Angry_Husband Season_2_Part_4

0
3450

Angry_Husband
Season_2_Part_4
Written by Avantika Anha
আরাভ বের হয়ে দেখে আমি আমার ফ্রেন্ডদের সাথে সেল্ফি তুলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। কিছু সময় পর আমি আরাভের কাছে আসলাম…
আমি- ওই Angry Husband চলেন সেল্ফি তুলি।
আরাভ- আবার সেল্ফি? (কিছুটা ভ্রু কুচকে)
আমি- ও না না আর ভাঙ্গিয়েন না। এই ফোনটার ক্যামেরা সেই ভাল্লাগছে। এটা আমার নিউ জানটুস । উম্মাহ। (ফোনে কিস করলাম)
আরাভ- (হেসে দিলো)
আমি- (ওর হাসি দেখে আমিও হেসেই দিলাম) আপনার হাসি কিউট একটা সেল্ফি তুলি। স্মাইল প্লিজ। (কইয়াই সেল্ফি তুললাম)
আরো কয়েকটা সেল্ফি তুলছিলাম । এমন সময় প্রেয়সি আসলো।
.
প্রেয়সি- কি জিজু আমার লগে সেল্ফি তুলবেন না?
আরাভ- অবশ্যই।
.
এরপর প্রেয়সি ও ওর বান্ধবীরা পিক তুলতে লাগলো। কেউ কেউ বললো, ভাইয়া আপনি অনেক কিউট। আমার তো আপনার মতোই বর চাই। এসব শুনে আমার রাগ উঠে গেলো। তার জন্য পুরো অনুষ্ঠান রাগে আর আরাভের সাথে কথা বলি নাই। আরাভ অবশ্য পাশে দাড়িয়েছিলো। এছাড়া আড় চোখে দেখেছিলো আমাকে। কিন্তু আমি মুখ বাঁকা করে দাড়িয়ে ছিলাম। লোকজন সবাই চলে গেলো। যাওয়ার আগে আম্মু বলে গেলো, কাল নাহয় দুইদিন পরে আমাকে আমার বাড়িতে(বাপের বাড়ি) যেতে হবে। তাও নাকি জামাইরে নিয়া। আপনারাই বলেন। বাড়ি আমার, জামাই রে নিয়া কেন যাবো? আর এই ইতর তো রাগের ডিব্বা। তাও কিছু বললাম না।
.
অনুষ্ঠান শেষে আমাকে মা(শাশুড়ি) বললো, ফ্রেশ হয়ে নিতে।
আমি রুমে আসতেই আরাভ এলো আমার পিছুপিছু,
আরাভ- কি ব্যাপার বকবক করা মেয়ে আজ শান্ত, চুপচাপ, রেগে কেনো?
আমি- আপনার কি?
আরাভ- বলো।
আমি- আপনি তো চিপকু। যান যান ওদের সাথে পিক তুলেন। আমি কতো করে বলার পর আপনি আমার সাথে পিক তুলছেন। আর ওদের সাথে সহজেই তুললেন। হুহ।
আরাভ- আরে ওরা তো ছোট।
আমি- ছোট তো এতো চিপকু কেনো?
আরাভ- তুমি জ্বলতেছো কেনো? এতো তাড়াতাড়ি প্রেমে পড়ে গেলা নাকি। আসলে আমি এমনি মানুষ প্রেমে পড়ে যায়। (মজা করে বললাম)
আমি- যা ভাগ লুচ্চা পোলা।
আরাভ- আমি লুচ্চা ? (এটা কেউ বলে নি। এই মেয়েই প্রথম বলছে। তাই আরাভ কিছুটা ভ্রু কুচকালো)
আমি- হুমমম । মহা লুচ্চা । লুচ্চা আরাভ। লুচ্চা লুচ্চা লুচ্চা। (ওর দিকে না তাকাতেই)
.
ও কোনো জবাব দিলো না। তাই ওর দিকে তাকায় দেখি ও রেগে আছে। ওর রাগী চেহারা দেখে আমি পুরাই ভয় পেয়ে গেলাম। এদিকে নিজেকে গালি দিতে লাগলাম,”শয়তান মাইয়া এতো বেশি বকিস কেনো? আজ তুই শেষ)
আমি- চুপচাপ কাপড় নিতে ফ্রেশ হতে যাবো। বাথরুমের দিকে পা বাড়াতে লাগলাম। এমন সময় আরাভ আমার হাত ধরে হ্যাচকা টান দিলো। আবার সেই জায়গা। দেয়াল। আমি ভাবি মাঝে মাঝে দেয়াল কি ওর প্রিয় জায়গা। রাগলেই আমি দেয়ালে। হায়রে দেয়াল। ওমা এখন এসব ভাবছি কেনো? আরাভ রেগে বম হচ্ছে আর এদিকে আমার হার্ট ধুক ধুক করছে ভয়ে।
.
আরাভ- আমি লুচ্চা?
আমি- না না আপনি অনেক ভালো। খুব ভালো পোলা। এমন ভালো পোলা হয়ই না। খুব ভালো আপনি। এত্ত সুইট যে মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে কিস করে দেই। (এই বলে জিহ্বাতে কামড় দিলাম। এতো বেশি বকবক করি কেনো?)
আরাভ- ও তাই নাকি? (ভালো করেই বুঝেছি ও পাম মারতেছে)
আমি- জ্বী জ্বী। (ভয়ে ভয়ে)
আরাভ- তাহলে কিস করো।
আমি- এ্যা
আরাভ- এ্যা না হ্যা । কিস মি।
আমি- ওই লুইচ্চা পোলা লজ্জা নাই একটা মেয়ের কাছে কিস চাস। (আবার মুখ দিয়ে ভুলে বলে ফেলছি।)
আরাভ- কিহ?
আমি- আপনি না আমি লুচ্চা আমি মহা লুচ্চা। আপনি তো ভালো মি. আরাভ। (আবার পাম মারতে লাগলাম)
আরাভ- লুচ্চা কাকে বলে দেখাচ্ছি।
.
এই বলে আরাভের মুখ আমার মুখের কাছে এগোতে লাগলো। আর আমার হার্টের ধুকধুকানি আরো বেড়ে গেলো ভয়ে। আমি ভয়ে আর লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। এতো ভয় পাইছি যে চোখ বন্ধ করে ফেলছি।
আরাভ তাকিয়ে আছে আনহার দিকে। ওর(আমার) লজ্জা মাখা মুখ দেখে আরাভ আমার কাছে গেলো আরাভ। কিন্তু কাছাকাছি হলো ঠিকই কিন্তু হঠাৎ ও আমাকে ছেড়ে দিলো।
আমি তখনও ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছি।
আরাভ- চোখ খুলো যাও ফ্রেশ হও।
আমি দেখি আরাভ ছেড়ে দিছে আমাকে। তাড়াতাড়ি কাপড় নিয়ে আমি বাথরুমে দৌড়। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। একটা সুতি থ্রি-পিছ পড়ে ফেললাম। পুরো দিন এতো উঠা নামা করে আমি পুরাই টায়ার্ড। তাই রাতের খাবার না খেয়েই বিছানায় একটু হেলানি দিতেই ঘুমিয়ে গেলাম। রাতের খাবারের জন্য আরাভ আমাকে ডাকতে এলো । এসে দেখে আমি ঘুমিয়ে গেছি। তাই আরাভ আমাকে ডাকতে লাগলো। এদিকে আমি ঘুমের ঘোরে দেখি প্রেয়সি আমাকে ডাকতেছে। কিন্তু আসলে যে আরাভ ডাকছে বুঝতেই পারি নি। তাই ঘুমের ঘোরে আমি আরাভকে লাথি দিয়ে বসলাম। আর বললাম, “কুত্তি প্রেয়সি। আমি ঘুমাচ্ছি না । ডাকিস কেন? ঘুমাতে দে।”
.
আরাভ এদিকে থ। সে ভাবছে, “মেয়েটার শক্তি আছে কিন্তু আমাকে মারলো হুহ।
আরাভ- চোখ খুলে দেখো কে?
আমি- হুম আয় তুইও ঘুমা।
.
বলে আরাভকে টান দিলাম। আরাভ ভাবে নি আমি টান দিবো তাই সে পড়ে গেলো আমার পাশে। কিন্তু হাতটা শক্ত লাগলো।
আমি- বইন তুই মোটা হইছিস। এতো শক্ত কেন। দূর হ।একদম ওই বাদরের মতো। বান্দর পোলাটার মতো বডি বানাচ্ছিস। (কইয়া আবার লাথি। এখনো আমি চোখ খুলি নি।)
কিন্তু এবার চোখ খুললাম। চোখ খুলে দেখি আরাভ। এতোক্ষন এসব শুনে আরাভ রেগে গেছে। আমি ওকে দেখে থ। একটু চিল্লায় উঠলাম, আম্মুউউ ।
আরাভ- আমি মোটা?
আমি- না না পার্ফেক্ট। ছেলেদের এমনি হতে হয়।
আরাভ- আর কি জানি বললা। ও লাথি মারলা তাই না।
.
এতোক্ষনে আমি উঠে বসে পড়েছি।
আমি- না না সরি আর হবে না এই যে কান ধরলাম। (কান ধরে)

.
আরাভ এক টান দিয়ে আমাকে দাড়া করিয়ে দিলো। এতোক্ষনে ভয়ে আমার ঘুমের ঘোর কেটে গেছে। ও আমার কোমড় ধরে আমাকে ওর কাছাকাছি আনলো।
আরাভ- এবার বলো আমি কি?
আমি- আন্নে ভালা পোলা। আমি বাজে মাইয়া। ছেড়ে দেন।
আরাভ- ওহ তাই। কান ধরো ।
আমি- এই যে এই যে। (আবার কান ধরলাম)
আরাভ- গুড । খাবার রাখা আছে খেয়ে নেও। (এই বলে ওকে ছেড়ে দিলাম)
আমি- এই খাবারের জন্য আমার সাধের ঘুম ভাঙলেন?
আরাভ- খেয়ে নেও ৫ মিনিটের মধ্যে । নাহলে আমার জুতা পরিষ্কার করতে হবে।
আমি- কিহ?
আরাভ- ইওর টাইম স্টার্টস নাও।
আমি- কিন্তু
আরাভ- টাইম যাচ্ছে।
.
দুররররর। তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে খেতে লাগলাম। খাওয়া বললে ভুল হবে গিলতে লাগলাম। পানি খেয়ে খেয়ে। তাড়াতাড়ি খেতে গিয়েও একটু খাওয়ার পর আর খেতে পারছিলাম না।
আমি- আর খাইতে পারছি না ।
আরাভ- শেষ করেন ম্যাডাম।
আমি- আপনি খাইছেন?
আরাভ- হুমম।
আমি- এটাও খান।
আরাভ- নাহ।
আমি- এই একবার আমার হাত দিয়া খান।
আরাভ- আমি বাচ্চা?
আমি- না না আপনি তো বুইড়া।
আরাভ- কিহ?
আমি- খান।
.
এই বলে জোড় করে খাইয়ে দিলাম।
আরাভ- কি করছো?
আমি- এই নেন আরেকবার।
আরাভ- নাহ।
আমি- খান বলছি।
.
এভাবে করে তিনবার খাওয়ায় দিলাম জোড় করে।
আরাভ- হলো তোমার। (এবার রেগে গেছি)
আমি- না আরেকবার খান।
আরাভ- নিজে শেষ করো নইলে।
আমি- রাগেন কেনো? একবার খান খালি তারপর আমিই খাবো।
আরাভ- প্রমিস ?
আমি- জ্বী।
.
এরপর আরাভকে একবার খাইয়ে আমি নিজে খেয়ে । ব্রাশ কইরা ঘুমায় গেলাম। পরের দিন ভোরবেলা ঘুম ভেঙ্গে গেলো। কারণ আমি বাড়ি যাবো।
.
আমি তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলাম। তারপর এসে দেখি আরাভ ঘুমাচ্ছে। আমার মাথায় আবার শয়তানি আসলো। তাড়াতাড়ি গিয়ে ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে নিলাম। এসে বরফ গুলো আরাভের গেঞ্জির ভিতরে ঢুকিয়ে দিলাম। কয়েক মিনিটে বরফ তার কাজ করে দিলো। আরাভ উঠে গেলো বরফের ঠান্ডায়। তাড়াতাড়ি বসে পড়লো। নিজের গেঞ্জিতে বরফ আর সামনে আমাকে আরাভ বুঝে গেলো কাজটা আমার।
আরাভ- আনহাআআআআ
আমি- কিইইইইই?
আরাভ তোমার আজ বারোটা বাজাবো।
আমি- আগে ধরেন তো। (এই বইলা দৌড় দিলাম)
.
এদিকে আরাভ রেগে আছে। কিন্তু ও ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলো। বাইরে এসে দেখে নাস্তা রেডি। নাস্তার টেবিলে…
মা- তা তোমরা কয়দিন থাকবা ?
আমি- আপনিই বলুন মা কয়দিন থাকবো?
মা- তোমাকে তো আমরা মিস করবো। তবুও ৫ দিন থেকো।
আমি- ওক্কে।
মা- আরাভ তুই অফিস থেকে তো অফ এ আছিস। বাকী সব তোর বাবা সামলে নিবে।
আরাভ- আচ্ছা।
.
কিছু সময় পর আমি আর আরাভ বাইরে যেতে বের হলাম। এখনো আরাভ কিছু বলে নাই। তাই আমি ভাবছি ওয় ভুলে গেছে।
.
গাড়িতে…
আমি- মি. আরাভ কত্ত মজা হবে তাই না?
আরাভ- আনহা শাস্তি নিবা না?
আমি- মানে?
আরাভ- তুমি শয়তানি করবা আর শাস্তি পাবা না তা তো হবে না।
আমি- আপনার মনে আছে?
আরাভ- মিসেস আনহা আহমেদ। আরাভ কখনো কিছু ভুলে না।
আমি- একটু বেশিই মনে রাখে। (আস্তে)
আরাভ- কিহ?
আমি- না না সরি সরি।
আরাভ- শাস্তি পেতেই হবে। ম্যাডাম আপনার ব্যাগ চেক করুন।
.
আমি সাথে সাথে ব্যাগ খুলে দেখি একটাও কিটক্যাট নাই। আমি কাঁদো কাঁদো ভাব নিয়ে আরাভের দিকে তাকালাম।
আমি- ও ভাই আমার কিটক্যাট দিয়া দে ।
আরাভ- আমি ভাই ?
আমি- না আপনি জানু মনু স্বামী। এবার তো দেন।
আরাভ- এমন করে বলতে থাকো। ভালো লাগলে দিয়ে দিবো।
আমি- রুড পোলা। দুররর।
আরাভ- নিতে চাও কি না?
আমি- জানটুস। মনটুস । কলিজা। কিডনি, ফ্যাপসা, গলা, চোখ, মুখ, নাক।
আরাভ- ওয়েট ওয়েট। কলিজা আর ফ্যাপসা বলে জানতাম। গলা, চোখ,মুখ, নাক কই থেকে আইলো?
আমি- এগুলোও তো বডি পার্ট।
আরাভ- দুররর।
আমি- এবার কিটক্যাট দেন।
আরাভ- পিছনের সিটে রাখা দেখো।
আমি- এ্যা আমি তো লক্ষ্যই করি নি।
আরাভ- হাহা।
আমি- হুহ।
.
আমরা বাড়ি পৌঁছে গেলাম। এদিকে আরাভ জামাই আদর পেতে লাগলো। একটা জিনিস বুঝি না। বিয়া আমার হলো। কই একটু আমাকে দেখবে সবাই ওরে দেখতেছে। হুররর।
.
রুমে চলে আসলাম।
প্রেয়সি- আপ্পি আমার জন্য কি আনছো?
আমি- কেনো তোর বোন আসছে এটা কি যথেষ্ঠ নয় ?
প্রেয়সি- দুররর। কিছুই আনলা না বাজে আপু।
আমি- বইন তোর বোনটা কতো কষ্ট সহ্য করে আইলো ওই রাগী পোলাকে সহ্য করলো। আর তুই গিফ্ট চাস । কই একটু আপুর সেবা করবি।
প্রেয়সি- কিছু আনলে করতাম।
আমি- ওহ।
.
পিছন থেকে কখন আরাভ আসছে আমরা দেখি নি, “ও আনে নি তো কি? আমি গিফ্ট আনছি তোমার জন্য প্রেয়সি।”
আমি- এ্যা কি গিফ্টা?
আরাভ- এই নাও (এই বলে আরাভ প্রেয়সিকে একটা হ্যাডফোন দিলো।)
প্রেয়সি- ওয়াও। সেই তো। থেংকু জিজু। দেখছিস আপি আমার জিজু কতো ভালো।
আমি- হ গিফ্ট পাইয়া বোন নাই।
প্রেয়সি- জিজু তুমি বেস্ট। আপু আরো তোমাকে কতো কি বলে।
আমি- চুপ চুপ।
আরাভ- কি বলে?
আমি- কিছু না। ওই প্রেয়সি তুই না । নইলে আমি তোর চুল ছিঁড়ে দিবো এখনি।
.
কথাটা শুনে প্রেয়সি দৌড়। আরাভ আমার কাছে আসতে লাগলো। আমি জানি ওয় জিগাবে আমি কি করছি আর কেমনে জিগাবে তাও জানি। ও কিছু বলার আগেই আমাকে পালাতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ।
আমি- মি. আরাভ টিকটিকিইইইইই।
আরাভ- কই? (ও ওইদিকে তাকাতেই আমি দিলাম দৌড়)
.
চলবে???

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে