#Dangerous_Crazy_Lover_?.
#Sumaiya_Moni “.
#Part-2.
আরিয়া একটা রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসে।বাসায় এসে হাতের চুড়ি,কানের দুল,গলার লেকলেস সব খুলে মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে আরিয়ার ।
দুই দিন পর…….
.
.
লিলি ও রাইমা আরিয়া দের বাসায় আসলো। ড্রইংরুমে বসে মারিয়া টিভি দেখছিল। লিলি ও রাইমা মারিয়া কে দেখে মারিয়ার কাছে গেল। লিলি মারিয়াকে জিজ্ঞেস করলো।
লিলি: মারিয়া আরিয়া কোথায়?
মারিয়া: রুমে?
রাইমা: ওর রুমে নাকি?
মারিয়া: হ্যাঁ!
লিলি: আয় চল রাইমা।
লিলি ও রাইমা আরিয়ার রুমে প্রবেশ করেই অবাক হয়ে যায়। সারা রুমের মেজতে চকলেটের খোসা ফালানো। এখানে ওইখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আরিয়া বিছানায় পা ভাজ করে বসে চকলেট খেতে ব্যাস্ত। লিলি ও রাইমা যে ওর রুমে প্রবেশ করেছে সেটা দেখেও ওদের দিকে ধ্যান দিল না। ওরা দু জন ভালো করেই যানে আরিয়ার রাগ হলে ইচ্ছা মত চকলেট খায় । কিন্তু আগের তুলনায় এবার একটু বেশি খেয়েছে বোধহয়।
লিলি: আরিয়া আর কত খাবি? এবার তো থাম।
রাইমা: এই দুই দিন না ঘর থেকে বের হয়েছিস না কলেজে গিয়েছিস। এভাবে ঘর বন্ধি থাকবি কত দিন?
আরিয়া:……….[ ওদের কথা কানেই নিচ্ছে না আয়েস করে চকলেট খেয়েই যাচ্ছে ]
লিলি: কিছু বলছি ….কথা কানে যাচ্ছে না নাকি চকলেটে সাথে গিলে গিলে খাচ্ছিস আমাদের কথা গুলো?….[ বিরক্ত নিয়ে ]
রাইমা: আরিয়া……।
আরিয়া: আমি কী ভুল করেছিলাম যে ওই বিস্কুট আমাকে থাপ্পর মারলো?…….[ চকলেট খাওয়া বন্ধ করে কিছুটা রেগে বললো ]
লিলি: এখানে তোর কোন দোষ নেই আরিয়া। আর তুই এই বিষয়টা নিয়ে এখনো পড়ে আছিস?
রাইমা: দেখ আরিয়া যা হয়েছে ভুলে যা।
আরিয়া: কিচ্ছু ভুলবে না আরিয়া….এর কঁড়া প্রতিশোদ নেবো আমি।……[ চিল্লিয়ে বললো ]
লিলি: আরিয়া পাগলামি করিস না। তুই জানিস না বিদ্যুত আরিয়ান চৌধুরী কে? তুই প্রতিশোন নিলে বিদ্যুত তোকে ছেড়ে দিবে না।
রাইমা: আর তুই এটা ভুলে যাস না বিদ্যুত একজন বড় লইয়ার।
আরিয়া: লইয়ার লক্কর বুঝি না আমি এর প্রতিশোদ নেবোই।…….[ চিল্লিয়ে ]
লিলি: আরিয়া লিসেন তুই তার সম্পর্কে কত টুকু জানিস সেটা আমি জানি না ? তবে বিদ্যুত প্রচন্ড রগচটা,বদমেজাজি আর পাগল টাইপের । হয়তো রাগের বশে তোকে চড় দিয়েছে । তার জন্য………..[ আরিয়া থামিয়ে দেয় ]
আরিয়া: চুপ কর….আরিয়া যেটা বলে সেটাই করে । প্রতিশোদ তো আমি নেবোই। যে ভাবেই হোক।….[ রাগি কন্ঠে ]
রাইমা: কিভাবে নিবি শুনি?
আরিয়া: সময় হলে জানতে ও দেখতে পারবি…..[ বলেই উঠে দাঁড়াল ]
আরিয়া কে উঠে দাঁড়াতে দেখে লিলি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো।
লিলি: কোথায় যাচ্ছিস?
আরিয়া: মারিয়ার রুমে?
রাইমা: কেন?
আরিয়া: আমার চকলেটের বাক্সে চকলেট নেই সব শেষ হয়ে গিয়েছে,মারিয়ার রুমে চকলেট আছে সেগুলো চুরি করে আনতে যাচ্ছি।
লিলি: হায় আল্লাহ্!……[ মাথা দুলিয়ে ]
আরিয়া আর কিছু না বলে রুম থেকে মারিয়ার রুমে গিয়ে চকলেট নিয়ে এসে খেতে লাগলো।
রাইমা: আর খাস না রে আরিয়া….।
আরিয়া: না খাবো।
লিলি: খা।
আরিয়া: একটা যোগস বলি শোন।
লিলি ও রাইমা আরিয়ার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে আছে । ওরা ভালো করেই যানে এখন আরিয়ার বক বক শুরু হয়ে যাবে।
আরিয়া: কিরে শুনবি না।
লিলি: হ্যাঁ! বল।
আরিয়া: একটা মেয়ে চকলেট খেয়েই যাচ্ছে খেয়েই যাচ্ছে খেয়েই যাচ্ছে….. পাশে বসে দুইটা মেয়ে সেই চকলেট খাওয়া মেয়েটির দিকে তাকিয়েই আছে তাকিয়েই আছে তাকিয়েই আছে। এখন বল সেই চকলেট খাওয়া মেয়েটার কী করা উচিত সেই মেয়ে দুটুর ?
লিলি,রাইমা বিছানায় ধপ করে শুয়ে পড়লো। ভালো করে বুঝতে পেরেছে কথাটা ওদের দুইজন কে ইংগিত করে বলা হয়েছে ।
আরিয়া: হিহিহিহিহিহি……[ হাসতে লাগলো ]
লিলি : তুই আর ভালো হবি না।
আরিয়া: মোটেও না,ভুলেও না,কোন দিনও না।
রাইমা : জানি।
লিলি: কালকে কলেজে যাবি তো?
আরিয়া: না গেলে প্রতিশোদ নিব কিভাবে?
রাইমা: তুই কী করতে চাইছিস বল তো?
আরিয়া: বলবো না।
রাইমা: জানতাম এটাই বলবি।
.
.
.
.
বিদ্যুত হাউজ…..
বিদ্যুত: রবিন(বিদ্যুতের সহায়ক) কালকের যে কেসের ফাইল খান সাহেব দিয়ে গিয়েছে সেই ফাইলটা আমাকে এনে দেও…….[ গম্ভীর কন্ঠে লেপটপের দিকে তাকিয়ে বললো ]
রবিন: জ্বী স্যার ।
রবিন রুম থেকে বেরিয়ে গেল। কিছুক্ষন পর সবুজ রঙের একটা ফাইল এনে বিদ্যুত কে দিল।
রবিন: স্যার একটা কথা বলার ছিল।……[ কিছুটা ভয় নিয়ে বললো ]
বিদ্যুত: বল…..[ গম্ভীর কন্ঠে ]
রবিন: স্যার খান সাহেব ওই গরিব মেয়েটি কে সত্যিই রেপ করেছে। আর সেটার প্রমান ও আছে আপনার বিপক্ষের ওকিলের কাছে। এখন আপনি যদি কেসটা মিথ্যে করে দেন তাহলে ওই অসহায় মেয়েটি ও তাঁর পরিবার সমাজে মুখ দেখাবে কী করে । তাই বলছিল……।
বিদ্যুত এতক্ষন দাঁতে দাঁত চেপে রবিনের কথা গুলো শুনছিল। বাকিটা বলার আগেই বিদ্যুত বিদ্যুৎ এর মত গর্জে বলে উঠলো ……..?
বিদ্যুত: আমাকে নিতি শিখাচ্ছিস? তোর সাহস কী করে হয় আমাকে এই কথা বলার?…….[ ককর্শ কন্ঠে ]
রবিন ভয় পেয়ে যায় বিদ্যুতের কথা শুনে।
রবিন: স…স্যরি স্যার আমার ভুল হয়ে গিয়েছে । আমাকে মাফ করে দিবেন ।…….[ ভয় ভয় বললো ]
বিদ্যুত: গেট আউট……আইউ…..[ চিল্লিয়ে রাগি কন্ঠে ]
রবিন ভয় পেয়ে রুম থেকে তাড়াতারি করে বেরিয়ে যায়।
বিদ্যুত নিজের রাগ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করছে। নিতিবাচক কথা শুনলে প্রচন্ড রাগ হয় বিদ্যুতের ।
সত্যের পিছনে লড়া ওর কাছে ডাল-বাত মনে হয়।
সত্যকে সব চাইতে বেশি ঘৃনা করে। এটাই ওর পাগলামি।
.
.
.
.
.
পরেরদিন….
আরিয়া কলেজে যাবার আগে মোবাইলের দোকানে গিয়ে ৫ টা সিম কিনে। লিলি ও রাইমা দোকানের পাশে দাড়িয়ে আরিয়ার কন্ড দেখছে। সিম কিনে বের হবার পর একটা নতুন সিম ফোনে ঢুকিয়ে সেট করে নিল ।
লিলি: তুই কী করতে যাচ্ছিস আরিয়া?……[ জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে ]
আরিয়া: দেখে যা।…..[ মৃদ হেসে ]
রাইমা: লিলি এখান থেকে চল। ওর সাথে থাকলে ও আমাদের কে কোন জামেলায় ফাসিয়ে দিবে কে জানে।..
আরিয়া: এখান থেকে চলে গেলেই ফাসিয়ে দেব।
লিলি ও রাইমার চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে আরিয়ার দিকে।
আরিয়া: আয় আমার সাথে। ……[ বলেই সামনে হাঁটা ধরলো ]
লিলি ও রাইমা আরিয়ার পিছন পিছন হাঁটছে। আরিয়া বিদ্যুতের মেগাজিনের বইটা বের করে বিদ্যুতের নাম্বার ডায়াল প্যাডে উঠাতে লাগলো। এবার লিলি ও রাইমা বুঝে গেল আরিয়া কী করতে যাচ্ছে ।
লিলি: না আরিয়া প্লিজ এটা করিস না….. [ বিনয়ি স্বুরে ]
রাইমা: আরিয়া প্লিজ স্টপ…..[ করুন স্বুরে ]
আরিয়া প্রতি উওরে বাঁকা হেসে ফোনটা কানে নিল।একবার ফোন বেজে কেঁটে গেল। আরিয়া আবার কল দিল। এবারো একি ভাবে কোন রিসপন্স পেল না। আরিয়া রাগ হচ্ছে এখন । আবার কল দিল বিদ্যুতের নাম্বারে। এবার কল ধরেছে। কল ধরার সাথে সাথে আরিয়ার রিয়েকশন শুরু………..।
আরিয়া: আব্বে শালার পুত নবাবজাদা কল ধরতে এতক্ষন লাগে। মনে হইতাছে এখনও ঘুমাচ্ছিস। বাপের বয়সে ঘুমাছ নাই নাকি । থাপ্পর দিয়ে চৌদ্দগুষ্টির নাম ভুলিয়ে দেব। রাখ ফোন………[ ঝাড়ি দিয়ে কথা গুলো বলেই তাড়াতারি করে ফোন কেটে দিল ]
ফোন কেটে দিয়ে ফোন থেকে সিম বের করে হাতের মধ্যে সিমটা নিয়ে ভেঙ্গে রাস্তায় ফেলে দিল। আরিয়া বড় একটা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়লো। মুচকি হেসে লিলি ও রাইমার দিকে তাকিয়ে দেখে ওরা ভয়তে কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।
আরিয়া: জাস্ট চিল দোস্ত রা….দেখেছিস এটাই কে বলে বুদ্ধি……এভাবেই আমি ওই বিদ্যুত কে জ্বালিয়ে যাবো। যতদিন না আমার রাগ কমে।…..[ ভাব নিয়ে ]
লিলি ও রাইমা এখনো চুপ করে আছে । ওরা এখনও ঠিক আগের মতই আরিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে ।
আরিয়া: আরে কী হয়েছে তোদের? আয় ক্লাসে চল।…..[ বলেই ওদের হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো ]
বিদ্যুত হাউজ……
সকালে…
ক্রিং….ক্রিং….ক্রিং
বিদ্যুত গভির নিদ্রায় আছন্ন। হঠাৎ ফোন বেজে উঠায় কিছুটা নড়ে চড়ে উঠলো। ফোন রিসিভ করলো না।ফোন বেজে আপনা আপনি কেঁটে গেল। আবারও ফোন বেজে উঠলো । কিন্ত এবার ও ধরলো না। তৃতীয় বার ফোন বেজে উঠলো। এবার বিদ্যুত রাগি+বিরক্তি নিয়ে ফোনটা কানে ধরে “হ্যালো’ বলার সাথে সাথে অপর পাশ থেকে ঝাড়ি দেওয়া কথা গুলো শুনে এক নিমিষের মধ্যেই ঘুম উদাও হয়ে গিয়ে রাগের আভা চেহারাতে ফুটে উঠলো। ফোন কেটে দেবার সাথে সাথে বিদ্যুত শোয়া অবস্থায় হাত মুঠ করে বিছানার পাশের টেবিলে রাখা টেবিল লাইট টা গুশি দিয়ে মাটিতে ফেলে দিল। এমনেতেই সকাল সকাল ঘুমটা নষ্ট করে দিছে তাঁর উপর ঝাড়ি দেওয়া কথা গুলো শুনে রাগে ফায়ার হয়ে গেল বিদ্যুত ।
বিদ্যুত: রবিন……রবিন….. [ চিৎকার দিয়ে ডাকছে ]
রবিন নিচ থেকে বিদ্যুতের রাগি গলার ডাক শুনে তাড়াহুড়ো করে উপরে চলে আসে। রুমে ঢুকে দেখে বিদ্যুত রাগি ভাব নিয়ে বিছানায় বসে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে । রবিন মনে মনে ছোট একটা ঢোক গিল্লো।
রবিন: স্যার আমাকে ডেকেছেন……[ মৃদ কন্ঠে ভয় ভয় বললো ]
বিদ্যুত মাথা তুলে রাগি মুড নিয়ে রবিনের দিকে তাকালো । বিদ্যুতের রাগি চেহারা দেখে রবিনের জায় জায় অবস্থা । বিদ্যুত ফোনটা রবিনের সামনে ধরে বললো ।
বিদ্যুত: ডায়াল লিস্টের ফাস্ট নাম্বারের ইনফরমেশন আমার চাই। কোথা থেকে কল দিয়েছে তার লোকেশন ট্রেস কর এখনি……..[ চিল্লিয়ে বললো ]
রবিন: জ্বী স্যার। ইনফরমেশন পেয়ে যাবেন।…..[ বলেই রুম থেকে বেরিয়ে যায় ]
বিদ্যুত নিচের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো।
কে সেই মেয়ে? কেন কল দিয়ে এভাবে ঝাড়ি দিয়ে কথা বললো ? কী সেই মেয়েটির উদ্দেশ্য?
.
.
.
.
.
.
ক্যান্টিনে বসে আরিয়া বক বক করেই যাচ্ছে লিলি রাইমা বিরক্তি নিয়ে শুনছে।
লিলি: হইছে এলা থাম।…….[ হাত জাগিয়ে থামিয়ে দিল ]
রাইমা: আরিয়া ৫ মিনিট চুপ থাক প্লিজ ।……[ করুন স্বুরে ]
আরিয়া: তোরা জানিস আরিয়া চুপ থাকতে পছন্দ করে না।
লিলি: জানি,,,, তার জনই ৫ মিনিট চুপ থাকতে বলছি ।
আরিয়া: না চুপ থাকবো না আচ্ছা একটা কথা শোন?
রাইমা: মাফ চাই বইন….সেই তখন থেকে তোর কথা শুনতে শুনতে আমার কান পেকে গেছে।
আরিয়া: কান পেকে গেছে কই আমি তো দেখছি তোর কান ভালোই আছে ……[ রাইমার কানের দিকে তাকিয়ে ]
রাইমা: স্যরি আমার কান জ্বালা পালা হয়ে গেছে!
আরিয়া: হায় হায় বলিস কী জাতরা পালা হয়ে গেছে?
রাইমা: জ্বালা পালা বলেছি?
আরিয়া: জাতরা পালা বলেছিস?
রাইমা: জ্বালা পালা বলেছি?
আরিয়া: জাতরা পালা বলেছিস?
লিলি হা করে ওদের দুই জনের কথা শুনছে। একবার আরিয়ার দিকে তাকায় আরেকরাব রাইমার দিকে তাকায়। এবার লিলি রাগ নিয়ে চিৎকার দিয়ে বললো।
লিলি: ব্যাস ব্যাস…..জ্বালা পালাও না,জাতরা পালাও না…..[ চিৎকার দিয়ে বললো ]
আরিয়া: তাহলে কী?
লিলি: আমার মাথা?
আরিয়া: আচ্ছা আচ্ছা তোর মাথা আমার পা।
লিলি: তোর মাথা আমার পা মানে?
আরিয়া: তোর মাথায় আমার পা……[ বলেই হাসতে লাগলো ]
লিলি: ও আল্লাহ্….. আল্লাহ্ গো…..[ উপরের দিকে তাকিয়ে ]
রাইমা হাসতে লাগলো।
আরিয়া: আচ্ছা আচ্ছা একটা সিরিয়াস কথা শোন ।…..[ সিরিয়াস মুড নিয়ে ]
লিলি: কী কথা বল।
রাইমা: হ্যাঁ বলে ফেল।
আরিয়া: কাছে আয়।
লিলি ও রাইমা একটু ঝুকে আরিয়া কাছে গেল। আরিয়া টেবিলের উপর দু হাত রেখে বললো।
আরিয়া: বলবো?
লিলি ও রাইমা অধিক আগ্রহ নিয়ে বললো “হ্যাঁ “…..
আরিয়া: আচ্ছা শোন…..আমার পাপ্পিকে আজকে গোছল করাতে হবে।……[ আস্তে করে বললো ]
লিলি ও রাইমা ধপ করে টেবিলে শুয়ে পড়লো। এই ফালতু কথা শুনার জন্য ওরা দুই জন প্রস্তুত ছিল না।
আরিয়া: কী হল তোদের?…..[ ওদের গায়ের উপর হাত দিয়ে বললো ]
লিলি: আমি কোমায়……[ মাথা ঝাগিয়ে বলে আবার ও টেবিলের উপর মাথা রেখে শুয়ে পড়লো ]
রাইমা: আমিও…..।
আরিয়া: বাহ্! আমাকেও সাথে করে নিয়ে চল।
লিলি: রাইমা আরিয়া রে একটু চুপ থাকতে বল। আমার কিন্ত আর সহ্য হচ্ছে না।…..[ রাগি মুডে ]
রাইমা:…………..
আরিয়া: আরে তোরা……[ রাইমা আরিয়ার মুখ চেপে ধরলো ]
রাইমা: আর একটা কথাও বলবি না। চুপ করে বসে থাক।…… [ আঙুল জাগিয়ে রাগি কন্ঠে বললো ]
আরিয়া চুপ হয়ে গেল।
.
.
.
.
.
.
.
বিদ্যুত হাউজ……
রবিন: স্যার!…..[ মৃদ স্বুরে ]
বিদ্যুত সুইমিং পুলের সামনে দাঁড়িয়ে ওর প্রিয় মাছ গুলোকে খাবার দিচ্ছিল রবিনের ডাকে মাছকে খাবার দেওয়া বন্ধ করে সোফায় গিয়ে বসলো।
বিদ্যুত: ওই নাম্বারের কোন খবর পেয়েছো কী?…..[ গম্ভীর গলায় ]
রবিন: স্যার ওই নাম্বারটি আজই চালো করা হয়েছে । আর এখন আপাতত সিমটা বন্ধ আছে। আর লোকেশন ট্রেস করে জানতে পারলাম আপনি যেই কলেজে প্রধান অতিথী হিসাবে গিয়েছিলেন সেই কলেজের কিছুটা দুরে একটা মোবাইলের দোকান আছে।সেই দোকানের লোকেশন দেখা যাচ্ছে । অর্থাৎ ওইখান থেকে আপনাকে কল দেওয়া হয়েছিল ।
বিদ্যুত: আমি সিউর যদি আমার সাথে ওই মেয়েটির কোন শক্রুতা থেকে থাকে তাহলে সেই মেয়েটি আবার আমাকে কল দিবে [ মনে মনে ] আচ্ছা তুমি যাও এখন।……..
রবিন সেখান থেকে চলে যায়। বিদ্যুত গভির চিন্তায় মগ্ন। চোখ বন্ধ করে সেই কলেজের কথা ভাবতে লাগলো। হঠাৎ করেই বিদ্যুতের সেই চড় দেওয়া মেয়েটির কথা মনে পড়ে যায়।
বিদ্যুত: এই মেয়েটি নয়তো? কিন্তু ওর চেহারার ভাব ভঙ্গি দেখে বুঝা যায় না এই মেয়েটি এমন করবে। ঝাড়ি ওয়ালি তোমার কলের অপেক্ষায় আছি আমি।……..[ বাঁকা হেসে ]
.
.
.
.
রাতে ১২টা……
আরিয়া ওর রুমের দরজা খুলে উঁকি দিয়ে বাহিরে দেখছে ওর আব্বু আম্মু রা ঘুমিয়েছে কি না। ড্রইংরুমের লাইট বন্ধ দেখে আরিয়া নিশ্চিত হল তাঁরা ঘুমিয়ে গিয়েছে । আরিয়া আস্তে করে দরজা খুলে রুম থেকে বেরিয়ে মেইন দরজা খুলে বাড়ির বাহিরে চলে এল। রাস্তা দিয়ে একা একা হাঁটছে। মনে হালকা ভয় অনুভব করছে। লিলিদের বাসার সামনে এসে লিলিকে কল দিতে লাগলো।
লিলি ঘুমিয়ে ছিল। ফোন বেজে উঠতেই ঘুম ঘুম চোখে ফোন হাতে নিয়ে দেখলো আরিয়া কল দিয়েছে। তাড়াতারি করে ফোন রিসিভ করেই কানের কাছে ধরলো।
আরিয়া: মরার ঘুম ঘুমাস….তাড়াতারি নিচে আয়….[ ঝাড়ি দিয়ে বললো ]
লিলি: ওই এতো রাতে নিচে এসে কী করবো?….[ আস্তে করে বললো ]
আরিয়া: নাগিন ডান্স দেবো……তাড়াতারি নিচে আয়….[ ঝাড়ি দিয়ে ]
লিলি: ওইখানে দাঁড়া আসতাছি।
আরিয়া: হুম….।
টু…..টু…..টু…..
লিলি আস্তে করে ওর রুমের দরজা খুলে বাহিরে চলে এল।
লিলি: ওই আরুর বাচ্চা কী হয়েছে এতো রাতে নিচে ডাকলি কেন?
আরিয়া: আমার সাথে আয় কাজ আছে।
লিলি: কোথায় যাবো?
আরিয়া: আয় আগে।
রাইমার বাসার সামনে এসে দাঁড়ালো । রাইমাকেও একি ভাবে ঝাড়ি ঝুড়ি দিয়ে নিয়ে আসতে বললো । রাইমা আরিয়ার ঝাড়ি খেয়ে নিচে চলে এলো।
লিলি: তুই এত রাতে কী করছে চাইছিস বল তো?
আরিয়া: আয় আমার সাথে?
রাইমা: কোথায়?
আরিয়া: আগে আয় আমার সাথে…..। ওয়েট তার আগে এই পাউডার গুলো চেহারায় ভালো করে মেখে নে।………[ একটা পাউডাদের কৌটা ওদের দিকে এগিয়ে দিয়ে ]
লিলি ও রাইমা একবার পাউডারের কৌটার দিকে আরেক বার আরিয়ার দিকে তাকাচ্ছে । ওরা ঠিক বুঝতে পারছে না আরিয়ার কী করতে চাইছে ।
আরিয়া : তাড়াতারি মাখ তোরা…….. আমাকে পরেও দেখতে পারবি।
আরিয়া ওর চেহারায় ইচ্চা মত পাউডার মাখলো। সাথে লিলি ও রাইমা কেও মেখে দিল।
আরিয়া: এবার আমাদের দেখলেও কেউ চিনতে পারবে না। আমরা এখন ভ্যাম্পায়ার কুইন হয়ে গিয়েছি।
লিলি: সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
আরিয়া: একটু পর পায়ের নিচে দিয়ে যাবে ওয়েট কর।
আরিয়া রাস্তা দিয়ে হাঁটা ধরলো। লিলি ও রাইমা আরিয়ার পিছন পিছন হাঁটতে লাগলো। শুনসান রাস্তা একদম নিরব। নেই কোন মানুষের আনাগোনা।ওরা তিন জন ওদের বাসা থেকে প্রায় অনেকটা পথ হেঁটে এসেছে। এবার লিলি ও রাইমা সামনে ৪-৫ জন বখাটে ছেলেদের দেখতে পেলো।
লিলি: আরিয়া সামনে ওই ছেলে গুলো……।
আরিয়া: হুশশশশ…..ভূতের মত এক্টিং কর। আর ঠোঁটে এই টমেটো সস মেখে নে। চুল গুলো চেহারার সামনে এনে রাখ। ওরা দেখলে যাতে মনে করে আমরা ভূত ওকে।
লিলি,রাইমা: ওকে।
আরিয়া: আর ভয় পাবি না মনে সাহস রাখ।…..
লিলি: হুম….।
আরিয়া ওই ছেলেদের মধ্যে একজনের নাম ধরে ভূতের মত করে ডাক দিল।
আরিয়া: জাহিদ………জাহিদ…….।
ছেলে কয় জন সামনে তাকিয়ে দেখলো। তিনটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চুল গুলো চেহারার উপরে এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে,চেহারাটা বেশ ভয়ংকর ।
জাহিদ: রাফিন সা…..সামনে দেখ ভূ…ভূত…..[ কাঁপা কাঁপা স্বুরে ]
রাফিন : ভূত…..[ বলেই অট্টহাসিয়ে ফেটে পড়লো বাকি কয়জন ]
হাসি থামিয়ে রাফিন নামের ছেলেটি বলে উঠলো।
রাফিন: এতদিন এখানে বসে আড্ডা দিচ্ছি কোন দিন ভূতের বাবা কেও দেখলাম না । আর আজ ভূতের মেয়েরা চলে এসেছে। দাঁড়া আমি ভূতের মেয়েদের কাছে গিয়ে একটা কিস নিয়ে আছি। তোরা এইখানে দাঁড়িয়ে দেখ।…..[ বলেই ভাব নিয়ে ওদের কাছে যেতে লাগলো ]
ওরা তিন জন ঠিক একি ভাবে দাঁড়িয়ে আছে। রাফিন ওদের সামনে এসে ভাব নিয়ে বলতে লাগলো।
.
.
.
.
.
.
Continue To………