Dark Mystery পর্ব-০৫

0
18

#Dark_Mystery( কালো রহস্য )
#Part_5
#Sabrina_Summa

মিস সিক্রেটের ফোন বাজতেই কল রিসিভ করে বললো, ” জ্বী আন্ঙ্কেল বলেন। ”
মাহফুজ চৌধুরী : শোনো। মাহির প্রশিক্ষণ বাদ দিয়ে গল্প করছে। তুমি কিছু করো যাতে প্রশিক্ষণটা শেষ করে।
মিস সিক্রেট : আন্ঙ্কেল, আমি বলেছি সকালে কোনো কাজ করবো না।
মাহফুজ চৌধুরী : আমার জন্যও না!
মিস সিক্রেট : আন্ঙ্কেল, আপনি কিন্তু আমাকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করছেন!
মাহফুজ চৌধুরী : আমি কিছু জানি না। তুমি না গেলে অন্য কাউকে পাঠাও।
মিস সিক্রেট : আপনার যে ঘাড়ত্যাড়া ছেলে সে যে কারো কথা শুনবে বলে আপনার মনে হয়! আমার কথায় তো সর্বপ্রথম শুনবে না।
মাহফুজ চৌধুরী : তুমি কিন্তু বাহানা বানাচ্ছো। এটা তোমার কাছে আশা করা যায় না!
মিস সিক্রেট : ওকে। পাঠাচ্ছি কাউকে। তবে সময় লাগবে ১০/১৫ মিনিট।
বলেই কল কেটে দিলো।

কেউ দৌড়ে এসে ৩১৯ নম্বর কক্ষে প্রবেশ করে দরজা লাগিয়ে দিলো।
একজন বলে উঠলো, “আরে আরে।”
আগন্তুক তার দিকে ঘুরে ঠোঁটের উপর আঙুল দিয়ে কথা না বলার ইশারা করলো।
লোকটি ধীরো কন্ঠে বললো, ” কে তুমি? ”
লোকটির পাশ থেকে মাহির একমনেই বলে ফেললো, ” সুপ্তি ”
সুপ্তি মনে মনে বললো, ” আমি জানতাম তুমি আমার পরিচয় বের করবে। এরজন্যই তোমার সামনে আসতে চাইনি। ”
সুপ্তি না বুঝার ভান করে বললো, ” আপনি আমার নাম জানলেন কিভাবে? ”
মাহির : ইট’স ভেরি ইজি ফর মি।
একটু থেমে আবারো বললো, “কোনো রুমে প্রবেশের পূর্বে নক করতে হয় জানো না? ”
সুপ্তি : আসলে আমাকে কেউ ধাওয়া করছিলো।
মাহির দরজার দিকে যেতে যেতে বললো, ” কে করছিলো? দেখি! ”
সুপ্তি : আরে, আপনি পারবেন না।
মাহির সুপ্তির দিকে ঘুরে বললো, ” তোমার তাই মনে হয়। আমি প্রশিক্ষণ কি শুধু শুধু নেই?
সুপ্তি : আপনি প্রশিক্ষণও নেন! তা কোথায় প্রশিক্ষণ নেন?
মাহির : তুমি কি দেখতে পাও না! একজনের পার্সোনাল প্রশিক্ষণ কক্ষে এসে বলছো কোথায় প্রশিক্ষণ নেন!
সুপ্তি: এটা প্রশিক্ষণ কক্ষ তা তো বুঝাতেই পারছি। কিন্তু আপনি এখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন?
মাহির: অবশ্যই।
সুপ্তি অবাক হয়ে বললো, ” শুয়ে শুয়ে? ”
মাহির ভাব নিয়ে বললো, ” আমি পার্ফেক্ট। সো আমার প্র্যাকটিসের দরকার হয় না। ”
সুপ্তি : আর ইউ সিরিয়াস?
মাহির : অফ কোর্স।
কিছু সেকেন্ডের মাঝে মাহির ফ্লোরে পড়ে গেলো।
সুপ্তি মাহিরের দিকে তাকায়ে বললো, ” আপনার প্রশিক্ষণের দরকার আছে। ”
বলা শেষ করে যেভাবে দৌড়ে এসেছিলো সেভাবেই দৌড়ে চলে গেলো।
প্রশিক্ষক বিড়বিড় করে বললো, ” মেয়েটার দক্ষতা আছে। ”
মাহির কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। বিষয়টা বুঝে উঠার পর তার খুব ইগোতে লাগলো।
সুপ্তির আসার কারণকে সফল করে মাহির প্র্যাকটিস শুরু করলো।

সকাল প্রায় পুনে আটটা। আজ সুপ্তি ভার্সিটিতে যাওয়ার আগে একবার মাহিরের প্রশিক্ষকের কাছে এসেছিলো। সেখান থেকেই এখন ভার্সিটিতে যাচ্ছে ৷
সুপ্তি খেয়াল করলো মাহির অনেক মেয়ের সাথে ফ্লাটিং করছে।
সুপ্তি বিড়বিড় করে বললো, ” এই ছেলে জীবনে ভালো হবে না। ”
সুপ্তিকে দেখে মাহির এগিয়ে এসে বললো, ” বাহ, বাহ। এখন প্রতিদিনই তোমাকে দেখতে পাওয়া যায়!”
সুপ্তি বিরক্তের ভাব নিয়ে চোখ ঘুরালো।
মাহির : তা এখানে কেন এসেছিলে? আমায় দেখতে! সুপ্তি বিরক্ত নিয়ে বললো, ” মেয়ে মানুষ দেখলেই কথা বলতে ইচ্ছা করে না!” মাহির : হুম। সুপ্তি: ক্যারেক্টার লেস। মাহির: তুমি বলেছো যখন তাহলে তাইই। সুপ্তির বিরক্তি আরো বাড়লো। মাহির: বললে না তো কেন এসেছিলে? সুপ্তি : আপনার প্রশিক্ষক হিসেবে আমায় হায়ার করতে চেয়েছিলো। মাহির: কিহ্! মজা করছো না?
সুপ্তি : হুম। সুপ্তির এমন সহজ সরল স্বীকারোক্তিতে মাহির নিজেই কনফিউজড হয়ে গেলো। মাহির: বলা না কেন এসেছিলে? সুপ্তি : আপনার প্রশিক্ষক ডেকেছিলো। মাহির : কেন? সুপ্তি : সেটা আপনি আপনার প্রশিক্ষকেই গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। বলা শেষ করে চলে যেতে নিলে মাহির সুপ্তির বাম হাত ধরে আটকালো। সুপ্তি তাকাতেই বললো, ” আসলে দেখতে চেয়েছিলাম কাটা জায়গাটার কি অবস্থা। সুপ্তি ” ক্যারেক্টার লেস” বলেই হন হনিয়ে চলে গেলো। মাহিরের একটু রাগ হলেও বললো,” এবার তো তোমাকে আমার অবশ্যই লাগবে! ”

মিস সিক্রেট মাহফুজ চৌধুরীকে একটা ছবি পাঠাতেই মাহফুজ চৌধুরী কল করলো। মিস সিক্রেট কল রিসিভ করতেই মাহফুজ চৌধুরী রেগে বললো, ” দিনকে দিন এই ছেলেটা বেশি বুঝছে। ” মিস সিক্রেট মৃদুস্বরে “হুম” বললো। মাহফুজ চৌধুরী : তাশরিফ কি সত্যিই মেয়েদের সাথে এমন করে? মিস সিক্রেট : আমার তথ্যে আপনার সন্দেহ আছে? মাহফুজ চৌধুরী : না। কিন্তু তোমাকেই ওকে ঠিক করতে হবে। মিস সিক্রেট : আন্ঙ্কেল, আমি আগেও বলেছি ও আমাকে সহ্যই করতে পারে না। মাহফুজ চৌধুরী : আমি তোমার কাছে হাত জোর করে অনুরোধ করছি। মিস সিক্রেট : কিন্তু….. মাহফুজ চৌধুরী : কোনো কিন্তু নই প্লিজ। মিস সিক্রেট : ওকে। বাট আমি ওকে ঠিক করার জন্য যা খুশি করতে পারি? মাহফুজ চৌধুরী : আমি ফুল পারমিশন দিচ্ছি। তবে তাশরিফকে শারীরিকভাবে কোনো আঘাত করো না। মিস সিক্রেট : এটা নিয়ে কোনো টেনশন করবেন না। কিন্তু, কাজটা হয়তো আমি অন্য কাউকে দিয়ে করাবো। মাহফুজ চৌধুরী : তুমি করলে ভালো হতো না? মিস সিক্রেট : বিলিভ মি আন্ঙ্কেল। মাহফুজ চৌধুরী : ওকে। মিস সিক্রেট “হুম” বলেই কল কেটে দিলো। সে সবসময় শেষ উক্তি দিতে পছন্দ করে। বলতে গেলে মানুষের মুখের উপর কল কাটতে পছন্দ করে এই আর কি! মিস সিক্রেট মনে মনে বললো,” কাল শুক্রবার। তোমার সাথে ওর দেখা হবে না। আমাকেই কিছু করতে হবে! ” তারপর নিজ কাজে চলে গেলো। সে ভালো করেই বুঝতে পারছে শুক্রবারে খুব চাপ যাবে তার উপর দিয়ে।

#চলবে.,.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে