গল্প:-একটু_অধিবার পর্ব:-(১১-শেষ)
লেখা:-AL Mohammad Sourav
!!
তসিবা আপুর কোনো দোষ নেই আমি নিজেই সৌরভ ভাইয়াকে আমি বিয়ে করতে রাজি হয়নি! বরং তসিবা আপু আমাদের আর আপনাদের মান সম্মানের কথা চিন্তা করে বিয়েটা করেছে। আমি নাহ করে ছিলাম আপুকে বিয়েটা করতে কিন্তু ওনি বলছে! ছেলেটা কত আশা করে এসেছে বিয়ে করবে যদি বিয়েটা না করতে পারে তাহলে মনে অনেক বড় একটা আঘাত পাবে। এক কাজ করি আমি ছেলেটাকে বিয়ে করে নেই। তখনি আমি সহ সবাই তসিবার দিকে তাকিয়েছি। প্লিজ আপনারা দয়া করে আর আপুটাকে আমার জন্য কষ্ট দিবেন নাহ।
আম্মা:- তোমাদের নতুন করে ওর হয়ে আর সাফাই গাইতে হবেনা। ভাই সাহেব আমার যা ক্ষতি করার তা তো করে দিয়েছেন! এখন আবার এনেছেন কেনো?
বিন্তির বাবা:- দেখেন আমাদের জন্য মেয়েটা বিয়ে করেছে! তার জন্য যে ওকে এমনটা শাস্তি দিবেন এইটা কিন্তু ঠিক না।
দাদি:- আপনাকে কে বলছে আমরা ওকে শাস্তি দেয়।
আব্বা:- আমি বলেছি আর ওনাদেরকে এখানে আমি আসতে বলেছি। তোমরা শুধু বলো তসিবা ইচ্ছে করে এমনটা করেছে আর তার জন্য ওকে বাড়ির বউয়ের অধিকার দিতে তোমাদের সমস্যা।
আম্মা:- আমাকে একটু কথা বলতে দিবে সবাই। তখনি সবাই চুপ হয়ে গেছে। দেখুন ভাই সাহেব আপনাদের বলি! আমাদের যা হবার তা তো হয়ে গেছে! আর নতুন করে কিছু বলতে চাইনা! এবার আপনারা আসতে পারেন! আমি আমার ছেলে ও ছেলের বউদের নিয়া সংসার করবো সেইটা একান্ত আমার ব্যাপার।
বিন্তি:- আন্টি আমার কথাটা শুনবেন?
আম্মা:- তুমি ছোট ছোটর মত থাকো বলেছিনা এবার যেতে পারো।
তসিবা:- আংকেল আন্টি আর বিন্তি বোন আমার তোরা যা! আমি নিজেকে মানিয়ে নিবো আপনারা আমার জন্য চিন্তা করবেন না!
আমি:- হ্যা আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না! আমি আছি তসিবার পাশে। ওনারা কোনো কথা না বলে চলে গেছে! তখনি আম্মা আব্বাকে আচ্ছা মত ধূলাই করেছে।
আম্মা:- আমি যা বলবো সবাইকে সেইটা মেনে নিতে হবে!
আমি:- আগে বলেন তারপর চিন্তা করবো।
আম্মা:- সৌরভ তোর সাহোস এতটা বেড়ে গেছে আর আমার প্রতি তোর বিশ্বাস এতটা কমে গেছে। আমাকে তুই এতটা খারাপ মনে করলি।
আব্বা:- সৌরভ তো ঠিকই বলছে! তুমি যা বলবে তা তো সবাই মানতে পারবেনা। এখন বলো কি বলবে আমার আবার অফিসে যেতে হবে।
আম্মা:- আমি গতকাল সারা রাত্রি চিন্তা করে এই সিদ্যান্ত নিয়েছি যে তসিবাকে আমি এই বাড়ির বউয়ের অধিকার দিলাম। আর আজ থেকে বাড়ির সব দ্বায়িত্ব থাকবে বড় বউয়ের কাছে। এতদিন আমি সংসার চালিয়েছি এখন থেকে আমার দুই মেয়ে সংসার চালাবে। তখনি ভাবি বলে।
ভাবি:- আম্মা আপনি সংসার পরিচালোনা করবেন! আমাদের বলবেন আমরা ঐ ভাবে কাজ করবো। আপনি তসিবাকে মেনে নিয়েছেন এতেই আমরা সবাই খুশি। সংসারের চাবি কাঠি সব আপনার কাছে থাকবে।
আমি:- আম্মা আপনাকে অনেক কথা বলেছি! আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তো?
আম্মা:- আরে দূর বোকা আমি তো তসিবাকে কিছুটা পরীক্ষা করে দেখছিলাম কিন্তু নাহ মেয়েটা খুব ভালো! আর সবচেয়ে বড় কথা আমার ছেলেটার মন জয় করতে পারছে। তসিবা তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো তো? তখনি তসিবা দৌরে এসে আম্মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিয়েছে।
তসিবা:- আম্মা আপনি আমাকে ক্ষমা করে দেন! আমি আপনার সাথে অনেক বেয়াদবি করেছি। আম্মা তসিবার চোখের পানি গুলি মুছে দিয়েছে!
দাদি:- আচ্ছা সবাই তো সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছে এখানে আমাকে কি সবাই ক্ষমা করবে?
আম্মা:- আরে আপনি কি বলছেন? আপনি হলেন বাড়ির কর্তী আপনি যা করছেন আমাদের ভালোর জন্য করছেন! বরং আপনি আমার ছেলের বউদের ক্ষমা করে দেন। তখনি দাদি এসে তসিবাকে বুকে টেনে নিয়েছে! আমার কাছে খুব ভালো লাগছে আম্মা তসিবাকে মেনে নিয়েছে!
আব্বা:- আচ্ছা তাহলে এখন আমি যাই আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে!
আম্মা:- নাহ আজকে আমরা সবাই তসিবার বাবা মাকে সাথে করে নিয়ে ওনাদের বাড়িতে যাবো। তসিবার বাবার ইচ্ছে আমরা সবাই ওনাদের বাড়ি ঘরটা দেখে আসি। যাও এখন গিয়ে সবাই রেডি হয়ে নাও। আর সাহেদ তুই গিয়ে কিছু বাজার করে নিবি সাথে সৌরভকে নিয়ে যাস।
আমি:- বাজার কেনো?
আম্মা:- তোর শ্বাশুরীরা তো ঢাকায় অনেক দিন ধরে! আর তোর তো শালা শালি কেউ নেই তাহলে বাজার করে খাওয়াবে কে? তাই তুই ওনার ছেলের মত আচরন করবি কেমন।
আমি:- মানে কি বলছেন? তসিবা তোমার কোনো ভাই বোন নেই?
তসিবা:- নাহ আমার কোনো ভাই বোন নেই আমি একা!
আমি:- দূর আমার কপালটা খারাপ!
ভাবি:- কেনো?
আমি:- অন্তত একটা শালি থাকলে ভালো হত! শ্বশুড় বাড়িতে গেলে কিছুটা সময় কাটানো যেত।
ভাবি:- আপছুস করোনা তসিবা তোমার শালি তসিবা তোমার বউ!
আমি:- হ্যা ঘুরে ফিরে বটের তল।
তসিবা:- কি বলছেন?
আম্মা:- আহা এখন ঝগড়া থামিয়ে যাও তাড়া তাড়ি তৈরি হয়ে নাও! তসিবার বাবাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে এর পর যেতে হবে। আমরা সবাই যার যার রুমে গিয়ে তৈরি হয়ে এসেছি। এই প্রথম আমরা সবাই এক সাথে কোথাও যাচ্ছি। আমি ড্রাইভ করছি তসিবা আমার পাশে বসে আছে। আব্বা আম্মা দাদি মাঝে তার পরে ভাবি আর ভাইয়া। ঘন্টা খানেকের মধ্যে আমরা হাসপাতালে এসেছি। শ্বাশুরী আমাদের সবাইকে দেখে অনেক খুশি হয়েছে।
শ্বাশুরী:- আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা আপনারা সবাই এসেছেন!
আব্বা:- আপনারা আজ কতদিন ধরে এখানে এসেছেন। আমরা আশিনি এতে আমাদের ভুল হয়ছে আমাদের ক্ষমা করে দিবেন।
শ্বাশুরী:- বেয়াই সাহেব কি যে বলেন আপনারা! আপনাদের জন্য আজ তসিবার আব্বা বেচে আছে! আর বেয়ান সাহেবা তো প্রতিদিন একবার এসে খাবার দাবার সব কিছু ব্যবস্থা করে দিয়ে যেত। আর অপারেশন টাকাটা ওনি দিয়েছে।
আম্মা:- থাক এখন এসব কিছু বলতে হবেনা। তা বেয়াই সাহেব কেমন আছেন?
শ্বশুড়:- এখন আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি! তখনি ডাক্তার এসেছে!
আব্বা:- ডাক্তার ওনাকে আমরা বাড়ি নিয়ে যেতে চাচ্ছিলাম। আপনি কি বলেন?
ডাক্তার:- হ্যা নিয়ে যেতে পারেন ওনি এখন অনেকটা সুস্থ আছেন। আর আপনাকে বলি একদম চিন্তা করবেন না সবসময় চিন্তা মুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন।
আব্বা:- আচ্ছা আমি তাহলে বিলটা পেইড করে আসি।
ডাক্তার:- ওনার বিল পেইড করে দিয়েছেন!
আমি:- কে করছে? তখনি আম্মার দিকে দেখিয়ে বলে।
ডাক্তার:- গতকাল রাতে ওনি পেইড করে দিয়ে গেছেন! আপনারা চাইলে এখুনি ওনাকে নিয়ে যেতে পারেন। আম্মার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে!
আম্মা:- কি হলো এমন ভাবে সবাই তাকিয়ে আছিস কেনো? তসিবা ওর বাবা মাকে কতটা ভালোবাসে সেইটা আমি জানি! আর তাছাড়া এইটা আমার কর্তব্য একজন আত্বীয় বিপদে পড়ছে তাকে সাহায্য করা। আচ্ছা এসব বাদ দিয়ে এখন চলেন আপনাকে সাথে নিয়ে আপনাদের বাড়িতে যাবো।
শ্বশুড়:- সত্যি বলছেন! চলেন আমি অনেক খুশি হলাম। সবাই মিলে গাড়িতে বসেছি আমি গাড়ি চালাচ্ছি তসিবা লোকেশন দেখাচ্ছে। ঘন্টা তিনেক পরে তসিবাদের বাড়িতে এসেছি। সবাইকে নামিয়ে দিয়ে আমি তসিবা আর ভাইয়া গিয়ে বাজার করে নিয়ে এলাম। তসিবাদের বাড়িটা টিন সিট বিল্ডিং রুম চারটা।
ভাবি:- সৌরভ কি ভাবছো?
আমি:- কিছুনা! তবে তোমাকে অনেক ধন্যবাদ ভাবি।
ভাবি:- আমি কিছু করিনি তুমি খুব লাকি তসিবাকে বউ হিসাবে পেয়ে। বিন্তির থেকে তসিবা হাজার গুনে ভালো মেয়ে। তুমি সবসময় ওর পাশে থাকবে এতেই আমি খুশি। কারণ বোনরা চায় তার ভাইরা যেনো সূখে থাকে।
আম্মা:- বড় বউ গিয়ে একটু তসিবাকে হেল্প করো রান্নার কাজে।
ভাবি:- হ্যা আম্মা যাচ্ছি। ভাবি চলে গেছে আমি দাঁড়িয়ে আছি। আশে পাশের লোকজন বাড়িতে আসছা জামাই দেখতে। সবাই আমাকে দেখে যাচ্ছে! আমি ভাইয়ার সাথে বসে গল্প করে যাচ্ছি। সব শেষে আম্মা তসিবাকে মেনে নিয়ে বাড়ির বউয়ের অধিকার দিয়েছে। শুধু একটু নয় সবটা জোরে এখন তসিবার অধিকার। শ্বশুড় বাড়িতে আমরা সবাই দুইদিন ভালোই মজা করেছি।
তসিবা:- তা কেমন লাগলো আমাদের বাড়ি?
আমি:- ভালো লাগছে তবে তুমি আমাকে ভালোবাসতে ভুলে গেছো নাকী?
তসিবা:- কি বললেন আপনি বলে আমার দিকে এগিয়ে আসছে! আমি দাঁড়িয়ে আছি তসিবা এসে আমার কাদে হাত রেখেছে ওর ঠোট গুলি আমার দিকে এগিয়ে দিয়েছে।
আমি:- তসিবা কে যেনো আসছে তখনি তসিবা আমাকে ছেড়ে এক দৌর। আমি হাসতেছি ভালোই দুষ্টমিতে চলছে আমাদের সংসার। বাড়িতে ফিরেরে এলাম! আমারা সবাই মিলে এখন সূখে আছি এদিকে ভাবির বাচ্ছা হয়েছে একটা ছেলে সন্তান। পরিবারের সবাই অনেক খুশি কিন্তু ভাবি খুশি হয়নি।
ভাবি:- আমার মেয়ে সন্তান হলে ভালো হত।
তসিবা:- ভাবি চিন্তা করোনা আমার জমজ মেয়ে সন্তান হলে তোমাকে একটা দিয়ে দিবো।
ভাবি:- ও তার মানে তোর জমজ বাচ্ছা হবে! কিন্তু তোকে দেখে মনে হচ্ছেনা তোর বাচ্ছা হবে।
তসিবা:- প্লানিং চলছে তুমি শুধু এক বছর অপেক্ষা করো।
আম্মা:- সত্যি তসিবা তুমি পারো বটে! তা জমজ বাচ্চা হবে তোমাকে কে বলছে তখনি তসিবা আঙুল দিয়ে আমাকে দেখিয়ে বলে।
তসিবা:- আপনার ছেলে বলে আমাদের নাকি জমজ মেয়ে বাচ্চা হবে। আমি তো লজ্জা পেয়ে বেড়িয়ে এসেছি। তসিবা এসেছে আমি চলে আসতেছি তসিবা পেছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে। কি সামনে বছরে আমার দুইটা মেয়ে বাচ্চা হবে তো?
আমি:- হ্যা কেনো নই দুইটা না সাতটা হবে এক সাথে।
তসিবা:- আরে আমার মেয়ের বাপ দেখি রাগ করছে। রাগ করতে নেই আমার জানো বলে তসিবা আমাকে জড়িয়ে ধরে রাখছে। দেখতে দেখতে কত গুলি দিন চলে গেছে। যত দিন যাচ্ছে ততই যেনো আমাদের ভালোবাসা বাড়ছে। ভাবি ভাইয়া মা দাদি বাবা সবাই মিলে সূখের শান্তিতে আমাদের জীবন চলে যাচ্ছে।
!!
গল্পটা কেমন হয়ছে ছোট করে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ইনশাল্লাহ আগামী কাল নতুন গল্প দিবো। সবাই ভালো থাকবেন আমার জন্য দুয়া করবেন।
……………………………..সমাপ্তি………………………….
( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।) Facebook Id link ???
Allah sobar kopale amon akta husband jeno dei ………..??
sobar kopalee amon akta jollad bou pore.
sobai bolun AMIN