হৃদয়_স্পর্শ পর্ব_১
#লেখা_সাদিয়া_নুর
– এই ছেলে তুই এত বদলাইয়া গেসোস কেন? একদিন না দুইদিন না তিনদিন না,, ৪ টা মাস তুই যোগাযোগ রাখোস নাই আমার সাথে। যেই ছেলে আমাকে এত জ্বালায় সেকিনা…আমি মানি না। আজ তুই আমার মেসেজের রিপ্লাই না দিলে আমি কিন্তু বগুড়া চলে যাবো আর তোর বাড়িতে গিয়ে তোরে মারমু।
চারঘন্টা পর★★
আনিশাঃ কি হইসে সাদিয়া তুই ভালো মত কথা বলছিস না কেন হু হা,, কি শুরু করছিস।
সাদিয়াঃ ভালো লাগছে না বাদদে।
আনিশাঃ বলবি তো।
সাদিয়াঃএকটা ছেলে রে,,
আনিশাঃ প্রেম?
সাদিয়াঃ নাহ, বেস্টফ্রেন্ড বলতে পারিস,, এখনো মনে আছে,, চারটা মাস আগে মোট ৭ মাসের ফ্রেন্ডশিপ, এত জ্বালাতো, এত পচাতো, কি দুষ্টামি না করতো আমার সাথে। বাট,, এক পলকে গায়েব,, চার মাসের শুরুতে মেসেজ সিন করে হু হা করে চলে যেত। ভাবতাম কিছু সমস্যা হয়েছে, কিন্তু তিনমাসের শুরুর দিকে একদমই গায়েব। আমি প্রতিদিন মেসেজ দিতাম এই ভরসায় যে সে একবার আমার মেসেজ দেখলে রিপ্লাই করবে। কিন্তু দের মাস হয়ে গেছে তার আইডি ডিয়েক্টিভেট। কাল আবার অন করেছে, তাই রিপ্লাই দিয়েছি সকালে বাট এখনো এক্টিভ আছে কিন্তু নো সিন।
আনিশাঃ নাম কি ছেলেটার?
সাদিয়াঃ আদনান। আর্মি তে চাকরি করে।
আনিশাঃ বাট তুই তো মাত্র ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে। এত কম বয়সের মেয়ের সাথে সে কেনোই বা…
সাদিয়াঃ চাকরি তো ২১ দিন আগে থেকে স্টার্ট করেছে যেই দিন সে গায়েব হয়েছে।
আনিশাঃ ওহ. এখন কি করে জানবি কি হয়েছে না হয়েছে।
সাদিয়াঃ জানি না রে দোস্ট। বাট আমার মন বলছে সে এমনে এমনে যোগাযোগ অফ করেনি কিছু একটা কারণে সে যোগাযোগ অফ করেছে। এই চারটা মাস খুব কষ্টে ছিলাম।
আনিশাঃ ভালোবাসিস?
সাদিয়াঃ(,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,)
★★★-ঃরাত ৩ টাঃ-★★★
টিংটুং মেসেজের আওয়াজ আর ভাইব্রেটের কারণে সাদিয়ার ঘুম নষ্ট হয়।
সাদিয়া হাত দিয়ে বালিশের নিচ থেকে মোবাইল বের করে টাইম দেখে। ৩ টা ১২ বাজে। সাদিয়ার মাথা নষ্ট হয় কেমনে মানুষ এতরাতে জ্বালাতে পারে??
সাদিয়া উঠে বসে আর পানি খায়। মোবাইল আনলক করে দেখে আদনানের ১৫ টা মেসেজ…ইয়া বড় বড়। সাদিয়া পানি খাওয়ার সময় অর্ধেক পানি নিজের উপর ফেলে। দ্রুত নিজেকে ঠিক করে
আদনানঃ- জানিস সাদু,, ভালোবাসা কি? হয়ত জানবি না বয়স হয়নি তোর। কিন্তু আজকে তোকে একটা কাহিনি শুনাবো যেই কাহিনি টা আমার সাথে এই চারটা মাসে হয়েছে। প্রথমত তোর সাথে বিষয় টা শেয়ার করতাম। কিন্তু ইতিমধ্যে আরেকজনকে যে অন্ধ বিশ্বাস করতাম।
সাদিয়ার চোখের পানি স্ক্রিনে গিয়ে পড়ে….
আদনানঃ কিছুটা এমন ছিলো আমাদের ভালোবাসা…ইমাজিন কর যে তোর সামনে ঘটছে…
‘
‘“এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি সাপ্তাহে জিতে নিন বই সামগ্রী উপহার।
আমাদের গল্প পোকা ডট কম ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
‘
ইভাঃ আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া,, আপনার আইডির যত পোস্ট দেন সব আমার ভালো লাগে আর আপনার পিক গুলোও জোস,, কিসের চাকরি করেন?
আদনানঃ ধন্যবাদ,, আমি চাকরি করিনা এপ্লাই করেছি আর্মি তে। একবার কনফার্মেশন এসে যাক তারপর ট্রেনিং এ চলে যাবো।
ইভাঃ ওহ আচ্ছা,, আমার নাম ইভা, আমি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে আছি ইংরেজী বিষয় নিয়ে।
আদনানঃ ভালো তো….কোথা থেকে পড়াশোনা করছেন?
ইভাঃ বগুড়া ইউনিভার্সিটি থেকেই। আপনি কোথায় থাকেন?
আদনানঃ আমিও বগুড়ায়।
‘
‘
‘
আদনানঃ এভাবে দিন কাটছিলো তোর রিপ্লাই কম করতাম মোট মিলিয়ে শুধু ইভাই আমার মস্তিষ্কে ঘুরপাক করছিলো মনে বসে গিয়েছিলো,,,
সাদিয়ার চোখ থেকে আবারও দুইফোটা স্ক্রিনে পড়ে…
আদনানঃ তারই মধ্যে আমি দ্রুত কনফার্মেশন লেটার পেয়ে যাই আর সেই খবর তোকে জানাই প্রথম। তারপর ইভাকে মোট মিলিয়ে আমি অনেক খুশি ছিলাম। সেই দিনের রাতে সে আমাকে তার মনের কথা জানায় আমিও তাকে জানাই..শুরু হয় আর্মি ক্যাম্পে ইভার সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম আলাপ,, সব কিছু ঠিক চলছিলো তারই মধ্যে সে আমার সাথে দেখা করতে আসে সারপ্রাইজ পেয়েছিলাম বাট অনেক খুশি জড়িয়ে ধরে ভালোবাসার নানা কথা বলি…কিন্তু মেয়েটা এমন ছিলো যে এক কথায়…..
সাদিয়া বুঝতে পেরেছে কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে তাই আদনান কথার মাঝেও চোখের পানি মুছেছে। সাদয়া নিজের ও চোখে পানি মুছে…
আদনানঃ এর পরের দুইটা মাস স্বপ্নের মত চলে যায় কিন্তু তারপর যেই ছুটি পেলাম আর ইভা কে পাচ্ছিলাম না,, হটাৎ একটা মেসেজ পাই..
ইভাঃ আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে,, আমাকে ভুলে যাও।
আদনানঃ কোনো মতে দ্রুত তার ঠিকানা বের করে বর পক্ষের ছেলেকে মেনেজ করি কিন্তু সে ইভার ফ্যামিলিকে নানা ভাবে অপমান করে। হয়ে গেলাম খারাপ ইভা আমাকে নানা ভাবে কথা শোনাচ্ছিলো দেন তার বিয়ে হয়ে যায় সেই লোকটির সাথে,,, তার ১০ দিন বাদ ইভা অনেক গুলো ছবি পাঠায় যেখানে ওকে মারা হচ্ছে নানা ভাবে মানষিক অত্যাচার, ইভা আমাকে বলছে আমার কারণে নাকি এসব হয়েছে। পারছি না রে সাদু,, ওইদিনের পর ডিপ্রেশনে চলে যাই নিজেকে খুব দোষী লাগছিলো রে। কিন্তু কিছুদিন সেই পরিস্থিতি থেকে বেড়িয়ে আবার তোর কাছে ফিরে আসতে চাই। আসতে দিবি।
সাদিয়া কাঁপা কাঁপা হাতে মেসেজ করে,,
সাদিয়াঃ কো কোই তুই এখন।
আদনানঃ টাইপিং…….
সাদিয়া বালিশে মাথা রেখে চোখ থেকে পানি ফেলে ভাবতে থাকে,,
একটা মেয়ে একটা ছেলের জীবন নষ্ট করতে পারে সাথে একটা মেয়ে যেই ছেলের জীবন তছনছ সেটাকে গুছিয়েও দিতে পারে। আদনানের জীবনে কি সেই মেয়েটা আসবে। পরিবর্তন হতে হবে আদনান কে। ওর জীবন পরিবর্তন হবে। কিন্তু সেই মেয়েটা….
টুংটুং আওয়াজে আবার ও সাদিয়ার ধ্যান ভাঙে…
হাতে নিয়ে ফোনে দেখে,,,
আদনানঃ নিচে আয় বা ছাদে আয়।
সাদিয়া কিছুক্ষণ স্ক্রিনের দিক তাকিয়ে মেসেজ লিখে,,
সাদিয়াঃ ছাদে।
সাদিয়া একটা শাল গায়ে দিয়ে ফোনের লাইট অন করে আস্তে ধিরে লিভিং রুমে যায় সবদিক ভালো ভাবে তাকিয়ে তারপর আস্তে করে দরজার তালা খুলে বেড়িয়ে আবার তালা লাগিয়ে উপরে উঠতে থাকে। বুক ধুকপুক করছে হাত পা কাপছে তাও সে চায় আদনান কে সামনা সামনি…..
.
.
আরো দুই পর্বের পর সমাপ্তি। ভালো লাগলে মতামত দিবেন প্লিজ?।