হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন_২পর্ব-৫
(বিলম্বের জন্য দুঃখিত)
রাফি আন্দাজ করলো প্রায় ১০ তলা গভীরে নেমে এসেছে সে। অবশেষে গাড়িটার তলানো থামলো। রাফি গাড়ি থেকে নামলে একটা মোটাসোটা টাইটেনিয়ামের দরজা দেখতে পায়। সামনে আসতে আসতে আনলক হয়ে যায় দরজাটি। কম করে হলেও প্রায় ২০ ইঞ্চি পুরু দরজাটা অটোমেটিক খুলে যায় রাফির সামনে। লাইইটগুলো জ্বলে উঠতে থাকে আর রাফির বিস্ময়ের স্তর বাড়তেই থাকে।
ঢুকতেই একটা কাঁচের বাক্স। রাফি কাচেঁর বাক্সটির সামনে দাড়িয়ে থাকে। প্রায় ৭ ফিট হাইট, ৪ ফিট চওড়া চারকোণা একটা বক্স।
– বাংকারটি নিউক্লিয়ার কন্টামিনেশন ফ্রী জোন। যদি কোনভাবে তোমার শরীরে নিউক্লিয়ার রেডিয়েশন বা কন্টামিনেশন বা যে কোন ধরনের সংক্রামক থাকে তাহলে বাংকারটি আর নিরাপদ থাকবে না। তাই অস্ত্র ব্যবসায়ী কাঁচের রুমটি এখানে স্থাপন করেছে। দুই হাত উচুঁ করে রুমটাতে প্রবেশ করো, উপরের লাল আলো যতক্ষণ সবুজ না হচ্ছে ততক্ষণ কাচেঁর রুমের ভেতরে থাকতে হবে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস, Do not breath in there.
রাফি – সিরিয়াসলি! কতক্ষণ ওই বাক্সে দম আটকে থাকতে হবে?
– বেশী না, ৩০-৪৫ সেকেন্ড। সর্বোচ্চ।
রাফি – মানতে পারছিনা কি কি হচ্ছে আমার সাথে আরো কি কি যে দেখতে হবে।
বিড়বিড় করে কথাগুলো বলতে বলতে বুক ভরে স্বাস নিয়ে কাচেঁর বক্সে ঢুকে গেলো রাফি। দরজা বন্ধ হয়ে গেলে চারিদিক থেকে গ্যাস এবং লিকুইড স্পে হতে লাগলো পুরো বক্সের ভেতর। নিশ্বাস না নিলেও রাফি আন্দাজ করতে পারছে যে গ্যাসটা রেডিয়েশন এবং নিশ্বাস দুটোর জন্যই ক্ষতিকর। চোখ বন্ধ করে দম আটকে ঠায় দাড়িয়ে রইলো রাফি। গ্যাসটা মেঝেতে শুষে নিলো এবং একটি মিশ্র হাওয়া স্প্রে তে রাফির অর্ধভেজা শরীরকে শুকিয়ে দিলো। পুরা প্রসেস শেষ হয়ে গেলে বক্সের উপরের লাল বাতিটা সবুজ হয়ে গেল আর সামনের দরজাও খুলে গেল। রাফি কাচেঁর রুমে দম আটকে থাকায় সেখান থেকে একপ্রকার লাফ দিয়ে বের হয়ে বুক ভরে নিশ্বাস নিলো।
কিন্তু এ কি! নিশ্বাস নিতে রাফির যথেষ্ট অস্বস্তি হচ্ছে। নিশ্বাস নিলেও কেমন যেন দম আটকে আসতে লাগলো।
রাফি – ( দম আটকা আটকা ভাব) I can’t breath, I can’t breath.
– This bunker is 11 level below and the air you are breathing is not natural. Your body has taken this type of air for the first time. Don’t fight with it, your body will adjust. I am opening the ventilation system for real air.
রাফি – (হামাগুড়ি দিয়ে) I will be dead by then.
– just hold on. You will be fine.
রাফির কানে ঝিঁঝিঁ পোকা ডাকতে শুরু করেছে আর চোখের সামনে সব সাদা হয়ে যাচ্ছে।
– রাফি, stay with me, রাফি?
রাফি মেঝেতে শুয়ে পড়ে, শরীর কুঁকড়ে যেতে থাকে।
রাফি – জ্ঞান হারাচ্ছি না তো?
রাফি বেশ জোরেই কথাটি বলেছিলো কিন্তু গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বের হলো না। রাফি নিজেকে শক্ত করলো। মনে মনে বলতে থাকলো “আল্লাহ, জ্ঞান হারানো যাবে না, জ্ঞান হারানো যাবে না”
প্রায় ৫-৬ মিনিট ধরে এই আর্টিফিশিয়াল বাতাস শরীরে নেয়ার পর রাফির শ্বাসকষ্ট কমে যেতে লাগলো এবং আগের মতো কানের ঝিঁঝিঁ পোকার আওয়াজও কমে যেতে লাগলো।
– রাফি? রাফি? Are you okay?
রাফি – better now. তবে মাথা ধরে গেছে।
– কিছুসময় পর সবকিছুই শরীর এডযাষ্ট করে নেবে। কিছুক্ষণ যেভাবে আছো ওভাবেই থাকো।
কুঁকড়ানো অবস্থায় পড়ে রইলো কিছুক্ষনের জন্য। তারপর উঠে বসে হামাগুড়ি দিয়ে উঠে দাঁড়ালো রাফি। নিজের পূর্ন অবস্থা ফিরে আসাতে আবারও চারিদিক চোখ বোলানো শুরু করে রাফি।
গ্লাসবক্স তো কেবল বিস্ময়ের শুরু ছিলো, পুরো বিস্ময়ের দোকান তো সামনে খোলা।ভেতরে লম্বা করিডোর আর তার দুইদিকে বেশ কয়েকটা দরজা। সাদা রং এর দেয়ালে কালো দরজাগুলো চোখ ধাঁধিয়ে নিয়ে আসে।
– তোমার বাম হাতের দরজা খোল।
রাফি দরজা খুলে দেখতে পায় বেশ কিছু মনিটর এবং সার্ভার সহ একটা টেক রুম।
– এটা সিকিউরিটি এবং সারভিলেন্স রুম। এখান থেকে পুরো বাড়ি এবং বাড়ির এরিয়ার বাইরের ও সিকিউরিটি সারভিলেন্স এনশিওর করা সম্ভব। Turn on the system from sleep.
রাফি পাওয়ার অন করে সিস্টেমটির। সিস্টেম এক্টিভেট হলে সামনে রাখা চেয়ারে বসে কিবোর্ডে হাত চালায় রাফি। উদ্দেশ্য সিকিউরিটি মেজার্সগুলো যাচাই করে দেখা। রাফির চোখ বড় হতে হতে ছানাবড়া হয়ে যায় এডভান্স সিকিউরিটি মেজার্সগুলো দেখে। শুধু যে সিসিটিভি, মোশান সেন্সর আর ইনফ্রারেড দিয়েই ঘেরা এই পুরো এলাকা তা নয়। এটা ছোটখাটো একটা মিলিটারি গ্রেড ফ্যাসিলিটি। অতি উচ্চমানের সিকিউরিটি এনশিওর করার জন্য পুরো কম্পাউন্ড রিমোটলি এক্টিভেটেড ল্যান্ডমাইন দিয়ে ভর্তি। এছাড়াও বাড়ির ছাদে রাডার, ল্যান্ড টু এয়ার জ্যাভলিন এবং হীট সিকার মিসাইল, বিল্ডিংয়ের চারদিক ও প্রাচীরের একটি পিলার অন্তর মোশান সেন্সরড M134 মিনিগান, ভারী যান কিংবা অন্যকিছুকে ধুলায় মিশিয়ে দিতে ৩৬০° রকেট লঞ্চার সহ পুরো বাড়িতে ৫ স্তরের সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। এতসব মারনাস্ত্র সজ্জিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে রাফির গলা শুকিয়ে আসে যদিও সে যতটা সম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করছিলো।
রাফি – মাফিয়া গার্ল? You can control all of this, right?
– with 95% accuracy, yes. I can control all of them but you can use them with 100% accuracy. Wanna try?
চেয়ার থেকে এক লাফে উঠে দাড়ায় রাফি, দুই হাত কিবোর্ড থেকে সরিয়ে মাথার উপর তুলে ধরে,
রাফি – Are you mad? To whom? I’m not gonna use them.
– you have to if it’s necessary. Activate the sensors and link with the weapon system.
রাফি – তাহলে তো অনাকাঙ্ক্ষিত যে কারো জীবন হুমকির মুখে পড়বে। ভুল করেও তো কেউ এরিয়ার ভেতর চলে আসতে পারে নাকি?
– then what you suggest?
রাফি – এ্যালার্মই ইনাফ, যদি সেটা থ্রেট হয় তাহলে আসবে অস্ত্রের ব্যবহার।
– do you wanna see what Alarm looks like!
হঠাৎ ঘরের আলো নিভে গেলো আর এম্বুলেন্সের সাইরেন লাইটের মত লাল আলো বীপ করতে থাকলো। দেখতেই ভুতুড়ে অবস্থা।
রাফি – Are you doing this? Please stop it.
এ্যালার্ম সিগন্যাল বন্ধ হয়ে সব নর্মাল হয়ে গেলো।
– I was! Just Showing you those cool stuffs.
রাফি সিকিউরিটি মেজার্স এক্টিভেট করে দিলো। রুম থেকে বের হতেই সামনে একটা দরজা। রাফি দরজাটি খুলতে যাবে তখন,
– Not now, we shall open this door another time.
রাফির কৌতুহল বেড়ে যায় আবার এন্টিনিউক্লিয়ার বাংকার বলে কথা, আগ বাড়িয়ে কিছু করতে না যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
করিডোর বেয়ে সামনে এগোয় রাফি। সামনের একটি দরজা খোলে রাফি, বেশ বড়সড় একটা লিভিং রুম। মোটামুটি আর দশটা হাইক্লাস বেডরুমের মতনই শুধু বড়বড় জানালা নেই। রুমটা থেকে বেরিয়ে পাশের রুমে যায়। ডাইনিং রুম + ফুড স্টোরেজ। অসংখ্য সেলফ আর তাতে ছোট মাঝারী টিনের কৌটা রাখা যা ক্যানড ফুড বলে পরিচিত।
– ৪ জন মানুষের জন্য ৭ বছরের খাবার মজুদ রয়েছে এখানে।
রাফি রুম থেকে বের হয়ে অন্য রুমে যায়, অস্ত্রের ব্যবসায়ী হিসাবে যথার্থ মর্যাদা সে রেখেছে। রুমের পুরোটা জুড়ে অস্ত্র সাজিয়ে রাখা যার মধ্যে কিছু প্রোটোটাইপ অস্ত্র ও আছে। এছাড়াও স্টান্ডার্ড মানের ড্রয়িং + বার রুম, এবং একটা সার্ভার রুম ও আছে বাংকারে।
রাফি – তুমি এতো জায়গা থাকতে আমাকে এখানে নিয়ে এলে কেন?
– তোমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
রাফি – (কৌতূহলী) আর দশটা মানুষের মত সিকিউরিটি এটা না। আমার এমন সিকিউরিটির প্রয়োজন ছিলো না।
– ছিলো।
রাফি – মানে!
– ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভিটা অন করো।
রাফির মনে সন্দেহ জাগে, এমন কি হলো যার জন্য মাফিয়া গার্ল এমন কথা বলছে। রাফি ড্রয়িং রুমে গিয়ে টিভি অন করলো। হয়তো এটাই দেখার বাকী ছিলো। ব্রেকিং নিউজ চলছে সব চ্যানেলে। ভাষা দূর্বোধ্য হলেও ভিডিওতে দেখানো বাড়িটা পরিচিত রাফির। মাফিয়া গার্ল অনুবাদ করে দেয়,
– রাফি, তুমি যে ৪ তারা হোটেলে অবস্থান করছিলে সেখানের অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ২২ জন প্রান হারিয়েছে। ৬য় তলায় আগুন লাগে, আর সেই আগুন উপরের বাদবাকি ফ্লোরেও ছড়িয়ে পড়ে। অজ্ঞাত কারনে ৭ম তলার ফায়ার এক্সিট, লিফট এবং শিড়িতে বাধা থাকায় ৭ম তলা থেকে উপরের সব তলার অবস্থানরত অতিথিদের কেউই নীচে নামতে পারে নি ফলে সবাই জ্যান্ত পুড়ে মারা যায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারনা এটি শর্ট সার্কিটের আগুন কিন্তু আমার মনে হয় না তুমি সেই ধারনার সাথে একমত।
রাফি কখনো ভাবতেও পারে নি যে তার জন্য এতগুলো মানুষকে জান খোয়াতে হবে।
রাফি – আমাকে মারতে ওরা একটা হোটেলে আগুন লাগিয়ে দিয়ে এতগুলো মানুষের জীবন নিয়ে নেবে?
– I told you earlier, real life is much more dangerous than cyber world. They are hunting you. The won’t stop, the never stop.
রাফি – এখানে তো সারাজীবন আটকা থাকতে পারবো না, তাই না?
– সারাজীবনের চিন্তা পরে আগে এইমুহূর্তের চিন্তা করো। পুলিশ ইনভেস্টিগেশন শুরু করেছে এবং আমার মনে হয় না যে সেটা তোমার জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।
রাফি – মানে!
– ৬য় ফ্লোরে একজন হোটেল বয়কে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং পুলিশ ধারনা করছে সে হয়তো কিছু জানতে পারে। রাফি? রুম থেকে বের হওয়ার পর থেকে কি কি হয়েছে সবকিছু ইন ডিটেলস বলো আমাকে।
রাফি প্রথম থেকে সবকিছু বলতে শুরু করলো মাফিয়া গার্লকে। নীরবে পুরো ঘটনা শুনে মাফিয়া গার্ল বলতে শুরু করলো,
– তার মানে হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরা তোমাকে ধরে ফেলেছে, এমন ও হতে পারে যে তুমি যখন হোটেল বয়কে আক্রমন করেছো তখন সেই ঘটনাও সিসিটিভি ফুটেজে চলে আসতে পারে। এছাড়াও তুমি ফ্লোর ম্যানেজারের সামনে দিয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে এসেছো। পুলিশ তোমাকে প্রাইম সাসপেক্ট হিসেবে আইডেন্টিফাই করতে পারে আর যদি তাই হয় তাহলে শুধু লোকাল গ্যাং নয়, দেশের পুলিশও তোমার পিছনে পড়বে।
রাফি – oh shit shit shit shit. This whole things is your idea, YOUR….. first the mercenary, second the local gang, and now the police! !!!!! I’ll be dead because of you.
– you are alive because of me, you should be thankful.
বলে ফোনটা রেখে দেয় মাফিয়া গার্ল। রাফি রাগে ফুসতে থাকে, তবে একটা জিনিস ঠিক আছে, মাফিয়া গার্ল ওয়ার্নিং দিয়েছিলো বলেই পুড়ে মরতে হয়নি রাফিকে। মাফিয়া গার্লের জন্যই আজ রাফি বেঁচে আছে। নাহ, এতটা রুডভাবে কথা বলা ঠিক হয় নি।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/
নিজের কাছেই নিজেকে অপরাধী মনে হলো।
নাহ এভাবে বসে থাকা চলবে না, কোন একটা রাস্তা তো বের করতেই হবে। অন্যদিকে রাত ও অনেক হয়েছে। *6666# এ ডায়াল করে রাফি।
একটা মেসেজ আসে রাফির ফোন এ,
“Go to sleep. You are safe in there. We shall talk in the morning. Good night”
মেসেজটা পড়ে রাফির কিছুটা হতাশ লাগলো। এই অবস্থায় মানুষ ঘুমায় কিভাবে! তখনই আরো একটা মেসেজ আসে, মাফিয়া গার্ল।
“If you have sleeping problem, go to the server room, run the file name ‘ooo’. You will find some name, photos and other details. Study them, you have to face them if you want to leave this country alive. You can have more information if you want, this server is 3x more powerful than your NSAs server. Good luck and good night.”
রাফি এবার কিছুটা জোস পেলো। অবশেষে তার পিছু নেয়া শত্রুগুলোর ডিটেলস জানতে পারবে সে। ড্রয়িং থেকে এক প্রকার দৌড়ে সার্ভার রুমে চলে গেলো রাফি। সেখান থেকে ooo ফাইলটা খুজে বের করে রান করলো সে।
বাহ, সিষ্টেম যথেষ্ট স্মুথ। ফাইলটিতে বেশ কয়েকজন মানুষের ডিটেলস দেয়া রয়েছে। রাফি এদের কাউকে না চিনলেও এরা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় গোয়েন্দা সংস্থার মোষ্ট ওয়ান্টেড লিষ্টে আছে। আর যাদেরকে লোকাল গ্যাং বলে বলে এতক্ষণ অনিহা করেছিলো রাফি তারা মোটেই অতোটা ফেলনা ছিলো না। এই দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাংব্যাংগারস এরা। এদের শেকড় যথেষ্ট গভীর, এই দেশের রাজনীতি কন্ট্রোল করে এই গ্যাং। রাফির বোঝা হয়ে যায় যে যাদের লিষ্ট মাফিয়া গার্ল দিয়েছে এরা যদি সত্যিই রাফিকে মারার জন্য পেছনে লেগে থাকে তাহলে এই বাংকারও রাফির জন্য নিরাপদ না।
ফাইলটিতে যে শুধু এদের লিষ্ট দেয়া আছে তাই ই নয়, পুরো ফাইলটিতে একটা প্যাটার্ন রয়েছে যার দ্বারা বোঝা যাচ্ছে কার সাথে কে কানেক্টেড আর এদেরকে চালাচ্ছেই বা কে।
বেশ ঝুক্কি ঝামেলার পর রাফির শরীর আর চলতে চায় না, সেইভাবে ঘুম না আসলেও ক্লান্তি আর অবসাদ রাফিকে ঘিরে ধরে, অপরাধীদের দেখতে দেখতেই ঘুমে ঢলে পড়ে রাফি।
ঘুম ভাংগে পরদিন দুপুরের দিকে, মাফিয়া গার্ল একের পর এক ফোন দিয়ে রাফিকে না পেয়ে বাংকারের ইন্টারকম দিয়ে রাফিকে ডাকতে থাকে। ছোট্ট রুমগুলোতে ইন্টারকমের সাউন্ডে গম গম করছে,
– wake up Raffi. Wake up. Its an emergency, wake up.
রাফি আড়মোড়া দিয়ে উঠেই কান চেপে ধরে। ফোনেও একনাগাড়ে রিং হচ্ছে। রাফি কোনমতে ফোনটা রিসিভ করে কানে তোলে,
রাফি – হ্যাঁ হ্যাঁ জেগে গেছি জেগে গেছি, আর চ্যেচিও না।
– I have a bad news for you. Turn on the TV.
মাফিয়া গার্লের এমন কথা শুনে রাফির আবারো বুক ধড়ফড়িয়ে উঠলো, আবার কি খারাপ সংবাদ। জলদি ছুটে গেলো ড্রয়িং রুমে, মোবাইলটা কানে চেপে রেখে টিভি অন করে রাফি! টিভিতে ব্রেকিং নিউজে কয়েকটে সিসিটিভি ফুটেজ দেখাচ্ছে যার মধ্যে কয়েকজনকে হোটেলের লিফট এবং শিড়ি ব্লক করে দিতে দেখা যায় এবং অন্য একটা ফুটেজে একটি যুবককে একজন হোটেল বয়ের উপর ঝাপিয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে প্রায় ১০ জনের চেহারা পাওয়া গেছে যাদের সবার ক্রিমিনাল রেকর্ড থাকায় শনাক্ত করা গেছে কিন্তু হোটেল বয়কে আক্রমন করা ব্যক্তিকে এখনো কেউ স্বনাক্ত করতে পারে নি। আর টেলিকাষ্ট করা ভিডিওটাও যথেষ্ট অস্পষ্ট।
– যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই। পুলিশ তোমাকে সাসপেক্ট লিষ্টে এড করে নিয়েছে। পুলিশ ভাবছে হয় তোমার কারনে আগুন লেগেছে অথবা তুমিই আগুন লাগিয়েছো। সমস্ত নিউজ চ্যানেলে অন্যান্য ফুটেজের সাথে সাথে তোমার ভিডিও ফুটেজও প্রচার করতে বলা হয়েছে। আমি যতদূর সম্ভব ভিডিও ব্লার করে দিয়েছি তাই ভিডিও টেলিকাষ্ট হলেও কেউ তা থেকে তোমাকে চিনবে না কিন্তু পুলিশ অরিজিনাল ভিডিও ফুটেজ থেকে তোমার ছবি বের করতে সক্ষম হয়েছে। সমস্ত পুলিশ স্টেশনে তোমার ছবি ফ্যাক্স অথবা ইমেইলের মাধ্যমে সার্কুলেট করা হয়েছে। আমি যতদূর পেরেছি পুলিশের ফরোয়ার্ড করা ছবিটা রিপ্লেস করে দিয়েছি।
রাফি – গ্যাং পেছনে পড়েছিলো, এখন আবার পুলিশ! তবে এবার হয়তো গ্যাং একটু পিছে হটবে, তাদেরকেও তো খুজবে পুলিশ নাকি?
– গ্যাং পিছু হটবে না, এরা পুলিশের নাকের ডগাতেই থাকে। পুলিশ ওয়ারেন্ট ইশ্যু করে এরেষ্ট করলেও এদেরকে ধরে রাখতে পারে না। জনগনের মনে শান্তনা দেয়ার জন্য তাদের ভিডিও আর ছবি টিভিতে টেলিকাষ্ট করছে।
রাফি – তার মানে তারা আমার পিছু ছাড়ছে না?
– একদমই না, বরং কিছু কোরাপ্ট অফিসার তাদেরকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে তোমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।
রাফি – কিন্তু সেটা তো সত্য নয়, আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।
-পুলিশকে যেভাবে লীড দেয়া হচ্ছে তাতে শেষ পর্যন্ত পুলিশ তোমাকেই অপরাধী বলে ধরে নেবে। তোমার কোন পুলিশ রেকর্ড না পাওয়ায় তুমি একজন প্রোটেনশিয়াল ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিস্ট। এছাড়া হোটেলের রিসিপশনিষ্ট তোমাকে অরিজিনাল ভিডিও ফুটেজ দেখে চিনে ফেলেছে এবং একজন অতিথি হিসেবে আইডেন্টিফাই ও করে নিয়েছে।
রাফি – হোটেলের লগবুকে তো আমার নামে কিছুই লেখা নেই, আমি তো কোন তথ্যই দেই নি।
– হ্যাঁ কারন আমি আগে থেকেই কিছু তথ্য দিয়ে রেখেছিলাম। আমি অনলাইনের তথ্য অথেন্টিক করে দিতে চেয়েছিলাম কিন্তু এদের নিজেদের ভেতর যোগসাজশ দেখ অথেনটিক করে দেয়ার সাহস করি নি, এতে তোমার পরিবারের উপর খারাপ প্রভাব পড়তো।
রাফি – আমার সারেন্ডার করা উচিৎ। সারেন্ডার করলে হয়তো আমি প্রমান করতে পারবো আমি নিরাপরাধ।
– oh really? Go to the server room, something is waiting for you.