গল্প : হবু বউ পাঠ :১০
লেখক : মেহেদী ( MR)
রুবি এগিয়ে আসতে আসতে একদম আমার কাছে চলে এসেছে। আমি তার নিঃশ্বাসের শব্দ শুনতে পাচ্ছি ।
এমন সময় দরজায় ঠক ঠক ঠক আওয়াজ পেলাম ।
আওয়াজ পেয়ে রুবি ও আমি দু’জন একসাথে দরজার দিকে তাকাতেই দেখি ভাবি আর ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে আর ভাবি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে । রুবি ওদের দেখে প্রচন্ড রকম লজ্জা পেয়েছে । লজ্জায় লাল হয়ে গেছে । আমি যে লজ্জা পায়়নি তাও না তারপরও কিছু বলছি না । ভাবি এখনো ঐখানেই দাঁড়িয়ে আছে ।
আমি বললাম ,,,,
কী ব ্যাপার ওখানে দাঁড়ায় থাকবি না ভেতরে আসবি । খিদা লাগছে তো । (আমি)
হুম আসছিই তো ।(ভাবি)
তারপর ভাবি খাবার রেখে খেয়ে নিতে বলল। আর যাওয়ার সময় রুবি কে কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেল,,,, না না ,,, বলে গেল ,,, কী আপনারাও শুনবেন তাহলে শুনুন ,,,,,
রুবি তুমি এই বাঁদর টাকে একটু মানুষ করো তো । আর হ্যা তোমাকে কিছু বল্লে আমাকে বলবা নয়ত আব্বু কে বলবা । ( ভাবি )
আচ্ছা আপু । ( রুবি ছোট করে উত্তর দিল)
আসলে রুবি এখনো মাথা ওপরের দিকে উঠায় নি। খুবই লজ্জা পেয়েছে বেচারা ।
তারপর আর কিছু না বলে ভাবি আর ভাইয়া চলে গেল ।
এ মা একি এবার দেখি রুবি মাথা তুলে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে ।
আমি : কী হয়েছে হ ্যা এতো হাসির । হাসতে হবে কেন । আর একটা কথা শোনেন সবার সামনে আমাকে তুমি করে বলবেন না হলে ধরা খেয়ে যাবো । আর সবাই যদি জানতে পারে তাহলে মন খারাপ করবেন ।
আর হ্যা এখন যেমন শুরু করেছিলেন আর যেন না হয় ।(আমি)
তা নয় আমি তোমাকে সব সময়ই তুমি করে বলবো কারন আমার তো অধিকার আছে তাই না । আর হ্যা এখন যা করতে পারলাম না তা তো অবশ্যই করবো কারন আমি এখন তোমার বিয়ে করা বউ । ( রুবি )
হুম বিয়ে করা বউ কিন্তু আপনি বিয়ের আগেই সেই অধিকার হারানোর কাজ করেছেন । আবশ্যই আপনি আমার বিয়ে করা হালাল বউ , আপনার সব দায়িত্ব আমার কিন্তু আমি আপনাকে মানতে পারছি না (আমি)
তাহলে আমি কী করবো বলেন । আমি না হয না বুঝে় একটু অপরাধ করেছি তাই বলে কী মাফ করা যায় না । (রুবি)
হ ্যা আপনি তো নাবালক বাচ্চা । আপনি কিছুই বুঝতে পারেন না । আপনি কচি খুকি । না বুঝে না শুনে সব করছেন সেটা তো আমাকে বিশ্বাস করতে হবে তাই না । (আমি)
হুম তাই । ( রুবি)
হুম তাই,,,,,,,( ব ্যাঙ্গ করে বললাম )
আচ্ছা আমি আর এই বিষয়ে কথা বলতে চাচ্ছি না । এখন খুব খুদা লাগছে খেয়ে নেন।( আমি)
ওহ তাহলে মাফ করেছ। ( রুবি)
ঐ আর কথাও যেন না শূনতে পাই তারাতাড়ি খেয়ে নেন। (আমি)
ও ছোট বাচ্চাদের মতো করে মুখ ফুলিয়ে বলল হুম।
আমার এখন খাওয়া দাওয়া করছি । আমি খাচ্ছি আর ভাবছি মেয়েটা অনেক সুইট । সব কথা শুনে । এখনো বাচ্চাদের মতো স্বভাব থেকেই গেছে ।
ও হ ্যা আপনাদের তো বলাই হয়নি আমার বউটা অনেক অনেক সুন্দর । একদম পরীর মতন । একবার দেখলে শুধু তাকিয়েই থাকতে মন চায়।
আপনারা ভাবছেন আমি এগুলো বলছি কেন আসলে ও যাই করুক না কেন আমার বিয়ে করা বউ তো । যতই যাই বলি না কেন একটা টান হয়ে গেছে ।
যাইহোক হঠাৎ করে আমার প্রচন্ড জ্বলছে ঠোঁটের কোণে । কারন আব্বু চড় মারায় ওখানে কেটে গেছে ।
আমি খাওয়া শেষ করতেই ও বলল এই জন্যই তো তোমার শরীরের এই অবস্থা । এতো টুকু খেলে মানুষ কোনোদিন একটুও মোটা হবে না ।( রুবি)
এমনিতেই জ্বলছে আর তার ওপর এইরকম কথা কর ভালো লাগে ,,,,
ঐ আমার আর মোটা হওয়া লাগবে না । আমি চিকন আছি চিকনই থাকবো । চুপচাপ খাওয়া শেষ করেন। (আমি)
তারপর ও চুপচাপ খাওয়া শেষ করে প্লেট গুলো নিচে রেখে আসতে গেল আর আমি বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম ।
একটু পরে দেখি মামনি আসছে আরে ভূলে গেছেন আমার ভাতিজি । ও এসে সরাসরি আমার বুকের ওপর শুয়ে পড়ল । আসলে ও এইরকমই করে যদি দেখে আমি শুয়ে আছি তখনই আমার বুকের উপর শুয়ে পড়বে । তারপর আমি বললাম মামনি তোমার নতুন চাচি তোমাকে আদর করেনি । (আমি)
হুম করেছে । অনেক আদর করেছে তোমার চাইতে বেশি । ( পিচ্চি)
আমি : তাই না এখন আর কী আমাকে মনে থাকবে । এখন তো তুমি তোমার আদরের চাচি পেয়েছ ।
পিচ্চি: হুম পেয়েছি তো কী হয়েছে ।
আমি : আচ্ছা মামনি তুমি আজকে আমার সাথে চলো তোমার চাচির আম্মুর বাড়ি ।
আমার কথা শুনে ও উঠে বসে কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে ।
আমি : আমি বললাম কী মামনি কী হলো ।
পিচ্চি : না কিছু না কিন্তু আমি যাবো না ।
আমি : কিন্তু কেন ।
পিচ্চি : তুমি জানো না চাচির আম্মু পচা । আমি যাবো না বাবা । তুমিই যাও ।
বলেই দৌড় ।
হায়রে কপাল সেদিন যদি না বলতাম কথাটা তাহলে আজকে ভালো হত । আসলে মিথ ্যা বললে বিপদে পড়তেই হয়। আপনারা ভাবছেন আমি এমন করছি কেন আসলে আমার কেমন যেন লাগছে ওদের ওখানে একা একা যেতে ।
যাইহোক দৌড় দিলাম ভাইয়ার এর কাছে। গিয়ে বললাম,,,
আমি : ভাইয়া আমাকে নাকি শ্বশুর বাড়ি যেতে হবে তো আমাকে কী একাই যেতে হবে নাকি ।
ভাই : আরে না একা যাবে কেন ,,,
তুমি আর রুবি যাবে ।
আমি : আমি কী আপনার সাথে মজা করছি বলেন ভাই । ভাই প্লিজ আপনি আমার সাথে চলেন না ।
ভাই : আরে দূর তুমি কি এখনো ছোট ।বোকা এতো ভয় কেন । এখন আমাকে ছাড়ো আমি দেখি তোমার শ্বশুর বাড়ির কারো কিছু লাগবে কিনা । ও রা তো এদিক ওদিক আছে ।
আসলে আমি ঘরে থাকায় কিছুই জানি যে উনারা কখন এসেছেন।
তারপর আমি ভাবি কাছে আসলাম কিন্তু কোনো লাভ হলো না ।
তারপর ব ্যাথ হয়ে রুমে আসলাম । হায় রে কপাল এখানেও শান্তি নেই পুরো রুমের মধ ্যেই মানুষ । এগুলো আবার কখন আসলো ।
আমাকে দেখে একজন বলল কিরে রুবি তোর হাজবেন্ড কে কী রাতে ঘুমানোর সময় দেসনি । বলেই সবাই হো হো করে হেসে উঠলো । রুবি খুবই লজ্জা পেয়েছে । মাথাটা নিচু করে বসে আছে । আর আমাকে প্রচন্ড খারাপ লাগছে কথা গুলো শুনে ।
আরে ভাই আমার ব ্যাপার আমি ঘুভাবো কিনা । তাদের এতো কী । আমি আর ওখানে না থেকে চলে আসলাম ।
তারপর ওখান থেকে নিচে এসে সবার সাথে কথা বললাম সব কিছু ঠিক আছে কিনা তা ভালোভাবে পরক্ষ করতেই আব্বু ডাকলেন আমি যেতেই বললেন শোনো তুমি রেডি হয়ে নাও বৌমা রেডি ।
আমি : আচ্ছা ঠিক আছে ।
বলে ্আসতে শুরু করলে আব্বু আবার বলল দেখ বাবা তোমার রাগের কারনে আমি জানি । আর সব কিছু ভুলে যাও । ( আব্বু )
আমি : আচ্ছা ঠিক আছে ।
কিন্তু মনে মনে বললাম এর ফল রুবি পাবে । তারপর ওখান থেকে এসে রেডি হয়ে চলে আসলাম শ্বশুর বাড়ি । লোকে বলে না শ্বশুর বাড়ি মধুর হাড়ি আসলে কথাটা সত্য । যাইহোক এখান কার সবাই এখন আমাকে নিয়ে ব ্যাস্ত বললেই চলে । কী আজব ব ্যাপার তাইনা । আমার বাড়িতে রুবি কে সবাই ব ্যাস্ত আর এখানে আমায় নিয়ে সবাই ব ্যাস্ত।
যাইহোক তারপর রাতের খাবার শেষ করে রুমে যেয়ে আমি ফেসবুকে একটু নিউজ ফিড এ ঘুরাঘুরি করছি ।একটু পরেই রুবি আসলো । এসেই সরাসরি দরজা বন্ধ করে বিছানার দিকে এগিয়ে আসছে আমি রুবির চোখের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারলাম আমার সাথে এখন কিছু হলেও হতে পারে । ও এগিয়ে আসছে আর আমার অবস্থা আস্তে কেমন যেন হচ্ছে । বুজছি না । ও এসেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল দিয়ে ও আস্তে আস্তে ,,,,,,,,,,
আরে এতো তাড়াতাড়ি কেন আপনাদের আস্তে আস্তে বলি আমার বুঝি লজ্জা করে না ।।।।।
ও আস্তে আস্তে আমার ওপর উঠে বসে আমার মুখের দিকে মুখ নিয়ে আসছে ।
আমার কেমন যেন লাগছে আমি কিছু বুঝতে পারছি না যে কী করবো । আমার ও কে আমার থেকে ছাড়াতে ও পারছি না ,,,, হায় হায় সবাই শুনলে কী বলবে আপনারাই বলেন আমি একটা মেয়ের থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছিনা । আপনারা আবার কাউকে বলবেন না কিন্তু হ ্যা ।
ও মুখ একদম আমার মুখের কাছে চলে এসেছে ,,, ও ওর চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলছে ,,,
এমন সময় আবারো
ঠক, ঠক,,,,,,
চলবে