Dark Mystery পর্ব-০৬

0
7

#Dark_Mystery ( কালো রহস্য )
#Part_6
#Sabrina_Summa

কফিশপের বাহিরে দাঁড়িয়ে সুপ্তি খুব গভীরভাবে কাউকে পর্যবেক্ষণ করছে।
উপযুক্ত সময় মনে করে ভেতরে গিয়ে কফি অর্ডার করলো। কিছুক্ষণ রেসিপশনে দাঁড়িয়ে থেকে একটা ট্রেতে কফি নিয়ে দ্রুত হাঁটা শুরু করলো। ফলস্বরূপ সাথে সাথেই কারো সাথে ধাক্কা খেলো। দুইজনই নিজের ড্রেস দেখছে।
সামনে থাকা ব্যক্তিটি বিরক্ত হয়ে কিছু কড়া কথা শুনাতে যাবে আর আগেই সুপ্তিকে দেখে শান্ত গলায় বললো, ” মিস সুপ্তি যে এখানে। ”
সুপ্তি সামনে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে তিরস্কার করে বললো, ” মন্ত্রীর একমাত্র ছেলে তাশরিফ এই নরমাল কফিশপে কি করে! ”
মাহির মুচকি হেসে বললো, ” তাশরিফ না মাহির বলো। ”
সুপ্তি ভ্রুটা আরো একটু কুঁচকে বললো, “কেন? পুরো দেশ আপনাকে তাশরিফ নামে চিনে আমি কেন মাহির বলবো? ”
মাহির : কারণ আমি বলতে বলেছি।
সুপ্তি : হোয়াট ইভার। আমাকে যেতে হবে।
মাহির অবাক হয়ে বললো, ” এভাবে যাবে!”
সুপ্তি নিজের দিকে তাকালো। হোয়াইট কালারের একটা টপস পড়া ছিল কিন্তু এখন তা কফি কালার ধারণ করেছে।
সুপ্তি মনে মনে বললো, ” ওকে কফি দিয়ে গোসল করাতে এসে তো নিজেই গোসল করে ফেললাম। ”
মাহির সুপ্তির সামনে তুরি বাজিয়ে বললো, ” এই যে। কি এত ভাবছো? ”
সুপ্তি “আমাকে যেতে হবে ” বলেই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিলো কিন্তু মাহির আটকে দিলো।
মাহির: আজকে আবার কে পিছে লাগলো?
সুপ্তি ভ্রু কুচকে বললো, ” আমি কি চোর যে মানুষ আমার পিছে লাগবে! পড়তে হবে এক্সাম সামনে। ”
মাহির: ওকে ওয়েট।
নিজের জ্যাকেটটা খুলে বললো, ” এটা দিয়ে কভার করো। ”
সুপ্তি : এটা নিতে পারবো না। পরে ফেরত দিবো কিভাবে?
মাহির: কেন ৩১৯ নম্বর কক্ষ। না হয় তোমার কাছেই রেখো।
সুপ্তি জ্যাকেটটা তাড়াতাড়ি পড়ে চলে গেলো।
সুপ্তির যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মাহির মনে মনে বললো, ” তুমি নিজ ইচ্ছায় সামনে আসো বারবার নাকি নিয়তি আনে! ”
আরেক কাপ কফি নিয়ে এক কোনার একটা টেবিলে বসে মাস্কটা খুলে বললো, ” আমাকে মাস্ক পড়েও চিনলো কিভাবে?”
তানিশা টিটকারি করে বললো,” হয়তো তোমাকে নিয়ে একটু বেশিই গবেষণা করে ফেলেছে। ”
মাহির: তুমি জানো ও এমন করবে না।
তানিশা একটু সিরিয়াস হয়ে বললো,” তোমার ভয়েস শুনে হয়তো বুঝেছে। ”
মাহির: হয়তো। যাই বলো না কেন এই সুযোগে আবারো দেখা হবে।
তানিশা : কি জ্যাকেটের?
মাহির: হুম।
তানিশা : একটু বেশিই ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছো না ওকে নিয়ে?
মাহির উত্তর না দিয়ে ভাবনার জগতে ডুব দিলো। সত্যিই কি সে একটু বেশিই করছে!

রাত প্রায় ৯ টা। অনেকক্ষণ ধরে মিস সিক্রেট মাহিরের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু মাহির আমছে না।
প্রায় আধা ঘণ্টা পর মাহির আসলো। মাহির মিস সিক্রেটকে দেখেই ভ্রু কুচকে কিছু বলবে তার আগেই মিস সিক্রেট বলে উঠলো, ” ভালোই তো দিন কাটাচ্ছো, প্লে বয়। ”
মাহির দাঁত কিড়মিড় করে বললো, ” কি বলতে চাচ্ছো? ”
মিস সিক্রেট হেসে জ্যাকেটটা সামনে ধরে বললো, ” এটাই যে কবে এতটা দয়ালু হয়ে গেলে যে জ্যাকেট বিতরণ করছো? ”
জ্যাকেটটার দিকে না তাকিয়েই বললো,” তুমি আমার বডিগার্ড চেঞ্জ করেছো কেন? ”
মিস সিক্রেট : তোমার ভালোর জন্য।
মাহির: নিজের ভালো আমি নিজে বুঝি।
মিস সিক্রেট বিড়বিড় করে বললো, ” সেটা আমি জানিই! কতটা বুঝো! ”
এতক্ষণে জ্যাকেটটা নজরে পড়লো মাহিরের।
মাহির চিন্তিত হয়ে বললো, ” এই জ্যাকেট কোথায় পেলে তুমি?”
মিস সিক্রেট ভ্রু নাচিয়ে বললো,” যাকে দিয়েছিলে তার কাছে। ”
মাহির ভয়ে ভয়ে বললো,” সুপ্তি কোথায়? কি করেছো তুমি ওর সাথে? ”
মিস সিক্রেট শয়তানি হাসি দিয়ে বললো,” গুম।”
তারপর হাসতে হাসতে চলে গেলো।
মাহির অনেকটা ভয় পেয়ে গেলো কারণ মিস সিক্রেটকে নিয়ে বিশ্বাস নেই।

রুমে এসে ছোট একটা ডাইরি থেকে একটা নাম্বার তুলে কল করলো ৷
রিসিভ হতেই অপর পাশ থেকে আওয়াজ এলো, ” কে আপনি?”
মাহির: সুপ্তি। আপনি কি সুপ্তি?
সুপ্তি নাম্বারটা একবার দেখলো। সে ভয়েস শুনেই বুঝে গেছে এটা মাহির।
সুপ্তি: হ্যাঁ।
মাহির হাফ ছেড়ে বাঁচলো।
সুপ্তি: আপনি আমার নাম্বার পেলেন কোথায়?
মাহির: তুমি আমাকে চিনেছো?
সুপ্তি : হ্যাঁ। আমার উত্তর টা। মাহির: সেটা গুরুত্বপূর্ণ নই। আগে বলো আমার জ্যাকেট মিস সিক্রেটকে দিয়েছো কেন?
সুপ্তি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো, ” রাস্তায় দেখলাম। তাই ভাবলাম হয়তো আপনার বাসায় যাবে তাই দিয়ে দিলাম।”
মাহির: তুমি এটা ঠিক করো নি।
সুপ্তি : আমার প্রশ্নের উত্তরটা কিন্তু এখনো পাই নি।
মাহির: সেটা পাবেও না।
সুপ্তি বিরক্তিতে ধূর বলেই কল কেটে দিলো।
মাহির বসে বসে ভাবতে লাগলো এটা কি হলো!
নিজের মনে মনে বলতে লাগলো, “মানুষের ভালো চাইলেও তো দেখা যায় মানুষ ভালো বুঝে না। ”

অন্যদিকে.,
সুপ্তি বুঝতেই পারছে না তার নাম্বার মাহির কোথায় পেলো। তার ইনফরমেশন বের করা খুবই ইজি বাট তার নাম্বার অনলাইনে পাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে কীভাবে পেলো ও?

এদিকে.,.
“এই বোকা মেয়েটা হয়তো এখনো ভেবেই যাচ্ছে আমি নাম্বারটা কোথায় পেলাম। একবার নিজের পার্সটা চেক দিলেই কিন্তু বুঝতে পারে ওর পার্সোনাল মিনি ডাইরি আমার কাছে! ”
বলেই মুচকি হাসলো।

#চলবে.,.
(কেমন লাগছে জানাবেন)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে