#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_2
#sarika_Islam
,
,
,
দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসল,,হাসান চৌধুরী খালেদ মিয়ার উদ্দেশ্য বলল,,
_অন্তরা মামুনিকে আমরা নিয়ে জাই আমাদের সাথে ওর চিকিৎসা দরকার,,এভাবে তো আর রাখা যায় না,,আর ও বড় হয়েছে ওকে তো বিয়ে দিতে হবে,
_নাহ, আমার মেয়ে পিচ্চি কিচ্ছু বুঝে না আমি ওকে বিয়ে দিব না,,ওকে আমার কাছেই রাখবো, আমি ওকে ছাড়া থাকতে পারি না,,(বলেই কান্না করে দিল)
_দেখ খালেদ আমি ওকে আমার মেয়ের মতো আদর করব,,আমাদের কাছে দে ওকে সুস্থ বানিয়ে দিব,,আমার ছেলে হৃদয় কাল আসবে লন্ডন থেকে আর আমার বিশ্বাস হৃদয় ওকে ঠিক করতে পারবে,,তুই অমত করিস নে,
_আচ্ছা ঠিক আছে,,অন্তরা যদি রাজি হয় তাহলে যাবে আমার কোন আপত্তি নেই,,
হেনা চৌধুরী আর অন্তরার মা অন্তরাকে ধরে ধরে নিয়ে আসছে,,খালেদ মিয়া নিজের মেয়ের কান্না দেখে মেয়ের কাছে ছুটে গেল,অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করল,,
_কি হয়েছে আমার পখির?(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
_কিচ্ছু হয়নি আমার,,(খালেদ মিয়ার বুকের সাথে লেপ্টে গেল)
_তোর আন্টিদের বাসায় বেড়াতে যাবি?
_নাহ আমি তোমাকে ছাড়া কোথাও যাব না,
_যাহ কিছু দিনের জন্য ঘুরে আয় ভালো লাগবে,
_নাহ নাহ,আমি যাব না তোমাকে ছাড়া,
পাশ থেকে হাসান চৌধুরী বলল,,
_ঠিকআছে খালেদ তুইও চল, দিয়ে না হয় চলে আসিস,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,
দুপুরে খাবার শেষে সবাই একসাথে ঢাকার উদ্দেশ্যে রোওনা হল,,
সন্ধ্যা 6,,
_এত্ত বড় বাসা তোমাদের?এত্ত সুন্দর? যান আন্টি আমি কখন এত্ত বড় বাসা দেখি নি,,
বলেই এদিক সেদিক ছুটছুটি করছে,,হেনা চৌধুরী অন্তরার বাচ্চামো দেখে হাসছে,,খালেদ মিয়া তার মেয়েকে দিয়ে বিদায় নিয়ে আবার নিজের ঠিকানায় চলে গেল,,অন্তিরা তো বাড়ি দেখাতে এত্ত বেস্ত তার বাবা চলে গেছে সেই দিকেও খেয়াল নেই,,
সকাল,,
অন্তরা ঘুম থেকে উঠে নিচে গেল গিয়ে তো পুরা হা,এত্ত সুন্দর করে বাড়ি সাজিয়েছে,অন্তিরা পুরো বাড়ি দেখছে আর সিরি বেয়ে নামছে,,অন্তরা হেনা চৌধুরীর পাশে গিয়ে দাড়াল,,
_আন্টি এত্ত সুন্দর করে বাড়ি সাজানো হচ্ছে কেন?
হেনা চৌধুরী পাশ ফিরে অন্তরাকে দেখে মুচকি হেসে বলল,,
_তোমার একটা ভাই আসবে,, আমার ছেলে আসবে হৃদয়,
_সেকি খেলবে আমার সাথে পিংকুর মতো?
_হুম খেলবেতো,,
_কি মজা কি মজা,,(বলেই হাত তালি দিয়ে লাফাতে লাগল)
হেনা চৌধুরী অন্তরার খুশি দেখে মুচকি হেসে তার মাথায় হাত বলিয়ে রান্না ঘরে চলে গেল,,হৃদয় এসেছে যেইনা ঘরের ভিতর ঢুকতে নিবে অমনি অন্তরা লাফাতে লাফাতে হৃদয়ের সাথে ধাক্কা লেগে নিচে পরে যায়,হৃদয়ের হাতের সব বেগ নিচে পরে যায়,,অন্তরা মেঝেতে পরে রাগি লুক নিয়ে হৃদয়ের দিকে তাকাল,,
_আপনি কি চোখে দেখেন না?আমাকে ফেলে দিলেন,সরেন আমার হৃদয় ভাই আসবে,,
বলেই হৃদয়কে দরজার সামনে থেকে সরাতে লাগল,,হৃদয় উঠে দারাল কিছু বলতে নিবে অমনি হেনা চৌধুরী “হৃদয় ” বলে ডাকতে লাগল, হেনা চৌধুরী এত্ত বছর পর ছেলেকে দেখে চোখের জল ছেরে দিল,,হৃদয় মাকে দেখে মার কাছে গিয়ে তাকে জরিয়ে ধরল,,অন্তরা আর কিছু না বলে সোজা নিজের রুমের দিকে অগ্রসর হলো,,
দুপুরে খাওয়ার সময় হৃদয় খেতে খেতে বলল,
_মা ঢুকার সময় একটা মেয়েকে দেখলাম ওকি আমাদের নিউ সার্বেন্ট?
_আরে নাহ ওতো তোর খালেদ চাচা আছে না আমাদের গ্রামের মাদবর তার মেয়ে অন্তরা,,
_ওহ আচ্ছা,,তোকে একটা কথা বলার ছিল,
_হুম বলো,,(খেতে খেতে)
_দেখ বাবা তুই ওকে চিকিৎসা করবি,
_কিহহহহহ
_হুম আমরা ওর বাবা মাকে কথা দিয়ে এসেছি তুই ওকে চিকিৎসা করে ঠিক করবি,আমাদের মান সম্মানের বেপার,,
_আচ্ছা ঠিকআছে আমি চেষ্টা করব,
বলেই চলে গেল,,উপরে গিয়ে নিজের রুমে যাবে অমনি কারো কান্নার শব্দ হৃদয়ের কানে ভেসে আসে,তার রুমের পাশেই অন্তরার রুম,সে দরজাটা হাল্কা খুলে দেখলো পুরো ঘর জুরে অন্ধকার ছেয়ে আছে,হৃদয় দরজা পুরোটা খুলে ভিতরে ঢুকে দেখতে লাগল কে কান্না করছে,কিন্তু কেউকে খুজে পেল না,হঠাত পিছন থেকে হৃদয়কে জরিয়ে ধরল,এভাবে হঠাত ধরায় হৃদয় অনেকটা ঘাবড়ে যায়, অন্তরা হৃদয়কে ধরে চিৎকার করতে লাগল,,
_বাচাও বাচাও,
হৃদয় বুজতে পারল কে ধরেছে,সে আস্তে আস্তে অন্তরাকে নিজের সামনে এনে দাড় কড়াল,,তারপর রুমের লাইট জালিয়ে দিল,
_কি হয়েছে তোমার আমাকে বলো,,
_বিছানায় তেলাপোকা আমি তেলাপোকা খুব ভয় পাই,,(হাত দিয়ে ইশারায় দেখাল)
_আচ্ছা আমি তেলাপোকা তাড়িয়ে দিচ্ছি,(বলেই বিছানার দিকে গেল)কোথাও তো তেলাপোকা নেই,,(অন্তরার দিকে তাকিয়ে বলল)
_নাহ নাহ এখানেই ছিল,,
_আচ্ছা চলে গেছে ঘুমিয়ে পড়,,
_নাহ নাহ আমাকে ছেরে জাবেন না আমার খুব ভয় করছে,,,(বলেই হৃদয়ের এক হাত ধরে ফেল্ল)
হৃদয় অন্তরার দিকে তাকাল, ভিতু ফেস করে রেখেছে অন্তরা,হৃদয় অন্তরাকে দেখে থমকে গেল,তার আয়তকৃষ্ণ দুটি চোখ, কাজল রেখার মতো ভ্রুযুগল,কালো কালো দুটি চোখের ঢলঢল চাহনি মনপ্রান কেড়ে নেয়,এক ধ্যানে তার দিকে তাকয়ে আছে হৃদয়,
_কি সুন্দর একটি মেয়ে মাসাল্লাহ,যে কোন মানুষের মন কেড়ে নেওয়ার মতো, কিন্তু সে নাকি,,,,,,(বলে একটি দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ল)
অন্তরার ডাকে ধ্যান ভাংগে,
_আমি ঘুমাবো,
_আচ্ছা ঠিকআছে ঘুমাও,(বলেই অন্তরাকে ধরে বিছানায় শুয়ে দিল)
হৃদয় উঠে যেতে নিলে অন্তরা তার হাত ধরে ফেলে,
_আমাকে ছেরে যাবেন না প্লিজ,
_আচ্ছা ঠিক আছে তুমি ঘুমাও,,(বলেই অন্তরার পাশে বসল)
অন্তরা ঘুমিয়ে গেছে দেখে আস্তে করে তার পাশ থেকে উঠে নিজের রুমে চলে গেল,
রাতে সবাই একসাথে ডিনার করতে বসল,,এমন সময় হৃদয় তার মাকে বলল,
_মা আমি কাল সকালে ওকে মার বড় স্যারের কাছে নিয়ে যাবো তুমি ওকে রেডি করে দিও,
_আচ্ছা ঠিকআছে,
_আর ও কোথায় এখন খাবে না?
_ওর খাবার ওর রুমে পাঠিয়ে দিয়েছি,টেবিলে বস্ব খাবারের অভ্যাস নেই,
_ওহ আচ্ছা,,
তারপর খাওয়া শেষে যে যার রুমে গিয়ে শুয়ে পরল,,
সকালে,,
হেনা চৌধুরী অন্তরার রুমে গিয়ে তাকে ডাক দিল,,
_অন্তরা এই অন্তরা উঠ মা,
_উমমমম
_উঠ মা উঠ,(মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
অন্তরা উঠে বসল,
_যা ফ্রেশ হয়ে আয়,,
অন্তরা উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেল,ফ্রেশ হয়ে এসে তাকে খাবার খাইয়ে দিল,তারপএ হেনা চৌধুরী তাকে একটি লাল কালারের থিপিস পরিয়ে দিল,,অন্তরা তার পড়নে জামাটা নাড়ছে আর বলছে,,
_কোথায় যাব আমরা?
_তোর হৃদয় ভাউ তোকে ঘুরতে নিয়ে যাবে,,
_ওয়াও আমি ঘুরতে যাব কি মজা,,(বলে লাফাতে লাগল)
_আহা নরিস না তোর চুল বাধতে দে,,
অন্তরা কি আর চুপ থাকার মেয়ে ওতো ওর মতো করে নরেই যাচ্ছে,তারপর হেনা চৌধুরী অন্তরাকে নিচে নিয়ে আসল,হৃদয় নিচে নামছে আর অন্তরাকে দেখছে,অন্তরা তার ওড়না বারে বারে ফেলে দিচ্ছে হেনা চৌধুরী তার ওড়না বারে বারে গায়ে জরিয়ে দিচ্ছে,,হৃদয় তাদের সামনে এসে দাড়াল হেনা চৌধুরী হৃদয়কে বলল,
_বাবা ওর খেয়াল রাখিস ঠিক আছে,
_আচ্ছা মা তুমি চিন্তা কর না,,
হৃদয় গাড়িতে করে হসপিটালে নিয়ে গেল,,ডাক্তারের চেম্বারে বসল,,অন্তরা বসে টেবলের উপর পৃথিবীর চাকা তাকে ঘুড়াচ্ছে,এটা সেটা নেড়ে নেড়ে দেখছে,,ডাক্তার তার তাকে চেকআপ করতে লাগল,অন্তরা ভয় পেতে লাগল,,ডাক্তার চেকআপ করছে আর অন্তরার সাথে কথা বলছে,,
_তোমার নাম কি?
_আমার?আমার নাম অন্তরা
_ওহ খুবি সুন্দর একটি নাম ঠিক তোমার মতো,
_আচ্ছা তোমার নাম কি?
_আমার নাম রফিক,,(হাল্কা হেসে)
_ওহ,
অন্তরা ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে আছে,,ডাক্তার আবার বলল,
_তাহলে তুমি আমার একটা নাম রাখ,,
অন্তরা হেসে ফেল্ল তারপর বলল,
_খোকা,,(বলে হেসে দিল)
_আচ্ছা ঠিকআছে আজ থেকে তুমি আমার মা আমি তোমার খোকা ঠিকআছে,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,,
ডাক্তারের চেপআপ শেষে হৃদয়ের কাছে গেল,হৃদয়কে বলল,,
_হৃদয় ও ঠিক হবে ঠিক হওয়ার চান্স আছে,কিন্তু ওকে সব সময় কেয়ার করতে হবে ভালোবাসা দিতে হবে,প্রচুর ভালোবাসা দরকার অন্তরার,,আর এই ঔষুধ গুলো লিখে দিচ্ছি এইগুলো ওকে খাওয়াবা,আর আমি 2দিন পর তোমাকে যানাব কি করতে হবে ওর সাথে,,
_আচ্ছা ঠিকআছে,,
অন্তরা আর হৃদয় গাড়ি দিয়ে চলে গেল,,অন্তরা বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে এক মনে,,হঠাত হৃদয়কে খামছাতে লাগল,,হৃদয় জিজ্ঞেসাদৃষ্টিতে অন্তরার দিকে তাকাল,,অন্তরা হাত দিয়ে ইশারা করে বাহিরে আইস্ক্রিম আলা দেখাল,অর্থাৎ সে আইস্ক্রিম খাবে,,হৃদয় গাড়ি থামাল,
_আচ্ছা ঠিক আছে আমি নিয়ে আসছি কিন্তু তুমি এইখনেই থাকবে বের হবেনা,
অন্তরা মাথা নেড়ে সায় দিল যে সে বেড় হবে না,,হৃদয় আইস্ক্রিম আনতে গেল,,আইস্ক্রিম নিয়ে ফিরে অন্তরাকে আইস্ক্রিম দিতে নিবে দেখে সিটে অন্তরা নেই,,,,,
চলবে🖤
(ভুলত্রুটিগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন🥰)