Angry_Husband
Season_2_Part_27
Written by Avantika Anha
আমি সিম অফ করে ফেললাম। যেই সিমটা সবাই জানে সেটাই অফ করলাম। কারণ আমার মাঝে এখনো ভয় যে, আরাভ হয়তো আনভীরকে কেড়ে নিবে। এদিকে আরাভসহ পরিবারের বাকীরা আমাকে খুঁজতে লাগলো। আমার ধারণা সঠিক ছিলো ওরা প্রথমে মিমির বাড়িই গেলো। যা মিমি আমাকে জানিয়েছিলো। তাড়াহুড়ায় ওরা মিমিকে জান্নাতের কর্মকান্ডের সত্যি বলতে পারে নি তাই আমিও জানতে পারলাম না তবুও সব সত্যি।
.
হোটেলের রুমে বসে তাড়াতাড়ি টিকিটের খোঁজ করছি। ভিসা ছিলোই আর তাড়াতাড়ি টিকিটও পেয়ে গেলাম পরেরদিনের। আমি এখন কিছুটা হলেও নিশ্চিন্ত হলাম।
.
এদিকে খোঁজ নিয়েও আরাভ আমার ঠিকানা পেলো না। এমনকি অফিসে গিয়েও খোঁজ পেলো না। অফিসে গিয়ে শুনলো আমি ছুটি নিয়েছি। আরাভ রুমে এসে শুয়ে পড়লো।
.
ওর চোখ দিয়ে দু ফোটা পানি পড়লো।
আরাভ- কই তুমি আনহা? কই গেলা? একবার তো তোমাকে নিজের দোষে হারালাম এবারও হারাতে চাই না। “হে আল্লাহ দয়া করে আমাকে ওকে খুঁজে দিন।”
.
এদিকে আমি তবুও অনভীরকে জড়িয়ে শুয়ে আছি। আরাভ ওদিকে চোখ বন্ধ করে আছে। হঠাৎ ওর মাথায় আসলো আনহা তো ফরেইন থেকে আসছে এর মানে ও কার্ড ইউজ করবে। ওর কাছে তো বেশি ক্যাশ থাকবেও না। আরাভ তাড়াতাড়ি খোঁজ নেওয়া শুরু করলো। বড় পরিচিতি আছে আরাভের বিজনেসম্যান হিসেবে। তাই আরাভ খোঁজ নিয়ে পরেরদিন সকালে জানতে পারলো আমি এক হোটেলে কার্ড ইউজ করছি আর টিকিট কাটতেও কার্ড ইউজ করছি। আরাভ বুঝে গেলো আমি ফরেইন ব্যাক করছি।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি বের হয়ে পড়লো। সাথে আর কাউকে নিলো না। আনভীরকে ঘুম পাড়াচ্ছিলাম। এমন সময় রুমে কে জানি নক দিলো।
.
আমি- কে?
অপর প্রান্তে- রুম সার্ভিস। (অন্য আওয়াজ বের করার চেষ্টা করলো আরাভ)
আমি- (আওয়াজটা কেমন পরিচিত আজব আজব লাগছে।তবুও জবাব দিলাম) আমি তো কিছু চাই নি।
অপর প্রান্তে- ম্যাম আমি কিছু জিনিস নিয়ে যেতে এসেছি।
আমি- কি??? সময় পান না? আফ্রিকান বিলাই কোনেকার আমি আমার বাচ্চাকে ঘুম পাড়াচ্ছি। আপনি পরে আসেন।
অপর প্রান্তে- ম্যাম দরকার আছে একটু খুলুন নিয়েই চলে যাবো।
.
আমি- ওয়েট।
.
দরজা খুলে আমি আরাভকে দেখেই শকড।
আরাভ- জ্বী ম্যাম আমি আমার জিনিসই নিতে আসছি।
.
আমি তাড়াতাড়ি দরজা লাগাতে চেষ্টা করলাম কিন্তু আরাভের শক্তির কাছে পারলাম না। এক কোলে আনভীরও ছিলো।
আমি- আপনি কেনো এসেছেন?
আরাভ- আমার বউ আর বাচ্চাকে নিতে এসেছি।
আমি- আমরা যাবো না আপনার সাথে।
আরাভ- মিস আপনাকে যেতেই হবে।
আমি- হোয়াট? না আমরা যাবো না।
আরাভ- আনহা ভালোভাবে বলছি চলো নইলে তুলে নিয়ে যাবো।
আমি- আমি আপনার সাথে যাবো না। আমার আনভীরকেও দিবো না আপনাকে।
আরাভ- আমি তো নিবোই।
আমি- ওই আফ্রিকান ইঁদুর যান এখান থেকে আপনি।
আরাভ- আহা এতোদিন পর তোমার মুখে এসব কথা শুনে ইচ্ছে করছে হাওয়ায় ভাসি।
আমি- প্লিজ আপনি যান এখান থেকে। (কেঁদে ফেললাম)
আরাভ- (খারাপ লাগলো ওকে কাঁদতে দেখে) সিওর?
আমি- প্লিজ যান এখান থেকে।
আরাভ- ওকে ম্যাম। আসতেছি তাহলে।
আমি- আচ্ছা।
.
আরাভ বের হয়ে চলে গেলো। আমি স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়লাম। কিন্তু আমার আর এখানে থাকলেও চলবে না। আমি তাড়াতাড়ি জিনিস গুছিয়ে নিলাম।
.
আমি তাড়াতাড়ি সব মিটমাট করে অন্য হোটেলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হলাম। হঠাৎ কে জানি আমার চোখে পট্টি বেঁধে ফেললো। আমার ভয় লেগে গেলো। কে জানি আমার কোল থেকে আনভীরকে কেড়ে নিলো। আমার শ্বাস বন্ধ হতে লাগলো। কারণ আনভীর আমার জীবন। কে জানি আমাকে টেনে গাড়িতে তুললো। আমি কিছু বলতে পারছিলাম না কারণ আমার মুখও বেঁধে ফেলা হয়েছিলো।
.
কই জানি এনে আমাকে নামানো হলো। কোনো এক বাড়িতে আমকে ঢুকানো হলো।
.
কিছু সময় পরে আমার চোখ খুলে দেওয়া হলো। চোখ খুলে দেখি আমার সামনে আরাভ। এর মানে আরাভই আমাকে কিডন্যাপ করেছে। কিন্তু এই বাড়িটা কার?
.
সেই সময় আরাভ বের হয়ে ওর কিছু বন্ধুকে ডাকলো। আর প্লান অনুযায়ী আমাকে কিডন্যাপ করলো। হোটেলে কিছু করলে মানুষ আটকাবে তাই ও বাহির থেকে কিডন্যাপ করলো। কারণ ও জানতো আনহা এই হোটেলে আর থাকবেই না। সামনে কি হলো সবাই তো জানিই।
.
.
আমি- আপনি এমন কেনো করছেন আমার আনভীর কই?
আরাভ- ঘুমাচ্ছা ঘরে ম্যাম।
আমি- এসবের মানে কি?
আরাভ- ম্যাম আমার জিনিসকে আমি ছাড়ছি না।
আমি- বাহ আজ আসছেন আমার জিনিস আমার জিনিস করতে এতোদিন কই ছিলেন? কই ছিলেন তখন যখন আমি প্রেগনেন্ট ছিলাম। সব যন্ত্রণা একা সহ্য করেছি। অপারেশন থিয়েটারেও একা ছিলাম। কেউ ছিলো না পাশে। তখন কি হয়েছিলো আপনার?
আরাভ- আনহা জানি আমি ভুল করছি কিন্তু আমার কোনো দোষ ছিলো না। জান্নাত চাল চেলেছিলো।
আমি- কি এমন চাল চেলেছিলো যে আপনি আমাকে ছেড়ে দিলেন?
আরাভ- (সব বললাম)
আমি- ও ভালোই।
আরাভ- দেখো আমার দোষ নাই কোনো।
আমি- ভালোই।
আরাভ- সব জেনেও এমন করছো কেনো?
আমি- এমনি আমার কাল ফ্লাইট আছে আমাকে যেতে দেন।
আরাভ- না কখনোই না।
আমি- অলটাইম জেদ ভালো লাগে না।
আরাভ- আমার জেদ তোমাকে মানতেই হবে।ভুলবা না আমরা এখনো ডিভোর্স নেই নি।
আমি- দূররর।
আরাভ- দূররর বলে লাভ নাই। কিছু খেয়ে নেও। আর লাভ নাই চেষ্টা করেও পালাতে পারবা না। এটা আমারই ফ্লাট। বাইরে সিকিওরিটি লাগানো মিস।
.
আমি আর জবাবই দিলাম না। কারণ আমার প্রচুর রাগ উঠছিলো।
.
অগত্যা আমি আনভীরের পাশে গিয়ে বসলাম।
কিছু সময় পর আরাভ এলো।
আরাভ- চলো বাবু খাবে।
.
আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি। কারণ ও একটু বেশিই রোমান্টিক হচ্ছে। আগেএ হতো বাট প্রায় ২ বছর পর এটা আজবই লাগে।
আরাভ- হাওয়া খেয়ে পেট ভরবে না ম্যাম চলেন খাবেন আর বাবু তো ঘুমোচ্ছে।
আমি মনে মনে ওরে গালি দিতে লাগলাম।
আরাভ- মনে মনে পরে গালি দিয়েন চলেন খাবেন আর যদি না খান তাহলে ফিল্মে দেখি জোড় করে খাইয়ে লিপ দিয়ে আর কি বুঝাতে হবে?
আমি- যাচ্ছি।
.
চুপচাপ খেয়ে নিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়লাম। আর প্লান করতে লাগলাম কি করা যায়? কিন্তু তাও হলো না আরাভ পিছন দিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো।
আমি- ছাড়ুন আমাকে।
আরাভ- এতোদিন পর ধরেছি ছাড়বো না মিস।
.
চেষ্টা করেও লাভ হলো না। কারণ ওর শক্তি বেশি। আমি চুপচাপ ভাবতে লাগলাম কি করা যায়?
.
চলবে….