Angry_Husband Season_2_Part_14

0
2881
Angry_Husband Season_2_Part_14
Angry_Husband Season_2_Part_14

Angry_Husband
Season_2_Part_14
Written by Avantika Anha
সকালে ঘর থেকে বের হওয়ার পর মা ও আভা জিজ্ঞেস করতে লাগলো মাথা ব্যাথা কমেছে কি না? তাদের এই কথা শুনে আমি ভাবতে লাগলাম আমার মাথা ব্যাথা আবার কখন হলো। হঠাৎ করে মাথায় এলো এটা নিশ্চয়ই আরাভ মিথ্যে বলছে। হয়তো নিজের দোষ ঢাকতে। নিজের স্বামীকে বাঁচানো আমারো দায়িত্ব তাই আমিও আর কিছু বললাম না।
আভা- কি ভাবি চুপচাপ দাড়িয়ে আছো যে?
আমি- না কিছুনা।
আভা- ঘুরলা তো বেশ এখন বলো আমাদের পরিবারে ছোট সদস্য কবে আসছে?
আমি- আভা তুমি কিন্তু বেশি দুষ্ট হয়ে গেছো।
আভা- তোমার কাছেই তো শিখছি এসব।
আমি- তাই নাকি?
আভা- হুম তো।
আমি- ভাবতেছি আভামনি বড় হয়ে গেছে বিয়ে দেওয়া উচিত।
আভা- ধ্যাত ভাবি কি বলো। (কিছুটা লজ্জা পেলো)
আমি- ঠিকই তো দাড়াও তোমার মা আর ভাইয়াকে বলি।
আভা- ভাবি ভালো হচ্ছে না কিন্তু।
আমি- বাবু আমিও পারি।
আভা- একটু বেশিই পারো।
আমি- তাই তো।
আভা- হানিমুনে কি কি করলা কাল তো ভালো করে শুনলামই না।
আমি- পরে বলবো নে।
আভা- তোমার গলাটা বসা বসা লাগছে। জ্বর এলো নাকি দেখি। (হাত কপালে রেখে দেখে কপাল কিছুটা গরম)
-ভাবি তোমার জ্বর তো।
আমি- ও কিছু না।
আভা- কিছু না মানে ? কিভাবে হলো?
আমি- ওইতো ঠান্ডা লাগছিলো আরকি।
আভা- কখন থেকে জ্বর?
আমি- সকাল থেকে।
আভা- আচ্ছা ওষুধ খাও ভাবি। আমি মাকে বলছি।
আমি- আরে বাদ দেও।
আভা- উহু।
.
আভা চলে গেলো। আমি পিছন দিকে ঘুরে দেখি আরাভ দাড়িয়ে। তারমানে ও আমার আর আভার কথা গুলো শুনছিলো।
আরাভ- ওকে বললে না যে কি হয়েছে আসলে?
আমি- উমমম আমার স্বামীকে কেউ খারাপ বলুক আমি তা চাই না।
আরাভ- বাহ আমার বউ দেখি আজকাল বুদ্ধিমতি হয়ে গেছে।
আমি- শুনুন ফ্রিতে ছাড়ছি না তো এর পরিবর্তে আমাকে গিফ্ট দিতে হবে।
আরাভ- যেমন কি তেমনি আছো দূরররর।
আমি- হিহিহি।
আরাভ- পারবো না।
আমি- মাকে বলবো?
আরাভ- না।
আমি- তো দিবেন কি না?
আরাভ- ওকে কি নিবা?
আমি- একজোড়া নুপুর।
আরাভ- বিকালেই পেয়ে যাবা।
আমি- প্রমিস ?
আরাভ- আচ্ছা।
.
সেদিন বিকেলে আমি আরাভের অপেক্ষা করছিলাম। কিন্তু আরাভ ফিরে নি। প্রায় রাতের দিকে আরাভ ফিরলো। কিন্তু তার চোখ মুখ দেখে বুঝছিলাম না ও এমন কেনো লাগছে যেনো ও চিন্তিত। ওকে চিন্তিত দেখে আমি এগিয়ে গেলাম শুনতে…
আমি- কি হইছে আপনার?
আরাভ- কিছু না। যাও এখান থেকে
আমি- এতো দেরি হলো যে? আর আমার নুপুর কই?
আরাভ- যেতে বললাম না এখান থেকে। এখনি বেড়িয়ে যাও ঘর থেকে।
আমি- আপনি এভাবে কথা বলছেন কেনো? কি হয়েছে আমাকে বলুন?
আরাভ কিছু বলার সুযোগ দিলো না। আমাকে জোড়ে ধাক্কা দিলো। পিছনে টেবিল ছিলো আরাভ লক্ষ্য করে নি আর আরাভের ধাক্কাটা একটু বেশিই জোড়ে ছিলো। তা সহ্য করতে না পেরেই আমি পড়ে যাই নিচে। আঘাত পেয়ে যাই মাথায় হাত দিয়ে দেখি রক্ত। মাথাটায় ঝিম ধরে উঠে আর আমি হুশ হারিয়ে ফেলি। আরাভ প্রচন্ড রাগে ছিলো কারণ রাস্তায় জান্নাতের সাথে ওর দেখা হয়েছিলো আর জান্নাত ওকে একটা ছবি দেখায় যেগুলোতে আরাভ আর ও নগ্ন অবস্থায় ছিলো। কিন্তু ছবিগুলো যে মিথ্যে তা আরাভও জানে জান্নাতও। জান্নাত এখন ওর আর আমার সম্পর্ক ভাঙ্গার জন্য এমন করতে চলেছে। এ নিয়েই চিন্তায় ছিলো আরাভ। কারণ ও কোনো মতেই আমাকে হারাতে চায় না। আরাভ আমার দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে যায় কারণ আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। আরাভ তাড়াতাড়ি আমাকে কোলে তুলে হসপিতালের ওদিক রওয়ানা হলো। সাথে মা আর আভাও। সেই সময় বাবা(আরাভের আব্বু) বাড়িতে ছিলো না। মা বারবার আরাভকে জিজ্ঞেস করতে লাগলো কিভাবে এমনটা হলো? আরাভ জবাব না দিলেও বাকীরা ঠিকই বুঝেছে আরাভই আমাকে ধাক্কা দিয়েছে। কারণ আরাভের রাগ সবাই জানে।
কিছু সময় পর আমার জ্ঞান ফিরে আসলো। আমার মাথায় হাত দিয়ে দেখি ব্যান্ডেজ করা। মনে পড়লো সবকিছু। কিন্তু আরাভ আমার সাথে এমন করার মানুষ না। ওর রাগ আছে আমিও জানি কিন্তু এমন না। আমাকে জানতেই হবে কি হইছে?
আমি তাকিয়ে দেখি আরাভের চোখে পানি। মায়ের চোখেও। সবার চোখে চিন্তা স্পষ্ট। নিজের মনের প্রতি তৃপ্তি আসছে। কারণ তারা যে আমাকে কতোটা ভালোবাসে আমি বুঝতেছি। সেদিনই আমি বাড়ি ফিরে এলাম। বাড়ি ফিরার পর আরাভ আমার চোখে চোখ রাখছে না। বরং কাজ করার নামে আমার কাছে থেকে দূরে থাকছে। আমি ওকে ডাকলাম….
আমি- ওই মি. রাগকুমার।
আরাভ- হুমমম বলো কি লাগবে?
আমি- কি হয়েছে? চিন্তিত কেন? আর সেই সময় এমন করলে কেনো?
আরাভ- কিছু হয় নি। অফিসের কাজ নিয়ে।
আমি- সত্যি বলো কি হয়েছে তোমাকে আমার কসম।
আরাভ- তোমাকে আমার একটা কাজিনের কথা বলছিলাম মনে আছে?
আমি- হুমমম।
আরাভ- ও আমার আর ওর বাজে ছবি ইডিট করে বানাইছে। তোমাকে দিবে বলে।
আমি- ওটা কি এগুলো? (কিছু ছবি দেখিয়ে যেগুলো আরাভকে জান্নাত দিয়েছিলো। ওটা সকালেই আমার ফোনে এসেছিলো। কিন্তু আমি আরাভকে বলি নি। কারণ আমি জানি আরাভ এমন কিছু করবে না।)
আরাভ- তোমাকে আগেই দিয়েছে?
আমি- হুমমম সকালেই দিছে।
আরাভ- তুমি আমাকে বললে না যে? বিশ্বাস করো এগুলো মিথ্যে।
আমি- মি. রাগকুমারের উপর আমার ভরসা আছে বুঝলেন। জান্নাত কেও বলছি যে এসব দিয়া লাভ নাই।
আরাভ- ও কি বললো?
আমি- ও বললো ওর সব তুমি নিয়ে নিছো। ওর ইজ্জত আমার হাতে। আমি বলছি। আরাভ এমন কিছু করবে না।
আরাভ- তারপর।
আমি- ও বললো ও যদি প্রেগনেন্ট হয় তাহলে কি হবে? এই আরকি।
আরাভ- তুমি কি বললে?
আমি- ইয়ে মানে…
আরাভ- বলো।
আমি- আমি বলছি আমি প্রেগনেন্ট আপনার বাচ্চার আর আমাদের জীবন থেকে চলে যাক। এইটা বলে কাটে দিছি।
আরাভ- কিইইই (চোখ বড় করে)
আমি- তা এতো সহজে আপনাকে ছাড়বো না আমি।
আরাভ- আই লাভ ইউ পাগলি। সত্যি তুমি মাঝে মাঝে অসাধারণ জিনিস করো।
আমি- আই লাভ ইউ টু। (আরাভ আমাকে জড়িয়ে ধরলো)
আরাভ- তা ভাবছি তোমার বলা কথাটা সত্যি করে দেই।
আমি- কোনটা?
আরাভ- ওই যে বাচ্চা।
আমি- চুপ শয়তান।
আরাভ- শয়তানির কি দেখছো ম্যাডাম। দেখাবো নাকি।
আমি- না আমি ঘুমাবো। এমনি মাথা ফাটছে। ব্যাথা। (কথাটা শুনে আরাভের মুখ কালো হয়ে গেলো)
আরাভ- সরি আমার জন্য তোমার এই অবস্থা।
আমি- আরে বাদ দেন। আমার সব আপনার। সেই সাথে আপনার সবকিছুই আমার। সো নিজেকে আঘাত করার অধিকার আপনার আছে।
আরাভ- থেংকু ফর বিং উইথ মি।
আমি- ওয়েলকাম। কিন্তু আমি আমার নুপুর পাই নি।
আরাভ- সরি। কাল আনবো।
আমি- উকে। সাথে কিটক্যাটও। মাথা ফাটাইছেন যেমন তেমন শাস্তি।
আরাভ- ওকে ঘুমাও। কাল পেয়ে যাবে।
আমি- উকে।
.
চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে