?ভোর? পর্বঃ ১৫/১৬

0
1605

?ভোর? পর্বঃ ১৫/১৬
লেখিকাঃ আয়sHa?
|
|
আলোর এখন সাত মাস চলে।একটু একটু বেড়ে উঠছে আলো আর ভোরের বেবি আলোর গর্ভে। এই একমাস ভোর বাড়ি ছেড়ে কোথাও যায়নি। আলোর দেখাশুনাতেই সে ব্যস্ত। তার বেবি যেন সুষ্ঠুভাবে পৃথিবীতে আসে এটাই তার লক্ষ্য।
|
ভোর সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে আলো বসে আছে….
|
ভোরঃঃ কখন উঠলেন?? ((চোখ ঢলতে ঢলতে))
|
আলোঃঃ আধা ঘন্টা আগে।
|
ভোরঃঃ আমাকে ডাকলেন না কেন? ফ্রেশ হননি নিশ্চয়ই। চলুন ফ্রেশ হবেন।
|
আলোঃঃ না। ফ্রেশ হবো না।
|
ভোরঃঃ তো?
|
আলোঃঃ আগে আপনি ডিসাইড করুন আপনি আমাকে আপনি করে ডাকবেন নাকি তুমি করে? আপনার এই আপনি আর তুমিতে আমি অতিষ্ঠ। ((রাগীমুডে))
|
ভোরঃঃ ওহ। ওকে রাখবেন না। আমি আপনি করেই ডাকবো। এবার চলুন।
|
আলোঃঃ কেন? তুমি করে ডাকতে পারবেন না?
|
ভোরঃঃ তুমিটা মরে গেছে। মাঝে মাঝে ফিরতে চায় জোরপূর্বক কিন্তু জোরপূর্বক কিছু হয় না। যেমন: আমি আপনাকে ভালোবেসে ছিলাম আর আপনার কাছ থেকে জোরপূর্বকভাবে ভালোবাসা পেতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম। আপনি রিহামের কাছে চলে গিয়েছিলেন। আসলেই আমারই ভুল ছিলো… আমিই ভুলে গিয়েছিলাম জোর করে সব হয় না। ((চোখে কষ্টের ছাপ))
|
আলোঃঃ ভালোবেসে ছিলাম!! মানে এখন আর ভালোবাসেন না?
|
ভোরঃঃ তা আপনার না জানলেও চলবে। আপনি চলুন ফ্রেশ হবেন।
|
আলোঃঃ ভুল মানুষই করে.. আমিও করেছিলাম। তাই বলে এতো দূরে সরিয়ে রাখা আপনার উচিৎ হচ্ছে?
|
ভোরঃঃ কিছু ভুল মনকে পাথর বানিয়ে দেয়। সেই পাথর গলাতে পারা যায় না। ভেঙ্গে যায়। আপনি আমাকে বললেন আমি আপনাকে ভালোবাসি কি না! আচ্ছা আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন?
|
আলোঃঃ আমি আপনাকে ভালোবাসি কি না জানিনা। শুধু এইটুকু জানি আমি আপনার সাথে সারাজীবন থাকতে চাই। আর এটার নাম যদি হয় ভালোবাসা। তাহলে হ্যাঁ আমি আপনাকে ভালোবাসি। কিন্তু বেবি আসলে আপনি আর আমি দুইপ্রান্তের মানুষ হয়ে যাবো জারন আপনি চাননা আপনার জীবনে আমি থাকি…আর এটারও একটা মেইন কারন আছে।
|
ভোরঃঃ আবার কি কারন?
|
আলোঃঃ জেরিন। ((মুচকি হাসি দিয়ে))
|
ভোরঃঃ What jerin?? ((রাগীমুডে))
|
আলোঃঃ ঐ যে আপনার পি.এ. জেরিন। সুন্দরী.. স্মার্ট। আমাকে ডিভোর্স দিয়ে তাকে আনবেন আপনার জীবনে এটাই মেইন কারন। ((মুচকি হাসি দিয়ে))
|
ভোরঃঃ Stop this nonsense.. ((রাগী মুডে))
|
বলে আলোকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে আসলো।
|
সকালের ব্রেকফাস্ট আলোকে খাইয়ে দিয়ে.. ভোর নিজেও ব্রেকফাস্ট করে নিলো। তারপর রুমে গিয়ে….
|
ভোরঃঃ আপনার কিছু লাগলে কল করবেন আমি ড্রইংরুমে আছি।
|
আলোঃঃ কেন এখানে থাকা যাচ্ছে না?
|
ভোরঃঃ না। অফিসের কিছু জরুরী ফাইল পত্র নিয়ে আসবে ওগুলো চেক করে দিতে হবে।
|
আলোঃঃ কে আসবে?
|
ভোরঃঃ ইয়ে…মানে.. আমার পি.এ. ((হাত মুষ্টিবদ্ধ করে))
|
আলোঃঃ ওহ ওকে। যেতে পারেন।
|
ভোরঃঃ হুম।
|
ভোর নিচে চলে গেলো। গিয়ে দেখে জেরিন অলরেডি ড্রইংরুমে এসে বসে আছে।
|
ভোরঃঃ আরে জেরিন চলে এসেছো।
|
জেরিনঃঃ Good morning sir.. ((বসা থেকে দাঁড়িয়ে))
|
ভোরঃঃ আরে বসো বসো। কফি চলবে?
|
জেরিনঃঃ উহুমম ওকে।
|
ভোরঃঃ সার্ভেন্ট দুটো কফি দিয়ে যাও। তো দাও ফাইলগুলো।
|
জেরিনঃঃ Sure sir.. এই যে এইগুলো। sir mam কেমন আছে?
|
ভোরঃঃ হুম ভালো আছে। ((নিচের দিকে তাঁকিয়ে))
|
জেরিন আর ভোর কাজ করছে। প্রায় ২০মিনিট পর আলোর মন বার বার চাচ্ছে নিচে যেতে তাই বেড থেকে নেমে পড়ে যাবার জন্য। আস্তে আস্তে করে আলো সিঁড়ির কাছে আসে। এসে দেখে ভোর আর জেরিন হাসছে আর কাজ করছে। আলোর খুব রাগ হলো। তাই সিঁড়ি বেয়ে নিচে আস্তে আস্তে করে নামছিলো কিন্তু সিঁড়ির মাঝ পথে এসে হাতটা পিছলে গেলো আর পড়ে যেতে লাগলো তবে পড়েনি। কারন এবারও ভোর এসে ধরে ফেলে আলোকে। আলো চোখ খুলে ভোরকে দেখে ভোরকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে। ভোর আলোকে কিছু বলবে বা রাগী মুড নিবে তা আর পারেনি কারন আলোর হার্টবিট খুব কাঁপছিলো ভয়ে যা ভোর স্পষ্ট শুনতে পায়। তাই ভোর আলোকে কোলে নিয়ে নিচে এনে সোফাতে বসিয়ে দেয়। বসিয়ে দেয় তবুও আলো ভোরকে জড়িয়ে ধরে আছে। আলো ধরধর করে কাঁপছে। জেরিন আলোর এ অবস্থা দেখে দৌড়ে পানি নিয়ে আসে একগ্লাস। তারপর ভোরের হাতে দেয়।
|
ভোরঃঃ পানি খেয়ে নিন। আমি আছি কিছু হবে না। ভয় পেতে হবে না।
|
আলো মাথাটা ভোরের বুক থেকে সরিয়ে মাথা খেয়ে নিলো। পানি খাওয়ার সময় আলোর ঠোঁট কাঁপছিলো। আলো চুপ করে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে সোফায়।
|
ভোরঃঃ আপনি একা একা কেন আসতে গেলেন?
|
আলোঃঃ আআআসলে আমি বুঝিনি এভাবে স্লিপ কাটবে হাত। উনি? ((জেরিনের দিকে তাঁকিয়ে))
|
ভোরঃঃ ওহ ও জেরিন। আমার পি.এ.
|
জেরিনঃঃ Mam আপনি এখন ঠিক আছেন?
|
আলোঃঃ হুমমমম। আপনারা কাজ করুন।
**দেখতে তো অনেক সুন্দরী। ফাও ফাও কি পাগল হয়েছে। এমন মেয়ে দেখলে যে কেউ পাগল হবে।**((মনে মনে))
|
ভোরঃঃ আপনি এখানে থাকবেন??
|
আলোঃঃ থাকলে সমস্যা? তাহলে চলে যাচ্ছি।
|
জেরিনঃঃ না না ম্যাম। কোনো সমস্যা নেই। আপনি এখানেই থাকুন।
|
ভোরঃঃ হুমমম থাকুন। কেন থাকতে চান তা আমি বুঝি। থাকুন।
|
আলোঃঃ বুঝেন যখন তাহলে চুপ থাকুন। ((রাগীমুডে))
|
জেরিন দু’জনের মুড দেখে মুচকি হেসে দিলো।
|
জেরিনঃঃ স্যার আপনি আমার পাশে আসুন। ম্যাম ওখানে রিলেক্সে বসু থাকুক।
|
ভোরঃঃ sure….
|
আলোঃঃ হ্যাঁ দুজনতো একসাথেই বসবি। ((মনেমনে))
হ্যাঁ হ্যাঁ আপনি ওপাশে যান। ((মুচকি হেসে))
|
ভোর গিয়ে জেরিনের পাশে বসলো। অনেকটা গ্যাপ রেখে। আলো একটা নিউজপেপার নিলো পড়ার জন্য। পড়বে কচু? ও তো ভোরের দিকে নজর রাখছে। জেরিন আস্তে আস্তে করে ভোরের একদম কাছে চলে গেলো। এক ইঞ্চির মতো ফাঁকা হবে হয়তো। আলো তো দেখে রাগে ফায়ার মনে মনে।
|
জেরিনঃঃ sir এটা দেখুন। এই লেখাটা তো ভুল আছে। দাঁড়ান আমি লিখে দেই।
|
বলে ভোরের হাত দিয়ে কলমটা এমন ভাবে নিলো যা আলোর একদম পছন্দ হলো না। তাই রাগে পেপারটা মুচরে ফেলে দিলো।
|
ভোরঃঃ কি ব্যাপার পেপারটা এভাবে মুচরে ফেললেন কেন?
|
জেরিনঃঃ মনে হয় পেপারের নিউজফিড ম্যামের ভালো লাগেনি… তাই ফেলছে।
|
আলোঃঃ ————
|
আবার ওরা কাজ করছে মন দিয়ে….
জেরিনঃঃ স্যার আপনার পারফিউমের স্মেলটা কিন্তু বরাবরের মতোই আজও অসাধারণ।
|
জেরিনের কথা শুনে ভোর ঢোক গিলে আলোর দিকে তাঁকায়। আলোর চোখ দুটো রাগে টগবগ করছে।
|
ভোরঃঃ thaaaathanks…
**এই মেয়েটা কি বলে এগুলা। আমাকে আলো আস্তো গিলে খাবে।*** ((মনে মনে))
|
জেরিনঃঃ sir আমার কিন্তু ব্লু কালারটা সবথেকে ফেভারিট। আর আপনি আজ আমার প্রিয় কালারটাই পড়েছেন। লাভ ইউওর টি-শার্ট। ((একগাল হাসি দিয়ে))
|
ভোরঃঃ এএএটা তোমার প্রিয় কালার? ওহ জানতাম না।
((চুপ যা মেরি মা। সামনে বাঘিনী বসা.. মনে মনে))
|
আলোঃঃ ওনার পারফিউম.. টি-শার্টের কালার আপনার পছন্দ। ওনাকে পছন্দ না? ((ভ্রু ঘুঁচিয়ে))
|
জেরিনঃঃ কি যে বলেন ম্যাম? স্যারের মতো ছেলেই তো প্রতিটা মেয়ের স্বপ্নে থাকে। আমারও। ((লজ্জামাখা মুখে))
|
আলোঃঃ এক মিনির এক মিনিট। সব মেয়েদের স্বপ্নে থাক না। হাতের পাঁচটা আঙুল সমান না।
|
ভোরঃঃ আপনার স্বপ্নে আমার মতো কেউ ছিলো না এটা বললেই হয়।
|
জেরিনঃঃ ম্যাম আপনার সাথে স্যারের বিয়ে না হলে আমি একটা চান্স নিতাম
কিন্তু তা আর হলো না। ((মন খারাপ করে))
|
আলোঃঃ এখনো বিয়ে করার সময় আছে। হতেও পারে আপনাদের বিয়ে।
|
ভোরঃঃ হচ্ছেটা কি? জেরিন সব ফাইল চেক করা হয়ে গেছে তুমি আজ আসতে পারো।
|
জেরিনঃঃ আচ্ছা স্যার।
|
জেরিন সব ফাইলপত্র গুছিয়ে নিয়ে…
|
জেরিনঃঃ Sir যদি কিছু না মনে করেন আমাকে গাড়ী পর্যন্ত একটু কম্পানি দিবেন?
|
ভোরঃঃ Sure…
|
ভোর আর জেরিন বের হয়ে গেলো আর আলো..জেরিনের চৌদ্দগুষ্টি উদ্দার করলো।
|
জেরিন গাড়ী কাছে এসে…..
জেরিনঃঃ Thanks sir.. এতদূর আসার জন্য।
|
ভোরঃঃ Thanks এর কি আছে। It’s ok.… দেখেশুনে যেও। Take care.
|
জেরিনঃঃ স্যার… ম্যাম আপনাকে ভালোবাসে। আপনাকে নিয়ে সে খুবই সেন্সিটিব। আপনাদের মাঝে কি নিয়ে ঝামেলা আছে আমি জানি না কিন্তু যাই থাকুক তা মিটিয়ে ফেলুন। আসছি স্যার।
|
ভোরঃঃ তুমি এতোকিছু বুঝলে কি করে?
|
জেরিনঃঃ আমি যে ভোর চোধুরীর পি.এ.।
|
একটা মুচকি হাসি দিয়ে জেরিন চলে গেলো। ভোর ভাবান্বিত চেহারা নিয়ে দরজা দিয়ে ঢুকলো।
|
|
|
চলবে………
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।ধন্যবাদ ?))

গল্প——>?ভোর?
পর্বঃ ১৬।
লেখিকাঃ আয়sHa?
|
|
ভোর দরজা দিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকে… আলো ভোরকে দেখে..
|
আলোঃঃ কি ব্যাপার মুখটা শুকনো কেন? জেরিন চলে গিয়েছে বলে মন খারাপ? তা রেখে দিলেই পারতেন।
|
ভোরঃঃ এ আপনার কি মাথায় প্রব্লেম আছে? এতো জেরিন জেরিন করেন কেন? যত্তসব। চলুন রুমে।
|
বলে ভোর আলোকে ধরে তুলতে যায়। আলো একহাত দিয়ে বাঁধা দেয়।
|
আলোঃঃ আমি পারব যেতে আমাকে ধরতে হবে না।
|
ভোরঃঃ একদম চুপ। ((রাগী কন্ঠে))
|
বলে আলোকে কোলে তুলে নিয়ে উপরে চলে গেলো। আলোকে বেডে বসিয়ে দিয়ে ভোর চলে যাচ্ছিলো। কিন্তু পিছনে ঘুরে আলোর কাছে এসে…..
|
ভোরঃঃ শুনুন নেক্সট টাইম আপনি হাজার ভয় পেলেও আপনার ঠোঁট কাঁপাবেন না।
|
আলোঃঃ কেন? আর আমি কি ইচ্ছা করে কাঁপাই?
|
ভোরঃঃ সে আমি জানিনা। কিন্তু কাঁপাবেন না এটাই ফাইনাল।
|
আলোঃঃ কেন? ((ভোরের কলার ধরে))
|
ভোর আলোর কানের কাছে মুখ নিয়ে….
|
ভোরঃঃ আমার সমস্যা হয়। ((ফিসফিসিয়ে))
|
আলোঃঃ কিসের সমস্যা?? ((আস্তে করে))
|
ভোরঃঃ নিজেকে ওখানে শপে দিতে ইচ্ছা করে।
|
আলোঃঃ আমি বাঁধা দেইনি।
|
আলোর কথা শুনে ভোর আলোর চোখের দিকে তাঁকায়। তাঁকিয়ে থাকতে থাকতে আলোর ঠোঁটের দিকে আবারও নজর যায়। নিজের কন্ট্রোল ভোর শেষমেষ হারিয়ে ফেলে। নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় আলোর ঠোঁটে।
|
কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দেয় ভোর। ছেড়ে দিয়ে আলোর দিকে তাঁকায়… আলো বেশ লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাঁকিয়ে থাকে।
|
ভোরঃঃ মেয়েটাকে লজ্জা পেলে এতো সুন্দর ইশশশশ। (মনে মনে)
|
আলোঃঃ লোকটা বলে এই ভালোবাসি না.. এই কাছে আসে.. সেবা করে.. আবার ডিভোর্স দিতে চায়.. উফফফ বুঝিনা তারে। ((মনে মনে))
|
ভোরঃঃ এতো লজ্জা না পাওয়ার কি আছে?? আজ তো প্রথম না যে কিস করেছি। কিস বাদে তো আরও অনেক কিছু করেছি তাই না?
|
আলোঃঃ বেহায়া। লজ্জা নারীর ভূষণ। সরুন শুবো। ((মুখ ভেংচি কেটে))
|
ভোরঃঃ কাছে আসলে দূরে সরিয়ে দেন। আর না আসলে তখন ডাকেন। বাহ
|
আলোঃঃ পুরোপুরিভাবে আসবেন যেদিন ঐদিন আর সরিয়ে দিবো না।
|
ভোরঃঃ একটু একটু করে দূরে সরিয়ে দিলেই কিন্তু একটা সময় পুরোপুরিভাবে সরে যাবো।
|
আলোঃঃ দূরে সরিয়ে আমি রাখি না। রাখেন আপনি। আপনি নিজেকে চেঞ্জ করুন আগে।
|
ভোরঃঃ চেঞ্জ? মাঝে মাঝে আপনার কার্যকলাপগুলো মনে পড়ে যায় আর তার ফলেই দূরে সরিয়ে রাখা। থাক এখন ওগুলো মনে করতে চাই না। আপনি শুয়ে পড়ুন।
|
বলে ভোর বেডের অন্যপাশে গিয়ে বসলো আর আলো শুয়ে পড়লো। আলোর শুয়ে পড়া দেখে ভোরও শুয়ে পড়লো। আলো ভোরের দিকে তাঁকিয়ে রইল আর ভোরও।
|
তাঁকিয়ে থাকতে থাকতে একটা সময় ভোর আলোর বুকের ভিতর মুখ গুঁজে আলোকে জড়িয়ে ধরে গুটিসুটি মেরে রইল।
|
ভোর এভাবে আলোকে জড়িয়ে ধরবে আলো তাতে একটুও প্রস্তুত ছিলো না। আলো শকড খেলো ভোরের এমন কাজে। আলো ওর একটা হাত দিয়ে ভোরের চুলের ভিতর হাত দিয়ে বিলি কাটতে লাগলো আর অন্য হাত দিয়ে নিজের চোখের পানি মুছতে লাগলো। আলো ফিল করতে লাগলো আলো ভোরকে ভালোবেসে ফেলেছে আর সেটা তীব্রভাবে।
|
হঠাৎ…..
আলোঃঃ আপনি আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরেছেন এটা কি ঠিক হচ্ছে?
|
ভোরঃঃ মানে? ((মাথা বুকে গুঁজে রেখেই))
|
আলোঃঃ যদি জেরিন জানতে পারে তাহলে তো আপনাকে ভুল বুঝবে।
|
ভোরের প্রচন্ড রাগ উঠলো তাই সোঁজা আলোর গলায় একটা কামড় দিলো।
|
আলোঃঃ আআআউচ.. আপনি কি রাক্ষস নাকি? ((ব্যথায় কাতর কন্ঠে))
|
ভোরঃঃ আর জেরিন জেরিন করলে খবর আছে। ((রাগী কন্ঠে))
|
আলোঃঃ তাই বলে এভাবে কামড় দিবেন? উহহ সরুন তো.. নিশ্চয়ই রক্ত বের হয়েছে। ((ভোরকে ধাক্কা দিয়ে))
|
ভোরঃঃ না রক্ত বের হয়নি তবে পরেরটা রক্ত বের হবে সিওর যদি আী উল্টাপাল্টা কিছএ বলেন তো। ((রাগীমুডে))
|
আলোঃঃ উফফফ সরুন। এক তো ব্যথা দিছেন তার উপর লেকচারবাজী। ((বিরক্তি মুডে))
|
ভোর আলোর গলার দিকে তাঁকিয়ে দেখে জায়টা পুরো রক্তাক্ত বর্ণ ধারন করছে। ভোর আবার গলার কাছে মুখ নিয়ে যেতে লাগলে আলো থামিয়ে দিয়ে…
|
আলোঃঃ সমস্যা কি? আবার কামড়াবেন? আমি কি চিকেন? নাকি বিফ? যে এভাবেই কামড়াবেন?
|
ভোর আলোর কথায় প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে আলোর হাত সরিয়ে দিয়ে সেই কামড়ের জায়গায় মুখটা দিয়ে দিলো।
|
আলোঃঃ প্লিজ আর কামড়াবেন না প্লিজ। আমি আর জেরিনের কথা বলবো না। আমি আর কখনো এসব মুখে আআআননন….. ((আলো থেমে যায়))
একি কি করছে উনি। এভাবে ভালোবাসায় ভাসাচ্ছে কেন? এতো আদর করছে করছে কেন কামড় দেওয়া জায়গায়। উফফ উনি কি বুঝেন না আমি প্রেগন্যান্ট। এসময় এমন ভালোবাসা দিয়ে কন্ট্রোল হারা করার কোনো মানে আছে? কীভাবে থামাই ওনাকে? পারছি না তো। উহহ ((মনে মনে))
|
কিছুক্ষণ পর….
ভোরঃঃ ব্যথা আছে? ((আলোর চোখে চোখ রেখে))
|
আলো মাথা নাড়িয়ে না বললো চোখ বন্ধ করে। লজ্জা মেয়েটা প্রান যাচ্ছে আর আসছে। নিঃশ্বাসে বুকটা বেশ ওঠা-নামা করছে।
|
ভোরঃঃ এতো লজ্জা কিসের? আমিই তো। ((মিটিমিটি হেসে))
|
আলোঃঃ উহুম চুপপপপ.. ((চোখ বন্ধ করে))
|
ভোরঃঃ ওকে চোখটা তো খোলো..
|
আলোঃঃ খোলো কেন? খুলুন হবে তো। ((চোখ বন্ধ করেই))
|
ভোরঃঃ আমার ইচ্ছা চোখ খোলো বলছি।
|
আলোঃঃ উহুম না…
|
ভোরঃঃ লজ্জা পাচ্ছো?
|
আলো মাথা ঝাঁকিয়ে হ্যাঁ বললো।
|
ভোরঃঃ তাহলে তো আরও লজ্জা দিতে হয়।
|
বলেই ভোর আলোর কামিজ সরিয়ে পেটে কান রাখলো।
আলো চুপ করে রইলো। বেশ কিছুক্ষন পর….
|
ভোরঃঃ ওহ মাই গড.. আলো কিক মেরেছে আমার বেবি। ((খুশিতে আত্মহারা হয়ে উচ্চস্বরে।))
|
আলোঃঃ প্রতিদিন ৮/৯টা কিক দেয়.. এটা আবার নতুন কি?((চোখ বন্ধ রেখে))
|
ভোরঃঃ আমি তো আজ প্রথম তোমার পেটে মাথা রাখলাম তাই আমার কাছে নতুন। হুহহহ
Hey my baby..how are you? i’m your papa..love you my princess..
|
আলোর পেটে একটা চুমু খেলো।
|
আলোঃঃ not princess.. এটা prince.. ok ((চোখ খুলে))
|
ভোরঃঃ না princess.. হুসসসসস।
|
আলোঃঃ না prince.
|
ভোরঃঃ ok ok.. ওকেি জিজ্ঞেস করি… যদি prince বলার সময় কিক দেয় তবে prince. আর princess বলার সময় দিলে princess… done?
|
আলোঃঃ ok done..
|
ভোর আলো পেটে মাথা রেখে…
|
ভোরঃঃ Hey baby… Are you prince?
|
একটুপর…
|
ভোরঃঃ Hey baby… Are you my princess??
|
ভোর princess বলার সাথে সাথেই বেবি কিক মারলো। আর ভোর সাথে আলোর দিকে তাঁকিয়ে…
|
ভোরঃঃ বলেছিলাম না আমার pprincess আছে এখানে। তুমি সবসময় বেশি বুঝো। হুসসস..
|
আলো মুখটা ভেংচি কেটে অন্যদিকে মুখটা ফিরিয়ে রাখলো। আর ভোর আবার পেটে মাথা রেখে….
|
ভোরঃঃ My princess আর মাত্র তিনটা মাস তারপর তোমাকে তোমার পাপার কাছে নিয়ে আসবো। সারাদিন পাপা আর তুমি। উম্মাহহহ এখন ঘুমাও।
|
আলোঃঃ যেমন পাপা তেমন তার মেয়ে। কতগুলো কিক মারলো। আমি যে ব্যথা পাই তার কোনো খেয়াল আছে? নাই।
|
ভোরঃঃ একদম আমার বেবিকে কিছু বলবা না।
|
আলোঃঃ এবার তো একটু কামিজটা নামান। ((রাগীমুডে))
|
ভোরঃঃ ওহ হ্যাঁ….
|
কামিজটা নামিয়ে….
|
ভোরঃঃ চলো গোসল করবে।
|
আলোঃঃ তুমিটা কতসময় থাকবে?
|
ভোরঃঃ জানিনা। চলো….
|
আলো আর কিছু বললো না। ভোর আলোকে উঠিয়ে ওয়াশরুমে দিয়ে এলো। আলো গোসল করে বের হলো। ভোর আলোকে ধরে এনে বেডে বসিয়ে আলোর মাথাটা মুছে দিচ্ছে। আর আলো ভোরের দিকে তাকিয়ে আছে। আলোর তাকিয়ে থাকা দেখে…
|
ভোরঃঃ এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে? সবটাই বেবির জন্য।
|
আলোঃঃ হুমমম…
|
ভোরের এমন কথা শুনে আলোর বুকের ভিতরটা কেঁদে উঠলো। চোখে পানি টলমল করছে। ভোরের স্পর্শ আলোর একদম ভালো লাগছে না তাই টাওয়ালটা ভোরের হাত থেকে নিয়ে…..
|
আলোঃঃ আমি নিজেই মুছতে পারবো। এখনো তেমন উইক হয়ে পড়িনি। ((টুপ করে চোখের পানিগুলো পড়ে গেলো))
|
ভোরঃঃ বেবি না আশা পর্যন্ত আপনি কিছু করবেন না। এটাই শেষ কথা।
|
আলোর হাত থেকে টাওয়ালটা নিয়ে আবার মাথা মুছতে শুরু করলো।
|
ভোরঃঃ পরশু বাড়িতে কিছু লোকজন আসবে। তাদের দুপুরে দাওয়াত।
|
আলোঃঃ কারা আসবে?
|
ভোরঃঃ আমার কিছু আত্মীয়-স্বজন… বন্ধু-বান্ধব এই আর কি।
|
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share


আলোঃঃ কিসের জন্য তাদের ইনভাইট করেছেন?
|
ভোরঃঃ আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই। আপনি রেডি থাকবেন শাড়ী পড়ে।
|
আলোঃঃ আমি রেডি হবো কি করে? আর এ অবস্থায় শাড়ী পড়বো কি করে? ((মলিন মুখে))
|
ভোরঃঃ সে দেখা যাবে। চলুন লাঞ্চ করবেন।
|
আলোঃঃ আপনি গোসল করে আসুন। একসাথে খাবো।
|
ভোরঃঃ পড়ে। আপনি আগে খেয়ে নিবেন। আপনার মেডিসিনের সময় হয়েছে।
|
আলোঃঃ গোসলে যেতে বলছি শুনেননি? ((রাগীমুডে))
|
ভোরঃঃ যাচ্ছি যাচ্ছি। উত্তেজিত হবেন না। এসময় উত্তেজিত হলে প্রব্লেম। যাচ্ছি আমি।
|
আলোঃঃ হুম যান।
|
ভোর তাড়াতাড়ি করে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লো। ১০মিনিট পর বের হলো একটা টাওয়াল পড়ে আর চুল দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। ভোরের সেদিকে খেয়াল নেই। ভোর এসেই আলোকে কোলে তুলে নিলো আর আলো চিৎকার দিয়ে….
|
আলোঃঃ আপনি এভাবে? শুধু টাওয়াল পড়ে? নিচে সার্ভেন্ট আছে। আর আপনার চুলের পানিতে তে আমি ভিজেই যাচ্ছি। নামান আমাকে কোল থেকে। ((রাগীমুডে))
|
ভোরঃঃ তো কি হইছে এভাবে গেলে। আর তোমার ওড়না দিয়ে মুছে দাও আমার মাথা।
|
আলোঃঃ আমি নামাতে বলেছি কোল থেকে।
|
আলোর রাগীমুডের কথা শুনে ভোর আলোকে সোফায় বসিয়ে দিলো।
|
আলোঃঃ নিচে বসুন…
|
ভোর বসে পড়লো। আলো ওড়না দিয়ে ভোরের মাথা মুছে দিলো। ভোর মাথাটা উঁচু করে আলোর মুখের উপর পানির ফোঁটাগুলো নিজের মুখ দিয়ে মুছে দিলো। চলো আবার ভোরের মুখ মুছে দিলো।
|
আলোঃঃ যান চেঞ্জ করে আসুন।
|
ভোরঃঃ পরে… অনেক লেট হয়ে গেছে। তোমার খেতপ হবে এখনি।
|
আলোঃঃ নিচের সার্ভেন্ট তো তিনজন মেয়ে আছে। তাদের দেখাবেন আপনার বডি? (অগ্নিচোখে)
|
ভোর নিজের দিকে তাঁকিয়ে…
ভোরঃঃ দেখলে কি প্রব্লেম? এমন সুন্দর একটা বডি কি শুধু তুমি দেখবে? আর কেউ দেখবে না? হুহহহ
|
আলোঃঃ আজ আমি কোনো কিছু খাবো না। যদি জোর করেন তো খবর আছে বলে দিলাম।
|
ভোরঃঃ উফফফফ সরি। যাচ্ছি চেঞ্জ করতে। আমার বেবি না আসা পর্যন্ত আমার স্বাধীনতা মরে গেছে।
|
আলো গুম মেরে বসে থাকে। ভোর চেঞ্জ করে এসে আলোকে কোলে নিতে যায়…
|
আলোঃঃ কোলে নিতে হবে না। আমি হেঁটে যেতে পারব। আপনি একটু ধরলেই হবে। ভোর কিছু না বলে আলোর হাত ধরে নিয়ে গেলো।
|
|
|
চলবে……………..
((ভুল-ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। ধন্যবাদ ?))

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে