#Dark_Mystery( কালো রহস্য )
#Part_4
#Sabrina_Summa
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাইকেল চলার রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে মাহির চৌধুরী অরপে তাশরিফের গাড়ি। ভুল করে ড্রাইভার এদিক দিয়ে ঢুকে পড়েছে। ফলস্বরূপ খুব বেকায়দায় আছে তারা। কারণ রাস্তাটা খুব সরু।
রাস্তার পাশে মানুষের ভিড় জমছে কারণ কারোরই বুঝার বাকি নেই গাড়িটা কার।
হঠাৎই একটা মেয়ে গাড়ির সামনে এসে পড়লো।
সাথে সাথে ড্রাইভার গাড়ি ব্রেক করলো।
মূলত মেয়েটি সকলের ধাক্কায় গাড়ির সামনে এসে পড়েছে৷
মাহির গাড়ি থেকে নেমে মেয়েটির কাছে এলো। তারপর মেয়েটার হাত ধরে বললো, ” দেখি দেখি কতটা কাটলো? ”
মেয়েটা ঝাপটা মেরে মাহিরের হাত সরিয়ে দিলো। তারপর নিজের হাতের দিকে তাকালো।
বাম হাতের তালুতে ভালোই কেটে গেছে। রক্তও পড়ছে৷
আসলে গাড়িটা ধীরেই চলছিলো কিন্তু সমস্যাটা হলো গাড়ির সামনে থাকা কোনো ধারালো জিনিস। মেয়েটা কিছুক্ষণ খুঁজেও বুঝতে পারলো না কোথায় ফ্যাস লেগে কেটেছে।
মেয়েটা বিরক্ত নিয়ে বললো, ” আপনার ড্রাইভার কি চোখ কপালে নিয়ে ঘুরে? ”
মাহির : তুমি কি চোখ কপালে নিয়ে ঘুরো?
মেয়েটা আরও বেশি বিরক্ত পোষণ করে বললো, ” এখন সব দোষ আমার না! আপনি এই রাস্তা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন কেন? ”
মাহির মাথা চুলকাতে চুলকাতে বললো,” এরজন্য সরি। ভুল করে ঢুকে পড়েছি। ”
ঝামেলা দেখে মাহিরের এসিস্ট্যান্ট তানিশা এগিয়ে আসলো।
মাহির আবারো মেয়েটার হাত ধরতে ধরতে বললো, “তোমার হাতে ব্যান্ডেজ করা প্রয়োজন। ”
মেয়েটা দূরে সরে গিয়ে বললো, ” নিজের কেয়ার নিজে করতে পারি। ”
বলা শেষ করে রাস্তার পাশে মাঠের একটা গাছের দিকে হাঁটা দিলো।
মেয়েটা বিড়বিড় করে বললো, ” যেখানে বাঘের ভয় সেখানে গিয়েই সন্ধ্যা হয়। আমি তোমার সামনে আসতে চাইনি! ”
মাহির মেয়েটার দিকেই তাকিয়ে আছে।
গাছের নিচে তিনটে ছেলে একটা মেয়েকে রেগিং করছে।
মেয়েটা ভ্রূ নামিয়ে বললো, ” এখানে কি চলছে? ”
তিনটে ছেলের মধ্যে থেকে একজন বললো,” রেগিং”
মেয়েটা : রেগিং! কোন ইয়ার শুনি?
থার্ড
মেয়েটা : আর আমি ফোর্থ। এখন যদি আমি রেগিং করি তখন।
এইডারে আগে দেখছোস ক্যাম্পাসে?
যাই বল। মালডা কিন্তু সেই!
বলা শেষ করতেই মেয়েটা জোরে করে থাপ্পড় মারলো ছেলেটাকে। ছেলেটা ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গেলো।
মাহির ভাবছে এখন তার সেখানে গিয়ে এগুলো থামানো উচিৎ।
কিন্তু তার আগেই আরেকটা ছেলে এগিয়ে আসতেই মেয়েটা ছেলেটার মেইন পার্টে লাথি মারলো। ফলে ছেলেটিও বসে পড়লো মাটিতে।
মেয়েটা অবশিষ্ট ছেলেটার দিকে রাগী চোখে তাকাতেই ছেলেটা মাটিতে শুয়ে বললো, “আপু, আমাকে ছেড়ে দিন। আমি এমনিতেই শুয়ে পড়ছি। ”
মেয়েটা মুচকি হাসলো। রেগিং হওয়া মেয়েটা বললো, ” থ্যাংকস আপু। ”
প্রতি উত্তরে শুধু মাথা নাড়ালো মেয়েটি।
মাহির গাড়িতে উঠতে উঠতে তার এসিস্ট্যান্টকে বললো, ” মেয়েটার তেজ দেখেছো। একদম পার্ফেক্ট! আমার সকল ইনফরমেশন চাই। ”
“আর ওকেও চাই। “( বিড়বিড় করে)
মাহির সুযোগ বুঝে মেয়েটার একটা ছবি তুলে নিয়েছিলো। তাই বেশি টাইম লাগলো না। ১০ মিনিটের মাঝেই ইনফরমেশন বের করে ফেললো তানিশা।
তানিশা : তাশরিফ পেয়ে গেছি।
মাহির : বলতে থাকো। তানিশা : নাম রিশিতা খান সুপ্তি। ডাকনাম সুপ্তি। বাবার নাম মিজানুর রহমান খান। অবসরপ্রাপ্ত আর্মি অফিসার। সুপ্তি সামাজিক বিজ্ঞান নিয়ে পড়ছে অনার্স ফোর্থ ইয়ারে। মাহির অবাক হয়ে বললো, ” কিহ! ফোর্থ ইয়ারে! আমি এখানে কতবার এসেছি। ইনফ্যাক্ট দুই বছর আগে গ্রেজুয়েড হয়ে গেছি। জীবনে কখনো দেখিনি। অন্যদিকে.,. সুপ্তি : দেখবেন কিভাবে। আমি তো তিন বছর ক্যাম্পাসেই আসি নি। স্যার : তবে এখন এসেছো কেন? রূপ দেখাতে! সুপ্তি : স্যার, সামনে এক্সাম তাই। স্যার রেগে বললো, ” তিনবছর না পড়ে এক্সামে কি লিখবে? ” সুপ্তি চুপ থাকলো কারণ এখন তর্ক করা মানে আরও কথা শুনা। সাথে বেয়াদবের ট্যাগ লাগানো তো ফ্রিই। অনেকক্ষণ অপমান করার পর সুপ্তিকে ক্লাস থেকেই বের করে দিলো। এভাবেই সব ক্লাস গেলো। ২ টার দিকে বাসায় ফিরেছে সে। মনটা আজ বড্ড খারাপ তার।
#চলবে.,.