contract_marriage★  part: 12

0
3856

contract_marriage★
part: 12

writer-Jubaida Sobti
আবির : এসব কি মানে? কি হয়েছে??
নিলা : আপনি খালি গায়ে কেনো??
আবির : তাতে কি হয়েছে আমি কি মেয়ে নাকি??
নিলা : কি বললেন??
আবির : সরি সরি!!! আমি ওটা মিন করিনি।?
নিলা : ঠিকাছে ঠিকাছে!!!
আবির : নিলা! কাল আমি যা করেছি আসলে সরি! আমি এর আগে কখনো খায়নি এসব। কাল বন্ধুরা মিলে জোড় করে এসব করেছে।?
নিলা : জোড় করে খায়িছে? আবির এসব ছোট বাচ্চার মতো কথা আমার সাথে বলবেন না। আপনি জানেন কাল রাতে আপনার পরিবার কতটা অপমান বোধ করেছে মেহেমানদের সামনে।
আবির : সরি!! নিলা।
নিলা : হুম!!
আবির : নিলা!!
নিলা : কিছু বলবেন?
আবির : নিলা কাল রাতে………. মানে কাল রাতে…..আমি তোমার সাথে খারাপ কিছু করিনিতো…..মানে ফার্স্ট টাইম….?
নিলা : না… কিছু করেননি।
আবির : থেংক গড। আচ্ছা চলো নাস্তা করতে।?
নিলা : ওয়েট মি. আবির।
আবির নিলার দিকে তাকালো,,,
নিলা : কন্ট্রাক্ট পেপারে সাইন করবেননা?
আবির : হুম দেখাও।
নিলা আবিরকে কন্ট্রাক্ট পেপার হাতে দিলো। আবির কন্ট্রাক্ট পেপার পরলো।
আবির : এসব কি নিলা!
নিলা : কি?
আবির : (রেগে গিয়ে) এইখানে লিখা আছে ৬ মাসের মধ্যে তোমাকে ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে আমার থেকে। তারপর তুমি আমাকে ডিভোর্স দিবে।
নিলা : হে! ৬মাসের মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা ইনকাম করে দিবেন আমাকে তারপর আমি আপনার ডিভোর্স পেপারে সাইন করে দিবো। বাকি শর্ত গুলো আপনি যা বলেছিলেন তাই।
আবির : আসলে আমি তোমার ভোলভাল চেহেরার পেছনের রাজটা দেখতে পায় নি। তুমি টাকার জন্য এতোসব করার কি দরকার ছিলো আমাকে প্রথমেই বলে দিতে ৫ লক্ষ টাকা তখনি দিয়ে দিতাম।
নিলা : নো মিঃ আবির হক। আমার আপনার বাবার টাকার দরকার নেই। আমাকে আপনার নিজের ইনকাম করা ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তাও আবার ৬ মাসের মধ্যে।
আবির : তুমিকি পাগল হয়ে গেছো। ৬মাসের মধ্যে এটা কেমনি সম্ভব। আমি কি এর আগে কখনো টাকা ইনকাম করেছি নাকি?
নিলা : এসব জানা আমার বিষয় না। আমার শুধু ৫ লক্ষ টাকা চায়।
আবির : I can’t blv it… নিলা। তুমি টাকার লোভে…
নিলা : টেবিলে নাস্তা রাখা আছে খেয়ে নিবেন।
এই বলে নিলা রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।
নিলা  মনে মনে) সরি! আবির আমার কিছু করার ছিলো না। দাদীকে প্রমিস করেছি আমি। একজন বউ হিসেবে আমি আপনাকে বদলাতে পারবো এটা আপনার পরিবারের বিশাস আমার উপর। তাই বাধ্য হয়ে আমার এসব করতে হচ্ছে।?
আবির নাস্তা না করে বেরিয়ে চলে গেলো। সারাদিনে একবার ও বাসায় আসেনি।
রাতে নিলা তার রুমে শাড়ি ঠিক করছে। হঠাৎ আবির রুমে ঢুকে পরলো।
আবির নিলাকে দেখে তাড়াতাড়ি পেছনে ফিরে গেলো।
নিলা : (তাড়াতাড়ি শাড়ী ঠিক করে) এসব কি আপনি ভেতরে ঢুকেছেন কেনো??
আবির : নিলা তুমি হয়তো ভুলে গেছো এটা আমার রুম।?
