানের দুলাভাই কে খোঁজার জন্য পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
দিশা সীমার সাথে আবার চলে গেলো।
ইশান এবার আর তাকে বাঁধা দিলো না।
কারন কারো মনের বিরুদ্ধে জোর করা ঠিক হবে না।
চলবে,,,,,,
সবার মতামত জানতে চাই।
ধন্যবাদ সবাইকে।