Dark Mystery পর্ব-০৮

0
5

#Dark_Mystery (কালো রহস্য)
#Part_8
#Sabrina_Summa

বেডের সামনের সোফায় বসে আছে মাহির আর বেডে হেলান দিয়ে বসে সবকিছু তীক্ষ্ণ নজরে দেখছে সুপ্তি। আর মাহির দেখছে তাকে।
সুপ্তি গবেষণা বন্ধ করে বললো, ” আমি…………… কোথায়? ” ( ভেঙ্গে ভেঙ্গে )
মাহির এই প্রশ্নটার জন্যই অপেক্ষা করছিলো। সে জানতো এই প্রশ্নটা উঠবেই।
মাহির : আমার বাসায়।
সুপ্তি : আপনার বাসা মানে! এখানে থাকেন?
মাহির : না। মাঝে মাঝে আসি।
সুপ্তি এবার নিজেকে পরুক করে বললো, ” আমি কার পোশাক পড়ে আছি? ”
মাহির : আমার ওয়াইফের।
সুপ্তি : আপনি বিয়ে করলেন কবে? বিয়ে করে বউ লুকিয়ে রেখেছেন, পুরো দেশ জানে আপনি সিঙ্গেল!
মাহির : আমার ফিউচার ওয়াইফের জন্য কিনা ছিল এগুলো। আর পুরো দেশ সত্যিটাই জানে।
সুপ্তি তিরস্কার করে বললো, “যাইহোক একটা প্লে বয় ছেলের বাসায় মেয়েদের জামা থাকবে এটা খুবই নরমাল। ”
মাহির : কী বলতে চাচ্ছো তুমি?
সুপ্তি : যেটা আপনি ভাবছেন!
মাহির : আমি ডেটই করি না আর তো রুম ডেট!
সুপ্তি আস্তে করে বললো, ” আমি রুম ডেটের কথা মিন করি নি। কতটা বাজে মাইন্ডের মানুষ! ”
মাহির গুমড়ো মুখ করে বললো, ” আমি শুনতে পাচ্ছি। ”
সুপ্তি বিরক্ত হয়ে বললো, ” কীরে বাবা। আমার মনও এখন জোরে জোরে কথা বলে! ”
মাহির কথা চাবিয়ে চাবিয়ে বললো, ” তোমার মন না তুমিই জোরে কথা বলছো। ”
সুপ্তি অ্যা করে উঠলো।
মাহির মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো।
কিছুক্ষণ নিরবতা বিরাজ করলো। সুপ্তি উঠে এসে মাহিরের কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বললো, ” আমি কি একটু বেশিকিছু করে ফেলেছি?”
মাহির প্রথমে বুঝতে পারলো না পরে যখন বুঝতে পারলো তখন শয়তানি একটা হাসি দিয়ে বললো, ” হ্যাঁ, তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে ছিলে। ”
সুপ্তি : তো?
মাহিরের হাসি কিছুক্ষণের জন্য বিলীন হয়ে গেল। তারপর আবার হেসে বললো, ” দেখাবো , কিভাবে ধরে ছিলে? ”
বলেই এগিয়ে যেতে নিলো। তখন সুপ্তি বলে উঠলো, ” না মানে, আমি বলছিলাম আমি কি বেশি বলে ফেলেছি? ”
মাহিরের হাসিটা সম্পূর্ণই বিলীন হয়ে গেল।
এরই মাঝে তানিশা এসে বললো, ” খাবার রেডি। ”
সুপ্তি এখনো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মাহিরের দিকে। কিন্তু মাহির সেদিকে পাত্তা না দিয়ে দ্রুত খাবার টেবিলে চলে গেলো।
সুপ্তি খেতে না চাইলেও মাহির ফ্রেন্ড হওয়ার নাম করে খাইয়েছে। শুধু তাই নয় সুপ্তির জন্য একটা সুন্দর ড্রেস সিলেক্ট করে তাকে পড়িয়েছে এবং গিফট করেছে। এরপর তাকে ক্যাম্পাসে ড্রপ করেছে।
আজকের দিনটা ভালোই কাটলো সুপ্তির।।

রাতে.,.

মাহির আর কিছু বডিগার্ড ও মাহিরের এবং মাহফুজ চৌধুরীর এসিস্ট্যান্ট দাঁড়িয়ে আছে মাহফুজ চৌধুরীর বাসার অফিসে। শুধু মাহফুজ চৌধুরী বসে আছে।
এরই মাঝে মিস সিক্রেট ভিতরে প্রবেশ করে বললো, ” আঙ্কেল, আমি এসে পড়েছি……..”
মাহফুজ চৌধুরী : এতক্ষণে!
মিস সিক্রেট আ…. হ্যাঁ। তারপর বললো, ” আচ্ছা কাজের কথা বলো। ”
মাহফুজ চৌধুরী : তোমাকে তাশরিফের সাথে যেতে হবে।
মিস সিক্রেট : কোথায়?
মাহফুজ চৌধুরী জায়গার নাম বলতেই মিস সিক্রেট ভয়ে ভয়ে বললো, ” সেখানে অনেক কবর আছে না? ”
মাহফুজ চৌধুরী : হ্যাঁ।
মিস সিক্রেট : আমি যাবো না।
মাহফুজ চৌধুরী : তোমাকে যেতে হবে। সেখান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস আনতে হবে। তোমাকে আর তাশরিফকে ছাড়া আমি কাউকে ভরসা করতে পারছি না।
মিস সিক্রেট : আমি যাবো না, আঙ্কেল।
পিছাতে পিছাতে মাহিরের কাছাকাছি চলে গেলো।
মিস সিক্রেট হুডির উপর দিয়েই কানে হাত দিয়ে আছে। সে কাপছে আর ঘামছেও।
মাহির মনে মনে – ” এর আবার কি হলো? এরও দুর্বলতা আছে তাও আবার কবরেই! দুইদিন আগে না গোরস্থানে গেছিলো! ”
মাহফুজ চৌধুরী : প্লিজ…
কথা শেষ করার আগেই মিস সিক্রেট চিৎকার করে বললো, ” আমি যাবো না। ”
বলা শেষ করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে নিলো। মাহির তার পাশে থাকা সও্বেও ধরলো না। তবে পড়ার আগেই ইরফান এসে ধরলো।
উপস্থিত সকলে হতভম্ব। মাহফুজ চৌধুরী চিন্তিত হয়ে বললো, ” ওকে ওর রুমে শুইয়ে দাও।”
নিজের এসিস্ট্যান্টকে উদ্দেশ্য করে বললো, ” তুমি ডক্টরকে কল করে তাড়াতাড়ি আসতে বলো। ”
ইরফান মিস সিক্রেটতে তার রুমে শুইয়ে দিলো।
অন্যদিকে মাহির অবাক হয়ে ভাবছে, ” কি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা আমার! একই রোগ মানে ট্রমা দুইজনেরই!”
হঠাৎই তার সুপ্তির কথা মনে পড়লো। ফোন করতে ইচ্ছে হচ্ছে। তবে এখন তাকে ডকুমেন্টস আনতে যেতে হবে। তাই সে কাজেই রওনা দিলো।

ইরফান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মিস সিক্রেটের দিকে। তার ৭ বছরের কর্মজীবনে অনেক বার মিস সিক্রেটকে আহত হতে দেখেছে। কয়েকবার তো মরতে মরতেও বেঁচে যেতে দেখেছে। তবে কখনো অজ্ঞান হতে দেখে নি।
মিস সিক্রেটের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে আশেপাশে দেখলো৷ মূলত সে পাহাড়া দিচ্ছে মিস সিক্রেটকে। কিছুক্ষণ আগেই ডক্টর এসে দেখে গেছে। এখন ঘুমাচ্ছে মিস সিক্রেট।
ইরফান ইচ্ছে করলেই মিস সিক্রেটের মাস্কটা খুলে চেহারা দেখতে পারে। তবে সে বিশ্বাসঘাতক নই। আর তাছাড়াও এর শাস্তি সম্পর্কে জানে। এখন পর্যন্ত তিনজন মিস সিক্রেটের মুখ দেখেছে। আর সেই তিনজনই এখন উপরে মানে কবরে।
ভাবতে ভাবতেই তার মনে পড়লো আজ সারারাত তাকে জেগে পাহাড়া দিতে হবে।
তাই একজন মেইডকে কফি আনতে বললো।কিছুক্ষণের মাঝেই একজন এসে দিয়ে গেল।
কফির মগে চুমুক দিতে দিতে পুরো রুম একবার তল্লাশি দিয়ে একটা টুলে বসে পড়লো।

#চলবে.,.
(

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে