হ্যাকারের_লুকোচুরি সিজন২ পর্ব-৪
“Now take rest, I’ll be in touch, if you need me, dial *66666#, I’ll call you and one thing, do not try to contact with anybody, please.”
রাফি মেসেজটা দেখে ফ্রেস হতে চলে যায়। ফিরে এসে জানালার দিকে মুখ করা চেয়ারটাতে বসে দেখতে থাকে শহরটাকে আর ভাবতে থাকে সামনে আর কি কি হতে চলেছে।
বেশ খিদে পেয়েছে রাফির। বাইরে গিয়ে কিছু খেয়ে নেয়া উচিত ভেবে তৈরী হয়ে নেয় রাফি। বাইরে রেষ্টুরেন্টে গিয়ে বসে রাফি। ভালোমন্দ অর্ডার করে খেতে বসে সে। খেতে খেতে মাফিয়া গার্লের কল পায় রাফি,
– where are you?
রাফি – আমি রেষ্টুরেন্টে, খেতে হবে না?
– ভালোমত খেয়ে নাও, আর খাওয়ার সুযোগ পাবে কি না তা উপরওয়ালাই জানে।
রাফির খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কি বলে এই মেয়ে!
রাফি – মানে!
– মার্সেনারী গ্রুপের প্রাইভেট নেটওয়ার্ক থেকে তোমার ডিটেলস ফরোয়ার্ড করা হচ্ছে একদল লোকাল গ্যাং এর কাছে।
রাফি – তো!
– লোকাল গ্যাং কোন দেশের লোকাল হতে পারে বলো তো?
রাফি – (কপালের ঘাম জমে গেছে) এখন আমি যে দেশের হোটেলে বসে খাবার খাচ্ছি?
– একদম ঠিক ধরেছো। সো জলদি জলদি খাওয়া শেষ করে ফেলো। আমি তোমার ফিরতি টিকিটের ব্যবস্থা করছি।
রাফি – মানে দেশে ফিরে আসতে হবে আমাকে!
– এটা ছাড়া আর কোন উপায় আছে কি!
রাফি – আছে। আমি আমার ট্রেনিং শেষ করবো। চোরের মত পালিয়ে বাঁচতে পারবো না আমি সারাজীবন।
– বোকার মত কথা বলো না রাফি। ওখানে তোমাকে শেষ করে গুম করে ফেলার জন্য পৃথিবীর অন্যতম কুক্ষ্যাত ভাড়াটে সৈনিকদল অপেক্ষা করছে যাদের একমাত্র উদ্দেশ্য হবে তোমাকে হত্যা করা।
রাফি – এভাবে কতদিন পালাবো আর কতদিন তুমি আমাকে সাহায্য করবে?
– …………….
রাফি – জবাব দাও! যদি তুমি না থাকতে তাহলে এতদিনে আমি এমনিতেই সাড়ে তিন হাত মাটির নীচে থাকতাম। এভাবে আর কত?
– তুমি ফ্রন্ট লাইনে এসে এমন একটা বিষগাছের গোড়ায় কুড়াল মেরেছো যারা সাইবার দুনিয়ার আগে থেকে এসবের সাথে জড়িত। তোমাকে খুজে বের করতে এদের কম্পিউটারের সাহায্য লাগববে না। ডাইরেক্টর স্যারের পরিনতি দেখেও কি তোমার ভয় হয় না। Real world is much more dangerous than cyber world. You just can’t logout from real world.
রাফি – তারপরও। আমি হাল ছেড়ে দিতে পারি না। তোমাকে কিছু সাহায্য করতে বলবো, করবে?
– বলেই দেখো?
রাফি – আমাকে নিরাপদে আমার ট্রেনিং সংস্থার হেডকোয়াটারে পৌছে দিতে পারবে?
– Difficult but not impossible. But the problem is, they’ll be waiting for you. The moment you touches that country, they’ll know and start hunting.
রাফি খাবার রেখে খাবারের বিল পে করে রুমের দিকে চলতে থাকলো।
রাফি – ( ভাবনাযুক্ত) এখন তাহলে কি করা উচিৎ! এভাবে পালাতে ইচ্ছা হচ্ছে না।
– you are a good man, Raffi. But if you enter into that country, you are as good as dead.
রাফি – ফিরে আসা উচিৎ?
– For now, yes. You will get your opportunities again. Don’t risk your life.
রাফি – আচ্ছা ঠিক আছে। আমি দেশেই ফিরবো। আচ্ছা একটা প্রশ্ন, আমি প্রায় ৬ ঘন্টা হলো এই দেশে আছি, বাড়িতে জানানো দরকার, তাছাড়া আমাকে যদি অপরাধীরা খুজে না পায় তাহলে তো আমার পরিবারের জীবনও হুমকির মুখে পড়বে।
– তোমার স্ত্রী এবং বাবা মা এখনো তোমার কোয়ার্টারেই অবস্থান করছে। কোয়ার্টারের সিকিউরিটি যথেষ্ট ভালো এবং তোমার সুপারিশে ডাইরেক্টর স্যার অর্ডার করেছেন যেন তোমার পরিবারকে সম্পূর্ণ সুরক্ষা প্রদান করা হয়। আমার সাজেশন থাকবে তোমার ফ্যামিলি যেন কোয়ার্টারেই অবস্থান করে। it’s 70% safer than your home. Call them and tell them to stay. I’ll be in touch.
রাফি মাফিয়া গার্লের সাথে কথা শেষ করতে করতে রাফি রূমে পৌছে যায়। রুমে ঢুকে বাবাকে ফোন দেয় রাফি।
রাফি – হ্যালো, বাবা? আসসালামুআলাইকুম। কেমন আছেন?
বাবা – ( সবাইকে ডাকলেন) ওয়ালাইকুলুসসালাম। কি খবর বাবা? বিমান থেকে নেমেছিস কখন? সহীহ সালামত পৌছে গেছিস তো।
রাফি – বিমানে কিছু সমস্যা হয়েছে তাই গন্তব্যের আগেই ল্যান্ড করাতে হয়েছে।
বাবা – কি বলছিস! কোন সমস্যা হয় নি তো! তুই ঠিক আছিস তো।
রাফি – কিচ্ছু হয় নি আমার। আমি একদম ঠিক আছি। ওই বিমানে কোন এক যাত্রীর জন্য বিমানকে ইমার্জেন্সি ল্যান্ডিং করাতে হয়েছে। যাত্রীদেরকে আবার ফিরিয়ে আনা হচ্ছে দেশে। আমিও চলে আসতেছি তাদের সাথে।
বাবা – (কৌতুহলী) তুই কিছু লুকাচ্ছিস না তো রাফি?
রাফি – কি বলছো বাবা? লুকাতে যাবো কেন? ফিরে আসি তারপর জেরা কইরো মনমত।
বাবা – নাহ, আমার সন্দেহ হচ্ছে রাফি। নে তোর মায়ের সাথে কথা বল।
মা – হ্যালো রাফি? কিরে তোর বাবা কি সব বলছে রে? কি হয়েছে! তুই কোথায়? পৌছাস নি এখনো!
রাফি – (কপালে হাত দিয়ে) আরেহ, মা? আমি ঠিক আছি, কিচ্ছু হয় নি আমার। ফিরে আসতেছি। এসে সামনাসামনি কথা বলবো। এতো চিন্তা করো না।
মা – চিন্তা করবো না! কি একটা চাকরী নিলি! জীবনটাই কেমন এলোমেলো করে দিলো। তুই আয় তো, চলে আয় তো দেশে।
রাফি – (অট্ট হাসি দিতে দিতে) মা? কি যে সব বলছো না তুমি। আচ্ছা মা রাখছি।
মা – কিরে নিজের বৌয়ের কথা ভুলে গেলি? মেয়েটা মন মরা হয়ে আছে অথচ জানতেও চাইলি না ওর কথা?
রাফি – (মাথা চুলকাতে চুলকাতে) কি যে বলো না মা, আমি ফোন দিতাম তো ওকে, তুমি ফোন রাখলেই ফোন দিতাম।
মা – হয়েছে হয়েছে, কেন একবারেই কথা বলে নিলে কি এমন ক্ষতি হবে! এইতো বৌমা চলে এসেছে। নে কথা বল।
তোহা – হ্যালো?
রাফি – কি খবর? মন খারাপ নাকি?
তোহা – ( না সূচক) উহহুহ।
রাফি – তোমার নাকি মন খারাপ। দেখো, ক্যান্সেল হয়ে গেছে সব। চলে আসতেছি।
তোহা – (হ্যাঁ সূচক) হুউউ।
রাফি – আর হ্যাঁ, বাবা মা কে যেতে দিয়ো না আর ডাইরেক্টর স্যারকে বলে সিকিউরিটি কোয়ার্টারে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করো। আমি ফিরে এসে দেখছি সব।
তোহা – (হ্যাঁ সূচক) হুউউ।
রাফি – রাখছি তাহলে। ফিরতে হবে।
তোহা – সাবধানে ফিরে এসো।
রাফি – ফি আমানিল্লাহ।
রাফি ফোনটা রেখে দিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে নেয় রাফি।
ব্যাগ গোছানো শেষ হতে হতে মাফিয়া গার্লের ফোন চলে আসে।
– হোটেলে তোমার সময় শেষ রাফি। লোকাল গ্যাং তোমার ইয়োলো ক্যাবকে ট্রেস করতে পেরেছে। ক্যাবটির জিপিএস লোকেশন এখন তোমার হোটেলের পাশেই। আর লোকাল গ্যাং এর সদস্যদের ফোন লোকেশন তোমার হোটেলের আশেপাশে। তারা হয়তো পরিবেশ বুঝতে চাইছে হোটেলের। এখনই হোটেল থেকে বের হতে হবে তোমাকে। it’s now or never.
রাফি – আমি তৈরী।
– একটা খারাপ খবর আছে। হোটেলের সবকিছুই অফলাইন, অর্থাৎ আমি কিছুই করতে পারবো না। যা করার তোমাকেই করতে হবে। আমি ধারনা করতে পারি নি যে মার্সেনারী গ্রুপের লিংক এইদেশে এভাবে চলে আসবে ভাবি নি। রাফি, you are on your own.
রাফি – Should I thank you for this?
– good luck. Stay on the line.
রাফি ইয়ারবট কানে গুঁজে ব্যাকপ্যাক কাধে তুলে নেয়। জানালা দিয়ে হালকা উঁকি মারে। রাস্তায় ভালই মানুষজন আছে কিন্তু কে গ্যাং এর লোক আর কে না তা বুঝবে কিভাবে?
রাফি – কে গ্যাং এর লোক এটা বুঝবো কিভাবে?
– চিনে চিনে তুমি এই গোলকধাঁধা থেকে বের হতে পারবে না। সবার হাত থেকে পালিয়েই বের হতে হবে তোমাকে। সন্ধ্যা ও হয়ে এসেছে। ফায়ার এক্সিট, লিফট, শিড়ি কোনটাই ব্যবহার করতে পারবে না।
রাফি – সার্ভিস এলিভেটর? এটা তো ভাবনায় আনবে না তারা?
– affirmative, go for it. Good luck.
রাফি ফোনটা কেটে রুমের দরজা খোলে, মাথা বের করে উকি মারে। নাহ কেউ নেই। রাফি সার্ভিস এলিভেটর খুজতে থাকে। পেয়েও যায় কিন্তু হোটেল স্টাফ ছাড়া আর কেউ যাতে এটা ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য একসেস কার্ড প্রোটেকশন দেয়া রয়েছে। রাফি অন্য দিকে দৌড় দেবে তখনই সার্ভিস এলিভেটর খুলে যায়। একজন ক্লিনার তার ইকুইপমেন্ট নিয়ে এলিভেটর দিয়ে নামে। রাফি ঠায় দাড়ায় থাকে আর দোয়া করতে থাকা যেন ক্লিনার চোখের আড়াল হওয়ার আগে লিফটের দরজা বন্ধ না হয়ে যায়। ক্লিনার করিডোরে মোড় ঘুরতেই রাফি লিফটের দিকে দৌড় দেয়। লিফটের দরজা ততক্ষণে বন্ধ হতে শুরু করেছে। রাফি উপায় না দেখে দৌড়াতে দৌড়াতে নিজের ঘাড়ের ব্যাগ খুলে নেয় আর দরজার দিকে ছুড়ে মারে। দরজায় ব্যগটি আটকে যাওয়ায় দরজা আবারও খুলে যায়।
রাফি ভেতরে ঢুকে গ্রাউন্ড ফ্লোরের বাটন প্রেস করে। লিফট ৬য় ফ্লোরে আসার পর লিফট থেমে গেল। দরজা খুলতেই একজন হোটেল বয় কে দেখতে পেল। হোটেল বয় রাফিকে দেখে কপাল কুঁচকে তাকালো রাফির দিকে। রাফি হোটেল বয়ের ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন দেখে এতটুকু বুঝতে পারলো যে হোটেল বয় যথেষ্ট কনফিউজড এবং যে কোন মুহূর্তে চিৎকার দেবে। রাফি রিক্স নিতে চাইলো না। করিডোর ও একদম ফাঁকা। রাফি সুযোগ বুঝে ঝাপিয়ে পড়ে হোটেল বয়ের উপর। হোটেল বয়ের গলায় নিজের ডানহাত পেঁচিয়ে বাম হাত দিয়ে চেপে ধরে রাখে। কিছুক্ষণের ভেতরে হোটেল বয় অজ্ঞান হয়ে যায়। অবশেষে হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট ট্রেনিং এর কিছু কাজে লাগলো রাফির। হোটেল বয়ের একসেস কার্ডটি নিয়ে কাছাকাছি একটা রুমের লক খুলে ফেলে রাফি। হোটেল বয়ের বডিটা টেনে সেই ঘরে ঢুকিয়ে নেয়। নিজের শার্ট এক্সচেঞ্জ করে ফেলে হোটেল বয়ের সাথে।
হোটেল বয়কে রুমে রেখে রুমের বাইরে নো ডিস্টার্ব সাইন টানিয়ে দিয়ে রুম লক করে দেয় রাফি। ব্যাগ ঘাড়ে নিয়ে রওনা দেয় আবার সার্ভিস এলিভেটরের দিকে। এলিভেটর দিয়ে সরাসরি সার্ভিস রুমে চলে গেল রাফি। সেখানে হোটেলবয়, সার্ভিস ম্যান, সহ আরো অনেকে ছিলো। রাফি ঘাড় থেকে ব্যাগটা নামিয়ে যতটা সম্ভব মাথা নীচু রেখে ব্যাকডোর খুজতে থাকলো। রাফি যতদূর জানে, একজন হোটেল বয় অনডিউটিতে কোন পার্সোনাল ব্যাগ বহন করতে পারে না। তাই চেষ্টা করলো কারো নজরে না আসার। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত থাকায় রাফির দিকে কেউ নজর দিলো না। রাফি ব্যাকডোর দেখতে পায় কিন্তু সেটা করিডোরের অপরপ্রান্তে। সার্ভিস রুমের সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে ওই প্রান্তে যাওয়া অসম্ভব। রাফি আসে পাশে বড় পলিব্যাগ দেখতে পায়। একটা পলিব্যাগের ময়লা ফেলে দিয়ে সেই ব্যাগে নিজের ব্যাকপ্যাক ভরে নেয়। তারপর আরো কিছু ময়লার পলিব্যাগ কাধে তুলে মাথা যতটা সম্ভভব নীচু রেখে সার্ভিস এক্সিটের দিকে এগোতে থাকে রাফি। কোনপ্রকার ঝামেলা ছাড়াই রাফি পৌছে গেল সার্ভিস এক্সিটে কিন্তু সেখানে কেউ একজন রাফিকে আটকায়। হয়তো ফ্লোর ম্যানেজার। রাফির হার্টবিট বেড়ে যায়। এই বুঝি ধরা পরে যায়। ফ্লোর ম্যানেজার রাফির চেহারার বদলে পলিব্যাগে কি আছে তা নিয়ে বেশী ইন্টারেস্টেড। রাফির কাছে ৪ টা পলিব্যাগ ছিলো। ফ্লোর ম্যানেজার দুইটা ব্যগ চেক করলো। রাফি মনে মনে ভাবে এই বুঝি ধরা পড়ে গেলো, কারন পরের ব্যাগটা খুললেই রাফির ব্যাকপ্যাক দেখতে পাবে ফ্লোর ম্যানেজার। সৌভাগ্যক্রমে ফ্লোর ম্যানেজার অন্য দুইটা ব্যাগ চেক না করেই রাফিকে যেতে দেয়। রাফি যেন হাপ ছেড়ে বাঁচে। বাইরে এসে ডাস্টবিনে ময়লা ফেলে বাইরের পরিবেশ বোঝার চেষ্টা করে রাফি। হোটেল সামনের দিকটা যেমন জমকালো, পেছনের দিকটা ঠিক ততটাই সুনসান। রাফি পলিব্যাগ থেকে ব্যাকপ্যাক বের করে ঘাড়ে নেয়। চুপচাপ ওই সুনসান গলি দিয়ে বের হয়ে মেইন রাস্তার এসে পড়ে রাফি। একটা ট্যাক্সিকে সিগন্যাল দিয়ে দাঁড় করায় রাফি। এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ঠিক করে উঠে পড়ে ট্যাক্সিতে। এয়ারপোর্ট তো ঠিক করলো কিন্তু এখনো তো কিছুই ঠিক হয় নি আর দেশে ফেরার টিকিট ও কাটা হয় নি।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: <a href=”https://www.facebook.com/groups/golpopoka/”>https://www.facebook.com/groups/golpopoka/</a>
<a href=”http://এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে। আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার। আমাদের গল্পপোকা ফেসবুক গ্রুপের লিংক: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/”>
<img class=”size-full wp-image-24268 aligncenter” src=”https://golpopoka.com/wp-content/uploads/2020/03/20200313_200909.jpg” alt=”” width=”2560″ height=”2020″ /></a>
রাফি *66666# নাম্বারে ডায়াল করে যেমনটি মাফিয়া গার্ল বলেছিলো। কিছুক্ষণের মধ্যে মাফিয়া গার্ল ফোন করে,
– you are an excellent agent Raffi. Excellent work. I am arranging your way home.
রাফি – কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে হবে কিভাবে? আমি তো এখন এই দেশেও সেফ না।
– এয়ারপোর্ট এলাকায়ও তোমার ছবি ফরোয়ার্ড হওয়া মোবাইলের লোকেশন পাওয়া যাচ্ছে।
রাফি – (অবাক হয়ে) তুমি আমার ছবি ট্রাক করছো কিভাবে?
– আমি তোমার ছবির ডেসক্রিপশন ম্যাপ সেট করে রেখেছি, তোমার যে ছবি সার্কুলেট হয়েছে সেই ছবি যার যার মোববাইলে ফরোয়ার্ড হয়েছে বা কপি হয়েছে তাদের সবার লিষ্ট আমার স্ক্রিনে রয়েছে। আমি শুধুমাত্র তাদেরকেই ট্রাক করতে পারছি যারা ফোনে তোমার ছবিটা কপি অথবা ফরোয়ার্ড করে নিয়েছে। যদি কেউ হার্ডকপি করে নেয় অথবা নেটওয়ার্কের বাইরে থাকে তাহলে তাকে ট্রাক করা পসিবল নয়।
রাফি – এখন আমার কি করা উচিৎ। চোর পুলিশ খেলা হয়ে যাচ্ছে অনেকটা। পুলিশের কাছে যাওয়া উচিৎ?
– পুলিশকে কিভাবে বিশ্বাস করাবে যে কিছু লোক তোমার পিছু নিয়েছে?
রাফি – এখন কোথায় যাবো তাহলে? এই লোকাল গ্যাং তো আমার পেছনে কুকুরের মত লেগে আছে। আর তুমি যা বললে তাতে তো আমার এয়ারপোর্টে যাওয়াটাও নিরাপদ না।
– আমি একটা এড্রেস দিচ্ছি। সেখানে চলে যাও। সেখানে তোমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারবো আমি।
বলে মাফিয়া গার্ল একটা জিপিএস লোকেশন সেন্ড করে রাফিকে। আগেরবার এই ট্যাক্সিওয়ালাই রাফির হোটেল পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলো লোকাল গ্যাংদের। এবার আর সেই ভূল করতে রাজী না রাফি। ড্রাইভারকে দুই গলি আগের ঠিকানা দেয় রাফি। প্রথমদিকে ড্রাইভার রাজী না হলেও অতিরিক্ত টিপসের লোভ দিয়ে রাফি মানিয়ে নেয় ড্রাইভারকে।
– ঠিকানায় পৌছে আমায় জানাবে। আর হ্যাঁ আমি না বলা পর্যন্ত ঠিকানার মেইন গেটের সামনে যাবে না।
রাফি – আগে পৌছাই তো। তারপর জানাচ্ছি।
– Good luck.
রাফির কথামত ড্রাইভার রাফিকে দুই গলি আগে নামিয়ে দেয়। রাফি পায়ে হেটে জিপিএস লোকেশনের কাছাকাছি পৌছায়। কিন্তু রাফির ফোন দেয়ার আগেই মাফিয়া গার্ল ফোন দেয় রাফিকে,
– ওখানেই দাঁড়াও আমি Go বলার সাথে সাথে মেইন গেটের দিকে চলে যাবে। stay on the line …………..GO.
রাফি ডাইনে বায়ে না তাকিয়ে সোজা মেইন গেট বরাবর হাটতে থাকে। মেইন গেট আস্তে আস্তে খুলতে থাকে।
– Don’t stop, keep going.
রাফি গেটের সামনে এলে দেখলো ঠিক যতটুকু খুলেলে রাফি সহজে গেট দিয়ে ঢুকতে পারবে ঠিক ততটুকুই খোল গেটটি। রাফি ঢুকে গেলো গেটের ভেতর। রাফি ভেতরে ঢোকার পরপরই মেইন গেটটা লেগে গেল।
– you can relax now, এখানে তুমি নিরাপদ থাকবে।
তাড়াহুড়ায় রাফি প্রথমে ঠিকমত বাড়িটা দেখতে পায় নি। মাফিয়া গার্লের কথায় স্বস্তি পেয়ে রাফি চারদিকে ঘুরে দেখতে লাগলো। বিশাল প্রাচিলে ঘেরা আলিশান দুইতলা বাড়ি। দেখলেই বোঝা যাচ্ছে মর্ডান আর্কিটেকচারের ছোঁয়া। বাইরে থেকে কেউ দেখতে পারবে না এই প্রাচীরের ভেতর কি হচ্ছে। ছোটখাটো একটা দূর্গ বলা যায়।
রাফি – কার বাড়ি এটা।
– পৃথিবীর অন্যতম অস্ত্র ব্যবসায়ীর বাংলো এটি। পৃথিবীর সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে বাড়িটাতে। সবচেয়ে মজার ব্যপার হলো আমি এই বাড়ির সিকিউরিটি ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে পানির ট্যাপ পর্যন্ত কন্ট্রোল করতে পারবো।
রাফি – তুমি সব কন্ট্রোল করতে পারলে আমাকে চোরের মত এখানে ঢোকালে কেন।
– বাড়িটার সিকিউরিটি অনেক বেশী টাইট। সিকিউরিটি যদি কোন আনঅথরাইজড এন্ট্রি ডিটেক্ট করে তাহলে একটা সাইলেন্ট এ্যালার্ম ট্রিগার হবে যা ওই অস্ত্র ব্যবসায়ী এবং লোকাল পুলিশ দুইজনের কাছেই চলে যাবে। একবার সাইলেন্ট এ্যালার্ম ট্রিগার হলে তা আমি বন্ধ করতে পারবো না।
রাফি – তা কোথায় তোমার এই অস্ত্র ব্যবসায়ী।
– কোন এক দ্বীপে পার্টি করছে। তাকে নিয়ে তোমার না ভাবলেও চলবে।
রাফি কথা বলতে বলতে ঘরের দরজার দিকে পা বাড়াতেই মাফিয়া গার্ল বলে ওঠে,
– ওইদিকে নয়। বাড়ির পেছনের দিকে যাও।
রাফি বাড়ির ধার ঘেঁষে পেছনের দিকে যেতে থাকে। পুরো বাড়িতে সিসিটিভি, ইনফ্রারেড, মোশান সেন্সর লাগানো রয়েছে।
রাফি – এটা কি বাড়ি না আরকিছু, পুরা বাড়িতে সিসিটিভি, ইনফ্রারেড, মোশান সেন্সর লাগানো, এখনো কি এলার্ম বাজে নি!
– এগুলো এখন আমার নিয়ন্ত্রণে। আমি ভিডিওফিড রিপ্লেস করে দিয়েছি। তাই তুমি এখন সিসিটিভিতে একটা ভুত হয়ে আছো। যাইহোক গ্যারেজের সাইডের দরজার সামনে যাও।
রাফি সাইডের দরজা খুঁজে বের করে। বেশ বড় গ্যারাজ। কিছুক্ষণের মধ্যে খট করে দরজা আনলক হয়ে গেল। রাফি ভেতরে ঢুকে পুরোদন্তু অবাক হয়ে গেলো। গ্যারেজে বিশ্বের নামকরা দামী আর দ্রুতগতির গাড়ি সাজানো রয়েছে। প্রতিটা গাড়িই চোখ ধাঁধানো। রাফি কখনো এসব গাড়ি চোখে দেখবে ভাবতে পারে নি।
-গ্যারেজের অন্যপ্রান্তে যাও।
রাফি মাফিয়া গার্লের কথামত গ্যারেজের অন্যপ্রান্তে গেলো।
একটা ওল্ডফ্যাশন মাসল কার দেখতে পেলো রাফি।
– গাড়ির ভেতরে বসো। তারপর গাড়ির ব্রেক চেপে ধরো। যা ই হয়ে যাক ব্রেক ছাড়বে না।
রাফি তাই করলো, ভেতরে বসে গাড়ির ব্রেক চেপে ধরলো। কিছুক্ষণের মধ্যে একটা কাঁপুনি দিয়ে গাড়িটা মাটির নীচে তলাতে লাগলো। রাফি কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়লো।
– ভয়ের কারন নেই। এটা একটা এন্টিনিউক্রিয়ার বাংকারের লিফট। বাড়িতে আলো জ্বালালে কারো সন্দেহ হতে পারে, সেদিক থেকে বাংকার নিরাপদ।
রাফি আন্দাজ করলো প্রায় ১০ তলা গভীরে নেমে এসেছে সে। অবশেষে গাড়িটার তলানো থামলো। রাফি গাড়ি থেকে নামলে একটা মোটাসোটা টাইটেনিয়ামের দরজা দেখতে পায়। সামনে আসতে আসতে আনলক হয়ে যায় দরজাটি। কম করে হলেও প্রায় ২০ ইঞ্চি পুরু দরজাটা অটোমেটিক খুলে যায় রাফির সামনে। লাইইটগুলো জ্বলে উঠতে থাকে আর রাফির বিস্ময়ের স্তর বাড়তেই থাকে।