?ভোর? পর্বঃ ২০।

0
1520

?ভোর? পর্বঃ ২০।
লেখিকাঃ আয়sHa?
|
|
আলোঃঃ সমস্যা কি আপনার? ((রাগীমুডে))
|
ভোরঃঃ কেন কি করছি? ((অবাক হয়ে))
|
আলোঃঃ আজ ৫ দিন ধরে দেখছি আপনি ঐ নার্সের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাঁকিয়ে থাকেন। আর এদিকে বলেন আমাকে আমি উল্টাপাল্টা বকি।
|
ভোরঃঃ কোথায় তাকালাম? আজব।
|
আলোঃঃ আমার চোখে কিছু ফাঁকি যায় না। ((উত্তেজিত হয়ে))
|
ভোরঃঃ এই এই কুল কুল.. উত্তেজিত হয়েও না। আমি আসলে নার্সের গলার পেন্ডেনটা দেখি। ঐরকম একটা তোমাকে এনে দিবো তাই।
|
আলোঃঃ আমার লাগবে না। আর ঐ নার্সের ডিজাইনেরটা তো না’ই।
|
ভোরঃঃ সত্যি লাগবে না?
|
আলোঃঃ না না না..
|
ভোরঃঃ সত্যি???
|
আলোঃঃ হ্যাঁ সত্যি সত্যি সত্যি..লাগবে না।
|
ভোর উঠে আলোর পিছনে আলোর গলা জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে….
|
ভোরঃঃ সত্যি লাগবে না? (মৃদু কন্ঠে)
|
আলো চুপ হয়ে রইল। ভোর পকেট থেকে একটা পেন্ডেন বের আলোর গলায় পড়িয়ে দিলো। তারপর আলোর সামনে আয়না ধরে…
|
ভোরঃঃ কেমন হয়েছে?
|
আলোঃঃ এটা কখন পড়ালেন? (অবাক হয়ে)
|
ভোরঃঃ যখন তুমি আমার স্পর্শ সহ্য করতে পারছিলে না তখন।
|
আলোঃঃ এই পেন্ডেনটাতে লাভ দেয়া বুঝলাম। লাভের মধ্যে A লেটার দেওয়া সেটাও বুঝলাম কিন্তু A এর সাথে বাঁকা করে একটা দাগ টানা ওটা বুঝলাম না।
|
ভোরঃঃ তুমি তো একটা গন্ড মূর্খ তাই বুঝবে না। তোমার A যেখান থেকে শেষ আমার V সেখান থেক শুরু। বুঝলে?
|
আলোঃঃ আপনি মূর্খ। মূর্খ বলেই এভাবে একটা অক্ষরের ভিতর আর একটা মিশিয়েছেন। হুহহহহ ((মুখ ভেঁংচি কেটে))
|
ভোরঃঃ পছন্দ হয়েছে?
|
আলোঃঃ হুমমম। (মুচকি হেসে)
|
ভোরঃঃ কিন্তু তোমার তো পেন্ডেন লাগবে না। থাক আমি খুলে নিচ্ছি।
|
আলোঃঃ এটা ছুঁলে হাত কেটে দিবো। (রাগীলুকে)
|
ভোরঃঃ ওটা ছুঁবো না ওকে। ওটার মালকিনীকে ছুঁই??
|
আলোঃঃ আপনি দিন দিন এমন অসভ্য হয়ে যাচ্ছেন কেন? (রাগীলুকে)
|
ভোরঃঃ আর সব মিলিয়ে মাত্র একমাস অপেক্ষা করতে হবে। তারপর তো কত অসভ্য হবো তা তুমি চিন্তাও করতে পারবে না মিসেস ভোর চৌধুরী। (ফিসফিসিয়ে)
|
আলোঃঃ ফিসফিস করে কি বলছেন? (ভ্রু-কুঁচকিয়ে)
|
ভোরঃঃ কই কিছু না তো। আচ্ছা তোমার তো খাবার সময় হয়ে গিয়েছে তাই না? আমি নার্সকে ডেকে আনছি।
|
আলোঃঃ নার্সকে ডাকতে যাবেন কেন? আমাকে আর খাইয়ে দিতে ইচ্ছা করছে না? ওকে ফাইন.. খাবারটা দিন আমি নিজেই খেতে পারব। কারো সহানুভূতি আমার লাগবে না।
|
ভোরঃঃ সহানুভূতি? হুমমম ভালো। ওয়েট..
|
ভোর খাবার প্লেটে নিয়ে আলোকে দিলো। আলোর এবার কষ্ট লাগলো খুব। মুখ টিপে খাবার প্লেট হাতে নিলো। চামক দিয়ে খাবার অনেকসময় আস্তে আস্তে নড়াচড়া করছে কিন্তু খাবার মুখে তুলছে না। তুলবে কি করে.. আলোর চোখ দুটো যে কষ্টে ছলছল করছে। কখন যেন চোখের পানিগুলো টুপ করে পড়ে যায়। ভোর একটু দূরে জানালার সানে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাহিরের দিকে তাঁকিয়ে। একবার পিছনে ঘুরে দেখেছে আলো প্লেটের দিকে নিচু হয়ে তাঁকিয়ে খাবার জাস্ট নড়াচড়া করছে। কিন্তু মুখে দিচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর ভোর আবার তাকালো কিন্তু আলোর কোনো পরিবর্তন দেখতে না পেয়ে নিজের হাত পায়ের সাথে পাঞ্চ করে আলোর সামনে এসে ছোঁ মেরে আলোর হাত থেকে প্লেট নিয়ে.. নিজের হাতে খাবার হাতে তুলে আলোর মুখের সামনে নিয়ে…
|
ভোরঃঃ হাঁ করো।
|
আলোঃঃ আ—আমি পারবো। আপনি যে–যেতে পারেন। (নিচের দিকে তাঁকিয়ে)
|
ভোরঃঃ আমি হাঁ করতে বলেছি.. কুইক। (রাগীকন্ঠে)
|
আলোঃঃ আমি পাআআআ…
|
আলো আর বলতে পারলো না। ভোর গ্লাসটা মেঝেতে অন্য হাত দিয়ে এক আছাড় দিলো রাগে। আলো ভয়ে কেঁপে উঠলো..তারপর ভোরের রাগ বুঝতে পেরে তাড়াতাড়ি করে ভোরের হাত টেনে নিজেই মুখে পুড়ে নিলো খাবার। ভোর আর কিছু বললো না। আলোকে খাওয়াচ্ছে। আর আলো খাচ্ছে আর মুখ টিপে কাঁদছে। যতই মুখ টিপে কাঁদুক না কেন..ভোরের কানে কান্নার শব্দ ঠিক যাচ্ছো।
|
ভোরঃঃ কোনো শব্দ আর কানে এলে এখানে খুব খারাপ কিছু ঘটবে বলে দিলাম।
|
ভোরের কথা শুনে আলো ভয়ে আরও কেঁদে দিলো। এবার আর মুখ টিপে কাঁদতেই পারছে না। আওয়াজ করে কেঁদে ফেললো। ভোর অগ্নিদৃষ্টিতে আলোর দিকে তাকালো। আলো ভোরের চোখ দেখে ভয়ে পুড়ো চুপষে গেলো। এবার কোনো শব্দ হচ্ছে না। আলোর খাওয়া শেষে ভোর উঠে যাচ্ছিলো….
|
আলোঃঃ আ–আপনি খাবেন না?
|
ভোরঃঃ না। (নিচের দিকে তাঁকিয়ে)
|
আলোঃঃ খাবেন না মানে? খেয়ে নিন।
|
ভোরঃঃ বললাম তো খাবো না। আর লিসেন কোনে সহানুভূতি দেখাবেন না আমার প্রতি। (আলোর দিকে তাঁকিয়ে)
|
আলোঃঃ এতবড় রাত.. না খেয়ে থাকবেন?
|
ভোরঃঃ এক/দুই দিন না খেলে মরে যাবো না।
|
আলোঃঃ ভোর…….. (ভোরের কলার চেপে ধরে..রাগান্বিত দৃষ্টিতে)
|
ভোরঃঃ ছাড়ুন।(নিচে তাঁকিয়ে)
|
আলো আস্তে করে ছেড়ে দেয়। ভোর আলোকে মেডিসিন খাইয়ে দিলো তারপর কাঁচের টুকরো গুলো তুলে ফ্লোরটা পরিষ্কার করে বের হয়ে যাচ্ছিলো আর আলো তা তাঁকিয়ে দেখছিলো। বের না হয়ে আবার ভিতরে এসে খাবার নিয়ে খেতে শুরু করলো। আলো মনে মনে খুব খুশি হলো। ভোর খাওয়া শেষ করে সোফাতে শুয়ে পড়লো আর আলো আধাশোয়া হয়েই ভোরের দিকে তাঁকিয়ে আছে। ভোর এপিঠ-ওপিঠ করছে শুয়ে। অবশেষে উঠে বসলো আবার কিছুক্ষণ নিচের দিকে তাঁকিয়ে থেকে আলোর কাছে এসে দাড়িয়ে রইল। আলো ভোরকে দেখে আস্তে করে কিছুটা সরে শুয়ে পড়লো। ভোর জায়গা পেয়ে শুয়ে পড়লো। অন্যদিকে ফিরে। কিন্তু নড়াচড়া করেই যাচ্ছে। আলো ভোরের এসব কান্ড দেখে মুখ টিপে হাসছে। ভোর আর শান্তি না অবশেষে আলোর ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিয়ে আলোকে জড়িয়ে ধরলো।
|
৫ মিনিট হয়ে গেলো কিন্তু ভোর এখন আর নড়াচড়া করছে না। কেবিনে একটা ডিমলাইট জ্বালানো।
|
আলোঃঃ যে যেটা পারে না.. সে সেটা কেন যে করতে যায় বুঝি না। (মুখ টিপ হেসে)
|
ভোর একটু নড়ে উঠলো।
|
আলোঃঃ থাক ইচ্ছা করে নড়তে হবে না। ঘুমান। আচ্ছা একটা প্রশ্ন করি?
|
ভোরঃঃ কি? (গম্ভীর ভাবে)
|
আলোঃঃ আমাদের ডিভোর্স হওয়ার পর আপনি কীভাবে ঘুমাবেন? (আস্তে করে)
|
ভোর মাথাটা তুলে আলোর দিকে তাঁকিয়ে রইলো। আলোও রইলো। এই মৃদু আলোতেও আলোর চোখের পানিগুলো ভোরের চোখের আড়াল হলো না। ভোর কিছু না বলে আলোকে ঠোঁটজোড়া দখল করলো। আলোর কোনো রিসপন্স পেলো না ভোর তাই ঠোঁট ছেড়ে দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো আলোকে জড়িয়ে ধরে। আর আলো অনেক কিছু চিন্তা করতে করতে মুখ টিপে কাঁদতে কাঁদতে হিচকি দিয়ে কাঁদতে শুরু করলো। ভোর কিছু বলছে না একহাত দিয়ে আলোকে শক্ত করে নিজের সাথে চেপে ধরলো আর একহাত দিয়ে বেড শীট খামচে ধরলো। আলোর কান্নার গতি বেড়েই চললো। ভোর আর সহ্য করতে না…
|
ভোরঃঃ ঘুমাবো আমি। আর এতো কান্না আমার বেবির জন্য প্রব্লেম হবে। তাই বেবির কথা চিন্তা করে আশা করি আর কাঁদবেন না। ঘুমান।
|
আলোঃঃ হুমমম (চোখের পানি মুছতে মুছতে)
|
আলো ধীরেধীরে নিজেকে শান্ত করে ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু ভোর ঘুমালো না। ভোর আলোর ঘুমন্ত মুখ দেখছে আর নিঃশব্দে চোখের পানি ঝাড়াচ্ছে।
|
|
|
চলবে………
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।ধন্যবাদ?))

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে