#love_is_like_a_Cocktail
Writer: Abir Khan
Part: 04
অন্যসব দিনের মতো আজকের দিনটা হলেও হতে পারতো। কিন্তু আজ একটু ব্যতিক্রম হলো। জান্নাত কলেজের সামনে যেতেই ও পুরো অবাক। কারণ হৃদয় দাঁড়িয়ে আছে ওর দিকে তাকিয়ে। ও রিকশা থেকে নামতেই হৃদয় ওর কাছে চলে আসে আর রিকশাওয়ালাকে ভাড়া দিতে নেয়৷ জান্নাত ওকে দ্রুত থামিয়ে দিয়ে বলে,
~ আরে আরে কি করছো! তুমি ভাড়া দিচ্ছো কেন? আমি দিব ত।
– না আমি দিব৷ মামা ভাড়া কত?
~ প্লিজ হৃদয় এমন করো না৷ আমার ভাড়া আমিই দিব। প্লিজ।
– জান্নাত তুমি কি তাহলে আমাকে ফ্রেন্ড ভাবো নি? তাই এমন করছো?
জান্নাত দেখে হৃদয় মুখখানা কালো করে ফেলেছে৷ ওর খুব খারাপ লাগে৷ ও দ্রুত স্বরে বলে উঠে,
~ একদম না৷ ফ্রেন্ড তো মেনেছি তোমাকে। তাই বলে আমার ভাড়া তুমি দিবে তা তো ঠিক না। তাই না?
– আমি কোন কিছু জানি না৷ আজ তো আমি ভাড়া দিবোই দিব৷ এই মামা ভাড়া কত বলেন?
– ৬০ টাকা।
– এই নেন।
হৃদয় একপ্রকার জোর করেই ভাড়াটা দিয়ে দেয়৷ জান্নাত অসহায়ের মতো তাকিয়ে থাকে। হৃদয় ভাড়া দিয়ে বিজয় হাসি দিয়ে জান্নাতের দিকে তাকিয়ে বলে,
– এবার চলো ক্লাসে যাওয়া যাক৷
~ তুমি এটা ঠিক করলে হৃদয়? আমার এখন খারাপ লাগছে।
– আহ! আমি খুশি হয়ে দিয়েছি। আর তুমি এখনো ভাড়া নিয়ে ভাবছো? আমি যে সেই সকাল থেকে তোমার জন্য ভার্সিটির সামনে অপেক্ষা করলাম তার কি হবে বলো?
জান্নাত হাঁটতে হাঁটতে ভাবে, আসলেই তো, হৃদয় ওর জন্য এতক্ষণ অপেক্ষা করছিল! জান্নাত আস্তে করে বলে,
~ আমার মতো একটা মেয়ের জন্য কেন অপেক্ষা করলে? কত সুন্দরী ভালো মেয়ে আছে আরও।
– থাকুক। আমার ত তোমাকেই ভালো লেগেছে। আর আমার কাছে তুমি সবচেয়ে সুন্দরী আর ভালো বুঝছে?
জান্নাত হৃদয় এর কথা শুনে মুগ্ধ হয়ে যায়। সাথে একটু লজ্জাও পায়৷ হৃদয় সেটা বুঝতে পেরে ওর দিকে একটু তাকিয়ে ওকে দেখে আস্তে করে ওর একটু কাছে এসে বলে,
– লজ্জা পেলে তোমাকে দারুণ লাগে৷ মনে চায়…হাহা৷
হৃদয় এর কথা শুনে জান্নাত তো এখন লজ্জায় পুরো লাল টুকটুকে হয়ে গিয়েছে। হৃদয় যে ওর এত ক্লোজ হয়ে যাবে তাও আবার এত তাড়াতাড়ি জান্নাত তা কখনো ভাবে নি৷ ও ভেবেছিল হৃদয় হয়তো আজ ওকে তেমন পাত্তা দিবে না৷ কিন্তু এরকম কিছুই হলো না৷ ওর মতো এরকম একটা ফেমাস হ্যান্ডসাম ছেলের কাছ থেকে এত রেস্পন্স পাবে ও ভাবতেই পারে নি। জান্নাতের কাছে সবটা যেন স্বপ্নের মতো লাগছে। এদিকে ওদের দুজনকে একসাথে দেখে ক্লাসের সব মেয়েরা হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। জান্নাত সেটা বেশ বুঝতে পারছে। হৃদয় জান্নাতকে নিয়ে ক্লাসে এসে ওর বাকি বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়৷
– ফ্রেন্ডস আজ থেকে ও তোদেরও ফ্রেন্ড। আমার ফ্রেন্ড মানে তোদেরও ফ্রেন্ড। সো ওর সাথে সবাই পরিচিত হ।
– পরিচয় আর কি হবো৷ আমরা তো একই ক্লাসের সবাই। তারপরও তুই যখন বলছিস তাহলে তো হতেই হয়৷ হাই, আমি রনি।
~ হাই। (হাসি দিয়ে)
– আমি শুভ।
– আর আমি জিহাদ। আমরা কি তোমার ফ্রেন্ড হতে পারি?
~ হ্যাঁ পারো।
– গুড গার্ল। তাহলে তুমি থাকো আমরা একটু ক্যান্টিন থেকে আসি৷ কোন প্রবলেম হলে কল দিও।
~ আচ্ছা। কিন্তু..
– কিন্তু কি?
~ তোমার নাম্বারটাই তো আমার কাছে নেই৷
– দেখছোছ অবস্থা। তাড়াতাড়ি নাম্বারটা দে।
– আমি বলছি তুমি লেখো। (রনি)
~ ওকে৷
জান্নাত হৃদয় এর নাম্বারটা ফোনে তুলে একটা কল দিয়ে দেয়৷ হৃদয়ও ওর নাম্বারটা পেয়ে যায়৷ এরপর হৃদয় ওর ফ্রেন্ডসদের নিয়ে চলে যায়৷ জান্নাত খুব খুশি হয়ে নিতুর কাছে যায়। নিতু এতক্ষণ ওদেরকেই দেখছিল। জান্নাতকে দেখে রসিকতা করে বলে,
~ হুম বুঝলাম, আমার বেস্ট ফ্রেন্ডটা এত হ্যান্ডসাম বয়ফ্রেন্ড পেয়ে তার বেস্ট ফ্রেন্ডকেই শেষমেশ ভুলে গেল। ভালো ভালো।
জান্নাত নিতুর পাশে বসে বলে,
~ কি আবোল তাবোল বকছিস চুপ কর। আমি তোকে কখনোই ভুলতে পারি না৷
~ জানি জানি। একটু মজা করলাম৷ হিহি। জানিস আমার কি মনে হয়, হৃদয় তোকে অনেক পছন্দ করে।
~ যাহ! কি বলছিস! অসম্ভব এটা৷
~ একদম না৷ তুই এখনো বুঝিস নাই হৃদয় তোকে পছন্দ করে? আরে পছন্দ করে বলেই তো তোর সাথে এত ভাব করলো আর আজ তোকে ওর বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। তুই আসলে কিছুই বুঝিস না৷
জান্নাত ভেবে দেখে, আসলেই কি হৃদয় ওকে এত পছন্দ করে? ওর মতো এত সামান্য একটা মেয়েকে কেনই বা হৃদয় এত অ্যাটেনশন দিচ্ছে? কেন? তাহলে কি নিতুর কথাই সত্য? জান্নাত এসব ভেবে খুব লজ্জা পাচ্ছে। এ যেন অজানা একটা অনুভূতি। ওর মুখখানা লাল হয়ে গিয়েছে লজ্জায়। নিতু পাশ দিয়ে হাসতে হাসতে বলে,
~ একটু আগে তো কত কিছু বললি এখন লজ্জা পাস কেন হুম?
~ যাহ! বাদ দে তো৷ ওই যে স্যার আসছে। (ভীষণ লজ্জা পেয়ে)
এরপর ওদের ক্লাস শুরু হয়। হৃদয় ক্লাসের মাঝে অনেক বার জান্নাতের দিকে তাকাচ্ছিল। জান্নাত তো লজ্জায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। দুইটা ক্লাস হলে টিফিন পিরিয়ড আসে। টিফিন পিরিয়ডে জান্নাত আর নিতু একসাথে বসে গল্প করছিল, আসলে জান্নাতের কাছে এত টাকা নেই যে ক্যান্টিনে গিয়ে কিছু খাবে। তাই নিতুর সাথে বসে বসে গল্প করছিল। হঠাৎই পিছন থেকে হৃদয় এসে ডাক দেয়।
– জান্নাত…
জান্নাত পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে হৃদয় হাসি দিয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। ও উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
~ হ্যাঁ বলো।
– চলো ক্যানটিনে যাবে৷
~ না মানে হঠাৎ ক্যানটিনে?
– বোকা মেয়ে একটা। টিফিন পিরিয়ড যেহেতু টিফিন খাবে না? চলো চলো।
জান্নাত আস্তে করে মাথা নিচু করে বলে,
~ হৃদয় আমার কাছে তেমন টাকা নেই। সরি।
হৃদয় খুব অবাক হয়ে বলে,
– আচ্ছা নিতু ও কি আসলেই এমন? একটা মেয়ে এমন হয় কিভাবে? এই বোকা মেয়ে, আমি খাওয়াবো। আর তুমি ভাবলে কীভাবে আমি তোমার কাছ থেকে টাকা নিব? চলো তো।
~ ছিঃ ছিঃ হৃদয় কি বলছো! এটা অসম্ভব। খুব খারাপ দেখায়৷ এমনিতেই সকালে ভাড়া দিয়েছো এখন আবার টিফিন। না না প্লিজ।
– জান্নাত আমি আমার অন্য ফ্রেন্ডদেরও খাওয়াই। কারণ আমার ভালো লাগে৷ উফফ চলো তো। নিতু তুমি আসবে?
~ না না তোমরা যাও। আমি তো খেয়ে ফেলেছি।
– ওকে।
হৃদয় একপ্রকার জান্নাতের হাত ধরে ওকে নিয়ে ক্যানটিনের দিকে যেতে থাকে। জান্নাত লজ্জায় চুপচাপ হৃদয় এর সাথে ক্যানটিনে চলে যায়। হৃদয়ের এমন আচরণে জান্নাত কিন্তু রাগ হচ্ছে না বরং ভালোই লাগছে ওর। ওকে যে কখনো কেউ এত কেয়ার করবে ও কল্পনাও করে নি৷ জান্নাতের খুব খুশি লাগছে৷ তবে কি হৃদয় ওকে সত্যিই এত পছন্দ করে? নাকি ভালবাসে? জান্নাতের কেমন জানি অন্যরকম একটা অনুভূতি হচ্ছে। ও ঠিক বুঝতে পারছে না৷ হৃদয় অনেক কিছু নিয়ে আসে জান্নাতের জন্য৷ জোর করে ওকে খাওয়ায়৷ জান্নাত বাধ্য হয়ে খায়৷ টিফিন খাওয়া শেষ হলে ওরা ক্লাসের দিকেই আসছে। ওরা দুজন একদম পাশাপাশি হাঁটছে। অনেক সুন্দরী মেয়ে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। হৃদয় হঠাৎ বলে উঠে,
– উফ! কি যে করি…
~ কি হয়েছে? কোন সমস্যা?
– হুম।
~ কি সমস্যা আমাকে বলা যাবে?
– হুম যাবে৷ আসলে কাওসার স্যারের এসাইনমেন্টটা এখনো করা হয়নি। অথচ কাল জমা দিতে হবে৷ কি যে করি…
~.এই কথা। এক কাজ করো, তুমি আমার এসাইনমেন্টটা নিয়ে তোমারটা করে ফেলো।
– সত্যি বলছো জান্নাত? (খুব খুশি হয়ে)
~ হ্যাঁ সত্যিই।
– থ্যাঙ্কিউ থ্যাঙ্কিউ সো মাচ। উফফ! কি যে চিন্তায় ছিলাম। অনেক থ্যাংকস তোমাকে।
জান্নাত হাসে। ওর এখন খুব ভালো লাগছে। কারণ শেষমেশ ও অন্তত হৃদয়ের কোন কাজে এসেছে। ওরা ক্লাসে আসলে বাকি দুইটা ক্লাস শুরু হয় একে একে। ক্লাস শেষ হলে জান্নাত ওর এসাইনমেন্ট কপিটা হৃদয়কে দেয়৷ হৃদয় খুব খুশি হয়ে সেটা নিয়ে ওকে বিদায় দিয়ে চলে যায়৷ জান্নাতও খুব খুশি হয়ে হৃদয়কে বিদায় দেয়৷ হৃদয় ক্লাসের বাইরে এসে শুভর কাছে জান্নাতের এসাইনমেন্টটা দিয়ে বলে,
– বয়েস, এসাইনমেন্ট। হাহা৷
– মাম্মাহ! অস্থির। (ররি)
– আমারটা যেন সুন্দর মতো হয়ে যায়৷ (হৃদয়)
– হয়ে যাবে মামা, নো টেনশন। (জিহাদ)
– মামা সেই একটা খেলায় নামছোছ। (শুভ)
– হাহা। আস্তে আস্তে দেখ কি করি। চিন্তা নাই তোরাও ভাগ পাবি। চল।
হৃদয় আর ওর ফ্রেন্ডরা হাসাহাসি করতে করতে চলে যায়৷ আর জান্নাত হৃদয়কে নিয়ে এটা ওটা ভাবতে বাসার দিকে চলে আসে।
অন্যদিকে আবিরের বাসায়,
আবির সেই সকালে ঘুম দিয়ে উঠেছে সন্ধ্যায়৷ তাও আবার মাইশার ডাকে।
~ বেবি…এই বেবিইই উঠো। দেখো কে এসেছে।
আবির আস্তে করে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে মাইশা। ওর ঠোঁটের কোণায় সাথে সাথে হাসির রেখা ফুটে উঠে। আবির মাইশাকে দেখে খুব খুশি হয়। ও উঠে বসতে বসতে বলে,
– তুমি এসেছো? অনেক মিস করছিলাম তোমাকে।
~ জানি বেবি। আমিও খুব মিস করছিলাম। তাই তো চলে এসেছি তোমার কাছে।
– থ্যাঙ্কিউ।
~ হাতের অবস্থা কেমন এখন?
– এখন ভালো। সকালে অনেক ব্যথা করছিল।
~ ওহ! তুমি নাকি সেই সকাল থেকে ঘুম?
– হুম।
~ বলো কি কিছু খাও নি?
– না৷
~ তুমি বসো আমি খাওয়ার কিছু নিয়ে আসি।
– আহহা! মাইশা থাক। কষ্ট করতে হবে না৷
~ চুপ করো।
আবিরের খুব ভালো লাগে মাইশার কেয়ার৷ মাইশা ওর জন্য স্যুপ আর জুস নিয়ে আসে। এনে আবিরকে খেতে দেয়৷ আবির এখন হাত নড়াচড়া করতে পারে। স্যুপটা খেতে গিয়ে আবিরের হঠাৎ জান্নাতের কথা মনে পড়ে। জান্নাত ওকে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়েছিল কিন্তু মাইশা ওমন মেয়ে না৷ তাও ওকে যে খাবার এনে দিয়েছে তাই অনেক। আবির খাবার খেয়ে মাইশাকে কাছে টেনে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,
– এবার বলো কি বলবে। কিছু যে একটা তুমি বলবে তা আমি বুঝেছি।
মাইশা অবাক হয়ে আবিরের দিকে তাকায়। আর বলে,
~ এই আবির সত্যি করে বলো তো তুমি কিভাবে সব বুঝে যাও?
আবির মাইশাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
– কারণ আমি তোমাকে সত্যিকারের ভালবাসি।
~ আমিও বেবি।
– জানি। এবার কি বলবে সেটা বলো।
মাইশা মাথা তুলে অসহায় মুখ করে বলে,
~ আসলে বেবি আমাকে প্রায় একমাসের জন্য ঢাকার বাইরে মানে সিলেটে যেতে হবে ফটোশুটের জন্য৷
– একমাস?
~ না না পুরো একমাস লাগবে না৷ তার আগেই চলে আসবো৷
আবিরের খুব খারাপ লাগে। কিন্তু ও মাইশাকে বুঝতে দেয় না৷ ও হাসি দিয়ে বলে,
– ঠিক আছে যাও। কোন সমস্যা নেই।
~ সত্যিই? তুমি কিছু মনে করো নি তো?
– না না৷ আচ্ছা এতদূর যাচ্ছো টাকা শপিং কিছু লাগবে?
~ উমম, লাগতো তো।
– আচ্ছা নিলয়কে বলে দিচ্ছি। যা লাগে নিয়ে নিও।
~ বেবিইইই তুমি এত্তো ভালো কেন? উম্মাহ।
আবিরের ঠোঁটে কিস করে দেয় মাইশা। আবির ওকে ছাড়িয়ে বলে,
– এইই বলেছি না বিয়ের আগে নো দুষ্টামি।
~ আচ্ছা বাবা৷ তুমি এমন কেন? সব ছেলেরা আমাকে পাওয়ার জন্য পাগল। আর তুমি আমাকে এত কাছে পেয়েও আপন করে নেও না৷
– কারণ আমি তোমাকে বিয়ে করবো। তারপর সারাজীবনের জন্য আপন করে নিব৷ বিয়ের আগে নো টাচিং মাচিং৷ হাহা৷
আবির হেসে দেয়৷ মাইশা আবিরের দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসে। তারপর বলে,
~ আচ্ছা তাহলে এবার আমি যাই। প্যাকিং করতে হবে।
– ওকে। আমি নিলয়কে বলে দিচ্ছি তোমাকে নামিয়ে দিয়ে আসবে নে৷
~ না না লাগবে না৷ আমি গাড়ি নিয়ে আসছি।
– ওহ! তাহলে সাবধানে যেও।
~ ওকে বেবিইই৷
মাইশা আবিরকে বিদায় দিয়ে চলে যায়। ও আবার একা হয়ে যায়। আজকাল মাইশাকে একদম কাছে পায় না আবির। ঠিক মতো দুটো কথাও হয় না। আবির ভেবেছিল এই একমাস মাইশাকে নিয়ে কাটাবে৷ কিন্তু হলো তার বিপরীত। ও ঠিক করে ও সুস্থ হলে মাইশাকে সারপ্রাইজ দিয়ে সোজা বিয়ের জন্য প্রপোজ করবে৷ এই আশা নিয়েই ও একা ওর বিশাল বড়ো রুমটায় বসে থাকে। হঠাৎ নিলয় এসে বলে,
– স্যার একটা খবর আছে।
সেদিনের পর দীর্ঘ একমাস চলে যায়। আবিরের কাছে এই একমাস অনেক লম্বা একটা সময় মনে হয়েছে। সারাদিন বাসার ভিতরেই ও ছিল। আজ ও একদম সুস্থ। হাতের ক্ষতটা না থাকলেও দাগটা এখনো যায় নি। আবির এখন রেডি হচ্ছে মাইশাকে সারপ্রাইজ দিতে যাবে৷ আজ ও অনেক সুন্দর করে নিজেকে রেডি করেছে। ডার্ক কালারের ব্ল্যাক স্যুট আর প্যান্ট পরেছে। হাতে রোলেক্সের ঘড়ি। চুলগুলো জ্যাল দিতে সেট করা। একদম ড্যাসিং রিচ বয় লাগছে ওকে৷ আবির একটা অনেক দামী ডায়মন্ডের রিং আর একগুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে ওর পার্সোনাল বিএমডব্লিউ এস ক্লাস গাড়িটা নিয়ে সোজা রওনা হয় মাইশার বাসায়৷। মাইশা একটা এপার্টমেন্টে একা থাকে। আবির আজ পর্যন্ত কোন দিন রাতে ওর এপার্টমেন্টে থাকে নি। তবে দিনে অনেক সময় থেকেছে। কিন্তু কোন খারাপ কাজ করে নি। ও মাইশাকে এই এপার্টমেন্টটা কিনে দেওয়ায় ওর কাছে আরেকটা চাবি ছিল সেটা নিয়েই ও যাচ্ছে মাইশাকে সারপ্রাইজ দিতে। মাইশা জানে আবির গতরাতে অস্ট্রেলিয়া গিয়েছে। আসলে ওকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য আবির এটা বলে। এক ঘণ্টা ড্রাইভ করে আবির মাইশার এপার্টমেন্টের সামনে চলে আসে। এখন কিন্তু সকাল বেলা। মানে মাইশা ঘুমাচ্ছে৷ তাই আবির ওকে সকাল সকাল সারপ্রাইজ দিতে চলে এসেছে। ও চাবিটা নিয়ে আস্তে করে দরজার লক খুলে বাসার ভিতরে ঢুকে পড়ে। ভিতরে ঢুকতেই ওয়াইনের ঘ্রাণ এসে আবিরের নাকে লাগে৷ সাথে আবির সামনে তাকিয়ে দেখে ফ্লোরে ওয়াইনের বোতল পড়ে আছে কয়েকটা৷ আবিরের ভ্রুকুচকে যায়৷ মাইশা একা একা ওয়াইন খাবে কেন? আবির হাতে লাল গোলাপের গুচ্ছ আর পকেটে ডায়মন্ডের রিংটা নিয়ে মাইশার বেড রুমের দিকে যায়। আস্তে আস্তে গিয়ে যেই দরজা খুলতে যাবে ওমনি ওর কানে কেমন অদ্ভুত সব শব্দ ভেসে আসে৷ আবির জানে এসব শব্দ কেন হচ্ছে। কারণ দরজার ওপারে আদিম খেলায় ব্যস্ত কোন যুগল। ও আর একমুহূর্ত সময় নষ্ট না করে ঠাস করে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে যায় আর দেখে….
চলবে…?