মডেল মিফতা পর্ব : ৯
গল্পবিলাসী – Nishe
শরীরের এতো টেম্পারেচার!
টেম্পারেচার অনেক বেশি ভালোভাবে বোঝার জন্য কপালে হাত দিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো হঠাৎ স্পর্শ এমন মনে হলো নাকি টেম্পারেচার টাই বেশি ছিলো। খুব দ্রুত রিসিপশনে কল দিয়ে ডাক্তার ব্যবস্থা করো করল ইমারজেন্সি ডাক্তার চলে এলো। বিপি ফিভার চেক করে
-তেমন কিছুই না জ্বর আর ঠান্ডা টা একটু বেশি। আই থিঙ্ক ওনার মাইগ্রেনে প্রবলেম আছে মেডিসিন গুলো ঠিক ভাবে চলতে থাকবে ঠিক হয়ে যাবে ভয়ের কোনো কারন নেই।
– থ্যাংকস ডক্টর।
ডক্টর চলে যাওয়ার পর নীরব তার মাথার কাছে বসে আছে মাথায় কিছুক্ষণ পরপর পানি দিচ্ছে কপাল
রুমাল ভিজিয়ে জলপট্টি দিচ্ছে কিছুক্ষণ পরপর গায়ের টেম্পারেচার চেক করছে কমেছে কিনা। প্রায় ভোরের দিকে জ্বর কিছুটা কমে এলো। মিফতা
চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে নিরব তার পাশে বসে হাত দুটো ধরে আছে।
– এখন কেমন লাগছে তোমার?
– এখন ঠিক আছি। আপনি ঘুমান নি কেনো?
– ঘুমিয়ে ছিলাম তো এক্ষুনি উঠলাম। কিছু খাবে?
– না আমি এখন কিছু খাবো না কটা বাজে?
– সাড়ে পাঁচটা। খারাপ লাগছে বেশি?
– না ঠিক আছে আমি। শুয়ে পড়েন আপনি। নীরব মিফতাকে বুকে জড়িয়ে শুয়ে পরে।
– কত দিনের স্বপ্ন ছিলো তোমার? চোখ তুলে নিরবের দিক তাকিয়ে
– কিসের স্বপ্ন?
– আমার বুকে ঘুমানোর। মিফতা লজ্জা মাখা মুখটা যেন আরও বেশী লজ্জাবতী হয়ে গেল চুপ করে শুয়ে আছি নিরবের বুকে। আচ্ছা ওনি কিভাবে জানলো আমার এই স্বপ্নের কথা? উনি কি আমার মনের কথা বুঝতে পারে?
– তোমার হঠাৎ এত জ্বর কেন হলো? তোমার জ্বর কি আগেই ছিলো?
– না ছিল না। ওয়েদার চেঞ্জ এজন্য হয়তো।
-এখন ওঠো ফ্রেশ হয়ে কিছু খেতে হবে তারপর মেডিসিন নিতে হবে।
-আমি এখন কিছু খাবো না খেলেই বমি হবে।
– কেনো? খেতে হবে।
– আমার অনেক মাথা ব্যথা। এখন খেলে বমি হবে।
-মাথা ব্যথা করছে! তোমার কি মাইগ্রেনের প্রবলেম আছে ?
– হুম। কিছুটা ।
-আচ্ছা আগে বলনি কেনো? নীরবের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে আবার শুয়ে পড়লো
– কি হলো?
-কিছু না। আমার কথা বলতে ভালো লাগছে না আমি ঘুমাবো এখন।
– কিছু খেতে হবে। মেডিসিন নিতে হবে না হলে কিছুই ঠিক হবে না।
-আপনি কেন বুঝতে চাইছেন না আমি এখন কিছু খাবো না। আমার বমি হবে। নিরব কি করবে কিছু বুঝতে পারছেনা। সে কখনো এমন সিচুয়েশন পড়েছে বলে মনে পরে না তার।
-‘তাহলে এখন কি করবে তুমি? ‘
-‘ আমি ঘুমাবো প্লিজ আর আমি মেডিসিন নেইনা এমনিই ভালো হয়ে যাবে ‘
-‘ হোয়াট? এমনি ভালো হবে মানে? তুমি কি ডাক্তার? ‘
-‘ আপনি এতো টেনশন কেনো করছেন ঠিক আছি আমি। এইটা তো নরমাল এইযে দিব্যি সুস্থ আছি আমি। ‘
-‘ মিফতা তুমি আমার ওপর রেগে এখনো তাই এমন করছো। প্লিজ সরি বলছি তো আমি।প্লিজ উঠো এভাবে আমার ভাললাগছে না। ‘
-‘মিফতা হালকা হেসে এইসব আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। ‘
-‘ অভ্যাস মানে? তুমি আগেও এমন করতে? ‘
-‘ হুম প্রায়ই। আমার জ্বর হলে এমন হয় আবার একটু পরেই ঠিক হয়ে যায়।
– তুমি কি আমাকে পাগল পেয়েছো?
এমনি এমনিই ভালো হয় কিভাবে হ্যা? কোনো কথা শুনছিনা আমি উঠো প্রায় জোড় করেই মিফতাকে খাইয়ে দিলো এতো বারন করার পরও কিছুতেই শুনেনি নিরব। কিছুক্ষন পরেই মিফতা বমি করে সব বের করে দিলো। মিফতার এমন লাগছে যেনো হাটতেই পারছেনা। মিফতার এই অবস্থা দেখে নিরব পুরো ছন্নছাড়া হয়ে যাচ্ছে। নিরবকে শান্ত করতে নিরবকে টেনে নিরবের বুকেই শুয়ে রইলো মিফতা।
-‘ এতো টেনশন কেনো করছেন আপনি? কিছু হয়নি আমার।আমিতো না করেছিলাম খাবোনা আপনি তো শুনেন নি ‘
-‘ আম সরি আর কখনো তোমাকে ফোর্স করবোনা বলে আরো গভীর ভাবে জরিয়ে ধরে কপালে চুমু খেয়ে মিফতাকে জড়িয়ে ধরে বসে থাকে। পুরো রাতে একফোঁটা ঘুমায়নি নিরব। এভাবে বাবাকে প্রায় দেখতো মায়ের অসুস্থতার সময় পাশে থাকতে তখন না বুঝলেও এখন বুঝতে পারছে। তখনো কি বাবার আমার মতোই এতোটা খারাপ লাগতো? হয়তো আরো বেশিই লাগতো। কিছুক্ষন এইসব ভাবতে ভাবতেই সকাল হয়ে গেলো। নিরবের চোখগুলোও যেনো ক্লান্ত হয়ে পরেছে। সকালে চোখ খুলে দেখি নিরবের বুকেই শুয়ে আছি। টেনশনে বেচারা পুরাই জমে গেছে।খুব সাবধানে নিরবের বাহুডোর থেকে ছাড়িয়ে বেলকনিতে চলে এলাম। বেচারা নিরব এইটুকুতেই এই হাল ভেবেই আনমনে হাসতে লাগলো মিফতা। শরীরটা কেমন যেনো লাগছে গোসল করলে একদম ফ্রেশ লাগবে সাথে যদি এক কাপ চা একদম সব ফিট।যেই ভাবা সেই কাজ। ব্যাগ থেকে নীল একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে একটা লম্বা শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়ে এলাম। মিঃ নিরব তখনো বেঘোরে ঘুমুচ্ছে। জানালার পর্দার ফাক দিয়ে কিছুটা আলো নিরবের চোখে পরছে দেখে পর্দাটা টেনে দিয়ে বেলকনিতে গিয়ে দাঁড়ালো। সকালের পরিবেশটা খুব ভালো লাগছে চোখ বন্ধ করে পরিবেশটা উপভোগ করার চেষ্টা করছে মিফতা। চোখ খুলে দেখি মিফতা নেই তাড়াতাড়ি উঠে বসে দেখি রুমের মধ্যে নাই ওয়াশরুমের লাইট অফ বেলকনিতে? পা বাড়িয়ে বেলকনিতে যেতেই মিফতার হাসিখুশি মুখটা দেখে সব ভূলে গিয়ে মনটা ফ্রেশ হয়ে গেলো।
বেলকনির রেলিংয়ে হাত রেখে দাঁড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে
-‘গুড মর্নিং সুইটহার্ট ‘
-‘ মর্নিং ‘
-‘ কখন উঠলে তুমি? ডাকোনি কেনো? ‘
-‘ একটু আগেই। আপনি তো ঘুমিয়েছিলেন তাই ডাকিনি। ‘
-‘ এখন কেমন লাগছে? আর তুমি এখন শাওয়ার কেনো নিয়েছো? ‘
-‘ মাইন্ড রিফ্রেশমেন্টের জন্য।
-‘ আর মহারানী আপনি যে অসুস্থ সেটা ভূলে গেছেন? কি অবস্থা হয়েছিলো রাতে? ‘
-‘এখন তো দিব্যি সুস্থ আছি বলেই হেসে দিলো। ‘
-‘ এতো নরমাল কিভাবে থাকো তুমি? ‘
-‘ চাইলেই সম্ভব। ‘
-‘হুম তোমার দ্বারা সবই সম্ভব চলো বাহির থেকে নাস্তা করে আসি। ‘ মিফতার কোনো রেসপন্স না পেয়ে মিফতার দৃষ্টি বরাবর তাকিয়ে দেখি দুরের একটা কাপলকে দেখছে। খুব হ্যাপি কাপল তাদের দেখেই বুঝা যাচ্ছে।খুব করে হাসছে খুনসুটি করে বেড়াচ্ছে।মিফতার কোমড়ে হাত রাখতেই কেঁপে উঠলো মিফতা। হঠাৎ করেই কোলে উঠিয়ে নিয়ে হাটতে লাগলাম।
– আরে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
-‘ এর থেকে বেটার রোমেন্স আমিও করতে জানি মহারানী বলেই মিফতাকে নিয়ে সুইমিংপুলের দিকে পা বাড়ালো।
-‘ দেখুন আমি কিন্তু এখন শাওয়ার নিয়েছি ‘ কিন্তু ততোক্ষনে নেমে গেছে নিরব।
-এইটা কি হলো? আপনি’ মিফতার ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে থামিয়ে দিয়ে মিফতাকে নিয়ে পানিতে ডুব দিয়ে দেয়। সাথে সাথেই উঠতেই মিফতা হেসে উঠে। মিফতার কপালের পাশের ছোট চুলগুলো ছড়িয়ে আছে কপালে এবং গালের মধ্যে চুলগুলো দিয়ে টুপটাপ পানি পরছে। চোখের পাপড়ি গুলোতে বিন্দুবিন্দু জমে আছে কিছু পানি। নিরব একমনে তাকিয়ে আছে মিফতার দিকে।শ্যামবর্ণধারী মেয়েরাও যে এতোটা সুন্দর হতে পারে তার জানা ছিলোনা। নিরবকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মিফতা কিছু পানি ছুড়ে মারে নিরবের মুখে নিরব হেসে তাকাতেই সাঁতার কেটে দূরে চলে যায়। নিরবও মিফতার কাছে এসে ধরে ফেলে তাকিয়ে আছে মিফতার দিকে নিরবের দৃষ্টিতে ভয় পেয়ে যায় মিফতা
– ‘ সসসসরিইইই বলেই পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে নিরব হাত টেনে একদম কাছে টেনে কোমড়ে জড়িয়ে ধরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে মিফতার কম্পিতো ঠোটঁ দুটোকে আবেশে জড়িয়ে নিলো। হঠাৎ নিরবের এমন কাজে স্তব্ধ হয়ে গেলো মিফতা যেটার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলোনা সে। হার্টবিট বেড়ে যাচ্ছে তার। পুরো শরীর কেঁপে চলেছে নিরব একহাত কোমড়ে জড়িয়ে অন্যহাতে রুহির গাল আলতো স্পর্শ করে আছে।
কিছুক্ষন পর ছেড়ে দিয়ে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে
-‘ এটাই দেখছিলে তখন তাইতো? মিফতা লজ্জা পেয়ে পেছন ফিরে গেলো। তখন একটা কাপল বিচে দৌড়াদৌড়ি করছিলো হঠাৎ করে এসেই ছেলেটা মেয়েটার ঠোঁটে চুমু খেয়ে নিয়েছিলো সেটা ভেবেই লজ্জায় পাশ ফিরে গেলো মিফতা। মিফতার কোমড়ে জড়িয়ে ধরে
-‘ ব্লাশিং! আই লাইক ইট বলে মিফতার গালে চুমু খেয়ে নিলো আবারো। লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে মিফতার এমন কেনো ওনি? ভেবেই হেসে চলছে। নিরবের চোখেও তাকাতে লজ্জা লাগছে তাই অন্যদিকে তাকিয়ে আছে।
-‘আম সো হাংরী মেম আর থাকতে পারছিনা চলো বলে মিফতাকে আবারো কোলে উঠিয়ে চলে এলো।মিফতাকে ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে তুমি ফ্রেশ হও আমি ড্রেস দিচ্ছি। সেদিন ফেইসবুকে মিফতার শাড়ি পরা ছবিটা দেখে অনলাইন থেকেই অনেকগুলো শাড়ির অর্ডার করে নিরব। শাড়িতে যে একটা মেয়েকে এতোটা ভালোলাগে তার জানা ছিলোনা। তাই অন্য কোনো ড্রেস থেকে শাড়িটাই বেটার মনেহলো তার কাছে।
কালো আর সবুজের মধ্যে একটা শাড়ি নিয়ে
-‘ মিফতা!!! এই নাও ড্রেস ‘ দরজা কিছুটা ফাক করে হাতটা বাড়ালে আচমকাই হাতে চুমু খেয়ে নেয় আর সাথে সাথে হাতটা টেনে নেয় মিফতা যেনো শক খেয়েছে মিফতার অবস্থা দেখে উচ্চস্বরে হেসে উঠে নিরব।।।
চলবে,,,,,,,,
( প্রিয় পাঠক আপনাদের যদি আমার গল্প পরে ভালোলেগে থাকে তাহলে আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার জন্য আমার facebook id follow করে রাখতে পারেন, কারণ আমার facebook id তে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গল্প, কবিতা Publish করা হয়।) Facebook Id link ??? https://www.facebook.com/nishe.ratri.9809