#হৃদয়ের_অন্তরা❤️
#part_1
#sarika_Islam
জোরে ধাক্কা খেয়ে তাল সামলাতে না পেরে নিচে পরে গেল অন্তরা,,জোরে জোরে কান্না করতে লাগল,,আর বলতে লাগল,
_আপনি কি চোখে দেখেন না এভাবে ফেলে দিলেন কেন?(কান্না করতে করতে)
জিসান হা করে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে আর ওকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত স্কেন করছে,অন্তরা শরির থেকে ওড়না সরে গেছে দুই বেনি করা খুবি মিস্টি একটি মেয়ে,,জিসান যেন ওর সুন্দরের প্রেমে পরে গেল,,মনে মনে নানান জিনিস আওড়াতে লাগল,,হঠাত অন্তরার চিৎকারে ধ্যান ভাংগে,,
_আমাকে নিচ থেকে উঠাননননন,,,
জিসান অন্তরার হাত ধরে টেনে উঠালো,,অন্তরা জিসানকে তার হাত দেখাচ্ছে,,
_দেখুন দেখুন আমি কত্ত বেথা পাইসি এইখানে,, আপনি অনেক পচা,,, (বলেই কান্না করতে লাগল)
_ব্যাথা পাইসো আহারে,,আসো আমি আদর করে দেই,,
অন্তরা জিসানের দিকে নিজের হাত বারিয়ে দিল,,জিসান অন্তরার হাত ধরে ফু দিতে লাগল আর অন্তরার বুকের দিকে তকিয়ে রইল খারাপ নজরে,,
_অন্তরা ওই অন্তরায়ায়ায়ায়া,,
_কিরে পিংকু তুই এইখানে কি করছিস?(জিসানের থেকে নিজের হাত সরিয়ে বলল)
_তোরে আমি পুরো গ্রাম খুজছি তুই এইখানে কি করস?চল তোর শহরের আন্টি আইসে,
_আন্টি আইসেএএএএএ চললল,,
অন্তরা আর পিংকু দৌড়িয়ে চলে গেল,,আর জিসান এইখানেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগল,,
_পুরাই ফুটন্ত গোলাপ ওর সুবাস আমাকে নিতেই হবে,,,(বলেই সয়তানি হাসি হেসে চলে গেল)
(অন্তরা প্রেমতলা গ্রামের মাতবরের একমাত্র আদরের মেয়ে,বয়স 17,ক্লাস 8 এ পরে দুইবার ফেল করে এইখানে আছে,,বয়স 17হলেও 10 বছরের বাচ্চার মতো আচরন তার)
_পাখি তুমি কই আসিলা, আমি তোমাকে কতো খুজছি দেখ তোমার আন্টি আইসে,,
_আমি আন্টিকে খুজতে গেসিলাম বাবা,কোথায় আন্টি?
হুট করে হেনাকে পিছন থেকে কেউ জরিয়ে ধরায় ঘাবড়ে গেল,,পিছে ফিরে দেখল অন্তরা তাকে জরিয়ে ধরেছে,,অন্তরা হেনা চৌধুরীর শাড়ির আচল ধরে টানাটানি করতেসে আর দেখতাসে,,
_এত্ত সুন্দর শাড়ি পরস তুমি,,তোমার কানের দুল গুলা কত্ত সুন্দর আমাকে দিবে?
আরও অনেক কিছু বলতে লাগল,,হেনা চৌধুরী বিরক্তকর চেহারা নিয়ে হাসান চৌধুরীর(হেনার স্বামী) দিকে তাকালো,হাসান চৌধরী তার বউয়ের বেপারটা বুজতে পেরে বলল,,
_হেনা এইটা খালেদের মেয়ে,,মানি আমাদের মাদবরের মেয়ে,,ইশারায় বলল ওর একটু প্রবলেম আছে,,
হেনা চৌধুরী বুজতে পারায় অন্তরার দিকে তাকালো,,
_মাসাল্লাহ কতো সুন্দর মেয়ে,ইসসস ওর প্রবলেম হওয়াটাকি খুব প্রয়োজন ছিল?(মনে মনে বলতে লাগল)
(হাসান চৌধুরী প্রেমতলা গ্রামের চেয়ারম্যান থাকে ঢাকা,, প্রায় প্রায় গ্রামে এসে দেখে যায়, গ্রামে বড় একটি বাংলো আছে তাদের সব মাদবরের দায়ভাড়ে আছে)
দুপুরে খাবার দাবারের শেষে অন্তরার আম্মু তাদের জন্য নানান ধরনের পিঠা দিল,,খাওয়ার পর্ব শেষ করল,,হেনা চৌধুরী অন্তরার আম্মুর সাথে কথা বলছে, এক পর্যায় অন্তরার কথা জিজ্ঞেস করল,,
_অন্তরার এমন হলো কি করে?
_ছোট বেলায় ওর অনেক জর হয়েছিল,ডক্তর বলেছিল ওর কোন একটি সমস্যা হবে হয়তো এটিই ছিল সেই সমস্যা, হাত পায়ে ঠিকি বড় হয়েছে কিন্তু আচরন বাচ্চাসুলভ,,(বলেই দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল)
_তার পর আর কোন ডক্তর দেখাননি?
_আর দেখিয়ে কি হবে?ও কি আর ঠিক হবে?
_ওহ আচ্ছা,,
অন্তরা তাদের সামনে বসে বসে এইসব কথাগুলো শুনছে,চুপচাপ বসে নেই সে এইটা খায় তো ওইটা খায় গলার থেকে ওড়না পরে যায় বারে বারে,,হেনা চৌধুরীর খুব মায়া কাজ করে অন্তরার জন্য,,,
রাতে খাওয়ার পর সবাই ঘুমিয়ে গেল,হেনা চৌধুরী তার জামাইকে বলল,,
_আচ্ছা আমরা অন্তরাকে আমাদের ছেলের কাছে দেখালে কেমন হয়?আমাদের ছেলে ওতো এইসব নিয়েই ডাক্তার হচ্ছে,সামনের সপ্তাহে চলে আসবে তো ও,অন্তরাকে আমাদের সাথে নিয়ে যাবো তুমি কি বলো?
_হুম ঠিকি বলেছ,কিন্তু খালেদকি তার মেয়েকে দিবে আমাদের সাথে?
_আচ্ছা সকালে জিজ্ঞেস করে দেখবনে,,
সকালে,,,
_অন্তরা অন্তরা কোথায় তুই?
অন্তরাকে তার মা সারা বাড়ি খুজে বেরাচ্ছে কিন্তু তাকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছে না,, অন্তরার মার চিল্লাচিল্লি শুনে হেনা চৌধুরী ঘুম থেকে উঠে আসল,,
_ভাবি কি হয়েছে এমন চেচাচ্ছেন কেন?
_আরে ভাবি আর বইলেন না অন্তরা টাওনা সকাল সকাল কোথায় যেন চলে গেল না বলে,,
_আচ্ছা ভাবি অন্তরাকে যদি আমদের সাথে নিয়ে যেতে চাই?আমার ছেলে এইসব নিয়ে পড়াশুনা করে এইবার ডাক্তার হয়ে লন্ডন থেকে ফিরবে আমি চাইছি অন্তরাকে ওর কাছে দেখাবো,,আপনি কি বলেন?
অন্তরার মা কান্না করে দিল,,
_অন্তরার এমন বাচ্চাসুলভের জন্য আমি ওকে কোথাও রাখি না ভাবি, ও কখন কি চেয়ে বসবে,,
_আরে ভাবি চিন্তার কোন কারন নেই আমরা ওকে নিজের মেয়ের মতো আদর করব,,
_আচ্ছা ওর বাবাকে জিজ্ঞেস করে দেখি,,
অন্তরা পিংকুর সাথে মনের শুখে পুরা গ্রাম ঘুড়ে বেরাচ্ছে,,হঠাৎ কারো চিৎকারের আওয়াজ শুনলো,,
_কিরে পিংকু ময়না আপু এমন চেচাচ্ছে কেন?
_কেন তুই জানিস না আজ তার বাচ্চা হবে,,
_চল দেখে আসি,
_হোপ পাগল নাকি আমি যাবো না,,
_তুই না গেলে নাই আমি যাই,,
বলেই অন্তরা পিংকুকে রেখে একাই গেল,,পিংকু অনেক বার ডাক দিল তাও শুনল না, ঢেং ঢেং করে সে চল্ল,অন্তরা ময়নাদের বাসার সামনে গেল দেখল অনেক মানুশভিড় হয়ে আছে, সে ভীড় ঠেলে সামনে গেল,,ময়নার বাবাকে জিজ্ঞেস করল,,
_চাচা ময়না আপু এমন চেচাচ্ছে কেন?
_অন্তরা তুই বুজবি না তুই যা এখান থেকা,,
বলেই অন্তরাকে পিছে ঠেলে দিল,,সবাই অন্তরাকে পিছে ঠেলে একদম দরজার বাহিরে ফেলে দিল,,
_ময়না আপুকে মারছে কেন?সে এমন চেচাচ্ছে কেন?মনে মনে বলল
অন্তরার ভিতরে কৌতুহল যাগছে,,কি হচ্ছে দেখার জন্য, সে বাড়ির পিছনে গেল,,বেড়ার ফাক দিয়ে দেখল ময়না মেঝেতে শুয়ে কাতরাচ্ছে,,অন্তরা আর একটু গভির ভাবে দেখল,অন্তরা এইসব দেখছে আর চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি পরতে লাগল,,ময়না আপুর অনেক কষ্ট হচ্ছে চোখের কোন বেয়ে পানি পরছে, হঠাৎ একটি বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ভেসে উঠল,আর ময়না আপুর কান্নার বেগ থেমে গেল,, দাই মহিলা বলে উঠলো “ময়না আর বেচে নেই”অন্তরা এইসব জিনিস দেখে খুব কান্না করতে লাগল,,কান্না করতে করতে দৌড়িয়ে পিংকুর কাছে গেল,,
_কিরে তোর কি হয়েছে এভাবে কান্না করছিস কেন?
অন্তরা কিছু বলার হালাতে নেই সে অঝরে কান্না করছে,,পিংকু তাকে তার বাসায় পৌছিয়ে দিল,,তার মা বাবা মেয়ের কান্না দেখে ঘাবড়িয়ে গেল,অন্তরাকে তার মা নানান কথা জিজ্ঞেস করছে কেন কান্না করছে কি হয়েছে,,কিন্তু অন্তরা কেউকে কিছু না বলে এক দৌড়ে নিজের রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে বিছানার সাথে হেলান দিয়ে নিচে দুই হাটুর মাঝে মুখ গুজে কান্না করতে লাগল,,বাহিরে অন্তরার মা দরজা পেটাচ্ছে কিন্তু ভিতর থেকে শুধু ” মরে গেছে মরে গেছ” বলে চিৎকার করে কান্না করতে লাগল,
চলবে 🖤