?ভোর? পর্বঃ ০১।

0
2568

?ভোর? পর্বঃ ০১।
লেখিকাঃ আয়sha?

ঃঃ—— মিস্টার ভোর চৌধুরী আপনি একটা চিটার.. একটা ঠগবাজ.. একটা প্রতারক.. একটা মিথ্যাবাদী.. আমার কি দোষ ছিলো বলুন? কি দোষ আমি করেছিলাম বলুন? কেন আমার মনটা নিয়ে খেললেন কেন? কেন আমার বিশ্বাস নিয়ে দিনের পর দিন খেললেন? কেন? কেন? কেন?
|
আলো ভোরের কলারটা চেপে ধরে কেঁদে কেঁদে জোরে জোরে চিল্লিয়ে বললো। ভোর চুপ করে দাঁড়িয়ে শুনছে কোনো উত্তর দিচ্ছে না। দিবে কি করে? কোনো উত্তর যে নাই ভোরের কাছে।
|
আলো ভোরের কলারটা ছেড়ে দিয়ে বেডে গিয়ে বসে হাঁটু ভাজ করে হাঁটুর উপর মাথা দিয়ে কান্না করতে লাগলো আর ভোর বেলকনিতে চলে গেলো।
|
আজ ভোর আর আলোর বাসর রাত। বিয়েটা দুজনের ইচ্ছাতেই হয়েছে। দুজনের মতেই হয়েছে আর ভালোবেসেই হয়েছে। ভালোবেসে হলে তাহলে এমন কেন হলো এটাই ভাববার বিষয় তাই না? আসলে….
|
ভোর মানে ভোর চৌধুরী একা। ভোরের মা সেই ছোটবেলায় মারা গেছে। ভোরের লেখাপড়ার জন্য ভোরের বাবা ভোরকে ছোটবেলাতেই বিদেশে পাঠিয়ে দেয়। ভোরের বাবাও পাঁচ বছর আগে মারা যান। সেই থেকে ভোর সব বিজনেসের দেখাশোনা আর লেখাপড়া দুটো একসাথেই করে। আর আলো? আলোর বাবা-মা সবই আছে। আলো বাবা-মা’র একমাত্র আদরের সন্তান। তাদের মেয়ে ভোরকে বিয়ে করতে রাজি তাই তারাও না করেনি। মেয়ের পছন্দই তাদের পছন্দ। আর ভোরকে দেখে কেনই বা অপছন্দ হবে??
সুঠাম দেহের অধিকারী।লম্বা… স্মার্ট… গায়ের রং যেন দুধে হলুদ… চোখ দুটো বেশ দীঘল.. যে কেউ ঐ চোখের গভীরে বার বার প্রেমে পড়বে.. হয়তো ঐ চোখের দিকে তাঁকিয়ে অনন্তকাল পার করাও যাবে অনায়াসে… সবাই বলে মেয়েদের চোখ নাকি মায়ার জাল হয়.. অনেক কবি গুরুরা বলে গেছেন মেয়েদের চোখের মায়ায় অনন্তকাল পার করা যায় কিন্তু কিছু ছেলের চোখ যে মায়া তাতেও অনন্তকাল পার করা যায়। ঠিক ভোরের চোখ দুটোও ওমন মায়ার জাল। আর ঠোঁট জোড়া যেন রক্তাক্ত জবা।চুল গুলো যেন প্রতি মুহূর্তে ঢেউ খেলে কালোবনে। প্রশস্ত বুকটাতে যেন হাজার বছর ধরে মাথা রেখে ঘুমিয়ে থাকা যায়। বাহুডোরে ঘনঘন আবদ্ধ হতে যেন বার বারই অজুহাতের মেলাবন খু্ঁজতে হবে। ভালো চরিত্রের অধিকারী। এমন ছেলে যে তাদের মেয়েকে বিয়ে করতে চেয়েছি তাদের কি আপত্তি করা সাঁজে? উহুম সাঁজে না। তাই তারাও আপত্তি করে নি। এদিকে আলো? আলো সে তো কালো কাঁশবনের অধিকারী। কালো বর্ন তার। কিন্তু সেও ভোরের থেকে কম মায়ার অধিকারী না বরং বেশিই। তাই তো ভোর এই মায়ার রানীকে পুরোপুরিভাবে নিজের করে নিতে মিথ্যের পাহাড় তৈরী করেছিলো কিন্তু ভোর ভুলে গিয়েছিলো মিথ্যের দেয়াল ভেঙ্গে গেলে তৈরী হয় দুঃখ..অশান্তির..অবিশ্বাসের দেয়াল।
|
ভোর দিন দিন এই মিথ্যার সাথে যুদ্ধ করেছিলো কিন্তু মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলো আলোকে বিয়ের পর বলবে সব সত্য। কেন যেন ভোরের খুব গিল্টি ফিল হচ্ছিলো যে.. নতুন জীবনের পথ চলা কি মিথ্যে দিয়ে শুরু করবে? তাই ভোর ডিসিশন নিলো.. না বাসর রাতেই আলোকে সব সত্য বলে দিবে। আর বলেও দিলো। কিন্তু মিথ্যাবাদী উপাধী পেল আলোর কাছ থেকে। পাবে নাই বা কেন? আজ ৩টা মাস যে আলোকে মিথ্যা বলেই যাচ্ছে। মেয়েটাও তো ভোরের সব কথা সত্যি মনে করে ভোরকে আপন করে নিয়েছিলো। আজ যে একবারে ধ্বসে পড়লো সেই বিশ্বাসের পাহাড়।
|
ভোর বেলকনি থেকে রুমে এলো। রুমে এসে দেখে আলো এখনো মাথা নিচু করে কাঁদছে।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

ভোরঃঃ আলো? ((করুন কন্ঠে))
|
আলো আস্তে করে মাথা তুলে নিচের ফ্লোরের দিক তাঁকিয়ে রইল….
|
ভোরঃঃ আলো… আমি যা করেছি সবটা তোমাকে পাবার জন্য। প্লিজ আলো আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লীজ আলো প্লীজ…((অনুশোচনার কন্ঠে))
|
আলোঃঃ I want to divorce.. ((নিস্তব্ধ কন্ঠে))
|
ভোর হতাশা হয়ে আলোর সামনে হাঁটুগেরে বসে আলোর হাত দুটো ধরলো। আলো সাথে সাথে হাত দুটো নিজের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে….
|
আলোঃঃ Don’t touch me… Do you hear me? Don’t touch me.. Don’t..((চিল্লিয়ে))
|
ভোরঃঃ ও ও ওকে… কিন্তু তুমি কি বলছো এগুলা? divorce? divorce কি হ্যাঁ divorce কি? আজই তো আমাদের বিয়ে হলো। তুমি কি বলো এগুলা? (( দিশেহারা হয়ে))
|
আলোঃঃ আমি কোনো মিথ্যাবাদীর সাথে সারাজীবন কাটাতে পারব না। ((ভোরের চোখে চোখ রেখে))
|
ভোরঃঃ আমি ভুল করেছি বললাম তো আমি ভুল করেছি। আচ্ছা এই মিথ্যার জন্য তুমি আমাকে যা শাস্তি দিবে আমি মেনে নিবো তবুও তুমি এসব divorce এর কথা বলো না। আমি তোমাকে ছাড়া নিঃশ্ব হয়ে যাবো। ((কাঁদতে কাঁদতে))
|
আলোঃঃ কোনো মিথ্যাবাদীর জন্য আমার মনের জায়গা মরে গেছে। ((কঠিন কন্ঠে))
|
ভোরঃঃ এই মেয়ে এই… বললাম তো ভুল হয়ে গেছে। আমাকে শাস্তি দাও তবুও এসব বলো না। আমি মরে যাবে।
|
আলোঃঃ আমি রিহামকে ভালোবাসি আপনাকে না। আমি রিহামকে খুঁজে বের করব যেকোনো মূল্য। আমি আপনার ছায়াও দেখতে চাই না। আমার থেকে সরুন। ((গম্ভীর কন্ঠে))
|
বলেই আলো বেডে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো। ভোর উঠে আলোকে টেনে তুলে বসালো। আলোর বাহু শক্ত করে চেপে ধরে…..
|
ভোরঃঃ তোর আমাকে ভালোবাসতে হবে না।শুনছিস? তোর আমাকে ভালেবাসতে হবে না। তুই আমার লিগেল ওয়াইফ। পবিত্র কোরআনের বানী পড়ে তোকে বিয়ে করেছি। তুইও মন থেকে বিয়ে করেছিস। তোকে পাবার জন্য তো আমি এই মিথ্যা অভিনয় করেছি শুধুমাত্র তোকে পাবার জন্য। ((অগ্নিদৃষ্টিতে))
|
আলোঃঃ আমার লাগছে ছাড়ুন। আমি আপনাকে কোনদিন স্বামী হিসেবে মেনে নিবো না। আমি কাল সকালেই আমার বাসায় চলে যাবো। আপনাকে divorce দিয়ে আমি রিহামকে বিয়ে করব আমি শুধু রিহামের…((চিল্লিয়ে))
|
ভোরঃঃ তুই আমাকে ছেড়ে চলে যাবি?((চিল্লিয়ে))
|
আলোঃঃ হ্যাঁ হ্যাঁ চলে যাবো।
|
ভোরঃঃ কীভাবে যাস আমাকে ছেড়ে আমিও দেখবো। তোরে নিজের করে ছাড়ব।((রাগী কণ্ঠে))
|
বলেই ভোর আলোকে ধাকা দিয়ে শোয়ালো আর ভোর আলোর উপর ঝুঁকলো…
|
আলোঃঃ আআআপনি প্লীজ এএএসব করবেন না প্লীজ.. ((কান্না করতে করতে))
|
ভোরঃঃ সরি আলো। আমার আর কোনো উপায় নেই তোমাকে নিজেড করে রাখা।
|
আলোঃঃ আমার সর্বনাশ করবেন না পিইইইইইই……
|
আর বলতে পারলো না আলো। ভোর আলোর ঠোঁট জোরা দখল করে নিলো। তারপর আলোর উপর নিজের অধিকার ফলাতে শুরু করলো। আলো নিজের সর্বোচ্চ শক্তি ভোরকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ধাক্কাছে কিন্তু এমন তরতাজা সুঠাম দেহের অধকারী পুরুষ শক্তির কাছে আলোর শক্তি হেরে গেলো আর ফলস্বরূপ চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে। ভোরও জীদ…রাগ.. হারানোর ভয়ে এমন স্টেপ নিতে বাধ্য হলো। ভোর কখনোই চায়নি ও আলোকে এমন নিজের করে নিবে? কিন্তু ভোরও নিরুপায়। ভোর জানে আলো রিহামকে ঠিক খুঁজে বের করবে। কিন্তু ভোর চায় না আলো ওকে ছেড়ে যাক!!
|
রাত এখন ৩টা… আলো শাড়ীটা পেঁচিয়ে কাঁদছে হাঁটুগেরে বসে। আর ভোর অপরাধীর মতো পাশে শুয়ে অন্যদিকে ফিরে নিস্তব্ধে চোখের পানি ঝাড়াচ্ছে আর মনে মনে বলছে….
|
ভোরঃঃ ক্ষমা করে দিও আলো। আমার আর লোনো উপায় ছিলো না। তুমি আমার সসম্পত্তি। তাই তোমাকে সারাজীবন নিজের করে নিতে আরও নিচে দরকার হলে নামবে ভোর চৌধুরী। দরকার হলে কঠিন হবো… অনেক ভালোবাসবো.. তবুও তোমাকে আমার করে ছাড়বো। I’m helpless….
|
ভোর চোখ দুটো মুছে আলোর দিকে ফিরে আলোর হাত ধরে হ্যাঁচকা টান দিয়ে নিজের বুকের উপর আলোর মাথাটা নিলো…
|
ভোরঃঃ নড়াচড়া করো না। আমাকে দ্বিতীয়বার এমন কিছু করতে বাধ্য করো না যাতে তুমি কষ্ট পাও? ((আলোর মাথা চেপে ধরে))
|
আলোঃঃ আমি কোনো অমানুষের বুকে থাকতে চাই না।((নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা))
|
ভোরঃঃ ওকে….
|
বলেই উল্টো শুয়েই আলোর বুকে মাথা রাখল আর আলোকে আষ্টেপৃষ্ঠে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
|
ভোরঃঃ এবার ঠিক আছে??
|
আলোঃঃ আপনাকে আমার প্রচন্ড ঘৃণা করছে। আপনি একজন ধর্ষক। আপনার এই অত্যাচারের থেকে যদি আমি মরে যেতাম তাও ভালো ছিলো।((কান্না করতে করতে))
|
ভোরঃঃ হুম কিন্তু ধর্ষক না কারন তুমি আমার বিয়ে করা বৌ। তোমার উপর আমার ফুল অধিকার আছে।এখন থেকে তুমি মরতে পারবে না আর এই ঘৃণিত লোকটাই তোমার সবটা জুড়ে থাকবে তাি ডিয়ার কান্না অফ করো আমি ঘুমাবো। আর তুমিও ঘুমাও। কোনো শব্দ পেলে আমি অমানুষ আবার হতে দ্বিতীয়বার ভাববো না।
|
বলেই আলোর কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে আলোর বুকে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল। আর আলোও মুখ টিপে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লো।
|
|
|
চলবে…….
|

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে