হৃদয়ের অন্তরা পর্ব-০৩

0
1369

#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_3
#sarika_Islam
,
,
হৃদয়ের আশেপাশে পাগলের মতো খুজতে লাগল,,কোথাও খুজে পাচ্ছে না অন্তরাকে,

এইদিকে, অন্তরা বেলুন ওয়ালার পিছন পিছন যেতে যেতে একটি জঙ্গলের ভিতর দিকে চলে গেল, সেখানে অনেকগুলো ছেলে বসে বসে আড্ডা দিচ্ছিল,ছেলেগুলো অন্তরাকে দেখে উঠে দাড়াল,,সবাই একেকজন একেকজন এর দিকে তাকিয়ে বিশ্রি হাসি হাসল,,তারপর সবাই অন্তরার দিকে এক এক করে এগিয়ে আসল,,অন্তরার কাছে চলে আসায় অন্তরা তাদের দেখে বলল,,

_এইখানে বেলুনওয়ালাকে দেখেছেন?আমি বেলুন নিবো,,(খুব মাসুম ফেস করে বলল)

ওই ছেলেদের মধ্যে একটি ছেলে অন্তরার মাসুমিয়াত বুঝল তারপর বলল,,

_হ্যা হ্যা এইখানে আছে বেলুনওয়ালা,চলো আমাদের সাথে,,তোমাকে কিনে দিবনে,,

বলে সবার দিকে তাকাল,, সবার মুখে বাকা হাসি,,,অন্তরাও খুশি খুশি তাদের সাথে চলে গেল আরও গভির জঙ্গলে,,অনেক দূর জাওয়ার পর একটি সিটে বসাল অন্তরাকে,অন্তরা নিজের গলার ওড়না টাকে নিয়ে হাতের মধ্যে পেচাতে পেচাতে বলল,,

_আমার বেলুন কই?আমার বেলুন চাই,,(কান্নার মতো ফেস করে বলল)

তাদের মধ্যে একটি ছেলে অন্তরার হাত থেকে ওড়না নিয়ে তার গলায় পেচিয়ে দিল আর তার পাশে বসতে বসতে বলল,,

_আসো আমার কাছে আসো আমি তোমাকে বেলুন দিব,,

বলেই অন্তরার ঠোটের দিকে এগুতে নেয় হঠাত পিছন থেকে কেউ তাকে সজরে লাথি মারে,,হঠাত লাথি মারায় ছেলেটা দূরে ছিটকে পরে যায়,,হৃদয় তেরে এসে সেই ছেলেটাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে,,একজনকে এভাবে মারছে ভয়ে সবাই পালালো,,হৃদয় রাগি লুক নিয়ে অন্তরার দিকে তাকাল,,অন্তরা বলল,,

_আপনি তাদের মারলেন কেন?তারা আমাকে বেলুন দিতো,,আপনি খুব পচা,,(বলে মুখ ঘুরিয়ে নিল)

হৃদয় তার উপর রাগ কি করবে উল্টো বকা হয়ে গেল,,কি বলল ও?হৃদয় বোকার মতো ফেস বানাল,নিচে অন্তরার ওড়না পরা ছিল হৃদয় সেটা উঠিয়ে অন্তরার গায়ে জরিয়ে দিল,,

_নিজের ওড়না ঠিক মতো রাখ,,
_নাহ আমি রাখবনা আমাকে বেলুন কিনে দিন,,(কাদো কাদো ফেস করে বলল)
_আচ্ছা ঠিক আছে তোমাকে বেলুন ও কনে দিব আইস্ক্রিমও ঠিক আছে?
_কিহহ,, সত্যি?কি মজা মজা চলেন চলেন,,

বলেই হৃদয়ের হাত ধরে হাটা শুরু করল,,হৃদয় মুচকি হেসে তার সাথে হাটতে লাগল,,গাড়ির কাছে এসে হৃদয় অন্তরার জন্য অনেকগুলো বেলুন আনলো আর আইস্ক্রিম আনল,,অন্তরার আইস্ক্রিম খেতে খেতে বলল,,

_আসো এই মাঠে আমরা খেলি,তোমাদের বাসায় তো জায়গা নেই,,
_নাহ আমরা বাসায় গিয়ে খেলবো, আম্মু আমাদের জন্য চিন্তা করছে না,,চলো বাসায় চলো,,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,

বলেই গাড়িতে বসল,হৃদয় ও গাড়িতে বসে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হলো,,বাড়িতে এসে হৃদয় তার নিজের রুমে চলে গেল,অন্তরাও তার রুমে চলে গেল,,

দুপুরে হেনা চৌধুরী খাবারের জন্য সবাইকে ডাকল, সবাই খাবার খেয়ে যার যার রুমে গেল,,হৃদয় তার রুমে বসে কম্পিউটারে কাজ করছে এমন সময় তার মা তার রুমের দরজা নক করল,,

_আসবো?

হৃদয় কম্পিউটার থেকে মাথা তুলে দেখল তার মা,,

_আরে আম্নু আসো,পারমিশন নেওয়ার কি আছে,
_নাহ ভাবল তুই কাজ করছিস তাই ডিস্টার্ব করতে চাই নি,
_আচ্ছা,
_আচ্ছা শুন,ডাক্তার কি বলল,?
_ডাক্তার বলল ওকে খুব কেয়ার করতে ভালোবাসা দিতে তাহলে ও ঠিক হতে পারবে,,
_হুম তাহলে তো ভালই হলো,, মেয়েটা খুবি মিস্টি,,আচ্ছা তুই কাজ কর আমি আসি,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,

হেনা চৌধুরী চলে গেল,,বিকাল দিকে হঠাত অন্তরার ঘুম ভেংগে গেল,ঘুমের থেকে উঠে চোখ ডলতে ডলতে হৃদয়ের রুমে গেল,গিয়ে দেখল হৃদয় কাজ করছে,তার পাশে গিয়ে দাড়াল,হৃদয় তার পাশে কারো উপ্সথিতি টের পেয়ে পাশ ফিরে তাকায় দেখল অন্তরা তার দিকে তাকিয়ে আছে,সে মুচকি হেসে বলল,,

_কিরে তোর ঘুম হয়েছে?
_হুম,চলো আমরা খেলব,,(বলেই হৃদয়ের হাত ধরে টান দিতে লাগল)
_আরে ছাড় তুই বরং এখন আম্মুর কাছে যা আমরা পরে খেলব।।
_নাহ আমি এখন খেলব এখন খেলব(বলে হাত ঝাকাতে লাগল)

হৃদয় ধমক দিল, হৃদয়ের ধমক শুনে অন্তরা কাদতে কাদতে নিজের ঘরে গেল,হৃদয় নিজের কাজ শেষ করে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গেল,,হঠাৎ অন্তরা কথা মনে পরল,,সে না তাকে ধমক দিয়েছে?হৃদয় তরিঘরি করে অন্তরার রুমে গেল,গিয়ে দেখল অন্তরা মেঝেতে শুয়ে আছে,,অন্তরার প্লাজু হাল্কা উপরে উঠানো,ওড়না নেই গায়ে জামা টাও হাল্কা এলোমেলো,,হৃদয় অন্তরার পাশে গিয়ে বসল,,অন্তরা এখনও হেচকি তুলে কান্না করছে,,

_অন্তরা,,

হৃদয়ের ডাকে অন্তরা পিছে ফিরল না সে আগের মতো মুখ ফিরে শুয়ে আছে,

_অন্তরা কিছু খাবে খেয়ে নাও,তারপর আবার ঔষুধ খেতে হবে,
_নাহ আমি খাবো না, আমি আমার আব্বুর কাছে যাবো, আমি পিংকুর সাথে খেলব,, তোমরা সবাই পচা,
_অন্তরা দেখ যিদ করে না উঠো খেয়ে নাও,,
_নাহ নাহ নাহ
_আচ্ছা ঠিকআছে খেয়ে অসুধ খেলে আমরা তোমার বাবার কাছে যাব,খেলব,,,খাও এখন,,

অন্তরা উঠে হৃদয়কে এলোপাতাড়ি মারতে লাগল,হৃদয়ের রাগ উঠে গেল সে অন্তরাকে মারার জন্য হাত উঠাল অন্তরার চেহারার দিকে তাকিয়ে থাপ্পর দিল না, হাত নামিয়ে নিল,,রাগে দাত কটমট করতে লাগল,অন্তরাকে খাওয়ায়ে তাকে শুয়ালো,,

_তুমি ঘুমাও আমি আসছি,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,

বলে হৃদয় চলে গেল,,অন্তরাকে ঘুমের ডোস দেওয়ায় সে আর উঠল না ঘুমিয়ে গেল,,হৃদয় তার রুমে চলে গেল,সে আধশোয়া হয়ে অন্তরার কথা চিন্তা করছে,

_কত্ত মাসুম একটি মেয়ে,অনেক মায়া হয় ওর জন্য, আল্লাহ ওকে জলদি ভালো করে দিও,,

এইসব চিন্তা ভাবনার মাঝে হঠাত হৃদয়ের ফোন বেজে উঠল,,ফোন হাতে নিয়ে দেখল ডাক্তার চাচা ফোন করেছে,,হৃদয় ফোন রিসিভ করল,,

_হ্যালো,,হৃদয় তুই কি অন্তরাকে ঔষুধ দিয়ে দিয়েছ?
_জি আংকেল,কেন?
_ইশশশশ,আর কিছু ক্ষন আগে ফোন করলে ভালো হতো,,
_কেন আংকেল কি হয়েছে?
_ওকে বেশি পাওয়ারের ঔষুধ দিয়ে দিয়েছি,ওর শরিরে জন্য একাটু বেশিই পাওয়ার ফুল হয়ে যাবে,,
_তাহলে আংকেল আপনি এইটা আগে দেখবেন না এখন যদি উল্টা রিয়েকশন হয়?
_নাহ তেমন কিছু হবে না,যদি ওর শরির মেনে নিতে পারে পাওয়ারটা তাহলে প্রবলেম।নাই,আর যদি না নিতে পারে,,,
_না পারলে কি আংকেল?
_নাহ পারলে কাল সকালে একটু বেশিই পাগলামি করতে পারে,তুমি একটু সামলে নিও হৃদয়,,আর আমজ ওকে কাল এসে চেকআপ করে যাব,
_আচ্ছা আংকেল ঠিকআছে,,

ফোন কেটে দিল,,হৃদয়ের তো অনেক চিন্তা হচ্ছে অন্তরার জন্য, যদি না নিতে পারে তখন?কি হবে?এইসব নানান ধরনের চিন্তা তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে,চিন্তা করতে করতে হৃদয় ঘুমিয়ে গেল,,

সকালে,, চিল্লানির আওয়াজে হৃদয়ের ঘুম ভেংগে গেল,,হৃদয় লাফ দিয়ে বিছানার থেকে উঠে,,হঠাত কাল রাতে ডাক্তার এর কথা মনে পরে যায়,সে তরিঘরি করে অন্তরার রুমে গেল,,হৃদয় যা দেখল তার জন্য মটেও প্রস্তুত ছিল না,,অবাক হয়ে তাকাল অন্তরার দিকে, অন্তরা বিছানার এক কোনে দাড়য়ে আছে,,তার পা বেয়ে রক্ত পরে মেঝে প্রায় খানিকটুক ভরে গেছে,,,

চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে