Angry_husband
Season_2_Part_18
Written by Avantika Anha
খাওয়া শেষে, আরাভ আমার দিকে তাকায় মুচকি হাসতেছে। এটা দেখে জিজ্ঞেস করলাম,
আমি- কি এরাম ভিলেন মার্কা হাসি মারতেছেন কেনো?
আরাভ- ভাবতেছি যা বললা সত্যি করার সময় হয়ে গেছে।
আমি- মানে?
আরাভ- পরিবার বাড়ানো উচিত।
আমি- ওহ। একটু চোখ বন্ধ করেন গিফ্ট আছে।
আরাভ- আগে এইটা বলো বাবু। বাবু কবে নিবা?
আমি- বন্ধ করেন ১ মিনিটের জন্য।
আরাভ- ওকে।
.
আরাভ এইদিকে চোখ বন্ধ করছে ওইদিকে আমি দৌড় মারছি। বিষয় হলো আমার লজ্জা লাগছে। এক মিনিট পর আরাভ চোখ খুলে আমাকে খুঁজতে লাগলো। বের হয়ে একজনকে জিজ্ঞেস করলো,
আরাভ- তোমাদের ম্যাডামকে দেখেছো?
রাই- স্যার ম্যাডাম তো এই কেবলমাত্র দৌড় দিয়ে পালালো। জিজ্ঞেস করলাম কিছু বললো না।
আরাভ- ওহ।
.
আরাভ ওর কেবিনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে আমি গাড়িতে উঠছি। আরাভের রাগ বেড়ে গেলো। ওর মতে ওকে বলে যেতে পারতো। আর লজ্জা লাগলে পালানোর কি আছে? এসবই আরাভ ভাবছিলো। এমন সময় ওর ফোনে একটা মেসেজ এলো। আমার মেসেজটা পড়তে না পড়তেই আরেকটা মেসেজ এলো,
১ম মেসেজ
“apni ekta hulo viral. amar ki lojja nai naki? ki bolen esob? but ktha ta vul na. babu neoa jay… but amar lojja lagse tai palailam hihihi”
আরাভ মেসেজটা পড়ে মুচকি হাসলো। আর নিজের অজান্তেই “পাগলি” বললো।আরাভ ভেবেছিলো ২য় মেসেজটাও আমার কিন্তু ওটা ছিলো জান্নাতের কিন্তু অচে
“baby Ami to tmk sartesi na. amader majhe theke anhakei sorte hbe. tmk pete Ami anhake sorateo pisupa HBO na lv u arav. lv u so much.bachate paro to bachao tmr anha k. just Ber holo tmr office theke tai na?”
.
আরাভের টেনশন উঠে গেলো। ও আনহাকে ফোন দিলো,
আমি- ওহো এংরি ম্যান কি রাগে গেছেন নাকি?
আরাভ- আনহা মজার টাইম না। তুমি কই আছো?
আমি- কই আবার বাড়ি যাচ্ছি।
আরাভ- ফাঁকা রাস্তা ধরছো নাকি এমনি রাস্তা?
আমি- ওই যে ফাঁকাটা কেনো?
আরাভ- থামো যেখানে আছো ওখানেই থাকো আমি আসতেছি আর কথা বলতে থাকো।
আমি- ইইইই বুঝি না আমাকে বকবেন তাই না। আমি একাই যামু হিহি।
.
আমি কল কেটে দিলাম। আরাভের রাগও বেড়ে গেলো সাথে টেনশনও। আরাভ তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করলো। হাই স্প্রিডে গাড়ি চালানো শুরু করলো। আর আমাকে কল দিলো আবার, এবার আর আমি কল রিসিভ করছিলাম না। কারণ আমি এক ধরনের ফুল নিতে নেমেছিলাম আর ফোন গাড়িতে ছিলো। আবার গাড়িতে গিয়ে দেখি আরাভের কল,
আমি- হুমমম বলেন এতো কল কেনো?
আরাভ- ওই মেয়ে কই তুমি হা? এতোবার কল দিচ্ছি ধরো না কেনো?
আমি- এই যে আমি ফুল নিচ্ছিলাম। আম্মুউউউউউউউউউউউউউউউউ
একটা চিংকার দিয়ে আমার ফোন অফ হয়ে গেলো। কারণ একটা বড় ট্রাক আমার গাড়িটাকে ধাক্কা দিয়েছে।
.
আরাভের চিন্তা হচ্ছিলো ও দ্রুত গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলো। কিছুদূর গিয়ে দেখে আমার গাড়ির এক্সিডেন্ট হয়েছে। আরাভ দৌড়ে গাড়িতে এগিয়ে দেখে গাড়িতে কেউ নাই। কিন্তু ওখানে রক্তের ছাপ স্পষ্ট। আরাভের ভয়ের মাত্রা বেড়ে গেলো।
.
আরাভ ওখানেই বসে পড়লো, কাঁদতে আমি- ো। এমন সময় আরাভের ফোনে একটা কল এলো। রিসিভ করতেই,
আমি- হ্যালো মি. আরাভ।
আমার কন্ঠ শুনতেই,,,
আরাভ- আনহা তুমি ঠিক আছো?
আমি- হুমমম।
আরাভ- কই তুমি?
আমি- হাসপাতালে। আমাদের ড্রাইভার কাকু আছেন না উনার এক্সিডেন্ট হইছে। তার পায়ে লেগেছে আর মাথায় কিছুটা।
আরাভ- কোন হাসপাতালে?
আমি- সিটি ক্লিনিক।
আরাভ- আমি আসছি।
.
আরাভ তাড়াতাড়ি গেলো। হাসপাতালে গিয়ে খুঁজতে লাগলো, খুব দ্রুতই তার পরিচিত মুখটাকে পেয়ে গেলো। গিয়েই সবার সামনে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। আশে পাশের অনেকে দাড়িয়ে দেখতে লাগলো। ফ্রি টিকিটে রোমান্স আরকি,
আরাভ- কিভাবে হলো? (যদিও জানে কে করছে এসব)
আমি- লাস্ট যখন কথা বলছিলাম তখন গাড়িতেই ছিলাম। বাট আরেকটা ফুল ভালো লাগছিলো। তাই দৌড় মারতে গিয়েছিলাম জঙ্গলের দিকে বের হতে গিয়ে দেখি একটা ট্রাক আসছে। ড্রাইভার কাকুকে বলি একসাথেই পালাতে ধরি। কিন্তু আমি কিছুটা আগে বের হই। ড্রাইভার কাকুও পালায় ঠিকই কিন্তু ট্রাকটা গাড়িকে ধাক্কা দেয় আর তার কিছুটা লাগে। পরে মানুষ যাচ্ছিলো তাদের সাহায্য নিয়ে হাসপাতালে আসি।
আরাভ- তোমার কোথাও লাগছে?
আমি- না।
আরাভ- সিওর?
আমি- ইয়ে আমার হাতে একটু লাগছে।
আরাভ- চলো ওষুধ লাগাবা।
আমি- গাড়িটার বেশি ক্ষতি হয় নি মনে হয়। তবুও যতোটা হইছে মেলা টাকা যাবে।
আরাভ- তা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।
আমি- উকে। বাদ দেন। প্রথমবার এক্সিডেন্ট হইলো আমার। এখনি একটা পোস্ট করবো আমার ফোননননননন।
আরাভ- কি?
আমি- ফোন তো মনে হয় গেছে গা। এএএএএ আমার ফোন।
আরাভ- গাধী মাইয়া নিজে বাঁচে গেছো ওটাই প্রে করো।
আমি- হিহি। উকে। নতুন ফোন দিবেন তো?
আরাভ- তোরে মারবো আমি। একা পালাতে কে বলছে?
আমি- আপনি-ই তো বাচ্চা বাচ্চা করছেন তাই লজ্জা পাইছি।
.
হঠাৎ পাশের মানুষগুলো হেসে উঠলো। আমি ভুলেই গেছিলাম যে আমরা মানুষের ভিড়ে আছি। আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম। সাথে আরাভও।
আমি- আমি বাড়ি গেলাম টাটা।
.
এই বলে দৌড় মারতে গেলাম। কিন্তু হঠাৎ উস্টা খেতে গেলাম কিন্তু আরাভ হাত ধরে ফেললো।
আরাভ- দৌড়াদৌড়ি কমাও মোর মা।
আমি- লজ্জা লাগছে।
আরাভ- আমারও তো লাগছে তাই বলে কি আমি পালাচ্ছি?
আমি- ইয়ে মানে।
আরাভ- এখানে দাড়াও একটু আমি দেখে আসতেছি রহিম কাকার অবস্থা কেমন?
আমি- ওকে।
.
আরাভ খোঁজ নিয়ে আসলো। কিন্তু এসে দেখে আমি একটা বাচ্চাকে কোলে নিয়ে আছি।
আরাভ- এটা কার বাচ্চা। দেখে তো মনে হচ্ছে ২ দিনের বাচ্চা।
আমি- আমার বাচ্চা।
আরাভ- বাহ আমি বাচ্চার বাবাও হয়ে গেলাম। কেবল তো বাচ্চারই কথা বলছিলাম।
আমি- আরে দেখেন কতো কিউট পুচকু একটা। আমার মতো দেখতে তাই না।
আরাভ- কে হয় তোমার?
আমি- কেউ না।
আরাভ- মানে?
আমি- মানে কেউ হয় না তো।
আরাভ- কোলে নিয়ে আছো যে?
আমি- চুরি করছি।
আরাভ- আনহা তুমি কার বাচ্চা তুলে আনছো?
আমি- এটাও জানি না।
আরাভ- আমি পাগল হয়ে যাবো। আরে গাধী কি করছো?
আমি- পুচকুটারে খুব কিউট লাগছে। তাই….
আরাভ- তাই কি?
আমি- পরে কমু। নার্স আইছে।
নার্স- থেংকু ম্যাম আপনার জন্য বেঁচে গেলাম।
আমি- ব্যাপার না মানুষই মানুষের জন্য।
.
নার্স বাচ্চাটাকে নিয়ে চলে গেলো। আরাভ জিজ্ঞেস করলো, “কিছুই বুঝলাম না।”
আমি- যেতে যেতে বলছি। চলেন বাড়ি যাই।
.
আরাভ আর আমি হাটতে লাগলাম। তারপর গাড়িতে,
আরাভ- এবার বলো।
আমি- কিতা?
আরাভ- বাচ্চাটা কেমনে নিলা? আর নার্সটা কিছু বললো না কেনো?
আমি- বাচ্চাটাকে দেখলাম খুব কোলে নেওয়ার ইচ্ছা করছিলো। নার্সের কোলে ছিলো। পাশে একটা ৫ বছরের বাচ্চা ছিলো। ওকে একটা কিটক্যাট ধরায় দিয়ে বললাম, যেনো এই জুসটা ওই নার্সের মুখে আর হাতে ফেলে। বাচ্চাটা তাই করলো। নার্সটা বকাবকি করতে চাইলো কিন্তু বাচ্চাটা পালাইলো। আমি বললাম দেন আপু বাবুটাকে আমি ধরতেছি। উনি ভাবলো আমি তার সাহায্য করছি। কিন্তু আমি যে কি করছি হিহিহি তা তো আমি জানি।
.
আরাভ শকড একটা মেয়ে এতো পাগলামি করতে পারে ও আমাকে না দেখলে জানতো না।
আরাভ- ফাজিল মাইয়া।
আমি- হিহি।
.
আরাভ আর আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হলাম। আরাভের মাথায় রাগ উঠে গেছে। আরাভ যে জান্নাতকে ছাড়বে না ও মনে মনে ফিক্স করলো।
চলবে…….