#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””
#Writer; Tamanna Islam
#part__ 28
🍂🍂..
..
..
..
..
..
পুরো হাইওয়ে পুলিশের আন্ডারে। রেড লাইট লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাইওয়ে এর একপাশ থেকে অন্যপাশে যাওয়া নিষেধ। রাস্তাঘাট সব বন্ধ। চারিদিকে চলছে পুলিশের টহল। ফরেন্সিক রিপোর্টের লোকেরা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলছে। লাশ যেখানে পরে ছিলো সেখানে সাদা কালি দিয়ে মার্ক করা রয়েছে। পুলিশ ফোর্সরা কিভাবে কি হলো তার খোঁজ করছে। পুলিশ এম্বুলেন্সের গাড়ি সব জায়গাতে। আইরাতের লাশ খুঁজে পাওয়া যায় নি। রাশেদ আব্রাহামকে অনেক খোঁজে অনেক বার Call দেয় কিন্তু ফোন রিসিভ করে না। তবে আব্রাহামের গাড়িতে ট্রান্সমিটার থাকার ফলে আব্রাহাম কোথায় কখন যাচ্ছে তা খুব সহজেই যানা যায়। রাশেদ দেখে যে আব্রাহামের গাড়ি লাস্ট হাইওয়ের ওপর এসে থেমেছে। রাশেদ দ্রুত সেখানে যায়। গিয়ে দেখে রাস্তা রক্তে মাখামাখি আর সেখানে মৃত প্রায় অবস্থায় পড়ে আছে আব্রাহাম। রাশেদ দৌড়ে আব্রাহামের কাছে ছুটে যায়,, অনেক ডাকাডাকি করে কিন্তু লাভ নেই। আব্রাহাম অজ্ঞান কোন সাড়াশব্দ নেই। রাশেদ জলদি পুলিশ অফিসারদের, এম্বুল্যান্স এবং আবির আহমেদ- অয়নকে ফোন দেয়। প্রায় ৩০ মি. পর তারা সবাই এসে পড়ে। আবির আহমেদ রাশেদ কে এই অবস্থার কথা জিগ্যেস করলে রাশেদ সব কিছু তাদের খুলে বলে। সব কথা শুনে আবির আহমেদ এবং অয়নের মাথায় বাজ ভেংে পরে। রাস্তার মাঝে রক্ত লাগা একাটি রিভলবার ও পাওয়া যায়। আইরাত কে অনেক খোঁজের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কেউ কোন খবর পায় না। পুলিশদের ধারণা হাইওয়ের নিচের জংগলের মাঝে আইরাত পরে গেছে, যেখান থেকে কারো পুনরায় ফিরে আসা এককথায় অসম্ভব। স্পেশাল সার্ভিস দের ও লাগিয়ে দেওয়া হয় আইরাতের খোঁজে কিন্তু ফলাফল শূন্য। যখন আইরাত কে এতো খোঁজার পরও পাওয়া যায় না তখন পুলিশ আইরাতকে মৃত ঘোষণা করে।
পুলিশ;; মিস্টারঃ আবির আহমেদ,
আবির আহমেদ;; জ্বি অফিসার, কোন খোঁজ পেলেন আমার আইরাত মামনির?
পুলিশ;; (মাথা নিচু করে মাথা থেকে টুপি খুলে) I am really very sorry sir,, আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। ইভেন পুরো জংগল খোঁজা শেষ কিন্তু মিসেস.আইরাত কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমরা ব্যার্থ।
আবির আহমেদ;; না না অফিসার প্লিজ এভাবে বলবেন না। আমার ছেলেটা বেচে থেকেও মরে যাবে।
পুলিশ;; স্যার, আমরা দমে যাবো না। আবার আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো। কিন্তু এখন আমরা মিসেস আইরাতকে পাচ্ছি না।
অয়ন;; মানে কি অফিসার এসবের। বউমনি কে পাওয়া যাচ্ছে না মানে কি। আমরা কিছুই জানি না যত ফোর্সদের দরকার হয় আপনারা কাজে লাগান যত যাই করতে হয় আপনারা করুন, কিন্তু বউমনি কে যেভাবেই হোক আপনারা খুঁজে বের করুন।
পুলিশ;; Yes sir we will try our best…
এই বলে পুলিশ চলে যায়। আবির আহমেদ কেদে দিলেন। অয়ন কি বলে তার বাপিকে শান্তনা দিবে জানা নেই তার।
অয়ন;; বাপি, বাপি প্লিজ তুমি এভাবে কেদো না, ভেংগে পড়ো না এভাবে। এখন দাভাইয়ের তোমাকে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
কথার মাঝেই অয়নের ফোন এলো। অয়ন ফোন রিসিভ করলো…
অয়ন;; Hlw
………………….
অয়ন;; কিহহহ,,, না আমরা আমরা এখনই আসছি
আবির আহমেদ;; কি কি হয়েছে অয়ন
অয়ন;; বাপি প্লিজ তাড়াতাড়ি হস্পিটালে চলো। দাভাইয়ের অবস্থা অনেক বেশি ক্রিটিকাল।
আবির আহমেদ;; তাড়াতাড়ি চল।
আবির আহমেদ এবং অয়ন হন্তদন্ত হয়ে হস্পিটালের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। প্রায় ১৫-২০ মি. পর তারা পৌঁছে গেলেন। এক প্রকার দৌড়েই তারা হস্পিটালের ভিতরে গেলেন। অয়ন পাগলের মতো করে ডাক্তার কে ডাকতে লাগলো। মূহুর্তেই সব ডাক্তার নার্স বেরিয়ে এলো।
অয়ন;; Doctor, Doctor আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরীর রুম কোনটা?
ডাক্তার;; Cool down Mr. Oyon Chowdhury… আমিই আব্রাহাম আহমেদ কে দেখছি। আমিই উনার ডাক্তার। আপনি আমার সাথে চলুন
অয়ন আবির আহমেদ ডাক্তারের সাথে যেতে লাগলো। আব্রাহামের রুমের সামনে এসে দাড়ালো তারা। রুমের গ্লাস দিয়ে আব্রাহামকে দেখা যাচ্ছে। আব্রাহামের মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো, হাতে সুই পুস করা। বেডে চুপ মেরে শুয়ে আছে। নিঃশ্বাস বারবার ওঠা নামা করছে তার। যেন শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
আবির আহমেদ আব্রাহামকে দেখে ফুপিয়ে কান্না করে দিলেন। অয়ন তার বাপি কে আস্তে করে ধরে নিয়ে বসিয়ে দিলেন। তার বাপি কে শান্তনা দিচ্ছে সে কিন্তু তারও যেন চোখের পানি আজ কোন বাধা মানছে না।
সেই সময় ডাক্তার অয়নের সামনে আসলেন।
ডাক্তার;; দেখুন আমি বুঝতে পারছি যে আপনারদের ওপর দিয়ে এখন কি যাচ্ছে। প্লিজ আপনারা এভাবে ভেংে পড়বেন না। ধৈর্য ধরুন। আল্লাহ আছেন তিনি সবকিছু ঠিক করে দিবেন। তবে আমরা যখন আব্রাহাম স্যার কে নিয়ে আসি সেই স্পট থেকে তখন তিনি আধো আধো ভাবে চোখ খুলেন। তিনি বারবার একই নাম নিচ্ছিলেন “আইরাত”। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি খুব ভয় পেয়ে আছেন। দেখুন বিজ্ঞান বলে যে “আমাদের মাথায় চোট লাগলে আমরা সাধারণত দুই ধরনের মানুষকে ভুলে থাকি,, ১. যাকে আমরা সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি ২. যাকে আমরা সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি”। কিন্তু এক্ষেত্রে আব্রাহাম স্যার মাথায় না তার হার্টে চোট পেয়েছে। এমনকি অনেক রক্তক্ষরণ ও হয়েছে। যার জন্য আমাদের এক্সট্রা রক্ত তার বডি তে দিতে হয়েছে। আমরা আব্রাহাম স্যার কে পুরোপুরি আমাদের আন্ডারে রেখেছি। যত বড় বড় স্পেশাল ডাক্তার ছিলো তারা সব এসেছেন। আপনারা একদমই চিন্তা করবেন না।
ডাক্তার কথাগুলো বলে সেখান থেকে চলে আসেন। কিন্তু অয়ন এবং তার বাপি কোনভাবেই আইরাতের চিন্তা তার মাথা থেকে সরাতে পারছে না।
সেই সময় সিনিয়ন একজন পুলিশ তাদের কাছে এলেন।
পুলিশ;; মিস্টার আবির আহমেদ এবং অয়ন আহমেদ চৌধুরী। আপনাদের জন্য একটি Bad News আছে।
অয়ন;; কি অফিসার?
পুলিশ;; আসলে আমরা তিনটে লাশ পেয়েছি। একটা লাশ কে চিনতে পারলেও আর বাকি গুলো চিনা যাচ্ছে না। কিন্তু মিস্টার আব্রাহামের বডিগার্ড রাশেদ বললেন যে এই লাশ নাকি আশরাফুল আহমেদ এবং তার স্ত্রীর। অর্থাৎ আপনার ভাইয়ের তো যদি আপনি দয়া করে তাদের পরিচয় টা ক্লিয়ারলি বলে দিতেন। আমি জানি এই সময়ে আপনারা তেমন পরিস্থিতি তে নেই কিন্তু তবুও।
আবির আহমেদ;; এসব কি বলছেন,, আশরাফুল আমার ভাই তারা কি কেউ বেচে নেই?
পুলিশ;; সরি স্যার তাদের অনেক বাজে ভাবে খুন করা হয়েছে।
পুলিশের কথা শুনে আবির আহমেদ মাথায় হাত দিয়ে বসে রইলেন। অয়ন তার বাপি কে অনেক বুঝিয়ে শুনিয়ে পুলিশের সাথে নিয়ে গেলেন।
।
।
।
অয়ন আবির আহমেদের সামনে তিন তিনটে লাশ সাদা কাপড়ে ঢাকা। সাদা কাপড় গুলোতে রক্ত লেগে আছে। আবির আহমেদ লাশ গুলোর পাশে ধপ করে বসে পরলেন। কাপা কাপা হাতে প্রথম লাশের কাপড় সরালেন। সরাতেই আবির আহমেদ অঝোর ধারায় কান্নায় ভেঙে পরলেন।
আবির আহমেদ;; আশরাফুল ভাই আমার। আমি তোকে কখনই নিজের শত্রু ভাবিনি। আমি তো তোকে সেই কবেই ক্ষমা করে দিয়েছিলাম। কেন এমনটা হলো। আমারে ছেড়ে যাস না ভাই। কথা বল, চোখ খোল। এতোদিন পর তোকে পেলাম তাও, তাও মৃ মৃত অবস্থায়। ফিরে আয় ভাই আমার কাছে (লাশকে ধরে কেদে) আতিয়া, আয়ুশ কথা বলো তোমরা। তোমরা সবাই ছিলে কিন্তু সবকিছু থেকেও আমার কিছুই ছিলো না।
অয়ন খুব কষ্টে তার বাপি কে লাশের পাশ থেকে টেনে তুলে আনলো। পুলিশকে তারা পরিচয় দিয়ে দেয় যে তারাই আবির আহমেদ চৌধুরীর ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রী,, আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী – আতিয়া আহমেদ চৌধুরী এবং তাদের ছেলে আয়ুশ। তাদের মেয়ে নুজাইফা বিনতে আইরাতের এখনো কোন খোজ মিলে নি। কিন্তু আইরাতকে তারা প্রথমে নুজাইফা বিনতে আইরাত নামে পরিচয় দিলেও পরর্বতীতে তাকে আব্রাহামের স্ত্রী মিসেস. আইরাত আব্রাহাম আহমেদ চৌধুরী নামে পরিচয় দেন। সেই এক্সিডেন্ট স্পটে দুটো রক্তের সেম্বল পাওয়া গেছে। পুলিশদের ধারনা একটা আব্রাহামের আর একটা মেবি আইরাতের। আবির আহমেদের বয়ানে পুলিশরা এবার কনর্ফাম হলো যে এনিই আশরাফুল আহমেদ চৌধুরী এবং তার স্ত্রী আতিয়া আহমেদ চৌধুরী। সব আইনি কাজ শেষ করে লাশগুলোকে আবির আহমেদ এবং অয়নের কাছে সপে দেওয়া হয়। তারা লাশগুলোর দাফন কার্য সব সম্পন্ন করলো। কিন্তু আব্রাহামের স্বাস্থ্যে কোন রকম কোন উন্নতি নেই। পুলিশ অফিসারা আইরাত কে টানা ১ সপ্তাহ লাগাতার খুজতে থাকে কিন্তু কোন খোঁজই পায় না। অবশেষে তারা আইরাতকে মৃত ঘোষণা করেন। আব্রাহাম ও হস্পিটালে ICU তে রয়েছে সেভাবেই শুয়ে। মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো। জীবন মৃত্যুর মাঝে লড়াই করছে সে। আবির আহমেদ – অয়ন রোজ রোজ আব্রাহামকে দেখতে আসে এবং চোখের পানি বিসর্জন দেয়।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
১ মাস পর…………
নার্স;; এই তোমরা শুনো (ওয়ার্ড বয় দের ডেকে) আব্রাহাম স্যার এর ওপর কড়া নজর রাখবে ঠিকাআছে। কখন কি হচ্ছে, স্যার এর Health এ কখন কি হচ্ছে সব ইনফরমেশন চাই ওকে।
ওয়ার্ড বয়;; জ্বি আপু ঠিক আছে কিন্তু আপু স্যার কি আসলেই কোনদিন সুস্থ হয়ে উঠবেন?!
নার্স;; চুপ থাকো, এভাবে কেন বলছো। ভুলে যেও না যে তোমরা কার নামে কথা বলছো। স্যার অবশ্যই সুস্থ হবেন। স্যার তো…………
নার্সের কথা শেষ না হতেই আব্রাহামের দিকে চোখ পড়লো। আব্রাহামের ডান হাতের কানি আংগুল নড়ছে। নার্স তা দেখে চমকে উঠলো। আর এক মূহুর্ত দেরি না করে নার্স দৌড়ে আব্রাহামের রুম থেকে বের হয়ে গেল এবং চিল্লিয়ে ডাক্তারকে ডাকতে লাগলো…
নার্স;; Doctor Doctor
ডাক্তার;; কি হয়েছে,, এটা হস্পিটাল এভাবে চিল্লাচ্ছো কেন?
নার্স;; স স স্যার, স্যার আব্রাহাম স্যার
ডাক্তার;; হুমম হয়েছে কি?
নার্স;; আব্রাহাম স্যার তার হাতের আঙুল নাড়িয়েছেন। স্যার নড়ছেন।
ডাক্তার;; What, seriously!!
নার্স;; Yes sir
ডাক্তার;; তাড়াতাড়ি চলো….
।
।
।
ডাক্তার এবং নার্স জলদি আব্রাহামের রুমে গেলো। কিন্তু দরজাতে গিয়েই থেমে পড়লো আর এগোতে পারলো না। ডাক্তার এবং নার্স গিয়ে দেখে আব্রাহাম তাকিয়ে আছে। বড় বড় ডাক্তার রা পর্যন্ত আব্রাহামের অবস্থা থেকে তাদের মুখ ঘুড়িয়ে নিয়েছিলেন যে আব্রাহাম আর সুস্থ হওয়ার নয়। কিন্তু সবার ধারনা ভুল প্রমাণ করে আব্রাহাম আজ চোখ মেলে তাকিয়েছে।
ডাক্তার;; It’s miracle,, It’s just a miracle….. আমরা কখনো ভাবতেও পারিনি স্যার আপনি এভাবে আমাদের সবাইকে তাক লাগিয়ে দিবেন। We are so happy for you sir… আমি এখনই, আমি এখনই মিস্টার আবির আহমেদ এবং অয়ন স্যার কে ফোন দিচ্ছি।
ডাক্তার তাড়াহুড়ো করে আবির আহমেদ এবং অয়নকে ফোন দেয়।
অয়ন;; Hlw Oyon Ahmed speaking….
ডাক্তার;; স্যার স্যার আমি আব্রাহাম স্যার এর ডাক্তার বলছি
অয়ন;; কি দাভাইয়ের অবস্থা কেমন কোন খবর পেলেন?
ডাক্তার;; স্যার, আপনি বিশ্বাস করবেন না আজ কি হয়েছে স্যার
অয়ন;; কি হয়েছে, সবকিছু ঠিক আছে তো! (চিন্তিত হয়ে)
ডাক্তার;; স্যার, আব্রাহাম স্যার আজকে তার চোখ খুলে তাকিয়েছেন
অয়ন;; (অয়ন কিছু বলছে না, সোজা বসা দাঁড়িয়ে গেলো, চোখে-মুখে তার বিস্ময়ের ছাপ। কানে থাকা ফোনটি হাত থেকে তার নিচে পরে গেলো এবং চোখ থেকে একবিন্দু জল গড়িয়ে পরলো) আআ আমি, আআমি আসছি।
অয়ন দ্রুত বাইরে বের হয়ে গেলো অফিস থেকে। তার ব্লেজার পরতে পরতে গাড়িতে উঠে গেলো।
ড্রাইভার কে দ্রুত ড্রাইভ করে চৌধুরী ভবনের দিকে ছুটতে লাগলো।
।
।
।
।
।
In চৌধুরী ভবন…..
অয়ন;; বাপি জলদি চলো (বাড়ির ভিতরে দৌড়ে এসে)
আবির আহমেদ;; অয়ন বাবা কি হয়েছে তুই ঠিক আছিস তো,, এভাবে দৌড়ে আসচ্ছিস কেন, কি হয়েছে?
অয়ন;; বাপি, আমি এখন কিছু বলতে পারবো না সেই সময় নেই এখন তুমি প্লিজ তাড়াতাড়ি চলো।
আবির আহমেদ, অয়ন ঝড়ের গতিতে হস্পিটালে গিয়ে পৌঁছালেন।
।
।
।
।
ডাক্তার;; স্যার, স্যার আপনারা এসেছেন (দরজাতে আবির আহমেদ এবং অয়নকে দেখে)। প্লিজ জলদি চলুন।
আবির আহমেদ;; আচ্ছা ডাক্তার হয়েছে টাকি আমাকে কি কেউ কিছু বলবেন?!
ডাক্তার;; স্যার আপনি চিন্তা করবেন না,, খুশির খবর আছে আপনারা চলুন…
।
।
।
আবির আহমেদ অয়ন ডাক্তারের পিছু পিছু চলে গেলেন। গিয়ে জোড়েই আব্রাহামের রুমের দরজা খুলল এবং খুলে যা দেখল তাতে আবির আহমেদ অয়ন আসলে কি বলবে তা খুজে পাচ্ছে না। বুকের ভিতরে কেমন যেন একটা ধাক্কা এসে লাগলো। কেননা তাদের সামনে আব্রাহাম বিছানাতে বসে আছে,,পিছনে বালিশের সাথে হালকা হেলান দিয়ে,, দৃষ্টি তার স্থির।
।
।
।
।
।
।
🧡🍁চলবে~~~~~
.
#Gangstar In Love🖤🥀___A psycho love story””
#Writer; Tamanna Islam
#part__ 29
আব্রাহাম সাদা টি-শার্ট পরে বিছানাতে হেলান দিয়ে আধাশোয়া হয়ে রয়েছে। সামনের দিকে একাধারে তাকিয়ে আছে যেন আশপাশের কোন কিছুতেই তার মন নেই। তার বাপি ভাই এসেছে তাতেও তার কোনরকম কোন খেয়াল নেই। আবির আহমেদ ধীর পায়ে আব্রাহামের দিকে এগিয়ে গেলো। আব্রাহামের পাশে বসে পড়লেন। আব্রাহামের গালে হাত রেখে বলতে লাগলেন…
আবির আহমেদ;; আব্রাহাম বাবা আমার,, তুই তুই ঠিক হয়ে গেছিস। আমি জানতাম তুই একদিন ঠিক উঠে দাঁড়াবি। জানিস সব, সব ডাক্তার রা বলেছিল যে তুই আর তোর এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবি না। কারণ তোর, তোর মনে অনেক গভীর আঘাত লেগেছে। কিন্তু তারা ভুল। আব্রাহাম আমার ফিরে এসেছে আমার কাছে।
আবির আহমেদ আব্রাহামের সামনে বসে এগুলো বলছে এবং চোখের পানি ফেলছেন। আবির আহমেদ আব্রাহামের কপালে চুমু একে দিলেন।
অয়ন;; দাভাই, জানিস তোকে আমি এতো টা দিন কতো মিস করেছি। বাড়িতে, অফিসে, ক্লাবে সব সব জায়গায় তোকে মিস করেছি। তোকে ছাড়া আমারা অসম্পূর্ণ রে। কিন্তু এখন তুই আবার ফিরে এসেছিস। এখন আমরা আবার আমাদের আগের আব্রাহাম কে ফিরে পেয়েছি। দাভাই তোকে আমরা বলে বুঝাতে পারবো না যে আমরা কি পরিমান খুশি তোকে সুস্থ দেখে।
আবির আহমেদ;; হ্যাঁ, আমরা আজই তোকে বাসায় নিয়ে যাবো। এখনই আমাদের সাথেই নিয়ে যাবো। ডাক্তার আমার আব্রাহামকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি তো?
ডাক্তার;; জ্বি জ্বি অবশ্যই।
আবির আহমেদ;; অয়ন তাড়াতাড়ি সবকিছুর ব্যাবস্থা কর, আমি এখনই আব্রাহামকে বাসায় নিয়ে যাবো।আব্রাহাম চলো (হাসোজ্জল মুখে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে)
আব্রাহাম;; “আইরাত”
আবির আহমেদ এবং অয়ন তড়িঘড়ি করে আব্রাহাম কে নিয়ে যেতে ধরলে আব্রাহামের কথায় থ মেরে যায়। আব্রাহামের সেন্স আসার পর থেকে সর্বপ্রথম তার মুখ দিয়ে “আইরাত” নাম টাই উচ্চারিত হয়। আব্রাহামের কথা শুনে ডাক্তার সাহেব বলে উঠেন…
ডাক্তার;; এইতো এই নাম টাই “আইরাত” এই নাম টা আব্রাহাম স্যার কে যখন আমরা প্রথম আনি তখনও তিনি বলেছিলেন। আসলে কে এই আইরাত?
ডাক্তারের প্রশ্নে আবির আহমেদ এবং অয়ন কি বলেবে ভাষা খুঁজে পায় না। কেননা পুলিশ অফিসাররা তো আইরাতকে সেই কবেই মৃত ঘোষণা করেছেন। এই কথা টা তারা আব্রাহামকে কি করে বলবে বা কিভাবেই বা বুঝাবে যে তার আইরাত আর এই দুনিয়াতে নেই। সাহস হচ্ছে না আবির আহমেদ এবং অয়নের। সেই সময় আবার আব্রাহাম বলে ওঠে…
আব্রাহাম;; আই আআ আআইরাত।
ডাক্তার;; স্যার বলুন,, বলুন না স্যার কে এই আইরাত। বারবার আপনি তার নামই কেন নিচ্ছেন। সেইদিন আপনি এই নামটি নিয়েছিলেন আর আজ এতোদিন পরেও সেন্স আসার পর আপনি তারই নাম নিচ্ছেন। স্যার কে এই আইরাত?
আব্রাহাম;; আমার পুরো পৃথিবী। She is my life, i can’t even imagine a single day without her… আমি আইরাতের কাছে যাবো। আমাকে আমার আইরাত এনে দাও। যে করেই হোক, যেভাবেই হোক। নয়তো আমার বাচা মরা সবকিছুই সমান। আমার আইরাতকে চাই যে কোন মূল্যে।
আবির আহমেদ;; আব…আব্রাহাম দেখো আসলে,,
আব্রাহাম;; নাহ আমি কারো কোন কথাই শুনবো না। আমি কিচ্ছু জানি না। আমি ততক্ষণ ঠিক হবো না যতক্ষণ না আমাকে আমার আইরাত এনে না দাও তোমারা। ও বাপি, বাপি প্লিজ আমাকে আইরাত এনে দাও না। আমি ওকে ছাড়া নিঃস্ব। (পাগলের মতো কান্না করে)
আবির আহমেদ আব্রাহাম কে বুঝানোর অনেক চেষ্টা করে কিন্তু আব্রাহাম তো কিছুই বুঝছেই না উল্টো আরো পাগলামি শুরু করে দেয়। আব্রাহামের হাতে সুই পুশ করা ছিলো, সেলাইন দেওয়া ছিলো। সে তা সবকিছু একটানে ছিড়ে ফেলে দেয়। লন্ডভন্ড করে ফেলে সবকিছু। পুরো পাগলের মতো আচরণ করতে লাগে। মুখে তার একই কথা “আইরাত চাই আমার, আমাকে এনে দাও। আমি বাঁচবো না আইরাতকে ছাড়া। আইরাতকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি”। ডাক্তার-নার্স রা অনেক আটকানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কিন্তু আব্রাহামের সাথে কেউ পেরে উঠছে না। সবকিছুর শেষে অয়ন নিজের ভাইয়ের এমন দশা সহ্য করতে না পেরে জোড়ে চিল্লিয়ে ওঠে…
অয়ন;; মরে গেছে আইরাত বউমনি।
অয়নের এই কথায় আব্রাহাম মূহুর্তে শান্ত হয়ে গেলো। যেন এক ঘূর্ণিঝড় থেমে গেছে। আব্রাহাম অশ্রুসিক্ত চোখে পিছনে ঘুড়ে অয়নের দিকে তাকায়। অয়নের খুব মায়া লাগে আব্রাহামের এই অবস্থা দেখে। সে জীবনেও ভাবেনি যে তারই চোখের সামনে সে তার ভাইয়ের এই করুণ দশা কোনদিন দেখবে। অয়ন নিজেও নিজেকে আর আটকাতে পারে না। আব্রাহামের সামনে চলে যায়।
অয়ন;; বউমনি নেই রে দাভাই। বউমনি আর নেই। চলে গেছে আমাদের ছেড়ে অনেক আগেই। বউমনি আর বেচে নেই। হাইওয়ে তে যখন তোকে রাশেদ ওভাবে পড়ে থাকতে দেখে তখন আমাদের খবর দেয়। সাথে সাথে আমরা এবং পুলিশরা সেখানে যাই। পুলিশরা ইনভেস্টিগেশন করলে জানা যায় যে সেখানে বউমনিরও রক্তের সেম্বল পাওয়া যায় কিন্তু বউমনি কে কোথাও না। তারা বলে বউমনি হাইওয়ের নিচে জংগলে পরে গেছে। পুরো ৭ দিন বউমনি কে লাগাতার খুজে কিন্তু অবশেষে বউমনি কে না পেয়ে তারা বউমনি কে মৃত ঘোষণা করেন। (কান্নায় ভেংগে পড়ে আব্রাহাম কে জড়িয়ে ধরে)
অয়নের কথা গুলো শুনে আব্রাহামের পায়ের নিচ থেকে যেন মাটি সরে গেছে। তার পুরো দুনিয়া অন্ধকার লাগছে। আব্রাহাম এক ঝটকায় অয়নকে তার থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। ধীরে ধীরে পিছাতে লাগে, পিছাতে পিছাতে পরে যেতে নিলে আবির আহমেদ এবং ডাক্তার তাকে ধরতে যায় কিন্তু আব্রাহাম তাদের থামিয়ে দেয়। আব্রাহামের চোখ-নাক-মুখ সব লাল হয়ে গেছে। জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগে। আইরাতের যে এক্সিডেন্ট হয়েছিলো তা ঝাপসা ভাবে আব্রাহামের চোখে ভাসতে লাগলো। কিন্তু পুরোপুরি খেয়াল নেই তার। মাথায় প্রেসার পরাতে আব্রাহাম তার মাথা চেপে ধরে।
আব্রাহাম;; না ননা নাহ,, তুতুতোমরা মিমিমিথ্যে বলছ আমায়। আয়ায়য়ামার আই আইরাত বেবেবেচে আছে। কো কোথাও যায় নি সে আমাকে ছেড়ে। আম আমি জানি আমা আমার আইরাত ও আমাকে খুখুব খুব ভালোবাসে খুব। সে কখনো আমাকে ছেড়ে যেতেই পারে না। শুনেছ, শুনেছ তোমরা বেচে আছে আমার আইরাত বেচে আছে। ওকে যদি তোমরা কেউ আবার মৃত বলেছ তো আমি খুন করে ফেলবো সবাইকে। আমার আইরাত আমার ছিল,আছে আর থাকবে। ও ও ও আমাকে ছেড়ে আমার থেকে দূদূর যেতেই পারে না আমি জানি। আইরায়ায়ায়ায়াততততত।। (চিল্লিয়ে)
আব্রাহাম আইরাতের নাম ধরে চিল্লিয়ে উঠলো। পুরো হস্পিটালে এই একই আওয়াজ বাজতে থাকে “আইরাত”। আব্রাহাম রুমের সবকিছু ভাংচুর করতে শুরু করলো। বিছানা পুরো উলোটপালোট করে দিয়েছে। প্রচন্ড হিংস্র লাগছে এখন আব্রাহামকে যেন কেউ এখন সামনে গেলেই তার জীবন শেষ। এই অবস্থা থেকে কেবল আর কেবল তাকে আইরাতই বের করতে পারতো কিন্তু সে তো নেই💔। যা আব্রাহাম কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছে না। আব্রাহামের পাগলামো ধীরে ধীরে বাড়তে দেখে ডাক্তার বলে ওঠে…
ডাক্তার;; নার্স, নার্স জলদি উনাকে ধরার চেষ্টা করো। ওয়ার্ডবয় দের ডেকে আনো। উনি যেভাবে পাগলামি করতে শুরু করেছেন তাতে তার শরীর ভালো নয় বরং হিতে বিপরীত হবে। জলদি করো তোমরা।
ডাক্তারের কথায় সব নার্স এবং ওয়ার্ডবয় ছুটে এলো। তারা যথেষ্ট সাহস নিয়ে আব্রাহামকে ধরে ফেললো। ধরে বিছানাতে শুইয়ে দিলো।
ডাক্তার;; নার্স তাড়াতাড়ি করে ইঞ্জেকশনের ব্যাবস্থা করো। উনাকে শান্ত করানোর জন্য এখন ঘুমের ঔষধ ছাড়া আর কোন উপায় নেই। মিস্টার আবির আহমেদ এবং অয়ন আপনারা প্লিজ দয়া করে বাইরে যান প্লিজ। আমি আপনাদের সাথে পরে কথা বলবো। আবাদত্ত আপনারা প্লিজ বাইরে যান। Nurse bring it fast…
ডাক্তারের কথা অয়ন আবির আহমেদ দ্রুত বাইরে বেরিয়ে পরলেন। আবির আহমেদ দরজার গ্লাস দিয়ে আব্রাহাম কে দেখতে লাগলেন। অয়ন উল্টো পাশে দাঁড়িয়ে দুহাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলো।
আব্রাহামকে সবাই চারপাশ দিয়ে ধরে রাখলে ডাক্তার তার হাতে ইঞ্জেকশন পুশ করে দেয়। আব্রাহাম ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে যায়। পরিস্থিতি সবকিছু কোন্ট্রলে এসে পরে। আব্রাহামকে ঠিকঠাক মতো শুইয়ে দিয়ে নার্সরা এবং ডাক্তার রুমের বাইরে বের হয়ে আসে। বাইরে এসে দেখে আবির আহমেদ এবং অয়ন দুজনই মনমরা হয়ে বসে আসেন। ডাক্তার কে বাইরে আসতে দেখলে আবির আহমেদ দাঁড়িয়ে পরেন এবং ডাক্তার কে বলেন…
আবির আহমেদ;; ডাক্তার, ডাক্তার আমার আব্রাহামের এই অবস্থা কেন। ও তো অনেক বেশিই পাগলামি করছে। ডাক্তার আমার আব্রাহাম আবার ঠিক হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে তো?!
ডাক্তার;; দেখুন মিস্টার আবির আহমেদ, আব্রাহাম স্যার সুস্থ আছেন কিন্তু আইরাত নামে এই মানুষটির জন্য তার হ্রদয়ে যা আছে তা অনেক গভীর পর্যায়ে রয়েছে। যা আমরা চাইলেও বের করে আনতে পারবো না। আব্রাহাম স্যার ঠিক আছেন কিন্তু এই আইরাত কে না পাওয়ার যে যন্ত্রণা তিনি তার বুকে বয়ে বেড়াচ্ছেন তা অনেক বেশি। এই আইরাতকে পেলে তিনি সুস্থ এর ওপরে সুস্থ হয়ে যাবেন। আচ্ছা এই আইরাত কি আব্রাহাম স্যার এর…………!!
আবির আহমেদ;; বউ, আইরাত আব্রাহামের বউ হয়। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তারা দুজন আলাদা হয়ে যায় এবং আইরাত মামনি মারা যায়। অনেক বেশি ভালোবাসে আব্রাহাম আইরাতকে। এতোই ভালোবাসতো যে তার জন্য কারো জীবন নেওয়া বা দেওয়ার জন্যও কখনো পিছপা হতো না। কিন্তু আমার এতো দিন শুধু একটা ভয়ই কাজ করত মনে যে আব্রাহাম যখন উঠবে তখন আমাকে আইরাত মামনির কথা জিজ্ঞেস করলে আমি ওকে কি উত্তর দিবো। আজ আমার ভয় বাস্তবে রুপান্তরিত হলো। জানি না আব্রাহামের সামনে আমি কি নিয়ে যাবো,, কিভাবে বলবো যে তার আইরাত, তার আইরাত আর নেই (কেদে ওঠে)
ডাক্তার;; আপনি প্লিজ শান্ত হন। আমি বুঝতে পারছি আপনাদের পরিস্থিতি। কখন কি হয় আমরা কেউ বলতে পারি না। আপনি শুধু এটা জেনে রাখুন যে আল্লাহ তায়ালা কখনো কারো সাথে অমঙল করেন না। তিনি যা করেন সব ভালোর জন্যই করেন, ঠিক করেন। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে ধৈর্য ধরুন।
অয়ন;; ডাক্তার, আমরা দাভাইকে কখন বাড়িতে নিয়ে যেতে পারি?
ডাক্তার;; দেখুন স্যারের তো এখন অবস্থা ভালো না আজ না হয় থাক আপনারা বরং আগামীকাল আব্রাহাম স্যারকে নিয়ে যেতে পারেন।
অয়ন;; হুমমমম
ডাক্তার;; আমি এবার আসি….
এই বলে ডাক্তার আবির আহমেদ এবং অয়নের কাছ থেকে চলে আসলো। অয়ন আলতো করে তার বাপি কে ধরে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিলো।
আবির আহমেদ;; আমি কিভাবে আব্রাহামকে বলবো যে আইরাত মামনি নেই। আব্রাহাম একটা লাশ হয়ে বেচে থাকবে আইরাতকে ছাড়া। আইরাত কে সে ঠিক কতোটা ভালোবাসে তা মুখে বলা মুশকিল।
অয়ন;; বাপি, আমার দাভাই অনেক স্ট্রং তা কি তুমি জানো না। কিছুই হবে না ভাইয়ের তুমি দেখো।
অয়ন আবির আহমেদ কে বুঝাতে লাগলো। ওদিকে আব্রাহামকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন সে। আইরাত যে তার জীবনে আর নেই তা মানতে খুব কষ্ট হচ্ছে আব্রাহামের। যেন নিজ থেকে নিজের প্রাণ টা কেউ টান দিয়ে নিয়ে নিয়েছে।
আবির আহমেদ অয়ন সেইদিন হস্পিটাল থেকে এসে পরে।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
পরেরদিন🍂……………
__________
আবির আহমেদ অয়ন দুজনই হস্পিটালে যায়। আজ আব্রাহাম কে হস্পিটাল থেকে রিলিজ দেওয়া হবে। আব্রাহাম আবার বাড়িতে এসে পরবে। আবির আহমেদ এতে অনেক খুশি। বাড়িকে অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ঠিক যেভাবে আব্রাহামের পছন্দ। বাড়িতে সবকিছু রেডি করে রেখে তারা চলে যায় হস্পিটালের উদ্দেশ্যে।
।
।
In Hospital….
আবির আহমেদ অয়ন পৌঁছে যায় হস্পিটালে। ভিতরে এসেই দেখে আব্রাহাম উঠে বসে আছে এবং ডাক্তার তার পাশে দাঁড়িয়ে লেখালেখি করছেন। ডাক্তার তাদের দেখে মুচকি হেসে ভিতরে আসতে বললেন…
অয়ন;; Good morning দাভাই
আব্রাহাম;;_______________
অয়ন;; দাভাই তুই জানিস,, আজকে বাড়িতে গেলে তোর জন্য অনেক বড় একটা সারপ্রাইজ আছে।
আব্রাহাম;; ______________
অয়ন;; নে এবার আর কতো চুপ মেরে বসে থাকবি উঠ দেখি। এবার বাড়ি যাওয়া যাক কি বলিস।
আব্রাহাম;; ______________
আবির আহমেদ;; আরে ও আর কি বলবে। তাড়াতাড়ি চল।
।
।
আব্রাহাম কারো কোন কথায় শুনছে না। শুধু চুপ হয়ে এক দৃষ্টিতে বসে থাকে। আবির আহমেদ অয়ন আব্রাহাম কে রেডি করিয়ে নিয়ে চলে গেল। ড্রাইভার আব্রাহামের সব জিনিসপত্র গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলো।
বাইরে বেড়িয়ে এসে আব্রাহাম গাড়ি দেখলো।
আব্রাহাম;; গাড়ি…
আবির আহমেদ;; হ্যাঁ বাবা এটা গাড়ি। তুমি না Car Racing এ কতো শত বার চেম্পিয়ান হয়েছ,, ভুলে গেলে। তোমার মতো Car & Bike খুব কম জনই রাইড করতে পারতো। ড্রাইভ করবে তুমি?
আব্রাহামের আগের সব কিছু মনে হতে লাগে। হাইওয়ে তে গাড়ির দ্রুত চালিয়ে যাওয়া এমনকি আইরাতকেও একটা গাড়ি অর্থাৎ ট্রাক এসে ধাক্কা মারা সব যেন কেমন আব্রাহামের মাথায় চক্কর কাটতে লাগে। আব্রাহাম মাথা হালকা ভাবে চেপে ধরে। অয়ন আব্রাহামের বেপার বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি করে তাকে ধরে ফেলে এবং গাড়িতে খুব সাবধানে বসিয়ে দেয়। আব্রাহাম ধীরে ধীরে মাথা ছেড়ে দিয়ে সোজা হয়ে বসে। বেশকিছুক্ষন সময় পর তারা চৌধুরী ভবনে এসে পরে।
।
।
।
চৌধুরী ভবন….
গাড়ি থামতেই আবির আহমেদ এবং অয়ন নেমে পরে। ড্রাইভার ও গাড়ির ডিকি থেকে সব জিনিসপত্র নামাতে শুরু করে। আব্রাহামকে নামতে না দেখে আবির আহমেদ গাড়ির দরজা খুলে ভিতরে আব্রাহামের দিকে তাকায়। দেখে যে আব্রাহাম চুপ করে গাড়িতে বসে আছে। তা দেখে আবির আহমেদ হেসে আব্রাহামের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়…
আবির আহমেদ;; আব্রাহাম বাবা, এইতো আমাদের বাড়ি। এবার চলো তাড়াতাড়ি নেমে পড়।
আব্রাহাম কিছুটা সংকোচ নিয়েই তার বাপির হাত ধরে নেমে পরে গাড়ি থেকে। নেমেই চোখ যায় সোজা চৌধুরী ভবনের দিকে। আব্রাহাম ভ্রু কুচকে বাড়ির দিকে তাকায়। অয়ন পিছন দিক দিয়ে এসে আব্রাহামকে বলে ওঠে…
অয়ন;; কিরে দাভাই ভিতরে চল…
আব্রাহাম আবার সামনে দিকে তাকালো। আব্রাহাম তার পা বাড়াতে নিয়েও আবার থেমে যায়। তার মনে কেমন যানি একটা ভয় কাজ করছে, যেতে ইচ্ছে করছে না তবুও একপ্রকার বাধ্য হয়ে যেতে হলো তাকে। আব্রাহাম বাড়ির ভিতরে যাচ্ছে এবং চারপাশে সবকিছুর ওপর নজর দিচ্ছে। এতে করে আইরাতের স্মৃতি যেন তার আরো বেশি মনে পরছে। কেননা এই বাড়ির অলিগলি, প্রত্যেকটা কোণা আইরাতের সাথে মিশে আছে। সবকিছুই যেন আইরাতের কথাই বলছে,, আইরাতের সাক্ষীই বহন করে যাচ্ছে। আইরাতের হাসি কান্না, রাগ, অভিমান, মায়া এই বাড়ি যেন আইরাতের সেই সবকিছু কেই ইংগিত করছে। যা আব্রাহামকে ভিতর থেকে আর বেশি অগোছালো করে ফেলছে।।
।
।
।
।
।
।
।
।
💙🌸চলবে~~~~~