নিলা : হে তা তো কি হয়েছে। তাই বলে এভাবে ঢুকে পড়বেন নাকি??
আবির : (নিলার দিকে ফিরে।) কেনো দরজা বন্ধ করে কাপড় ঠিক করতে হয় আপনি জানেন না?
নিলা : হে তা জানবো না কেনো… কিন্তু রুমের ভেতরে আসার আগে দরজা বারি দিয়ে আসতে হয় তা আপনি জানেন না??
আবির : শোনো তোমাকে দেখার আমার কোনো শখ নেই বুঝেছো ..?
নিলা : হে তা আমি ভালো করেই দেখতে পাচ্ছি।?
আবির : (রেগে গিয়ে) মানে? কি বলতে চাচ্ছো তুমি? ?
নিলা : মানে হচ্ছে রুমে ঢুকার আগে নক করে ঢুকবেন। এখন থেকে এই রুমটা আমার ও তাই এই রুমে কখন কি করতে হবে না হবে এটার ডিসিশন নেওয়ার অধিকার আমার ও আছে।?
আবির নিলার দিকে এগিয়ে এসে নিলার কোমড়ে হাতদিয়ে নিলাকে শক্ত করে ধরলো। (একটু হেসে)
আবির : ও আচ্ছা অধিকার খাটাচ্ছো।
আবিরের মুখ নিলার কানের দিকে আনলে নিলা অনেক ভয় পেয়ে যায়।
নিলা : কি করছেন আপনি ছাড়ুন আমাকে।?
(আবির নিলাকে আরো শক্ত করে ধরে।কানে কানে উইস্পার করে বলছে)
আবির : এটা ও তো আমার অধিকার।?
আবির হাত দিয়ে নিলার পেছনের চুল গুলো সরিয়ে এক পাশে আনলো।
নিলা : দেখেন আপনি যা করছেন একদম ঠিক করছেননা।?
আবির : আ…হা আমার বউ তার অধিকার খাটাচ্ছে। তাই আমিও আমার বউ এর থেকে আমার অধিকার নিচ্ছি। এটা ও তো আমার অধিকার তাই না নিলা??
নিলা : দেখেন আমি কিন্তু এখন চিৎকার করবো।
আবির : হে করো…. সবাই এসে দেখুক আমরা কি করছি। ইনফেক্ট আমিই ডাকছি সবাইকে। Excuse me..everyone…
নিলা তাড়াতাড়ি আবির মুখ তার হাত দিয়ে চেপে ধরলো
নিলা : আরে কি করছেনটা কি আপনি পাগল নাকি??
আবির : (মুচকি হেসে) আমার অধিকার…??
নিলা আবির কে ধাক্কা দিয়ে আবিরের কাছ থেকে সরে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
আবির : আরে…. নিলা কই যাও আমার অধিকারটাতো দিয়ে যাও।?
নিলা পেছন ফিরে আবার এসে রুমের দরজাটা খুব জোড়ে বন্ধ করে চলে যায়।
আবির হাসতে থাকে।
রাতের খাবার দিলো। নিলা আর বড় ভাবী সবাইকে খাবার বেরে দিচ্ছে।
আবির : নিলা! আমাকে একটু ঝোল দাওতো।?
নিলা আবিরকে ঝোল দিতে আসলে আবির নিলাকে আস্তে আস্তে
আবির : নিলা তুমি কিন্তু আমার অধিকার আমাকে দিচ্ছো না।??
দাদী : চুপি চুপি কি বলিস আমাদের ও তো শোনতে দে।?
নিলা : দাদী আবির বলছে তাকে নাকি বেশী করে ঝোল দিতে। তাই দিচ্ছি।?
এই বলে নিলা আবিরের প্লেটে পুরা বাটিতে যা আছে সব ঢেলে দিলো।
আবির : ?নিলা এতোগুলো কেমনি খাবো পাগল নাকি তুমি? মাথা ঠিকাছে নাকি অধিকার খাটাতে খাটাতে সেটা ও গেছে।?
নিলা : আমার মাথা ঠিকাছে। আপনার মাথা ঠিক নেই। তাই তো আপনি………..?
আবির : হে…. হে….. বলো বলো… তাইতো আমি কি…..
দাদী দেখেছ তুমি কি দাদার সাথে এমন করতে?
দাদী : তোর দাদাকে তো আমি ধমকে যা বলতাম তাই করতো।??
আবির : আসলে তোমরা নারী জাতিরা এমনি। নরম শরম পুরুষদের উপর নির্যাতন করো।?
নিলা : আ….হা…রে…. আপনি নরম শরম পুরুষ 
আবির : হে কিন্তু তুমি একটু বেশি নরম আরকি।
(আবির নিলাকে আস্তে আস্তে) তবে অধিকারটা দিলে কিন্তু আরো ভালো জানতাম। ?
নিলা : দাদী খাবারের সময় কথা বলা নিষেধ।
দাদী : আরে হে তা তো ভুলেই গেলাম।এই আবির চুপচাপ খেয়েনে নিলাকে আর বিরক্ত করিস না এমনিতে মেয়েটা সারাদিন তোর জন্য টেনশন করতে করতে শেষ বাড়ীতে তো আসার নাম নেই তোর ঘরে বউ আছে সেটা মনে রাখিস না মনে হয়।
আবির নিলার দিকে এক পলক চেয়ে আবার খাবার শুরু করলো।
সবাই খেয়ে নেওয়ার পর ঘুমাতে গেলো।
নিলাও গেলো দেখে আবির বসে বসে গান করছে।
আবির নিলাকে দেখে গান বন্ধ করে দেয়।
নিলা গিয়ে খাট থেকে গায়ের চাদর আর বালিশ নিয়ে খাটে শুয়ে পরছে।
আবির : দাঁড়াও ওটা আমার বালিশ।
নিলা : কিন্তু আপনারটা তো আপনার কাছেই আছে।
আবির উঠে নিলার থেকে বালিশটা আর গায়ের চাদরটা নিয়ে খাটে গিয়ে শুয়ে পরলো।
আবির : আমি আসলে দুটো বালিশ ছাড়া শুতে পারিনা তাই। আজ বেশী ঠাণ্ডা লাগছে তাই চাদর ও দুটো দিতে হবে।
নিলা চুপচাপ গিয়ে সোফায় শুয়ে পড়লো।
আবির নিলাকে দেখিয়ে দেখিয়ে এ.সি আরো বাড়িয়ে দেয়।
নিলার কিছু করার নেই।নিলার খুব খারাপ লাগছে আবিরের কাণ্ড গুলো। কারন নিলা ঠান্ডা বেশি সৌজ্য করতে পারে না।
সকাল হলো আবিরের ঘুম ভাংলো।
আবির ঘুম থেকে উঠে দেখে নিলা হাত-পা গুটিয়ে সোফায় শুয়ে আছে।
আবির ওয়াস রুম থেকে ফ্রেস হয়ে আসে।
আবির : (মনে মনে) এই মেয়ে আজ এতোক্ষন কেনো ঘুমাচ্ছে। অন্যদিনতো এতোক্ষণে উঠে পরে। যাক বাবা আমার কি।
আবির নিচে নাস্তা???? খেতে গেলো।
ভাবী : আবির নিলা কই??
আবির : আছে ঘুমাচ্ছে।
ভাবী : আজ এতোক্ষন।?
আবির : হে তাতে আমার কি।
ভাবী : কি বললি তোর কি মানে? ও তোর কি??
আবির : ভাবী নাস্তা দিবা ? ক্ষিদা পেয়েছেতো।?
দাদী : কোনো নাস্তা পাবি না।
যা গিয়ে বউকে সহ নিয়ে আয়। তারপর একসাথে বসে নাস্তা কর। আরে তোরা তো এই যুগের ছেলেমেয়ে তোদের কি শিখিয়ে দিতে হয় নাকি?
আবির : কিন্তু দাদী ও তো ঘুমাচ্ছে।
দাদী : ঘুমাচ্ছে !! মানে নিলাতো এতোক্ষন ঘুমায় না। যা গিয়ে দেখ কোনো অসুস্থ লাগছে নাকি?
আবির উঠে গিয়ে তার রুমে গেলো।
আবির : নিলা! নিলা!! ঐ নিলা!…
আবির নিলার শরীরে হাত দিতেই দেখে নিলার শরীর অনেক গরম। কপালে হাত দিতেই আবির বুঝে নেয় কাল রাতে এ.সি তে নিলা চাদর ছাড়া ছিলো। তারমাঝে আবির এ.সি ফুল বাড়িয়ে দেই।
আবির  মনে মনে) আরে এর তো প্রচুর জর। কিন্তু আমিতো তা চায়নি। আমি চায়নি নিলা কষ্ট পাক। আমিতো মজা করছিলাম। আমি নিলাকে ভালোবাসিনা এর মানে এই না যে আমি তাকে ঘৃনা করি। নিলা যতোদিন আমার কাছে আছে ততোদিন সে আমার responsibility.
আবির নিলাকে কোলে তুলে নিয়ে খাটে শুয়ে দেয়। গায়ে চাদর দিয়ে দেয়।
আবির : নিলা সরি। আমি জানতাম না এমন হবে।?
নিলা : (চুপ করে আছে) চোখ খোলার শক্তি ও তার নেই।
আবির দৌড়ে গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইং রুমে গিয়ে……
আবির: ভাবী ’’দাদী নিলার খুব জর উঠেছে। সে চোখ সহ খুলতে পারছে না।
ভাবী দাদী তাড়াতাড়ি আবিরের রুমে গেলো।আবির ও গেলো
দাদী : আরে সত্যিতো নিলার তো খুব জর।
আরে আবির যা ডাক্তারকে ফোন কর।মেয়েটার শরীরতো ভালো না।
আবির : হে দাদী আমি করছি।
ডাক্তার এসে নিলাকে দেখে ঔষধপত্র দিয়ে চলে গেলো।
নিলার এই অবস্থা দেখে আবিরের খুব খারাপ লাগছে।
আবির এক মূহুর্তের জন্য ও নিলার পাশ থেকে সরেনি।
আবির নিলার পাশে বসে আছে।
দুপুর হয়ে গেলো।
ভাবী : আবির তুইতো সকালে ও কিছু খেতে পারিসনি। যা কিছু খেয়ে নে। নিলার পাশে আমি আছি।
আবির : না ভাবী আমি ঠিকাছি আমার ক্ষিদা নেই।
নিলা : (চোখ খুলে) আপনি খেয়ে আসেন। আমি ঠিকাছি।
আবির : (খুশী হয়ে) ভাবী ডিয়ার নিলা উঠেছে তুমি যাওনা নিলার জন্য খাবার নিয়ে এসো।
ভাবী নিলার জন্য খাবার নিয়ে আসলো।
আবির নিলাকে ধরে উঠে বসালো।
নিলা নিজে খেতে চাইলে আবির তাকে নিজ হাতে খেতে দেইনা।
আবির : নিজেকে সামলানোর শক্তি নেই আবার নিজের হাতে খাবার ও খেতে চাচ্ছে।
ভাবী : দেখেছ নিলা!! আমার দেবর হচ্ছে এক পিচ। বউ এর কতো সেবা করছে। তারমানে বুঝতে পারছো তোমাকে কতো ভালোবাসে।?
আবির আর নিলা চুপ করে আছে।আবির নিলার দিকে তাকিয়ে আছে।
নিলা : (ধীরেধীরে) হে ভাবী। আমার কারনেতো অনি এ.সি ছেড়ে বেশী ঠান্ডায় ঘুমাতে পারেনা।
আমার বেশী ঠান্ডা লাগে তাই ওনার গায়ের চাদরটা সহ আমাকে দিয়ে দেই।
ভাবী : ওহ তাই নাকি!! এতো ভালোবাসা কই রাখবা নিলা!?
আবির নিলার দিকে চেয়ে আছে আবির কিছু বলেনি। কারন আবির জানে আসলেই আবিরের দোষ।
ভাবী : আচ্ছা নিলা তুমি খেয়ে নাও আমি যায়। আবিরতো আছে তোমার পাশে কিছু লাগলে আবির বলিস আমাকে।আর শোন খাওয়ানোর পরে ঔষধটা ও খাইয়ে দিস নিলাকে।
আবির : জি! ভাবী।
ভাবী চলে গেলো আবির নিলাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
নিলা : হয়েছে আর খাবো না।
আবির : নিলা প্লিজ খেয়ে নাও। না খেলে ঔষধ কিভাবে খাবা।
নিলা : আমি ঠিকাছি ঔষধের দরকার নেই আমার।
আবির : নিলা আমি জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো। তা অবশ্য তোমার রাগ করাটা সঠিক। কারন কাল রাতে আমি যা করেছি একদম ঠিক করিনি।
তবে নিলা আমি ইচ্ছা করে করিনি বিশ্বাস করো। আমি কখনো চায়নি তোমার এই অবস্থা হোক।?
চলবে….☺

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে