Angry_Husband
Season_2_Part_28
Written by Avantika Anha
ও ধীরে ধীরে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো। আমার প্রচুর রাগ উঠে গেলো এবার।
আমি- ওই হারামি ছাড় আমারে।
আরাভ- নো ম্যাম ছাড়বো না।
আমি- ছাড়বি কি না বল?
আরাভ- অনেক কষ্টের পর পাইছি তোমাকে কেমনে ছাড়ি বলো?
আমি- তোকে ছাড়তেই হবে।
আরাভ- না আমি ছাড়বো না।
.
রাগ উঠে গেলো রাগের বসে আরাভের পায়ে দিলাম এক লাথি আরেক ঘুসি দিলাম কুনুই দিয়ে ওর পেটে। সাথে সাথে আরাভ ছাড়ে দিলো আমাকে।
আরাভ- ডাইনি এভাবে কেউ স্বামীকে মারে?
আমি- হিহি ভালো হইছে।
আরাভ- সিরিয়াসলি লাগছে আর তুমি হাসছো।
আমি- কই দেখি?
.
আরাভের দিকে হেলতেই ও আমাকে আবারো চিপে ধরলো। এবার দুই হাতও ধরে ফেললো।
আমি- ওই ইঁদুর ছাড় আমাকে।
আরাভ- না মিসেস আহমেদ।
আমি- তুই ছাড়বি কি না বল?
.
(দুজনেই ফিসফিস করে কথা বলছি। যেনো আনভীর না উঠে যায়)
আরাভ- নো আমি তো ছাড়বো না।
আমি- ভার মে যা রাক্ষস।
.
এই বলে আরাভের হাতে কামড় বসিয়ে দিলাম। এতো জোড়ে দিলাম যে আরাভ কিছুটা চিৎকার দিলো এবার। ও ভাবে নি আমি এতো জোড়ে ওকে কামড় দিবো।
.
আরাভ- রাক্ষসী।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- তোরে আমি দেখে নিচ্ছি।
.
এই বলে আরাভ আমার কাছাকাছি চলে আসলো।
আমি- দূরে যান।
আরাভ- নাহ আরো কাছে আসবো দূরে যেতে বললে।
আমি- ওহো তাহলে কাছে আসেন।
আরাভ- আসছি কাছে।
.
(আরাভ কাছে আসলো আরো)
আমি- এটা চিটিং তুমি এখনো চিটার। এতোদিনেও বদলাও নি। (ঘোরে চলে যাচ্ছিলাম)
আরাভ- হাহা আমি এমনি।
আমি- নাহিইইইইই।
আরাভ- চুপ। (ঠোঁটে আঙ্গুল দিলো)
.
আমি আরো ঘোরে ডুবে গেলাম। আরাভ একদম কাছাকাছি আসবে এমন সময়ই আনভীর কেঁদে উঠলো। আর আমার ঘোর ভেঙ্গে গেলো।আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে আনভীরকে চুপ করাতে লাগলাম।
.
আরাভ- বাবা তুই কাঁদারো সময় পেলি না। আব্বু আম্মুর রোমান্সের বারোটা বাজালি। (আস্তে বললাম)
.
আমি- কিছু বললেন আপনি?
আরাভ- না না কিছু না। ইউ কন্টিনিউ চুপ করাও বাবুকে।
আমি- জ্বী।
.
আমি তখনো রাগের কথা ভুলে গেছিলাম। কিন্তু কিছু সময় পর মনে পড়লো। আবারো অভিমানী আনহা হয়ে উঠলাম।
আরাভ- আমি আসবো?
আমি- না। এতোদিন নিজে সামলাইছি। সামনেও আমিই সামলাবো। কোনো স্বার্থপর মানুষের সাহায্য লাগবে না।
আরাভ- আনহা আমি স্বার্থপর নই।
আমি- হা হা হা। আপনি স্বার্থপরই। নাহলে আমাকেই চিনেন না। তাই তো স্বার্থপর ভাবছেন আমাকে।
আরাভ- মানে ভালো করে বলো।
আমি- না কিছু না।
.
আমি আর কিছু বললাম না। আরাভও আর কথা বাড়ালো না। কারণ ও বুঝেছে আমি কি মিন করেছি। আরাভ নিজে অনুতপ্ত। “আমি তখনি বুঝেছি আরাভ এর বেশি দোষ নাই। কিন্তু বিষয় সেটা ছিলো না। বিষয় হলো সে কখনো আমাকে চিনতেই পারে নি। মিথ্যের আশ্রয় না নিয়ে আমাকে পাশে রাখতো। বিষয়টা যদি সত্যিও হতো আমি তো আর ওকে ছেড়ে যেতাম না।” এই বিষয়গুলো আমার মাথায় ঘুরতেছিলো। আরাভও ভাবছিলো সব ওর দোষ। কিন্তু ও সব ঠিক করবে এটা ফিক্স করলো। রাতটা কোনোমতে পার হলো।
.
পরেরদিন আরাভ ভিডিও কলে তার পরিবারকে কল দিলো। ওখানে সবাই ছিলো আমার পরিবারও। চিন্তার কারণে আমার খোঁজ নিতেই আম্মু আব্বু নাকি ওখানে গিয়েছে। যা কথায় কথায় শুনলাম।কলেও সবাই আমাকে বুঝানোর চেষ্টা করতে লাগলো। কিন্তু আমি জেদ ধরে রাজি হলাম না। শেষে সবাই আরাভকে বললো, “তুই-ই বুঝা ওকে। ভালো করে।” আরাভ হুম বললো।
.
নাস্তার টেবিল থেকে শুরু সব জায়গায় আরাভ আমার সাথে থাকতেছে। এমনকি আমাকে জ্বালাচ্ছেও। শান্তিমতো প্লানও করতে দিচ্ছে না। কোনোমতে ছাদে যাইতে দিয়েছে। ভেজা কাপড় শুকোতে দিয়ে ঘরে গিয়ে দেখি আরাভ আনভীরের সাথে খেলছে। আর কি কি বলছে।
.
কথাগুলো এরুপ, “বাবা তোর মায়ের রাগ কবে কমবে? তুই জ্বলদি বড় হ আচ্ছা। তখন দুজনে মিলে তোর মায়ের রাগ ভাঙ্গাবো। ও না না বেশি দেরি হয়ে যাবে। তোর মাকে ছাড়া তো আর আমি থাকতে পারবো না।” আনভীরও কি বুঝছে হাসতেছে”। ওদের এই অবস্থা দেখে আমি হাসবো না কাঁদবো বুঝছি না।
.
আমি কেনো যেন চাইলেও আরাভকে ক্ষমা করতে পারছি না। কি জানি আমাকে একটা আটকাচ্ছে ওকে ক্ষমা করতে। আমি হয়তো মাফ করতাম কিন্তু খারাপ তখন লেগেছে যখন ও আমাকে এতোদিনেও চিনেনি। তাই কিছু না বলেই অন্য দিকে চলে এলাম। রুমে গেলাম না আর।
.
কিছু সময় জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছি। কেনো যেন নিস্তব্ধ লাগছে চারপাশ। এই নিস্তব্ধতাও আমাকে গ্রাস করছে। এক অজানা কারণে মনটাকে আরো বেশি উদাসী করছে। কি হচ্ছে নিজেও বুঝছি না। চোখে পানি টলমল করা শুরু করছে। চুপচাপ দাড়িয়ে আছি। কিছু সময় পর হঠাৎ কে জানি আমাকে পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- আপনি ছাড়ুন আমাকে। আনভীর কই?
আরাভ- ছাড়ার জন্য এই হাত ধরি নি। আনভীর ঘুমাচ্ছে।
আমি- হাহাহা।
আরাভ- হাসছো যে?
আমি- আপনি তো ছাড়ার জন্য ধরেন নি। ধরেছেন ইচ্ছা মতো চালানোর জন্য তাই তো ইচ্ছা হয়েছে ছেড়েছেন। ইচ্ছা হয়েছে আবার ধরতে এসেছেন। ছাড়ুন আমার ঘুম পাচ্ছে।
.
আরাভ ছেড়ে দিলো।
আরাভ- তুমি তো দিনে ঘুমাও না।
আমি- কিছু অভ্যাস পরিবর্তনশীল। লাইক এটাও।
আরাভ- হুমম বদলে গেছো সত্যি। এখন তোমার কথায় বড় বড় ভাব এসেছে।পিচ্চি পিচ্চি ভাব নাই।
আমি- তা তো হবেই জীবন শিখিয়েছে। আপনি শিখিয়েছেন। আচ্ছা যাই আমি ঘুমাই। বের তো হতে দিবেন না।
.
আমি চলে গেলাম। আরাভের খুব কষ্ট হচ্ছে কথাগুলো শুনে। কিন্তু ও নিজেকে সামলে দিলো। এই বলে যে, ও দোষী।
.
বিকালে আনভীরকে নিয়ে ডাইনিং রুমে এসে দেখি ফুচকা রাখা। আমি থ এইনে ফুচকা কেমনে?
আরাভ- আমি আনছি।
আমি- আমি কি জিজ্ঞেস করছি? (যদিও মনে মনে ঠিকই করছি)
আরাভ- মনের কথা তোমার এখনো বুঝি মিসেস আহমেদ।
আমি- (ভেংচি দিলাম)
.
আরাভ কাছে এসে আনভীরকে কোলে নিলো।
আরাভ- নেন ম্যাম শুরু করুন। আপনার জন্যই।
.
আমি অপেক্ষা না করে খেতে লাগলাম। কারণ অনেক দিন পর খাচ্ছি।
.
আমি খেয়েই যাচ্ছি।
.
এদিকে আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
আমি- হাসবেন না। একদম না। আমার জায়গায় হলে বুঝতেন। এতোদিন পর আহা। টেস্টি।
.
ঝাল লাগছে তাও খাচ্ছি। আরাভ পানি এগিয়ে দিলো।
.
চলবে…..