#প্রেমের_নাম_বেদনা?
#পর্বঃ১৪
#Arshi_Ayat
“তোদের জন্য এমন হইছে।তোরাই তো বলছিলি যে ও আমাকে ভালোবাসে।কিন্তু ও ভালোবাসে নেহাল কে।কেনো এমন করলি তোরা?”
আরিয়ান রেগে কথাগুলো বলল রিমন আর রাদিফকে।কিছুক্ষণ আগে সবাই মেয়ে নিয়ে ওই বাড়ি থেকে ফিরেছে।সাথে আরিয়ান, অর্নি দুজনই ছিলো কিন্তু আরিয়ান অর্নির সাথে একটা কথাও বলে নি।এখন বাসায় এসে দরজা বন্ধ করে রাদিফ আর রিমনকে কথাগুলো বলছে।আরিয়ানের কথা শুনে রাদিফ বলল
“আমরা ইচ্ছা করে করি নি।”
“তাহলে?”
“তোর আর অর্নির বিয়ে হয়ে গেছে।”
আরিয়ান বিষ্ময়ের শেষ সীমানায় পৌঁছে গেছে রিমনের কথা শুনে।উত্তেজিত কন্ঠে বলল
“কিভাবে?”
“সেটা তোর মা আর অর্নির মা জানে।”
“তোরা কিভাবে জানলি?”
রাদিফ, রিমন সব খুলে বলল।সব শুনে আরিয়ান রেগে বলল
“মা এমন করলো কেনো আমার সাথে?একদিকে আমি ওকে ভালোবাসি ও আমার লিগেল ওয়াইফ অন্যদিকে ও নেহালকে ভালোবাসে।আমি কি করবো বল?যদি ওকে ভালো না বাসতাম তাহলে ডিভোর্স দিয়ে দিতাম কিন্তু এখন দিতে গেলে আমার কলিজা ছিড়ে যাবে।আমি সহ্য করতে পারবো না।আচ্ছা অর্নি জানে বিয়ের কথা?”
“না ও জানে না।”(রিমন)
আরিয়ান এবার বাঁকা হাসি দিয়ে বলল
” ওহ!!তাহলে তো খেলা হবে।”
“মানে?”(রাদিফ)
” মানে এখন না বুঝলেও চলবে।তবে এতটুকু শুনে রাখ এতো সহজে ওকে আমি ছাড়ছি না।”
এটা বলেই আরিয়ান রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।রিমন রাদিফের কাঁধে হাত দিয়ে বলল
“তোকে যে ভিডিও গুলো নেহালকে মেইল করতে বলেছিলাম করেছিলি?”
“ইশশ!!ভুলেই গেছিলাম।”
“তোর আর কিই বা মনে থাকবে।নেহালকে যদি মেইল টা করে দিতি তাহলেই এমনটা হতো না।”
“এখন কি হবে রে?”
“জানি না।”
“আসলেই প্রেমের নাম বেদনা।”
রিমন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল
“হুম হয়তো।”
বিকেল ৪.০০ টা…
আরিয়ান,অর্নি’রা রওনা দিয়েছে।আরিয়ানের মনে এখন মিশ্র অনুভূতি চলছে একটু সুখের একটু দুঃখের।সুখের অনুভুতিটা এইজন্যই যে অর্নি ওর বউ কিন্তু অর্নি ওকে ভালোবাসে না এইজন্যই দুঃখ লাগছে।
আরিয়ান,অর্নি’রা রাত ৯.০০ টার দিকে এসে পৌঁছেছে।তারপর যে যার যার বাড়ি চলে গেছে।অর্নি রুমে এসেই শুয়ে পড়লো।আরিয়ান ও কিছু একটা ভেবে বাঁকা হাসি দিয়ে শুয়ে পড়লো।
রাত ১১.০০ টা…
অর্নি এতক্ষণ ঘুমিয়েছে এখন ঘুম থেকে উঠে নেহালকে কল দিলো।
“তুমি পৌঁছেছো?”
“হ্যাঁ এইতো এক দেড়ঘন্টা আগে।”
“তাহলে কল দিলে না কেনো?”
“এসেই টায়ার্ড হয়ে ঘুমিয়ে গেছিলাম।”
“ওহ!!ঘুম হইছে?”
“হুম হইছে।তুমি কি করো?”
“পড়ছিলাম।সামনে তো ফাইনাল।”
“হুম আমারও বসা উচিত।”
“হ্যাঁ তবে আজকে না আজকে রেস্ট করো।”
“হুম আমার তো চিন্তা নাই আমার বি এফ হেব্বি ব্রিলিয়েন্ট।ওর টা দেখেই আমার পরীক্ষা বিন্দাস হয়ে যাবে।”
“আমার জি এফ তো তোমার বি এফ থেকেও আরো ব্রিলিয়েন্ট।পুরো ডিপার্টমেন্টের টপার।”
“তোমার জি এফ এর এবারের প্রিপারেশন খারাপ।”
“সমস্যা নাই আমি আছি তো।”
“হ্যাঁ এই জন্যই ভরসা আছে।আচ্ছা তুমি পড়ো।আমি রাখি।”
“আমার পড়া শেষতো।ফোন রেখো না।”
“আমি তোমার কল্পনার আকাশে উড়াল দিতে চাই।
তোমার উত্তপ্ত দুপুরের ছায়া হতে চাই।
তোমার ক্লান্ত বিকেলের সঙ্গী হতে চাই।
তোমার বর্ষণের বৃষ্টি হতে চাই।
তোমার তোমার প্রাণ প্রণয়ীনি হতে চাই।
হতে চাই তোমার রাজ্যের মায়াবিনী।(স্বরচিত)”
“তুমিই আমার রাজ্যের মায়াবিনী।
তুমিই আমার সঙ্গীনি।
তুমিই আমার প্রাণ প্রণয়ীনি।
আমার বর্ষণের অবিরল ধারার বৃষ্টি তুমিই।
আমার কল্পনার আকাশের কল্পনাময়ীও তুমি।
আমার অস্তিত্বটাই তুমি।”
“বাহ!!কতো সুন্দর করে উত্তর দিলে।”
“তোমার মতো পারি নি।তোমারটাই বেষ্ট ছিলো।”
এভাবেই কথা হচ্ছে দুজনের।
সকাল ৯.০০ টা
অর্নি এখনো ঘুমাচ্ছে। নেহালের সাথে কথা বলতে বলতে ভোর হয়ে গিয়েছিলো তাই এখনো ঘুমাচ্ছে।হঠাৎ অর্নির ফোন আসায় ঘুম ঘুম চোখে রিসিভ করে বলল
“কে?”
“অর্নি তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো?”
“ওহ!!আচ্ছা দাড়ায় দশ মিনিট দাও আমি আসছি।”
“তাড়াহুড়োর দরকার নাই আস্তে ধীরে আসো।আর নাস্তা করে আসবা।খালি পেটে আসলে কিন্তু কথা বলবো না।”
“আচ্ছা ঠিকাছে নাস্তা করেই আসবো।”
“ওকে।”
অর্নি তাড়াতাড়ি বিছানা ছেড়ে শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে পড়ার সময় মনে হলো নাস্তা করতে হবে কারণ নেহাল বলেছিলো নাস্তা না করে আসলে কথা বলবে না।নেহালের কথা মনে হতেই নাস্তার টেবিলে বসে কোনরকম নাস্তা শেষ করে ভার্সিটিতে রওনা হলো।
এদিকে আরিয়ানও ভার্সিটিতে এসে বসে আছে।কিচ্ছু বলছে না কারণ অর্নি আসলেই সব বলবে।
ইতোমধ্যে অর্নিও চলে আসলো।নেহাল আর অর্নি ক্লাসের দিকে যাচ্ছিলো কিন্তু মাঝে আরিয়ান পথ আটকে দাড়ালো তারপর অর্নিকে উদ্দেশ্য করে বলল
“তোর সাথে কথা আছে।”
“কি কথা?”
“এই ফাঁকা রুমটায় আয়।”
“কেনো?এখানে বল।”
“অনেকেই আছে এখানে বলতে পারবো না।আর নেহাল তুমিও আসো তোমারও শোনা দরকার।”
অর্নি নেহাল দুজনেই আরিয়ানের পিছনে পিছনে একটা ফাঁকা ক্লাসে গেলো।তারপর অর্নি বলল
“হ্যাঁ এবার বল।”
“কিছু বলার মতো মুখ রাখছিস তুই?আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে আর তুই আমাকে সময় না দিয়ে অন্য ছেলের সাথে রিলেশন করিস।কেনো?”
চলবে…
(ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন)