হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি পাঠ-৬
#আরিশা অনু
“””অফিসের প্রত্যেকটা কোনায় সি সি ক্যামেরা লাগানো।তাই ল্যাপটপে দেখলাম অনন্যা শাড়ির আচল কোমরে গুজে রান্না করছে ঠিক যেমন আগে করতো।আজ একদম পাক্কা গিন্নি গিন্নি লাগছে ওকে।
“””যখন আমরা একসাথে থাকতাম তখন হাজার টা কাজের মানুষ থাকলে ও নিজে হাতে আমার জন্য রান্না করতো।আর আমি সুযোগ পেলেই দুষ্টামি করতাম। কতনা সুখের ছিল সেই দিন গুলো।কেনো অনন্যা কেনো এমন প্রতারনা করলে আমার সাথে।আমি তো তোমায় নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবেসেছিলাম।আমায় বললে হত হাসতে হাসতে জীবন টা ও তোমার হাতে তুলে দিতাম।কিন্ত তুমি আমার সাথে বেঈমানি কেন করলে….???
“””একা একা এতখন এগুলো একমনে ভেবে যাচ্ছিলাম তখন হঠাৎ দরজায় টোকা দিল কেউ। হয়তো ও চলে এসেছে….!!!(রোহান)
“””রোহানের প্রিয় ব্লাক কফি আর নুডলস্ রান্না করেছি ওর জন্য।কত বছর পর আবার ওর প্রিয় খাবার গুলো নিজে হাতে রান্না করলাম।ভাবতেই মনটা আবার ভালো হয়ে গেল। খাবার গুলো নিয়ে আসছিলাম তখন দেখলাম সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।অবশ্য অবাক হওয়ার ই কথা কেউ যে তার পি.এ কে দিয়ে রান্না ও করাই এটা হয়তো আজ প্রথম দেখলো সবাই।তারপর আমি আর খেয়াল না করে রোহানের কেবিনে যেয়ে নক করলাম…. নক নক নক?!!!(অনন্যা)
“””ভেতরে আসুন মিসেস অনু….!!!(রাহান)
“””আবার ওই নামটা শুনে বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠলো।কেনো যে এমন হলো বুঝলাম না।তারপর ভাবনা চিন্তা বাদ দিয়ে ভেতরে যেয়ে বললাম স্যার আপনার খাবার…!!(অনন্যা)
“‘”হুম এখানে আনুন….!!!(রোহান)
“””কেমন যেন লাগছিল ওর কাছে যাওয়ার পর অজানা এক অনুভূতির সন্ধান পাচ্ছিলাম আমি। তারপর খাবার গুলো ওর টেবিলে রেখে চলে আসছিলাম তখন ই ও ডাক দিল…!!!(অনন্যা)
“””মিসেস অনু আপনি কোথায় যাচ্ছেন?আপনাকে কি আমি যাওয়ার পারমিশন দিয়েছি?(রোহার)
“””না….!!!!(অনন্যা)
“””তাহলে যাচ্ছেন কেনো মিসেস অনু?বাই দ্যা ওয়ে আমাকে নুডলস্ টা খাইয়ে দিন তো মুচকি হেসে বললাম…!!(রোহান)?
“””এবার মেজাজ খারাপ হয়ে গেল আমার তাই বললাম মিস্টার রোহান খান প্রথমত আমার নাম অনন্যা নট অনু ওকে?আর দ্বিতীয়ত আমি আপনার বৌ না যে খাইয়ে দেবো।পারলে নিজে হাতে খেয়ে নিন বলে রাগে গজ গজ করতে করতে ওর কেবিন ছেড়ে আমার কেবিনে চলে আসলাম।
“””কি ভেবেছে কি ও প্রথমে অপমান করবে তারপর আবার আদিখ্যেতা করবে।আর সহ্য করবোনা আমি অনেক হয়েছে…!!!(অনন্যা)?
“””অনুর রাগ দেখে তো আমি হাসতে হাসতে শেষ।এখনো সেই আগের মত পাগলি টাই আছে।তারপর ভাবাভাবি বাদ দিয়ে খাওয়ায় মন দিলাম।?
“””কফিতে চুমুক দিয়ে বুঝলাম ওর এখনো মনে আছে যে আমার কেমন কফি পছন্দ। তারপর নুডলস্ টা খেলাম।ওর হাতের রান্নার স্বাদ যেন অন্য সবার থেকে আলাদা।বহু বছর পর আবার খুব তৃপ্তি নিয়ে খেলাম…..!!!(রোহান)
“””হ্যালো ম্যাম(নিপা,রিসভ)
“””কাজ করছিলাম তখন হঠাৎ রিসব আর নিপা আসলো।রাগি চোখে তাকিয়ে বললাম আবার ম্যাম বলছো…(অনন্যা )?
“””ওকে ওকে কুল রাগ করনা মজা করে বললাম তো…!!(নিপা)
“””নাক ফুলিয়ে বললাম এটা নিয়ে আবার কিসের মজা শুনি…?(অনন্যা )
“””আচ্ছা হইছে আর রাগ করা লাগবে না।এবার বলতো হঠাৎ স্যারের জন্য এসব কেনো…?(নিপা)?
“””হুম বলো বলো….?(রিসভ)
“””এখন বুঝলাম ওরা কেনো এসছে ।তাই বললাম ও হ্যালো আমার কোনো সখ নাই এসবের হ্যাঁ। স্যার বলছিল বলে করেছি।লাল কচ্ছপ একটা। আমার জীবনটা তেজপাতা করে ছাড়বে মনে হচ্ছে এবার…..!!(অনন্যা )?
“””হা হা হা হা লাল কচ্ছপ বলে রিসব আর নিপা হেসে উঠলো জোরো। ওদের হাসি দেখে আমি ও হেসে ফেললাম।তারপর টুক টাক কথা বলে আড্ডায় মেতে উঠলাম তিনজনে…!!!?
“””খেতে খেতে হঠাৎ অনন্যার কেবিনে চোখ গেল। দেখলাম রিসবের সাথে হেসে হেসে খুব ঢং করে কথা বলছে।মেজাজ আবার বিগ্রে গেল আমার তাই উঠে ওর কেবিনে গেলাম….!!!(রোহান)?
“””উফ্ আর হাসতে পারছি না আমি তোমরা এত মজার মানুষ সত্যিই যানতাম না হা হা হা….!!(অনন্যা)
“””উহু তো আমাদের কি তোমার গোমড়া মুখো মনে হয়…?(রিসব)
“””গোমড়া মুখো শুনে আবার সবাই জোরে হেসে উঠলো,,,?
“””হাসতে হাসতে হঠাৎ দরজার দিকে চোখ যেতেই আমার কলিজা কেঁপে উঠলো।রোহান দাড়িয়ে আছে চোখ দুটো লাল টকটকে হয়ে আছে ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেছে,,,,
“””রোহান কে দেখে নিপা আর রিসভ চলে গেল আর আমি পড়লাম মাইনকা চিপাই আল্লাহ বাঁচাও আমায় এই রাক্ষস এর হাত থেকে….!!(অনন্যা)
“””নিপা আর রিসভ চলে গেলে অনন্যার দিকে এগিয়ে গেলাম….
“”” ওর কাছে যেয়ে হাতটা জোরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলাম।ও বেথায় আহ্ করে উঠলো বাট সেদিকে কোনো খেয়ালই নাই….(রোহান)
“””আহ্ রোহান লাগছে আমার হাতে কি করছো তুমি….??(অনন্যা) ?
“””আমি তখন খাইয়ে দিতে বললাম বলে গায়ে ফোসকা পড়লো না।আর এখানে এসেতো দিব্বি রিসভের সাথে ঢলাঢলি করে বেড়াচ্ছো তার বেলা কিছু না….??
“””এখনো পূরনো অভ্যাস চেঞ্জ করতে পারনি না??
“””ছেলে দেখলেই তারসাথে ঢলাঢলি করা লাগে,অবশ্য তোমার মত পতিতার দ্বারা সব সম্ভব বলে ওকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসলাম। মাথাটা প্রচন্ড গরম হয়ে গেছে কি বলছি কিচ্ছু যানিনা আমি রাগে রাগে অফিস থেকে বেরিয়ে আসলাম…..!!!(রোহান)?
“””রোহার ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়লাম। কি বললো ও আমি পতিতা ছিহ্ এতটা জঘন্য কি করে হলো ও।আজ আবার ওর প্রতি ঘৃনাটা দ্বিগুণ বেড়ে গেল।?
“””খুব খুব কান্না পাচ্ছে অসহ্য লাগছে এখন আমার তাই অফিস থেকে সোজা বাসায় চলে আসলাম……!!!
“””বাসায় এসে সোজা শাওয়ারে গেলাম তারপর শাওয়ারের নিচে দাড়িয়ে অনেক খন কাঁদলাম…!!(অনন্যা) ?
“””সোনামা তোর কি হয়েছে বলতো? চোখমুখ ফুলে গেছে কেঁদেছিস আবার(আম্মু)
“””আম্মুকে সবকিছু খুলে বললাম তারপর আবার কান্নায় ভেঙে পড়লাম….!(অনন্যা)?
“””কাঁদিসনা সোনা মা তুই এভাবে কাঁদলে রুহির কি হবে বলতো।রুহির জন্য হলেও তোকে ঠিক থাকতে হবে সোনা…!!!(আম্মু)
‘”””বিনা দোষে আর কত অপমান সহ্য করবো আম্মু আমি যে আর পারিনা। এভাবে চলতে থাকলে সত্যি আমি মরে যাব আম্মু…(অনন্যা)
“”””ছিহ্ সোনা মা এমন বলতে নাই।চল তোকে খাইয়ে দি….( আম্মু)
“”””তারপর আম্মুর হাতে খেয়ে আম্মুর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লাম আর আম্মু আমার মাথায় বিলি কেটে দিতে লাগলো।শুয়ে শুয়ে ভাবছি এ কোন পাপের শাস্তি পাচ্ছি আমি?চোখের কোনা বেয়ে আবার নোনা জল গড়িয়ে পড়তে শুরু করলো…….!!!(অনন্যা)?
.
.
.
.
Continue,,,,