EX গার্লফ্রেন্ড যখন পুলিশ অফিসার পর্ব-০৮

0
3538

# EX গার্লফ্রেন্ড যখন পুলিশ অফিসার ?
# লেখকঃ Sahid Hasan Sahi
# পর্বঃ ৮ম

সামিয়া আমার সামনে এসে রেগে এবং দাঁতে দাঁত চেপে আমাকে বললোঃ আমার সাথে চলো কথা আছে।

সামিয়ার এমন রাগ আমি আগে কখনো দেখিনি। আমি ভয়ে ভয়ে বললামঃ কি কথা ম্যাম?

সামিয়া মিমির দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বললোঃ যেতে বলেছি যাবে এতো কথা বলো কেন?

এইবার বিষয় টা বুঝতে পারলাম। আমাকে মিমির সঙ্গে কথা বলতে দেখে সামিয়া জ্বলতেছে। আর হ্যাঁ মিমি আর আমি পাশাপাশি বসে থেকে গল্প করতেছি আর হাসাহাসি করতেছি। সিফাতের ফোনে কল আসাই সামিয়া গাড়ি থেকে নামার আগেই সে একটু সাইটে গেছে। এই জন্য আমি আর মিমি শুধু বসে আছি।

আমি সামিয়াকে একটু হার্ট করার জন্য মিমির দিকে তাকিয়ে একটা চোখ টিপি দিয়ে বললামঃ জানু তুমি একটু বসে থেকো আমি আসতেছি।

মিমি আমার এমন কথা শুনে অবাক চোখে আমার দিকে তাকালো।আমি তাকে একটা চোখ টিপি দিয়ে বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করলাম।

মিমি বুঝতে পেরে একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললোঃ ঠিক আছে জানু তাড়াতাড়ি এসো।

সামিয়া আমার আর মিমির কথা শুনে রাগে ফুসতেছে।আমি সামিয়া কে বললামঃ ম্যাম চলুন আমার বেশি সময় নেই।

আমার কথা শুনে সামিয়া আমার দিকে একটা রাগি লুকে তাকিয়ে আমার হাত ধরে টানতে টানতে ওর গাড়ির কাছে নিয়ে আসলো। গাড়ির কাছে আসার পরে গাড়ির দরজা খুলে আমাকে সামনে মানে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসতে বললো। আমি কিছুটা বিরক্ত হয়ে সামিয়া কে বললামঃ এই আপনি কি বলবেন বলুন। আমার কাজ আছে।

সামিয়া ওর পিস্তল টা বের করে আমার কপালে ঠেকিয়ে বললঃ আর একটা কথা বললে মাথার খুলি উড়িয়ে দিবো। চুপচাপ গাড়িতে বসে থাক???।( রেগে)

আমি পিস্তল দেখে ভয় পাইয়ে গেলাম। এই মেয়ের বিশ্বাস নেই কখন কি করে বসে। সামিয়া এসে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চালাতে শুরু করলো। কোথায় যাচ্ছে সেটা জানি না। কিন্তু পথটা আমার চেনা। কারণ এই রাস্তা টা হলো থানার রাস্তা।আমি সামিয়া কে বললামঃ কোথায় নিয়ে যাচ্ছো আমাকে?

সামিয়া আমার দিকে একবার রক্তিম চোখে তাকিয়ে আবার ড্রাইভিং করায় মনোযোগ দিলো।আমি তো বোকা বুনে গেলাম। কোথায় তাকে শাস্তি দিবো ভেবেছিলাম কিন্তু না সেই আমাকে ভয় দেখাচ্ছে। আমি পকেট থেকে ফোন বের করে হুদাই কানে লাগিয়ে বলতে লাগলামঃ হ্যালো জানু তুমি দশ মিনিট ওয়েট করো আমি আসতেছি। আর হ্যাঁ তোমার সকালের কিস টা কিন্তু দারুন হয়েছিলো।

একটু থেমে আবার বললামঃ ঠিক আছে । পরে কথা হবে।বাই।

ফোনটা পকেটে রেখে সামিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সামিয়ার চোখমুখ লাল হয়ে গেছে। বুঝলাম না রাগে নাকি কষ্টে? হয়তোবা রাগেই হবে। আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম বাইরের দৃশ্য। সামিয়া গাড়ি নিয়ে থানার ভিতরে ঢুকলো। সামিয়া গাড়ি থেকে নেমে আমার কাছে এসে দরজা খুলে আমার হাত ধরে টানতে টানতে ওর কেবিনে নিয়ে গেল।

থানায় এখনো কেউ আসেনি। কয়েকটা পুলিশ বসে থেকে তাদের কাজ করেছে। সামিয়া আমাকে ওর কেবিনে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে দরজা লাগিয়ে দিল। দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমার সামনে এসে আমার শার্টের কলার চেপে ধরে বললোঃ অন্য মেয়ের কিস তোর দারুন লাগে তাই না? কই আমার কিসের কথা তো কোনো দিন বলিস নি। দাঁড়া আজ তোকে দেখাচ্ছি,,,

কথা শেষ করতে না করতেই আমার মাথা পিছন থেকে খামচে ধরে আমার ঠোঁট আর ওর ঠোঁট এক করে দিলো। সামিয়ার এই রকম ব্যবহার দেখে আমিতো হতভম্ব হয়ে গেলাম। আমিও আর রেসপন্স না দিয়ে পারলাম না। বেশ কিছুক্ষণ পর আমি ওকে ছেড়ে দিয়ে ঠাসসস করে একটা চড় মেরে বললামঃ ভেবেছিস কি? তোর এই রাগ, অভিমান দিয়ে আমার কাছে এসে আমার মনকে, আমার ভালোবাসা কে জয় করবি সেটা কখনো হবে না।

সামিয়া আমার হাত ধরে বলতে লাগলোঃ প্লিজ সাহিদ তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কি করবো বলো তোমাকে অন্য মেয়ের সাথে দেখলে আমার খুব কষ্ট হয়। তুমি যখন গাড়িতে বসে থেকে অন্য মেয়েকে কিস করার কথা বলেছিলে তখন আমার মনে হচ্ছিলো কেউ আমার বুকের ভিতর হাতুড়ি দিয়ে পিঠাচ্ছিলো। হ্যাঁ আমি জানি আমি তোমার সাথে অন্যায় করেছি, তোমাকে কষ্ট দিয়েছি, তোমাকে তোমার পরিবার থেকে আলাদা করেছি। তবে এটাও সত্যি যে, তুমি আমাকে এখনো ভালোবাসো। সেটা তুমি প্রকাশ করো না। কারণ, আমার প্রতি তোমার অভিমান,রাগ, ঘৃণাটা ভালোবাসার তুলনায় অধিক রয়েছে।আর থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে আমি তোমাকে আগে যে রকম নিজের করে রেখেছিলাম, যে রকম করে ভালোবেসেছিলাম আবার সেই রকম করেই তোমাকে ভালোবাসবো । আগে যেই রকম করে তোমার ভালোবাসা টা পেয়েছিলাম এখনো সেই ভালোবাসাটা কে আদায় করে নিবো। হয়তোবা কষ্ট হবে। হোক তবুও আমি তোমাকে ভালোবাসবো।
আমার প্রতি তোমার অভিমান কে দূর করবো।

এতোক্ষণ সামিয়া নিচের দিকে তাকিয়ে থেকে ছিলো।কথা গুলো শেষ হতেই সামিয়া আমার চোখের দিকে উৎসুক ভাবে তাকিয়ে আছে।লক্ষ্য করলাম সামিয়ার চোখের কোণে পানি জমা হয়েছে। সে হয়তোবা আমার কাছ থেকে আশা করেছে যে, আমি যেন তাকে জড়িয়ে ধরে বলি “এই পাগলি আমি সব কিছু ভুলে গিয়েছি। এখন থেকে আমরা সব কিছু নতুন করে শুরু করবো।” কিন্তু আমি আর কারোর মায়ায় নিজেকে জড়াতে চাইনা।

আমি একটা মুচকি হাসি দিয়ে বললামঃ দেখো সামিয়া আগে যা হওয়ার তা হয়েছে, এখন তুমি আর আমার পথ চেয়ে বসে থেকো না। কারণ আমি চাইনা আমার জন্য কারোর সুন্দর ভবিষ্যৎ, কারোর সুন্দর আশা আকাঙ্ক্ষা নষ্ট হয়ে যাক, ভেঙ্গে যাক। তুমি অন্য কাউকে বিয়ে করে সংসার শুরু করো। তাকে নিয়ে ভবিষ্যৎ টাকে গড়ো।

সামিয়া আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললোঃ কেন তোমাকে নিয়ে কি আমি আমার সুন্দর ভবিষ্যৎ টাকে সাজাতে পারি না? তোমাকে নিয়ে কি আমি আমার সংসার শুরু করতে পারি না।

আমি এবার জোরে জোরে হাসতে হাসতে বললামঃ আমাকে নিয়ে কেন তুমি সংসার গড়াতে যাবে? আমি তো একটা প্রতারক। আমি মানুষের মন নিয়ে, মানুষের ভালোবাসা নিয়ে খেলা করি। অযথা আমার মতো প্রতারককে লুচ্চাকে কেন জীবনে জড়াবে বলো।

সামিয়াঃ সাহিদ আমাকে কি আর একবার সুযোগ দেওয়া যায় না?
প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দিয়ে আমাকে তোমার বুকে জড়িয়ে নাও না।( করুন সুরে)

আমি শান্ত ভাবে বললামঃ দেখ সামিয়া আমি আর কোনো ছলনাময়ীর ছলনাতে নিজেকে জড়াতে চাই না। আর আমি এসব বলতে চাচ্ছি না। আর কিছু বলবে কি? আমি কলেজে যাবো।

সামিয়া একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললোঃ না আর কিছু বলবো না। আর আমার সাথে চলো আমি তোমাকে গাড়িতে করে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আসতেছি।

আমিঃ ধন্যবাদ।আমি একাই যেতে পারবো।

সামিয়া আমার দিকে হাত জোড় করে করুন ভাবে তাকিয়ে বললোঃ প্লিজ সাহিদ আমি তো তোমার কাছ থেকে বেশি কিছু চাইনি।

আমিঃ ঠিক আছে চলো।

আমার কথা শুনে সামিয়ার মেঘাচ্ছন্ন মুখে এক চিলতি হাসি ফুটলো। এক সময় এই হাসির জন্য কতই না পাগল ছিলাম। আর আজ আমার কাছে কোনো আবদার পূরনের স্বার্থে সেই হাসিটা নিজ ইচ্ছায় উঁকি দিচ্ছে। শুধু মাত্র সময়ের অপেক্ষা। সময় বড় অদ্ভুত সময় বড় অদ্ভুত।

সামিয়াঃ হুমমম এসো।

সামিয়ার সাথে সামিয়ার কেবিন থেকে বের হয়ে গাড়ি নিয়ে কলেজে আসলাম। কলেজে আসার পর গাড়ি থেকে নেমে কয়েক ধাপ দিতেই সামিয়া বললোঃ ছুটির পর ওয়েট করবে আমি এসে নিয়ে যাবে।

সামিয়ার কথা শুনে আমি পিছনে ঘুরে ওর কাছে যায়ে বললামঃ এই যে মিস আমি আপনার সঙ্গে এসেছি বলে এর অর্থ এই নয় যে, আমি সব সময় আপনার সঙ্গে ঘোরাফেরা করবো। আর হ্যাঁ এরপর থেকে যেন আমার কাছে আপনাকে না দেখি। মনে থাকে যেন।

সামিয়া কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললোঃ হুঁ বললেই হলো। আমিও
সহজে ছেড়ে দেওয়ার মেয়ে নয় হুঁ।

আমি ওর কথা শুনে একটা হাসি দিয়ে প্যান্টের পকেটের মধ্যে দুই হাত ঢুকিয়ে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ক্লাসে চলে আসলাম। ক্লাসে এসে দেখি স্যার ক্লাস শুরু করে দিয়েছে। হাতের ঘড়িতে দেখি পনেরো মিনিট দেরি হয়ে গেছে।

ক্লাসের দরজায় যায়ে বললামঃ মে আই কাম ইন স্যার।

স্যারঃ ইয়েস। বাট এতো লেট করলে কেন?

স্যারের প্রশ্ন শুনে ভেবাচেকা খেয়ে গেলাম। কী বলবো ভেবে পাচ্ছি না। এখন বলাও যাবে না যে, আমি সামিয়ার সাথে থানায় গিয়েছিলাম। আমি আমতা আমতা করে বললামঃ আসলে স্যার একটু,,।

স্যার আমাকে আর বলতে না দিয়ে বললোঃ কি আসলে আসলে করতেছো? বউমাকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলে নাকি?

এই কথা বলেই স্যার হো হো করে হাসতে লাগলো।

স্যারের এই কথা শুনে ক্লাসে হাসির রোল পড়ে গেল।আর আমার তো মান সম্মানের ফালুদা বানিয়ে দিলো। আমি আর কিছু না বলে আমার সিটে বসে পড়লাম।

আসলে স্যার আর আমার মামা ফ্রেন্ড। স্যার প্রায়ই মামার বাসায় আসে। আর মামার বাসায় আসা মানে আমার সাথে দেখা হওয়া। মামার বাসাতে আমি, মামা আর স্যার বসে থেকে আড্ডা দিতাম। এই জন্য স্যারের সাথে আমার ছাত্রের তুলনায় বন্ধুত্বের সম্পর্ক টা বেশি। সব ক্লাস শেষ করে আমি, সিফাত,মিমি,রাফি আর নীলিমা ক্যান্টিনে গেলাম। ক্যান্টিনে যাওয়ার পরে একটা টেবিলে পাঁচ জন বসে নাস্তা অর্ডার করলাম। নাস্তা করতে করতে মিমি বললঃ মামা কাহিনী বল?

আমিঃ কি আবার কাহিনী?

মিমিঃ ন্যাকামি বন্ধ করে বল যে পুলিশ ম্যামের সামনে আমাকে জানু বললি কেন?

সিফাতঃ কিহহহ তোমাকে জানু বলেছে তাও আবার পুলিশ ম্যামের সামনে? কি হয়েছে সাহিদ বল?

রাফিঃ কোন পুলিশ ম্যাম রে মিমি?

মিমি রাফি কে উদ্দেশ্য করে বললোঃ তোর বিয়ের দিন থানাতে যে পুলিশ ম্যাম ছিলো যে সেটা।

রাফিঃ ওওও,,, আমিও কিন্তু একটা বিষয় লক্ষ্য করতেছি যে, সাহিদ কিন্তু পুলিশ ম্যামের সামনে থাকা অবস্থায় অন্য রকম বিহেভ করতেছে। মনে হচ্ছে এরা দুজন আগে থেকেই পরিচিত। সাহিদ সত্যটা কি বলবি ভাই ?

নীলিমাঃ হুমম ভাইয়া বলেন।

আমি জানি এদের সঙ্গে প্যাঁচাল পেড়ে আর লাভ হবে না। তাই আমি বললামঃ তোরা তো আমার এক্স মানে সামিয়ার কথা জানিস তাই না?

রাফিঃ হুমমম। কিন্তু তোর সামিয়ার সাথে এখানকার সাথ কী?

সিফাতঃ তুই তো সামিয়ার জন্যেই আর কোনো মেয়ের সাথে রিলেশানে যাসনি‌।

আমিঃ হুমম। ঐ সামিয়ায় হলো তোদের পুলিশ ম্যাম।

রাফি আর সিফাত একসাথে অবাক হয়ে বললঃ কিহহহ,,,।

আমিঃ হ্যাঁ।

মিমিঃ তাহলে সামিয়ার সাথে এমন ব্যবহার করতেছিস কেন?

আমিঃ তোরা তো সব কিছুই জানিস তারপরেও এসব প্রশ্ন করতেছিস কেন?

রাফিঃ জানি, কিন্তু এখন সব কিছু ভুলে তাকে ফিরিয়ে নে।

আমিঃ দেখ আমি এসব এখন আর বলতে পারতেছি না। এখন বাসায় যাবো চল।

সিফাতঃ হুমমম চল সবাই।

এরপরে বন্ধুদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। আজ হ্যাঁ রাফি এখন নীলিমাকে নিয়ে রাফির বাসায় থাকে। আমি বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। বিকেলে তিশা এসে বায়না ধরলো ওকে নিয়ে নাকি ঘুরতে যেতে হবে। ফ্রেশ হয়ে তিশাকে নিয়ে একটা পার্কে আসলাম।

তিশা আর আমি বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা আড্ডা দিয়ে একটা জায়গায় বসে পড়লাম। হঠাৎ একজায়গায় নজর পড়লো। দেখি সামিয়া আমার আর তিশার দিকে মায়াবী হরিণীর মতো তাকিয়ে আছে। আর চোখ দুটিতে আষাঢ়ের মেঘ গুলো লুকোচুরি খেলতেছে। এই বুঝি ঝড়ে পড়বে মেঘ গুলো বারি রুপে।

আমি তিশাকে বললামঃ তিশা চল বাসায় যাবো।

তিশা আমার দিকে তাকিয়ে একটা রহস্যময় হাসি দিয়ে বললোঃ তুই একটু বাইরে যায়ে অপেক্ষা কর আমি আসতেছি।

আমিঃ ঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসিস।

তিশাকে বলে আমি পার্কের বাইরে এসে বাইকে উপর বসে তিশার আসার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।

অপরদিকে, তিশা সামিয়ার কাছে যায়ে বললোঃ এই যে আপনি এখানে কি করতেছেন?

সামিয়া তিশার কথায় চমকে উঠে বললোঃ ক কই ককিছু না।

তিশা মুচকি হেসে সামিয়ার একটা হাত ধরে বললোঃ আমার ভাইয়াকে ভালোবাসো?

সামিয়া মাথা নেড়ে হ্যাঁ সম্মতি দিলো।

তিশাঃ আর কখনো কষ্ট দিবে না তো? কখনো ছেড়ে যাবে না তো?

সামিয়া তিশার এমন প্রশ্ন শুনে বেশ অবাক হলো। নিজেকে সামলে নিয়ে বললোঃ নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি আর কখনো কষ্ট দিবো না।

তিশাঃ তাহলে ছেড়ে গিয়েছিলে কেন?

সামিয়াঃ সেদিন যদি তুমি আমার জায়গায় থাকতে তাহলে তুমি কি করতে বলো। হ্যাঁ আমার ভুল হয়েছিল আমি সেদিন তাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করেই এমন ব্যবহার করেছিলাম। কিন্তু সত্যি বলতেছি আমি তাকে খুব ভালোবাসি।( কান্না করতে করতে)

তিশাঃ তাহলে সেদিন যেই ছেলেটাকে বয়ফ্রেন্ডের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলে সেটা কে?

সামিয়া অন্য দিকে মুখ করে বললোঃ ঐ ছেলে টা হলো আমার মামাতো ভাই মারুফ। তার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক ছিলো না। জাস্ট ভাই বোন। সেদিন আমি সাহিদ কে কষ্ট দেওয়ার জন্য এমন করেছিলাম। যাতে সে বুঝতে পারে ভালোবাসার মানুষটির সাথে প্রতারণা করলে তাকে ছেড়ে অন্যের সাথে ঘোরাফেরা করলে কেমন লাগে। কিন্তু কখনো বুঝতে পারিনি আমার সেই কাজের জন্য আজ আমাকে এতো কষ্ট পেতে হবে।( কান্না করতে করতে)

তিশা সামিয়ার কাঁধে হাত রেখে বললোঃ যদি আমি তোমাকে আমার ভাবি বানাতে সাহায্য করি তাহলে।

তিশার কথা শুনে সামিয়া এক চিলতি হাসি দিয়ে বললোঃ সত্যি তুমি আমাকে তোমার ভাইয়াকে পেতে সাহায্য করবে।

তিশাঃ হুমম।

তিশার কথা শুনে সামিয়া তিশাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললোঃ তোমাকে যে কী বলে ধন্যবাদ দিবো সেই ভাষা আমার নেই।

তিশা সামিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললোঃ আমি কিছু চাই না, তুমি শুধু আমার ভাইয়া কে দেখে রাখবে।

সামিয়াঃ হুমমম। দেখে রাখবো আর কখনো কষ্ট দিবো না।

তিশাঃ ঠিক আছে চলো বাসায় যাই।

সামিয়াঃ চলো।

এরপরে সামিয়া আর তিশা পার্ক থেকে বের হলো। তিশা বাইকে উঠলো আর সামিয়া ওর বাসায় চলে গেল।

আমি তিশাকে নিয়ে বাসায় আসলাম। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে একটু স্টাডি করে ডিনার করে এসে শুয়ে থেকে ভাবতে লাগলাম, সামিয়া কে কি আমি মেনে নিবো? সে তো তার ভুল বুঝতে পেরেছে? না আমি আর কারো মায়ায় নিজেকে জড়াবো না।এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম।

সকালে কারো নরম হাতের ছোঁয়ায় ঘুম ভাঙলো। চোখ খুলতেই আমি শোয়া থেকে উঠে বসে পড়লাম। কারণ, যে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সে হলো,,,,,,,

( চলবে)

?? কেমন হচ্ছে তা কমেন্ট করে জানাবেন ??

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে