Dark Mystery পর্ব-০৭

0
7

#Dark_Mystery ( কালো রহস্য )
#Part_7
#Sabrina_Summa

আজ শনিবার। তবে কাজের চাপ আরো বেশি মিস সিক্রেটের। বাধ্য হয়ে তাকে তার সিক্রেট টিমের সাথে দেখা করতে যেতে হচ্ছে। অবশ্য অনেক দিন হয়ে গেছে টিমের সাথে দেখা হয় না।

অন্ধকার একটা রুমে প্রবেশ করলো মিস সিক্রেট। ঝাপসা আলোয় সামনে বসে থাকা ১৫ জনের অবয়ব দেখতে পাচ্ছে সে। তার উপস্থিতি পেতেই লাইট অন করে সবাই দাঁড়িয়ে বললো, ” গুড আফ্টারনুন, ম্যাম।”
মিস সিক্রেট : হুম। সিট ডাউন।
রুমের সবকিছু সাদা। এই সাদা রুমে কালো হুডি ও মাস্ক পড়ে ১৬ জন গোল টেবিলের চারিদিকে বসে আছে। দেখতেই খুব অদ্ভুত লাগছে।
মিস সিক্রেট সকলকে তার পজিশন নাম্বার দিয়ে ডাকে।
নাম্বার ১৩ বলে উঠলো, ” ম্যাম, আমরা কি মাস্ক খুলতে পারি না? ”
মিস সিক্রেট জানে নাম্বার ১৩ নতুন। তাই বেশি কিছু বললো না। তবে কড়া কন্ঠে উত্তর দিলো,” না।”
নাম্বার ১৩: বাট ম্যাম আমরা তো একটা টিম। আমরা একে অপরকে বিশ্বাস করতে পারি না?
মিস সিক্রেট : হ্যাঁ তবে সেটা শুধু কাজের ক্ষেত্রে পরিচয়ের ক্ষেত্রে নই।
সবাই নিরব হয়ে গেলো।
নিরবতা ভেঙে মিস সিক্রেটই বললো,” ফালতু কথা বাদ দিয়ে কাজের কথায় আসো। খুব বিজি আমি। ”
নাম্বার ১৫ : ম্যাম, কিছু বাহিরের মাফিয়া গ্যাং আমাদের কাছে হেল্প চাচ্ছে!
মিস সিক্রেট : কেন? আই মিন, ভালো কাজে নাকি খারাপ কাজে?
নাম্বার ১১ : খারাপ কাজে।
মিস সিক্রেট পায়ের উপর পা তুলে বললো, ” তাহলে সেই দেশের সরকারকে তাদের সম্পর্কে ইনফরমেশন দিয়ে দাও। ”
নাম্বার ৭ : ভালো কাজের জন্যও চাইছে। কি করবো ম্যাম?
মিস সিক্রেটের কিছুটা রাগ হচ্ছে। এমনিতেই প্রচুর চাপ তার মধ্যে এদের বাচ্চামি প্রশ্ন। এরা সবগুলা কি নতুন। এতদিন তার সাথে কাজ করেও কখন কি করতে হবে তা জানে না!
তবুও মিস সিক্রেট স্বাভাবিক ভাবেই বললো, ” টাকা নিয়ে ইনফরমেশন পাঠিয়ে দিও।”
নাম্বার ৩ : ম্যাম। সবাই তো আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চাই!
নাম্বার ৩ এর কথা শেষ হতেই কল আসলো মিস সিক্রেটের ফোনে৷
মিস সিক্রেট : বলে দেবে আমি মানেই তোমরা।
“আজের মতো বাই। খুব বিজি আছি। ”
কল রিসিভ করতে করতে বলে চলে এলো।
ইরফান নিচে গাড়িতে বসে আছে। এই ৭৭ তলা ভবনের কোনো এক তলায় মিস সিক্রেটের আড্ডাখানা। তবে সে কোনোদিন যায় নি সেখানে। খোঁজও করে নি। কারণ সে মিস সিক্রেটকে খুব ভালো করে চিনে!
ভাবনার মাঝেই মিস সিক্রেট গাড়িতে এসে বসলো।
ইরফান চমকে বললো,” ম্যাম, এত তাড়াতাড়ি! ”
মিস সিক্রেট : আর্জেন্ট কল। ( সিট বেল্ট লাগাতে লাগাতে)
ইরফান : কোথায় যাবো?
মিস সিক্রেট : ড্রাইভ করতে থাকো বলছি।

এদিকে মাহির সারাদিন ধরে সুপ্তিকে কল করছে। এরমধ্যে সুপ্তি শুধু একবার কল রিসিভ করছে। বাকিবার মাহির শুধু বন্ধ পেয়েছে না হয় বিজি পেয়েছে।

সূর্য ডুবে গেছে অনেক আগেই। প্রায় নির্জন একটা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সুপ্তি। সময় আর কয়টায় বা হবে! হবে হয়তো সাতটা বা আটটা।
পরিবেশ অন্ধকার হলেও কৃত্রিম আলো আছে। হয়তো দেয়ালের পিছনে কোনো বাসা আছে। সেখা থেকেই আলোটা আসছে!
অনেকক্ষণ যাবত কারো জন্য অপেক্ষা করছে সুপ্তি।
হঠাৎ কয়েকটা গাড়ি গেলো তার সামনে দিয়ে। তারই মাঝে একটা গাড়ি পিছিয়ে তার পাশ বরাবর থামলো। বাকি গাড়িগুলো সেই গাড়িটির আগে পিছে থামলো।।
গাড়ি থেকে মাহির নেমে বললো, ” আরে সুপ্তি যে!”
সুপ্তি মাহিরকে দেখেই ভ্রু কুচকালো। এই ছেলেটাকে তার একদম সহ্য হয় না।
মাহির এগিয়ে এসে বললো, ” এত রাতে একা একটা মেয়ে এখাসে কি করে? ”
সুপ্তি বিরক্ত নিয়ে বললো, ” রাত কোথায়? সন্ধ্যে!”
মাহির : ওই একিই হলো। কার জন্য অপেক্ষা করছো?
সুপ্তি মাহিরের দিকে তাকিয়ে বললো, ” আমার ফ্রেন্ডের জন্য। ও এসে পিক করবে। ”
তারপর চোখ সরিয়ে রাস্তার দিকে নিলো৷
মাহির: চলো। আমি পৌঁছে দিয়ে আসি।
সুপ্তি হাত ভাজ করে বললো, ” লাগবে না। ”
মাহিরও হাত ভাজ করে তাকিয়ে রইলো সুপ্তির দিকে আর সুপ্তি রাস্তার দিকে।
কিছুক্ষণ পর মাহির বললো, ” পিছনে গণকবর আছে জানো? ”
সুপ্তি অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো, ” গণকবর! ”
মাহির মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।
সুপ্তি কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে বললো, ” আ-প-নি মি-থ্যে বল-ছে-ন না? ”
মাহির মাথা নাড়িয়ে না বলতেই সুপ্তির কাপনি শুরু হলো। ভয়ে মাহিরের ভাজ করা হাতটা ধরে কাঁপা ঠোঁটে বললো, ” প্লিজ আমাকে এখানে রেখে যাবেন না! আমি মরে যাবো। এরা আমাকে মেরে ফেলবে। ”
মাহির সুপ্তিকে ভালো করে ধরলো। সুপ্তি বলেই যাচ্ছে, ” প্লিজ। প্লিজ রেখে যাবেন না। ওরা আমাকেও মেরে ফেলবে। ”
মাহির সুপ্তিকে এক হাতে জড়িয়ে ধরে বললো, ” না রেখে যাবো না। তুমি শান্ত হও। ”
সুপ্তি রীতিমতো ঘামছে।
মাহির ঘাপড়ে গেলো সুপ্তির এ অবস্থা দেখে। সুপ্তিকে গাড়িতে বসালো।
সুপ্তি মাহিরকে জড়িয়ে ধরে বলছে, ” আপু, আপু। উঠো না প্লিজ। দেখো না ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। আপনারা কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমার আপুকে? আপু, উঠো। তোমাকে নিয়ে চলে যাচ্ছে কেন ওরা? ”
এগুলোই অনর্গল বলে যাচ্ছে। মাহিরও চিন্তায় সুপ্তিকে জড়িয়ে ধরে আছে। কিছুক্ষণ পর সুপ্তি চুপ হয়ে গেল।
মাহিরের মনে হচ্ছে সুপ্তি অজ্ঞান হয়ে গেছে। তাই কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করলো। তারপর খেয়াল করলো সুপ্তি ঘুমিয়ে গেছে।
মাহিরের গাড়ি প্রবেশ করলো একটা ডুপ্লেক্স বাড়িতে। এইটা মাহিরের বাড়ি। তার বাবা তাকে গিফট করেছিল।
মাহির ভিতরে এসে নিজের রুমে সুপ্তিকে শুইয়ে দিলো। সার্ভেন্টকে দিয়ে সুপ্তির জামা চেঞ্জ করালো। কারণ সুপ্তি ঘেমে গোসল করে ফেলেছিলো।

রাত এখন প্রায় ১০ টার দিকে।
মাহির সুপ্তির দিকে তাকিয়ে ভাবছে এও কখনো সম্ভব! শুধুমাত্র কবর নামক একটা শব্দ শুনে একটা মানুষ এতটাই পেনিক হয়ে গেলো যে সজ্ঞানেই আর রইলো না!
তানিশা এসে মাহিরের ধ্যান ফিরালো।
তানিশা : ঘুমাবে না?
মাহির সুপ্তির দিকে তাকিয়ে বললো, ” কি করে ঘুমাবো। আমার বেডেই তো শুয়ে আছে। ”
তানিশা : তাহলে প্রথমে এনে শুয়ালে কেন এখানে?
মাহির : মাথা কাজ করছিলো না।
তানিশা : চুপচাপ শুয়ে পড়ো অন্যরুমে।
বলেই চলে গেলো।
মাহির কিছুক্ষণ সুপ্তির দিকে তাকিয়ে থেকে বললো, ” মেয়েটা না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লো। ”
বলা শেষ করে মাহিরও চলে গেলো।

#চলবে.,.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে