খেলাঘর.পর্ব-২৫
লেখা- সুলতানা ইতি
ঠিক আছে এই নিয়ে আমরা পরে কথা বলবো এখন চলো মোম ড্যাড তোমার জন্য অপেক্ষা করছে
ইভান- চলো মাই জান
মিথিলার ফোন অনেক্ষন থেকে বেজেই যাচ্ছে ফোন রিসিভ করতে তার ইচ্ছে করছে না, সে জানে ফোনের অপাশে তার জন্য কি খবর অপেক্ষা করছে,
এক সময় অধৈর্য্য হয়ে ফোন রিসিভ করে
নির্ঝরিণী -আপু তুই ফোন রিসিভ করছিলি না কেনো?.
মিথিলা- কিছু বলবি?
নির্ঝরিণী – অনেক কিছুই তো বলবো
মিথিলা- বল
নির্ঝরিণী – মার অসুখ বেড়ে গেছে রে, তোর দেয়া টাকা গুলো ও শেষ
মিথিলা নিরুত্তাপ কন্ঠে বল্লো
– শেষ হওয়ার ই কথা
নির্ঝরী – বড় দুলা ভাই জুয়া খেলতে গিয়ে ধরা পড়েছে পুলিশ হাজতে আছে
মিথিলা শান্ত কন্ঠে বল্লো
– এতে আমরা কি করতে পারি এমন টা তো হওয়ার ই ছিলো
নির্ঝরিণী – জানি না কিন্তু আপু খুব কাঁদছে
মিথিলা রোবটিক কন্ঠে বল্লো
– কাদার ই কথা
নির্ঝরিণী – আপু তুমি কি আমার সাথে জোক করছো
মিথিলা- তোর কি তাই মনে হয়
নির্ঝরিণী – জানি না আমি রাখছি
নির্ঝরিণী কল অফ করে দেয়, বাবা যেতে না যেতে সংসার টার কি হয়ে গেলো,ভাই পড়াশুনা ছেড়ে দিয়ে ভণ্ডামি করছে মা অসুস্থ হয়ে গেছে মিথিলা আপু কেমন যেন পালটে গেছে,ওকে আকড়ে ধরে বাছতে ছেয়েছি কিন্তু আজকের কথা গুলো শুনে কেমন যেন মনে হচ্ছে
উফফ আল্লাহ এই সাজানো গোছানো সংসারে কার নজর পড়েছিলো, আজ অনেক দিন মা অসুস্থ ঠিক মতো ওষুধ চলছে না আমি কি করবো,
নাহ আমাকেই কিছু একটা করতে হবে আমার মায়ের জন্য,,পাশের বাসার আন্টি ব্যাগ বানিয়ে মার্কেটে বিক্রি করে,আজ থেকে তার সাথে আমি ও যোগ দিবো
মিথিলার পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে আপাদাত সব চিন্তা বাদ দিয়ে মন দিয়ে লেখা পড়া টাকে কাছে টেনে নিয়েছে মিথিলা, দু সাবজেক্ট শেষ মোটামুটি ভালো ই হয়েছে পরিক্ষা গুলো বাকি গুলো এমন হলেই হয়
কাল অর্থনীতি পরীক্ষা মিথিলা পড়ছে, এমন সময় মিথিলার ফোনে কল আসে, ফোন স্ক্রিনে নাম্বার দেখে মিথিলা একটু অবাক হলো
ইভান কল করেছে তা ও আমাকে মিথিলা কল রিসিভ করার আগেই কল কেটে যায় একটা মেসেজ আসে
‘মিথিলা এখন ই তুমি আমার অফিসে চলে আসো,আমি গাড়ি পাঠাচ্ছি’
কিহহ অফিস যেতে বলেছে আমি কি ভুল পড়েছি মিথিলা আবার করে মেসেজ টা পড়ে নাহ ভুল না তা হলে, উনি কেনো আমায় অফিস যেতে বলেছে
যেতে যখন বলেছে তা হলে যাওয়া যাক দেখি কি হয়
মিথিলা চুল গুলো ঠিক করে নিলো, চশমা টা ভালো করে মুছে নিলো
মিসেস আয়মন- কিরে মিথিলা কোথায় ও বেরুচ্ছিস নাকি
মিথিলা- মা আপনার ছেলে অফিসে যেতে বলেছে
মিসেস আয়মন- কি বলছিস? ইভু তোকে যেতে বলেছে
মিথিলা- হুম
মিসেস আয়মন খুশি হলো
– ঠিক আছে মা যা তা হলে
মিথিলা বেরিয়ে গেলো
কয়েক ঘন্টার মধ্যে মিথিলা পৌছে গেলো
অফিস কাউন্টার থেকে ইভানের কেবিন কোন ফ্লোরে জেনে নিলো
মিথিলা নক না করেই ইভানের কেবিনে ডুকে গেলো,, কেবিনে গিয়ে যে দৃশ্য দেখলো তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না মিথিলা
সেদিনের সেই মেয়েটা ইভান কে জড়িয়ে ধরে আছে ইভান ও তাকে বুকের সাথে মিশিয়ে রেখেছে
মিথিলার উপস্থিতি ইভানরা কেউ টের পায়নি
মিথিলার হাত পা কাঁপছে, সেখান থেকে শরে আসার মতো শক্তি যেন তার নেই
মিথিলার হাত লেগে একটা ফুলের টব পড়ে যায়
ইভান চমকে উঠে তাকিয়ে দেখে মিথিলা দাঁড়িয়ে আছে
ইভান- এ কি তুমি এখানে? শেষ পর্যন্ত এখানে ও চলে এসেছো,, বড় লোক ছেলে কে হাত করার এতো শখ তোমার
ওহ শখ তো হবেই এখন এই রকম চালবাজি করেই তোকে তোর বাবার সংসার চালাতে হবে
শুন যা দেখেছিস দেখেছিস সব ছেপে যাবি আব্বু আম্মু কে কিচ্ছু বলবি না তার বিনিময়ে তুই অনেক টাকা পাবি যা দিয়ে তুই তোর বাবার ভাংগা সংসার টা কে ঝোড়া লাগাতে পারবি
মিথিলা অবাক দৃষ্টিতে ইভানের দিকে ছেয়ে আছে এতো দিন ভেবেছে ইভান রাগি কিন্তু আজ আর তা মনে হচ্ছে না,আজ চরিত্রহীন মনে হচ্ছে
নায়া- ডার্লিং কে ও?
ইভান- জান বুঝতে পারছো না সে ছোট লোকের বাচ্ছা টা
নায়া- ও এই কি সেই,শুনো ইভান কে স্বামি হিসেবে পাবে এটা ভুলে যাও, আর কিছু দিন পরেই আমরা বিয়ে করছি
মিথিলার মাথা ঘুরছে মনে হচ্ছে এই বুঝি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাবে
নাহ আমাকে এখন জ্ঞান হারালে চলবে না মিথিলা অনেক কষ্টে অফিস থেকে বেরিয়ে আসে এলো মেলো পা ফেলে হাটছে সে উদ্দেশ্য হীন ভাবে
চলবে
ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন