#Khatarnak_Isq.[Impossible Love]
#Sumaiya_Moni.
#Part_12.
_______________________
খুশিতে আত্মহারা এলেন। ভাবতে পারেনি আলফি ওকে ভালোবাসে। পার্টি থেকে বাসায় এসে আলফি বের হয় এলেনের সাথে দেখা করার জন্য। আজ তারা অনেক খুশি। তাঁরা ভরা আকাশ জুড়ে উঁড়ে বেড়াচ্ছে এক জন আরেক জনের হাত ধরে। এলেন হাত ছড়িয়ে জোরে চিৎকার করে বলে,আই লাভ ইউ আলফি। আই লাভ ইউ। আলফিও জোরে চিল্লিয়ে এলেনকে ভালোবাসি বলে। দু’জন দু্জনকে জড়িয়ে ধরে।
মাটিতে দাঁড়িয়ে ইয়ান সব কিছু দেখছে। রাগ ক্ষোভ তার মনের মধ্যে বাসা বেঁধেছে। পার্টিতে সময় থামিয়ে দেওয়ার পর সবাই স্যাচু হয়ে বসে থালকেও ইয়ান স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু এলেন,আলফিকে সেটা বুঝতে দেয়নি। চুপ করে আলফির কথা গুলো শুনে গেছে। এখন ওদের এক সাথে দেখে রেগেমেগে আগুন হয়ে আছে ইয়ান। আলফি তার রুল ভঙ্গ করেছে। তার সাথে ওর মামা জিনানের কথা অমান্য করেছে। ওদের প্রেম লিলা না দেখে ইয়ান চলে আসে বাসায়। জিনানকে সবটা খুলে বলে। জিনানও আলফির উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এখন কিছু বলবে না। যা বলার আলফি বাড়ি ফিরলে বলবে। অপেক্ষা করেন তারা।
-“এলেন এখন আমাকে যেতে হবে। তুমি তোমার রাজ্যে ফিরে যাও।”
-“আর কিছুক্ষণ সময় থাকো আলফি। পরে যেও।”
-“নাহ! এখনি যাব। আমার জ্বীন রাজ্যে যেতে হবে।”
-“কেন?”
-“আমার মামাকে তোমার কথা বললে বুঝবে না। তাই ইমতিয়াজ চাচ্চুকে সব বুঝিয়ে বলতে হবে আমার। তিনি আমার কথা ঠিক বুঝবেন।”
-“আমাদের ভালোবাসার কথা বলবে না তাকে?”
-“হ্যাঁ! আমাদের ভালোবাসার কথা তাকে বলব।”
-“যদি মেনে না নেয়?”
আলফি সরু নিশ্বাস ফেলে,
-“জানি না কপালে কী লেখা আছে। কিন্তু আমি তোমাকে হারাতে চাই না এলেন।”
-“আমিও চাই না আলফি।” কথাটা বলে এলেন আলফির গালে হাত দেয়। আলফি এলেনকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয় আলফি। এলেনকে বিদায় দিয়ে চলে আসে জ্বীন রাজ্যে। সেখানে এসে জানতে পারে ইমতিয়াজ কে পাওয়া যাচ্ছে না আজ দু দিন হলো। আলফি অবাক হয় সবার কথা শুনে। জ্বীন-পরীরা এটাও বলে এই বিষয়টা নাকি ইয়ান,জিনান জানত। অথচ,আলফিকে একটিবারও বলেনি। রাগ হচ্ছে আলফির। মনের মধ্যে কেমন যেন তাদের প্রতি সন্দেহ তৈরি হচ্ছে। আলফি তাদের উদ্দেশ্যে বলে,
-“আমি আদেশ দিলাম আপনাদের। এই জ্বীন রাজ্যে ইয়ান ও আমার মামা জিনানকে প্রবেশ করতে দিবেন না। যদি তাদের কোনো গুপ্তচর সঙ্গি এখানে থেকে থাকেন। আর পরবর্তীতে সেটা জানতে পারি। তাহলে তার মৃত্যু আমার হাতেই হবে।”
সবাই আলফির কথায় সহমত হয়। আলফি চলে আসে বাসায়।
.
.
ভ্যাম্পায়ার কিংডম…..
এলেন রাজ্যে ফিরে দেখে কিছু দুষ্ট জ্বীনরা ওদের রাজ্যে আক্রমণ করেছে। কিছু ভ্যাম্পায়ার ও জ্বীনদের লাশ পড়ে আছে চারদিক। আর তার চেয়ে বড় বিষয় কিং এবিলকে জ্বীনরা মেরে ফেলেছে। ইয়াঙ্ক রাজ্যে থাকলেও এরোনও রাজ্যে ছিল না। এলেন ওর ড্যাডের মৃত্যুতে অনেকটা ভেঙে পড়ে। হতাশ হয়ে যায় কী করবে এটা ভেবে। ইয়াঙ্ক এলেনের কাঁধে হাত রেখে বলে,
-“এলেন! এসব শাহজাদী কায়রা করিয়েছে। কায়রা চায় ভ্যাম্পায়ার রাজ্য ধ্বংস করে দিতে। ভ্যাম্পায়ারদের দুনিয়া থেকে বিলুপ্ত করে দিতে।”
এলেন ইয়াঙ্কের কথাটা শুনে তাঁর দিকে রক্তচক্ষে তাকায়। বলে,
-“কায়রা আমার ভালোবাসা। আরেকটা মিথ্যে কথা বললে আপনার দেহে জনটা থাকবে না।”
ইয়াঙ্ক এলেনের কথা শুনে চুপশে যায়। কথাটা বলে এরোনের উদ্দেশ্যে বলে,
-“এরোন! তুই রাজ্যে থাক। আমি আলফির কাছে যাচ্ছি। আমার মনে হচ্ছে আলফি বিপদে আছে।”
-“আচ্ছা যাহ তুই। আমি আছি এখানে।”
এলেন দেরি না করে পাখা মেলে উড়ে যায় আকাশে। আলফিদের বাড়িতে এসে দেখে কেউ নেই। পুরো বাড়ি ফাঁকা। ড্রইংরুমের জীনিস পত্র এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। এলেন প্রত্যেকটা জিনিস স্পর্শ করে দেখতে থাকে কিছুক্ষণ আগে এখানে কী হয়েছিল।
-“আলফি তুমি আমার নির্দেশ অমান্য করেছো। আরলেনকে তুমি মারোনি। ” রেগে বলেন জিনান।
-“আরলেরদের কোনো দোষ নেই। এসব যা হচ্ছে স্যামের জন্য হচ্ছে। স্যাম নেকড়েদের সাথে মিলে মানুষদের মারছে। ”
-“সত্যি,মিথ্যে তুমি কী করে জানলে? আর তুমি কী এটা ভুলে গেছো তোমার বাবা,মা কে এলেনের বাবা মেরেছে।”
-“ভুলে যাওয়ার মেয়ে আমি নই! আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো কেনো সে আমার বাবা,মা কে মেরেছে। কী হাছিল করেছে তাঁদের মেরে।”
-“এগুলো জিজ্ঞেস করার সময় এখন নয়। ভ্যাম্পায়ারদের তুমি শেষ করে দিনে। ওদের বিলুপ্ত করে দিবে দুনিয়া থেকে।”
-“মামা,আপনি এত পাষান কবে থেকে হলেন? নাকি এত দিন মিথ্যে নাটক করেছিলেন আমার সাথে?”
-“কী বলতে চাও তুমি?” রেগে বলে জিনান।
-“এটা বলতে চাই আমি,ইমতিয়াজ চাচ্চু আজ দু দিন ধরে ঘায়েব! অথচ,আপনারা দু’জন এটা জেনেও আমাকে বলেনি কেন? কী কারণ ছিল না বলার?”
জিনান পৈশাচিক হাসি দেয়। বলে,
-“সে তো আমার কাছেই বন্দি। এখন তোকেও বন্দি করবো আমি।” বলেই আমফিকে ধরতে নিলে আলফি সরে আসে। ইয়ানও তার আসল রূপে দেখায় জিনানের মতো। আলফি ভাবতেও পারেনি ইয়ানও ওর মামার সাথে খারাপ কাজে লিপ্ত ছিল। আলফির সাথে তাঁদের দুজনার হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়৷ আলফি বেশ শক্তিশালী হলেও তাঁদের সাথে একা মোকাবেলা করা সম্ভব হয় না। আলফি তলোয়ার আনতে নিলেই জিনান আলফিকে আটকে ফেলে কোনো এক শক্তি দিয়ে। আলফি নড়াচড়া করতে পারে না। শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অনেক চেষ্টা করে নিজেকে ছাড়ানোর। জিনান কোনো এক দঁড়ি বের করে। আলফির গায়ে জড়িয়ে জোরে টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জোরে চিৎকার করে ওঠে আলফি। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিস্তেজ হয়ে যায় আলফি।
জিনান ইয়ানকে নির্দেশ দেয় আলফিকে তাঁদের রাজ্যে নিয়ে যেতে। ইয়ান আলফিকে নিয়ে যায়। জিনানও চলে যায় সেখান থেকে।
এলেন বুঝতে পারে আলফি এখন কোথায় আছে।কারা এর সাথে জড়িত। দৌড়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। নিজের রাজ্যে ফিরে এসে আগে কিং এবিলের মৃত দেহ একটি কফিনে রেখে দেয় যত্ন সহকারে।
তারপর রাজ্যে ঘোষণা করে,
-“আজ থেকে আমি এই ভ্যাম্পায়ার কিংডমের কিং। আপনাদের সুযোগ সুবিধা দেখবাল করার ভাব আমার উপর দিন।”
আগে থেকে সবাই জানত এলেন পরবর্তীতে এই রাজ্যের কিং হবে। তাই সবাই এলেনকে মেনে নেয়।কারো কোনো আপত্তি থাকে না। আরো সবাই খুশি হয় এলেনকে কিং হিসাবে পেয়ে। এলেন কোষাগারে দাঁড়িয়ে নিজের শক্তি প্রয়োগ করে রাজ্যের চারদিক ঘেরাও করে ফেলে শক্তি দিয়ে। কিছুক্ষণ পর সবকিছু স্বাভাবিক হয়।এলেন বলে,
-” আজকের পর থেকে ভ্যাম্পায়ার ছাড়া। এই রাজ্যে কেউ প্রবেশ করতে পারছে না। শুধু পবিত্র আত্মা প্রবেশ করতে পারবে। ”
এলেন চুপ থেকে ফের চিল্লিয়ে বলে,
-“যুদ্ধ হবে। দুষ্ট জ্বীন ও স্যামের সাথে। ওদের এই দুনিয়া থেকে বিলুপ্ত করে দেবো আমরা। ”
-“এলেন আমাদের কাছে বেশি লোক নেই। কী…….।”
এলেন এরোনকে থামিয়ে বলে,
-“জানা আছে আমার। তাই জ্বীন রাজ্যে গিয়ে তাঁদের সাথে করা বলবো আমি। কায়রা এখন দুষ্ট জ্বীন জিনান ও ইয়ানের কাছে বন্দি। তাঁদের শাহজাদীকে মুক্ত করার কথা বললে তারা নিশ্চয়ই আমাদের সাহায্য করবে।”
-“সেটাই কর এলেন। তুই জ্বীন রাজ্যে যা। গিয়ে জ্বীনদের সাথে কথা বল।”
-“হুম।”
এলেন সময় বিলম্ব না করে জ্বীন রাজ্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। জ্বীন রাজ্য এখান থেকে অনেক দূরে। এদিকে সকাল হতে চলল। তার আগে সেখানে পৌঁছাতে হবে এলেনের। এলেন বাতাসের বেগে খুব দ্রুত দৌড়ে জ্বীন রাজ্যে পৌঁছায়। প্রথমে তারা ভ্যাম্পায়ার দেখে এলেনকে প্রবেশ করতে দেয় না। এলেন কায়রার বিপদের কথা বলে।এটা শুনে তারা এলেনকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়। এলেন সবাইকে এক সাথে জড়ো করে বলে,
-“আমি ভ্যাম্পায়ার কিংডমের কিং আরলেন জর্জ। আপনাদের জ্বীন রাজ্যের শাহজাদী কায়রাকে আমি ভালোবাসি। ”
এটা শুনে সবাই অবাক হয়ে যায়। যে যার মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে। এলেন তাদের অবাক হওয়া চেয়ারা দেখে বলে,
-“আপনারা অবাক হবেন না। আমার আপনাদের কাছ থেকে সাহায্যের প্রয়োজন। কায়রাকে আপনাদের সদস্য জিনান ও ইয়ান তাদের রাজ্যে নিয়ে গেছে। তাঁদের হাত থেকে কায়রাকে মুক্ত করাতে হলে আমাদের যুদ্ধের সম্মুখীন হতে হবে। আমাদের ভ্যাম্পায়ার লোকজন সংখ্যায় কম। তাই আমি আপনাদের কাছে সাহায্য চাইতে এসেছি। জানি আমরা আপনাদের অনেক ক্ষতি করেছি। কিন্তু তাঁর প্রায়শচিত্ত করার সুযোগ টুকু আমাকে দিন আপনারা।”
এলেনের কথা শুনে সবাই কিছুক্ষণ ভাবে। তারপর সবাই এলেনের কথায় রাজি হয়। তাঁদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য । এলেন আসার আলো দেখতে পায়। ভেতরে ভেতরে খুশি হয়। ফিরে পাবে ভালোবাসার মানুষটিকে। ধ্বংস করছে দুষ্ট লোকদের।
.
.
.
.
.
.
.
Continue To……..