?ভোর? পর্বঃ ১৪।
লেখিকাঃ আয়sHa?
|
|
আলোর এখন ৬মাস চলে প্রেগন্যান্সির। হাটতে চলতে এখন ভালোই অসুবিধা হয় আলোর। সার্ভেন্ট দু’জন ছায়ার মতো আলোর পাশেই থাকে।
|
আলোর অনিচ্ছা সত্ত্বেও আলো জোরপূর্বক খাবার খায়… ঘুমায়.. তবুও মেয়েটার চোখের নিচে দাগ পড়ে গিয়েছে। চেহারাতে মলিন ভাব। কালো মেয়েটাকে এখন আরো বেশি কালো দেখায়। সপ্তাহে একদিন আলোর বাবা-মা আলোকে দেখে যায়। আলোর দিন এভাবে বিষণ্ণতার ভিতরই যাচ্ছিলো।
|
এখন রাত প্রায় ৩টা ছুঁই ছুঁই। আলোর পানি পিপাসা লেগেছে তাই পানি খাওয়ার জন্য উঠে বসে। টেবিল ল্যাম্পটা জ্বালিয়ে পানির বোতলটা হাতে নিয়ে দেখে পানি নেই। মনে হয় সার্ভেন্টরা ভুলে আজ পানি রাখতে ভুলে গিয়েছে। এখন সার্ভেন্টদের কল করে নিজের রুমে ডাকতেও আলোর ইচ্ছা করলো না তাই আলো নিজেই উঠে পানি আনার জন্য রুম থেকে বের হলো। সিঁড়ি বেয়ে নিচে গেলো… পানি খেয়ে বোতলে পানি ভরে আসছিলো সিঁড়ির কাছে। তখনই পায়ের সাথে আলোর নাইটিটা বেঁধে আলো পড়ে যাচ্ছিলো কিন্তু ভোর কোথা থেকে এসে আলোকে ধরে ফেলে। আলোর হাতের পানির বোতলটা গিয়ে সিঁড়িতে পড়ে বোতলটা ভেঙ্গে যায়। ভোর আলোকে না ধরলে আলো সোঁজা গিয়ে সিঁড়ির উপর পড়তো আর তখন বড়সড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটে যেতো কিন্তু আল্লাহ বাঁচিয়েছে.. ভোরকে পাঠিয়ে।
|
আলো ভয়ে চোখ বুঝে ছিলো।চোখ খুলে দেখে ভোর ওর দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে। আলো কিছু বলতে যাবে তার আগেই ভোর আলোকে দাঁড় করিয়ে চিৎকার করে সার্ভেন্টদের ডাকলো। ভোরের এক চিৎকারে সব সার্ভেন্ট হাজির। ভোর দুজনকে বললো…
|
ভোরঃঃ সিঁড়ি এখনি পরিষ্কার চাই।
|
তাড়াতাড়ি তারা সিঁড়ি পরিষ্কারের জন্য চলে গেলো। তারপর আলোর জন্য যে সার্ভেন্টদের রাখা হয়েছিলো তাদের উদ্দেশ্য বললো….
|
ভোরঃঃ আপনাদের রাখা হয়েছে কেন?
|
সার্ভেন্টঃঃ ম্যামের দেখাশুনা করার জন্য। ((নিচের দিকে তাঁকিয়ে))
|
ভোরঃঃ তাহলে ম্যাম এতরাতে নিচে পানির জন্য এসেছে কেন? ম্যামের রুমে পানি ছিলো না কেন? ((উচ্চস্বরে))
|
ভোরের রাগী কন্ঠে উচ্চস্বরের কথা শুনে আলোসহ সবাই কেঁপে উঠে…
|
ভোরঃঃ আপনাদের ধারনা আছে কোনো কতবড় বিপদ হতে পারতো? আমি যদি না আসতাম আর যদি না ধরতাম তাকে কত বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতো আইডিয়া আছে আপনাদের??
|
সার্ভেন্টঃঃ স্যার ম্যাম তো আমাদের কল করতে পারতো কিন্তু কল করেনি। ((নিচুস্বরে ভয়ে ভয়ে))
|
আলোর দিকে এবার ভোর তাঁকালো। আলো সাথে সাথে মাথা নিচু করে ফেললো।
|
ভোরঃঃ তার রুমে পানি থাকবে না কেন? এতো কেয়ারলেস লোকজন আমার দরকার নাই।
|
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
বলেই ভোর উপরে উঠে গেলো। ২মিনিট পর নিচে এসে সার্ভেন্টদের হাতে টাকা ধরিয়ে দিয়ে……
|
ভোরঃঃ সকালে যেন আপনাদের দুজনের মুখ না দেখি। Get lost…
|
বলে আলোকে কোলে তুলে নেয়। আলো বেশ অবাক হয়। তাঁকিয়ে থাকে ভোরের দিকে। ভোর আলোকে কোলে নিয়ে উপরে উঠে আসে। বেডরুমে নিয়ে গিয়ে আলোকে বেডে বসিয়ে আলোর সামনে বসে….
|
ভোরঃঃ আপনি কি চান? কি চান একটু বলবেন? আমাকে টেনশন দেন কেন? আপনার পানি পিপাসা লেগেছে আপনি সার্ভেন্টদের কল দেননি কেন? একা একা কেন গেলেন? আজ যদি আপনার কিছু হয়ে যেতো তখন? তখন কি হতো একবারও ভেবে দেখেছেন? ঐ বোতল ভাঙার কাঁচগুলো সব আপনার শরীলে গেঁথে যেতো। এতটা কেয়ারলেস কেন? আর এই নাইটিও এতো লম্বা পড়তে কে বলছে আপনাকে? সব দোষ এই নাইটির। এই নাইটি যেন আর না পড়তে দেখি। শর্ট শর্ট নাইটি পড়বেন। নাহ এই নাইটি এখনি কেটে ছোট করে দিবো। আর দুই অপদার্থ.. এক বোতল পানি রাখতে ভুলে গিয়েছে.. যতসব।
|
ভোর উঠে একটা কাচি এনে আলোর নাইটি ধরে নিচের দিকে কাটতে নিলে আলো ভোরের হাত ধরে থামিয়ে দেয়….
|
ভোরঃঃ কি? কাটতে দিন…
|
আলো কিছু না বলে ভোরের হাত থেকে কাচিটা নিয়ে ছুড়ে সোফাতে ফেলে দিলো। তা দেখে…
|
ভোরঃঃ ওটা ফেললেন কেন?
|
আলো কিছু না বলে ভোরের একটু কাছে গিয়ে ভোরের মাথাটা কাছে টেনে দুহাত দিয়ে ধরে ভোরের ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। ভোরও রেসপন্স করলো।
|
প্রায় ৫মিনিট পর আলো ছেড়ে দিলো। ভোরও একটু দূরে সরে গেলো। অনেকক্ষণ পর নিরবতা ভেঙ্গে আলো বললো…
|
আলোঃঃ সার্ভেন্ট কি আবার aappoint করবেন?
|
ভোরঃঃ না। এদের দিয়ে ভরসা উঠে গেছে।
|
আলোঃঃ তাহলে????
|
ভোরঃঃ আমি কি মরে গেছি? আমার বেবির জন্য আমিই একশো। ভুল করছি এতমাস এদের উপর ভরসা করে। আর না।
|
আলোঃঃ অফিস??
|
ভোরঃঃ সব বাদ। বেবি না আসা পর্যন্ত আর অফিসে যাবো না। দরকার হলে বাসায় ডেকে নিবো অনেক ইম্পরট্যান্ট কিছু হলে। আর আমার পি.এ. মিস জেরিনকে বলবো সব সামলাতে।
|
আলোঃঃ আপনার পি.এ. মেয়ে?? ((সন্দেহজনক দৃষ্টি))
|
ভোরঃঃ হ্যাঁ। সেই ৪বছর ধরে। সে আমার বন্ধুর মতোও। ভালো মেয়েটা।
|
আলোঃঃ সুন্দরী?
|
ভোরঃঃ হ্যাঁ তাতো অবশ্যই।
|
আলোঃঃ অফিস মিস না করার মূল কারন তাহলে এটাই আর আমাকে আবার ভালো না বাসারও। এবং কি ডিভোর্স দেওয়ার কারনও।
|
ভোরঃঃ মানে? কি বলতে চান?
|
আলোঃঃ মানেটা সিম্পিল… সে সুন্দরী তাকে নিয়ে সারাজীবন কাটাবেন এটা বললেই পারতেন। আপনার মেয়ে আগে থেকে ঠিক করা আছে এ কথা আমাকে বললে কি আমি না করতাম? ফাও এই সেই অজুহাত দেখালেন। এগুলো না করলেই পারতেন। আপনারা সুখী হোন। আর অফিস অফ দিতে হবে না। সে বা আপনি কেউ কাউকে না দেখে থাকুন আমার জন্য এরা আমি চাই না।
|
ভোরঃঃ মানে কি? এসব ফালতু কথা বলছো কেন? ((রাগীমুডে))
|
আলোঃঃ Not তুমি.. Say আপনি।
|
বলে বেড থেকে নেমে যাচ্ছিলো।
|
ভোরঃঃ নামছো কেন?
|
আলোঃঃ বেলকনিতে যাবো। ভালো লাগছে না।
|
ভোরঃঃ কোথাও যাওয়া যাবে না শুয়ে পড়ো।
|
বলে ভোর উঠে অন্যপাশে গিয়ে শুয়ে পড়লো।
|
আলোঃঃ আপনি এখানে শুয়ে পড়লেন কেন?
|
ভোরঃঃ আজ থেকে এখানে ঘুমাবো যতদিন না আমার বেবি আসে। শুয়ে পড়ো।
|
আলোঃঃ আপনার জেরিন জানলে সমস্যা হবে।
|
ভোরঃঃ Shut up stupid. আর একটা ফালতু কথা শুনলে এক চড় বসিয়ে দিবো। চুপচাপ শুয়ে পড়ো।
|
আলো ভোরের ঝাড়ি খেয়ে চুপ করে শুয়ে পড়লো অন্যপাশ ফিরে।
|
ঘুমের ঘোরে আলো ভোরের বুকের উপর মাথাটা দিয়ে দিলো। ভোর চোখ খুলে দেখে একটা মুচকি হাসি দিয়ে আলোর কপালে একটা চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো।
|
|
|
চলবে………..
|