হৃদ মাঝারে পর্ব-০৫

0
472

#হৃদ_মাঝারে (পর্ব ৫)

ঘুম থেকে উঠেই রীতিমতো দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিল রাজন্যা | কোনরকমে হুড়োহুড়ি করে বাথরুমের কাজ সেরে এসেই হ্যান্ডব্যাগ গোছাতে শুরু করতে মালবিকা ধমক দিল,

– এই মেয়েটা! ব্রেকফাস্ট না করে বেরোবি না কিন্তু |পড়িয়ে বাড়ি ঢুকতে ঢুকতে বেলা হবে।
– ওরে বাবা! ব্রেকফাস্ট করার সময় হবেনা রে | অটো অটো করে ওই বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে অন্তত পঁয়ত্রিশ চল্লিশ মিনিট লাগবে | প্রথম দিনেই লেট করবো নাকি?

মালবিকা চোখ গরম করল,
– রাতেও খাস নি কিছু, এতবার করে ডাকলাম…
– বেশি করে বিস্কুট খেয়ে নেব

কফি আর চিনি কাপে দিয়ে ঘটঘট করে নাড়তে নাড়তে বিস্কুটের কৌটা থেকে এক খাবলা বিস্কুট বার করে নিল রাজন্যা | ওর দিকে তাকিয়ে ‘এই মেয়ের আর কিছু হবে না’ গোছের মাথা নেড়ে রণে ভঙ্গ দিল মালবিকা |

আগের দিন একটা উবের নিয়ে এসেছিল | আজ অটোয় এসে নির্দিষ্ট স্টপে নেমে গলি দিয়ে ঢুকে বাড়িটা খুঁজে পেল না রাজন্যা। হিসাব অনুযায়ী গলি দিয়ে ঢুকে প্রথম ডান দিক নেওয়ার পরেই বাঁ হাতের তৃতীয় বাড়িটা হওয়ার কথা | কিন্তু সেখানে অভীষ্ট বাড়িটাকে না দেখতে পেয়ে বেশ ঘাবড়ে গেল | দু তিনবার এদিক ওদিক করেও বুঝতে না পেরে উবের অ্যাপ টা খুলে আগের দিনের লোকেশন টা দেখার চেষ্টা করছিল | এমন সময় পাশ থেকেই একটা রিনরিনে কন্ঠস্বরে কেউ বলে উঠলো,

– তুমি কি কোন জায়গা খুঁজছ?

বিষম চমকে উঠল রাজন্যা | পাশে তাকিয়ে দেখল, যে বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে আছে, তারই জানলা দিয়ে একটি প্রায় ওরই বয়সী মেয়ে হাসিমুখে তাকিয়ে আছে | রাজন্যা দু’পা এগিয়ে গেল,

– হ্যাঁ, মানে আগে একদিন এসেছিলাম, কিন্তু সেদিন অ্যাপ ক্যাবে এসেছিলাম | একেবারে বাড়ির সামনে নেমেছিলাম, আজ কিছুতেই খুজে পাচ্ছি না |
– কাদের বাড়ি?
– মিসেস সুমিত্রা গুপ্ত | ওনার নাতনি কে পড়ানোর কথা আমার আজ থেকে, তুমি কি চেনো গো?

হাসিখুশি মেয়েটির মুখে এক ঝলক একটা কালচে ছায়া পড়েই আবার মিলিয়ে গেল | ঘাড় নাড়াল,

– চিনি তো! তুমি আসলে একটা গলি আগে নেমে পড়েছ। ওই জন্য খুঁজে পাচ্ছ না | একটা কাজ করো, এখান থেকে সোজা হেঁটে যাও | মিনিট দুই তিন হাঁটার পরে ডানহাতে একটা বেশ বড় খেলার মাঠ দেখবে | মাঠ পেরোলে আবার একটা এইরকম গলিপথের চারমাথার মোড় পাবে | ওই গলিটা দিয়ে তোমার ঢুকতে হতো। যাই হোক সবই সমান্তরাল রাস্তা, ওই মোড় টা থেকে সোজা এগিয়ে গেলেই দু তিনটে বাড়ি পরেই ওদের বাড়ি। বড় সাদা দোতলা বাড়ি তো?
– হ্যাঁ হ্যাঁ, থ্যাংক ইউ সো মাচ |

চলে যেতে গিয়েও আরেকবার ঘুরে এলো রাজন্যা।

– দ্যাখো তোমার নামটাই জিজ্ঞাসা করিনি!

মেয়েটি তার রিনরিনে গলায় হেসে উঠলো, তারপর বলল,

– সমাদৃতা | তোমার?
– আমার নাম রাজন্যা | পরে নিশ্চয়ই দেখা হবে আবার | টাটা!

এরপরে প্রায় দৌড়তে দৌড়তে রাজন্যা পৌঁছলো তার নতুন ছাত্রীর বাড়িতে | বেল বাজাতে সুমিত্রাই দরজা খুলে দিলেন। ওকে দেখে হাসি মুখে বললেন,

– এইতো এসে গেছ | তোমার ছাত্রী অনেকক্ষণ থেকে তোমার অপেক্ষা করছে |
– সরি আন্টি | আসলে ভুল গলিতে নেমে পড়েছিলাম |
– আবার আন্টি!

চোখ বড় বড় করে তাকালেন সুমিত্রা |

– সরি সরি, ডাবল সরি | পিসিমা |

সুমিত্রা হেসে ফেললেন | তারপরে সিঁড়ির দিকে আঙুল দেখিয়ে বললেন,

– দোতলায় চলে যাও |

কলিংবেলের শব্দ শুনেই সম্ভবত তিতলি ওর ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছিল | রাজন্যাকে দেখেই দৌড়ে এসে ছোট ছোট দুই হাতে ওর কোমর জড়িয়ে ধরল।

– ইয়েএএ তুমি এসে গেছ!
– ইয়েস ডার্লিং, চলো তোমার ঘরে যাই…

তিতলিকে একরকম কোলে করে নিয়েই রাজন্যা ওর ঘরে এসে ঢুকলো | ঘরটা ভারী সুন্দর | ঘরের দেওয়াল গুলো নরম পিচ রং আর মাখন রঙের সমন্বয়। মেঝে জোড়া হালকা মাখন রঙা নরম কার্পেট | একদিকের দেয়াল ঘেঁষে একটা বাঙ্ক বেড বা দোতলা খাট | তিতলির ঘুমানোর জায়গা বিছানার উপরের তলাটাই। তার কারণ নিচের বিছানায় অন্তত গোটা পঞ্চাশেক সফট টয়কে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় শুয়ে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। বাঙ্ক বেডের পাশে পিচ রঙা লম্বা ওয়ার্ডরোব, মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত | অন্য পাশের দেওয়ালে মানানসই রংয়ের কাঠের ডিজাইন করা স্টাডি টেবিল | রাজন্যার কেমন যেন ফের ছোট্ট হয়ে যেতে ইচ্ছা করছিল | বরাবরের বড় শখ ছিল নিজের একটা পড়ার ঘরের | কলকাতায় এসে নিজের ঘর একটা হয়েছে বটে কিন্তু সেভাবে বই খাতা ছড়িয়ে পড়াশোনার প্রয়োজনটা আর নেই এখন |

ঘরে ঢুকে রাজন্যার কোল থেকে নেমে পড়ল তিতলি | চটপট একটা চেয়ার রাজন্যার দিকে এগিয়ে দিয়ে আরেকটা চেয়ার টেনে নিজেও বসে পড়ল | বাবাইয়া বলে গেছে নতুন ম্যামের সাথে ভালো করে পড়াশোনা করলে পরের সপ্তাহে ওর পছন্দের রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাবে ডিনারে | তিতলির বইখাতা, পেন্সিল, ইরেজার, রং তুলি সব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা | রঙিন বইয়ের গোছা সামনে টেনে নিয়ে জিজ্ঞাসা করল,

– কোনটা পড়াবে?

প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগেই খুব চিন্তায় পড়ে যাওয়া মুখ নিয়ে আবার প্রশ্ন করল,

– আচ্ছা আমি তোমাকে কি বলে ডাকবো? ম্যাম বলে? নাকি ফেয়ারি সিস্টার বলে?

রাজন্যা ফিক করে হেসে ফেলল | তারপর টেবিলের ওপর দুই কনুই রেখে হাতের তালুতে থুতনি ঠেকিয়ে ভ্রু উঁচু করে জিজ্ঞাসা করল,

– তোমার কি বলে ডাকার ইচ্ছা?

ফোলা ফোলা গাল আরো ফুলিয়ে কয়েক মুহূর্ত চিন্তা করে তিতলি উত্তর দিল,

– আমার তো ফেয়ারি সিস্টার বলেই ডাকতে ইচ্ছা করছে।
– ব্যাস! তাহলে আর চিন্তা কি? তাই বলেই ডাকবে!
– কিন্তু বাবাইয়া যে ম্যাম বলে ডাকতে বলেছে?
– তোমার বাবাইয়া কি জানে আমি তোমার ফেয়ারি গড সিস্টার?

ঠোঁট টিপে দুই দিকে মাথা নাড়ালো তিতলি, রাজন্যা আগের দিনই ওকে বলে গিয়েছিল ফেয়ারি গড সিস্টারের ব্যাপারটা আর কাউকে না বলতে |

– ভেরি গুড! তাহলে এটাই ঠিক থাকল | তুমি আমাকে ফেয়ারি সিস্টারই বলবে | আর এই ব্যাপারটা তোমার আর আমার সিক্রেট |
– ইয়েএএএ..

আনন্দের চোটে চেয়ার থেকে উঠে এক পাক ঘুরে নিল তিতলি | বাচ্চাটা সত্যিই পুতুলের মত | আজকে ওর চুলে উঁচু করে একটা ঝুঁটি বাঁধা, তাতে আবার প্রজাপতির আকারের দুটো হালকা নীল রঙের ক্লিপ আটকানো | পরনে একটা সাদা রংয়ের লেস বসানো টপ আর আকাশি রংয়ের থাক থাক দেওয়া স্কার্ট | এমন মিষ্টি একটা মেয়ে ছোট্টবেলাতেই মা’কে হারিয়েছে ভেবেই মনটা খারাপ লাগলো রাজন্যার। কোথাও বুঝি নিজের সাথেও একটা মিল খুঁজে পেল। ছোটবেলায় মা হারানোর কষ্ট নিজের জীবন দিয়ে জানে ও |

তিতলিকে পড়ানোর মাঝেই কৈলাস নামের লোকটি প্লেটে করে ফুলকো লুচি আর সাদা আলুর তরকারি নিয়ে হাজির | লুচি তরকারির গন্ধে রাজন্যার পেটের মধ্যে পায়চারি করতে থাকা ছুঁচোগুলো তিড়িং বিড়িং করে লাফ দিয়ে উঠলো | কিন্তু মনের ভাব মুখে প্রকাশ না করে যথাসম্ভব গম্ভীর মুখে বলল,

– এসব আবার কি কৈলাসদা?
– পিসিমা পাঠিয়েছেন, খেয়ে নিতে বললেন |
– কিন্তু আমি তো বাড়ি থেকে খেয়ে এসেছি…

মিথ্যে কথাটা বলার সময় একটু বুঝি গলা কেঁপে গেল | থালাটা যদি ফেরত নিয়ে যায়, তাহলে আর মন দিয়ে বাকি সময়টা পড়াতে পারবে না | কৈলাস অবশ্য থালা ফেরত নেওয়ার কোন লক্ষণ দেখালো না। ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,

– এই বয়সের মেয়ে, অদ্দূর থেকে এসেছ, ও খাবার এতক্ষণে হজম হয়ে গেছে | আর পরদিন থেকে না হয় ব্রেকফাস্ট না করেই আসবে | পিসিমা কারোকে না খাইয়ে ছাড়েন না |

কৈলাস ঘর থেকে বেরিয়ে যেতেই থালাটা নিজের দিকে টেনে নিল রাজন্যা। তিতলি টুক করে চেয়ার ছেড়ে নেমে বলল,

– তুমি খাও সিস্টার, আমি দুই মিনিটে আসছি | তোমাকে একটা জিনিস দেখাবো

রাজন্যা কোনরকমে মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলেই লুচি ছিঁড়ে আলুর তরকারিতে ডোবালো | মুখে দিতেই মনে হল ‘আহা কি স্বাদ!’
কত দিন এমন সুস্বাদু ঘরোয়া লুচি তরকারি খায়নি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ছ’খানা প্রমাণ সাইজের লুচি শেষ করে নিজেকে বেশ হ্যাংলা হ্যাংলা মনে হচ্ছিল। লজ্জা লজ্জা মুখ করে প্লেট টা নিয়ে ঘরের বাইরে বেরোতেই সুমিত্রার সাথে দেখা।

– আরে তুমি আবার থালা নিয়ে কোথায় চললে? কৈলাস নিয়ে যেত। দাও আমার কাছে দাও |

সুমিত্রা হাত বাড়াতেই তাড়াতাড়ি নিজের থালা ধরা হাতখানা পিছনে টেনে নিল রাজন্যা।

-না না সে কি! কোথায় রাখতে হবে বলুন, আমি রেখে দিচ্ছি | আর হাতটাও একটু ধুতাম।
– ওই যে ওপাশে বেসিন | আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি বেসিনের নিচেই নামিয়ে রাখো না হয় | কৈলাস বলছিল তুমি নাকি খেতে চাইছিলে না? লুচি তরকারি খাওনা, নাকি?
– না না তা নয় |

রাজন্যা তাড়াতাড়ি বলে উঠলো।

– না আসলে আজকালকার ছেলে মেয়েরা তো আবার এসব অয়েলি খাবার খেতে চায় না | আমাদের বাড়িতেই তো রোজ হয় ওটস, নয় দুধ কর্নফ্লেক, খুব বেশি হলে পাউরুটি টোস্ট আর ডিমের পোচ । বাঙালির ছেলে কোথায় লুচি, কচুরি, আলুর পরোটা, চিঁড়ের পোলাও খাবে, তা না ওই শুকনো শুকনো পাউরুটি চিবানো | আমার তো মোটে ভালো লাগেনা |

সুমিত্রার কথা বলার ভঙ্গিতে হেসে ফেলল রাজন্যা। তারপরে জিজ্ঞাসা করল,

– তিতলির বাবাকে দেখছি না? আজকে তো শনিবার, আজকেও কি অফিস?

সুমিত্রা দুদিকে মাথা নাড়ালেন,

– আর বোলো না | ছেলেটার বিশ্রাম হয় না মোটে। আজ গেছে ব্যবসার কাজ দেখতে |
– ব্যবসা!

রাজন্যা বেশ অবাক হল।

– হ্যাঁ। আমার বাবা দাদার পারিবারিক ব্যবসা। টেক্সটাইলের, একটা ছোট ফ্যাশন ডিজাইন হাউজও আছে | বুবাই মানে তিতলির বাবার কোনদিন এই দিকে কোন উৎসাহ ছিল না। ও ওর পছন্দের বিষয় পড়াশোনা করে চাকরি করতে নিয়েছিল | কিন্তু এমন সব ঘটনা ঘটল, সত্যি বলতে এখন আর কেউ নেই যে ব্যবসার একটু ঠিকঠাক দেখাশোনা করে। তাই শনি রবি খানিকটা বাধ্য হয়েই ওকে যেতে হয় সবকিছু একবার সরেজমিনে দেখে আসতে।
– ওও…

সুমিত্রার কথায় এই পরিবারের উপরে ঘটে যাওয়া অতীতের কোন এক দুর্ঘটনার আঁচ পেল রাজন্যা। কিন্তু এই বিষয়ে আর কৌতুহল দেখানো শোভনীয় নয় বলে চুপ করেই রইল | তখনই উল্টো দিক থেকে একটা বড় টেডি বিয়ার জড়িয়ে ধরে ছুটতে ছুটতে এসে হাজির হল তিতলি । সামনে এসেই টেডি বিয়ারটাকে রাজন্যার সামনে উঁচু করে ধরে বলল,

– মিট মাই ব্রাদার, টুপাই!

তিতলি ঝকঝকে দাঁত বের করে হাসছে | টেডি বিয়ার সমেত তিতলিকে জাপটে ধরল রাজন্যা | খিলখিল করে হেসে উঠলো তিতলি |

– টুপাই চেপটে গেল, চেপটে গেল…
– এমন তুলতুলে নরম ব্রাদার তোমার, একটু চ্যাপটানি তো খেতেই হবে!

রাজন্যা টেডি বিয়ার সমেত তিতলিকে কোলে তুলে এক পাক ঘুরিয়ে নিল। তিতলির হাসি থামছেই না | একটু দূরে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে এই দৃশ্য দেখছেন সুমিত্রা | মেয়েটি এত সহজে তিতলির সাথে মিশে গেছে, ও যদি খুব ভালো নাও পড়ায় তাও চলবে। বাবাই যা খুশি বলুক, এই মেয়েই তিতলির টিউটর থাকবে, মনে মনে ঠিক করে নিলেন।

তিতলির ঘরে ফিরে গিয়ে টুপাই কে বিছানার উপর বসিয়ে রাজন্যা তিতলির গাল টিপে দিয়ে জিজ্ঞাসা করল,

– তাহলে টুপাই তোমাকে দিদি বলে না বোনু বলে?

অমনি গাল ফুলিয়ে জবাব তিতলির,

– বোনু কেন বলবে? ও তো আমার থেকে ছোট!
– তাই নাকি? দেখে তো মনে হচ্ছে তোমার থেকে বড়। আমি ভাবলাম তুমি বুঝি ওকে দাদা বলো!

তিতলি ভারি চিন্তায় পড়ল | একবার টেডি বিয়ারের দিকে তাকাচ্ছে, একবার নিজের দিকে | ওকে কি টেডি বিয়ারের থেকে ছোট লাগছে?

– কি করলে আমাকে বড় লাগবে?
– দেখো বেয়ারটা তো সাইজে তোমার থেকে বড় | তাহলে তোমাকে বুদ্ধিতে ওর থেকে বড় হতে হবে। ক্লাসের পড়াশোনাগুলো সব মন দিয়ে করে ফেলতে হবে।
– তাহলেই হবে?
– হবে তো! শোনোনি লোকজন বলে যে বড়রা বেশি জানে?

তিতলির মনে পড়ল বাবাইয়া মাঝেমাঝে বলে বটে। তুমি তো ছোট, তাই জানো না | বড় হলে জানবে |

– হ্যাঁ আমি সব পড়াশোনা করব

রাজন্যা ডান হাত তুলে তিতলির সাথে হাই-ফাইড করল |

– তাহলে চলো, আমরা আজকে একটু ম্যাথ করি?

তিতলি প্রবল উৎসাহে অংকের বই খাতা খুলে বসলো।

খানিক পড়াশোনার পরে একটা রাশিয়ান উপকথার গল্প তিতলিকে শুনিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিল রাজন্যা। ওকে দরজায় এগিয়ে দিতে এসেছিলেন সুমিত্রা, বেরোবার সময় শুনতে পেল চাপা কন্ঠে বলছেন ‘দুর্গা দুর্গা’ | মনটা একটা আশ্চর্য রকমের ভালোলাগায় ভরে গেল।

(ক্রমশ)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে