#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ৯
তরী অজ্ঞান হয়ে যাওয়ায় ওকে সবাই ধরাধরি করে রুমে নিয়ে যায়, ডাক্তারকে ডাকা হয়।
ওদিকে…
তরীর বাবা টিভিতে খবরটা দেখে তাড়াতাড়ি আর্দ্রকে ফোন করে- হ্যালো
আর্দ্র- বলুন( শান্ত কন্ঠে)
তরীর বাবা- এসব কী দেখাচ্ছে টিভিতে।
আর্দ্র- আঙ্কেল সব সত্যি , তরী কে প্লিজ এসব বলবেন না।
তরীর বাবা- কীভাবে আর লুকাবো তরীই সবার আগে দেখেছে এখন অজ্ঞান হয়ে আছে আমার মেয়েটা।
আর্দ্র- আঙ্কেল আপনি সবটা একটু দেখুন আমি একা পারছি না সবাই ভেঙে পড়েছে। মা,বড়মাকে তো সামলানো যাচ্ছে না।( করুন কন্ঠে)
তরীর বাবা- আমি দেখছি।
আরুশ একটা কাজে গাড়ি নিজে ড্রাইভ করে যাচ্ছিল হঠাৎ একটা ট্রাক এসে আরুশের গাড়িকে ধাক্কা মারে আর আরুশের গাড়ি সামনের খাদে পড়ে যায়।পুলিশ খোঁজ চালাচ্ছে কিন্তু আরুশের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। সবাই এটা আন্দাজ করছে আরুশ আর জীবিত নেয়।
এদিকে তরীর জ্ঞান ফিরতেই পাগলামী করছে।
তরী- মা আমি আরুশের কাছে যাবো, মা বলো না আমার আরুশের কিছু হয়নি ওহ একদম ঠিক আছে বলো না মা।( চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে)
তরীর কান্না শুনে সবার চোখে পানি।তরী আবার ওহ ওর মায়ের কাছে জানতে চাই ওর আরুশ ঠিক আছে কিনা কিন্তু তরীর মা কিছু বলতে পারেনা মুখ চেপে কান্না করে।তরীকে সামলাতে পারা যাচ্ছেনা ডাক্তার ওকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে রেখেছে।
গোটা চৌধুরী বাড়ি নিস্তব্ধ। আরুশ সবার চোখের মনি আরুশের এমন অবস্থা কেউ মেনে নিতে পারছেনা।
আরুশী- মা কেন এমন হলো বলো না, দাদাভাই এর সাথে কেন এমন হলো। দাদাভাই তো কোনোদিন ওহ কারো কোন ক্ষতি করেনি( কাঁদতে কাঁদতে)
আরুশীর মা- জানিনারে মা আমার আরুশকে কেন আমার কাছ থেকে কেড়ে নিলো উপর ওয়ালা কে জানে ( চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো)
উপস্থিত সকলের চোখে পানি। আরুশের মা অসুস্থ হয়ে পড়ে ওনাকে ডাক্তার ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে রাখে।
২৪ ঘন্টা পার হয়ে যায় , আরুশের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তরীর জেদের কাছে হার মেনে তরীর বাবা তরী কে নিয়ে চৌধুরী বাড়িতে আসেন।
তরী কে দেখে সবাই আবার কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।রিতাও এসেছে তরীর সাথে। রিতা,রিতার মা আর তরীর মা সবাইকে সামলানোর চেষ্টা করছে।কাল থেকে কেউ কিছু খায়নি কারোর গলা দিয়ে খাবার নামছে না।ওরা সবাইকে জোড় করে খাওয়াতে লাগে।
তরী- মা আমাকে জোড় করো না আমার গলা দিয়ে কিছু নামবে না,আগে আমার আরুশ ফিরে আসুক তারপর আমি সব খাবো।
রিতার মা- তরী মা দ্যাখ সবাই না খেয়ে আছে। আচ্ছা তুই একবার আরুশের মায়ের কথা ভেবে দ্যাখ তো ওনার কি হচ্ছে তুই যদি এভাবে ভেঙে পড়িস তাহলে ওনিও তো ভেঙ্গে পড়বে আর আরুশ যখন ফিরে আসবে তখন কি দেখবে ওর বউ ওর মায়ের যত্ন নেয়নি।
তরী- আমার আরুশ আমাকে বকবে তাইনা, সত্যি তো আন্টিকে তো আমাকেই সামলাতে হবে, আমি ভেঙে পড়বো না।
তরী চোখ মুছে উঠে দাঁড়িয়ে আরুশের মায়ের কাছে যায়।
রিতার মা,আর তরীর মা তরীর দিকে করুন চোখে তাকিয়ে আছে।
তরী সবাইকে জোড় করে খাইয়ে দিলো ওকে দেখে মনে হচ্ছে না ওহ একটু আগে কান্নাকাটি করছিলো।।সবাইকে তরী একাই সামলাচ্ছে।
তরীর মা- মারে এটা খেয়ে নে।
তরী- ভালো লাগছে না।
তরীর মা-আরুশ এসে বকবে তো।
তরী- না আমি বকা খাবো না, খাবার খাবো মা আমাকে খাইয়ে দাও।
তরীর মা নিজের চোখের পানি মুছে তরী কে খাইয়ে দেয় । তরী একটা অবুঝ শিশুর মতো আচরন করছে।ওকে যে যা বলছে ওহ তাই করছে,একটুও কান্নাকাটি করছে না।
তরী ওর মাকে বলছে আরুশ ফিরে এলে এটা করবে, ওটা করবে, সেটা করবে তরীর মা নিজের মেয়ের এমন পাগলামি দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না,তার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
হঠাৎ করে গাড়ির শব্দ পাওয়া যায়।তরী দৌড়ে আসে,গাড়ি থেকে নামানো হয় একটা লাশ।
তরী- ওটা কে??
লাশটাকে রাখার পর রিতা তরী কে নিয়ে যায়। লাশের কাপড়টা সরানো হলো…
পুরো মুখটা থেঁতলে গেছে ভয়ংকর লাগছে দেখতে তরী আরুশ বলে চেঁচিয়ে উঠে জ্ঞান হারায়।
আরুশের লাশটা পোস্টমর্টেম করতে নিয়ে যাবে বলেছিলো কিন্তু আর্দ্র করতে দেয়নি,সে চাইনি তার মৃত ভাইয়ের লাশটা কাটা ছেঁড়া করা হোক।
সন্ধ্যার আগে লাশটা দাফন করা হয়।যে বাড়িটা বিয়ের সাজে সজ্জিত হবার কথা ছিল সেটা আজ কালো অন্ধকারে ঢেকে গেল।
তরী জ্ঞান ফেরার পর একদম চুপচাপ হয়ে গেছে কারোর সাথে কথা বলছে না, শুধু চুপচাপ তাকিয়ে আছে।
২ দিন কেটে যায়…
তরীর কোনো পরিবর্তন হয়নি, সারাদিন চুপচাপ থাকে। মাঝেমাঝে নিজের সাথে নিজে কথা বলে।
আরুশের জিনিস নিয়ে খেলা করে।
তরীর বাবা-তরী মা কোথায় তুমি।
তরীর বাবা ঘরে এসে দেখে তরী নেয়, গোটা বাড়িটার কোথায় তরীর খোঁজ পাওয়া গেলে না।তরীর মা মেয়ের জন্য কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে।
ওদিকে…
চৌধুরী বাড়িতে এতো সকাল সকাল তরী কে এই বাড়িতে আসতে দেখে সকলে অবাক হয়।
আরুশের বাবা- তরী মা তুই।
তরী- আমি কী আরুশের ঘরে থাকতে পারি কিছুদিন।
সবাই তরীর দিকে তাকায় তরীর কেন থাকতে চাইছে সেটা কেউ বুঝতে পারছে না।
তরী- বলো না।
আরুশের বাবা- আচ্ছা ঠিক আছে।
তরী- আমি যাই এখন।
তরী চলে যায়।
আরুশের মা- মেয়েটার দিকে তাকানো যাচ্ছেনা,কি হয়েছে অবস্থা।আমার ছেলেটা তো চলে গেলেও সাথে মেয়েটাকেও জীবন্ত লাশ বানিয়ে দিলো।( কাঁদতে কাঁদতে)
আরুশের বাবা- আমি একবার ওর বাড়িতে জানিয়ে দিয় সবাই হয়তো ওকে খুঁজছে।
আরুশের বাবা তরীর বাবাকে ফোন করে বলে দেয়।তরী আরুশের রুমে গিয়ে একটা একটা করে জিনিসগুলো দেখছে আর চোখের পানি ফেলছে।
তরী আরুশের পছন্দের একটা শার্ট নিয়ে সেটা আঁকড়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে থাকে। তরীর কান্না শুনে সবাই দৌড়ে আসে আরুশী ভেতরে যেতে গেলে আরুশের মা আটকায়।
আরুশের মা- যাস না ওকে কাঁদতে দে।
আরুশী- কেন মা
আরুশের মা- চলো সবাই ওকে ওর মতো থাকতে দাও।
সবাই চলে যায় তরী কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো- ওই মিস্টার কথা দিয়েছিলেন তো আমাকে কখনো ছেড়ে যাবেন না তাহলে কেন চলে গেলেন আমাকে একা রেখে।
তরী কাঁদতে কাঁদতে ওর হঠাৎ মনে পড়ল আরুশ একবার বলেছিলো ওর একটা ডাইরি আছে।
তরী ডাইরি খুঁজতে থাকে ওর হঠাৎ চোখ পড়ে বুকশেলফের বইয়ের মাঝে একটা নীল কালারের মোলাট করা ডাইরি।তরী ডাইরিটা নিয়ে পড়তে শুরু করে।
ডাইরির প্রথম পাতায় লেখা মাই লাভ তরী।
তার পরের কয়েকটা পাতা খালি , তারপর ওদের প্রথম দেখা হবার তারিখ…
আজকে একটা পিচ্চি মেয়ের মায়ায় আটকে গিয়েছিলাম।ওর ওই মায়াবী চোখ দুটো আমাকে পাগল করে দিয়েছে।কখনো ভাবেনি আরুশ চৌধুরী ওমন একটা পিচ্চি মেয়ের মায়ায় পড়বে।ওর হাসিটা খুব সুন্দর।মেয়েটা খুব দুস্টু ,যা ওর নামটাই জানতে পারলাম না।
কিছু পাতা ছেড়ে লেখা আছে….
আজকে পিচ্চিটার সাথে আবার দেখা ওর নাম তরীতা জাহান ( তরী)। কয়েকদিন ওকে দেখার জন্য ছটফট করেছি আজ শান্তি পেলাম।
২টো পাতা পর…
আজকে ওহ ওর মনের বিরক্তের কথা বলেছে।
পরের পাতায়….
আজকে আমি খুব খুশি ওর সাথে আমার বিয়ের কথা পাকা হয়ে গেলো।ওর বাবা আর আমার বাবা বন্ধু।
মাঝে আরো কিছু লেখা আছে ….
শেষের দিকে একটা পাতায় লেখা…..
আর কয়েকদিন পর আমাদের বিয়ে কিন্তু আমার খুব ভয় করছে মনে হচ্ছে তরী কে আমি হারিয়ে ফেলবো।
তরী ডাইরি থেকে ওর কয়েকটা ছবি পাই যেগুলো আরুশ লুকিয়ে তুলেছিলো।
1বছর পর……
#চলবে…
#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ১০
১ বছর পর….
কেটে যায় ১ টা বছর।অনেক কিছু বদলে গেছে তরী আগের থেকে অনেক চুপচাপ হয়ে গেছে। তরী আরুশের ডাইরিটা পড়ে তরী পাগলামি করা বন্ধ করে দেয়,তরী সবাইকে সামলাই।তরীর দিকে তাকিয়ে গোটা চৌধুরী পরিবার নিজেদের সামলে নেয়। বর্তমানে তরী একটা কোম্পানিতে চাকরি করে।
তরী- মা আমি অফিস যাচ্ছি।
তরীর মা- কাজটা করা কি খুব দরকার।
তরী- মা তুমি তো সবটা জানো।আমি কাজটা করলে সারাদিন ব্যস্ত থাকি সময়টা কেটে যায়,পুরানো কথা গুলো আর মনে পড়ে না।
তরীর মা- কিন্তু তোর কাজ করতে কস্ট হয় তো।
তরী- মা কিছু হয়না।
তরীর মা- আমি সব জানি।
তরী- আমার লেট হয়ে যাচ্ছে আমি যাচ্ছি।
তরী চলে যায়।তরীর মায়ের চোখ দিয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে।
ওদিকে…
চৌধুরী বাড়িতে আরুশের মৃত্যুটা সবাই মেনে নিয়েছে কিন্তু সবার হাসিটা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে।আর্দ্র একা হাতে সামলাতে সামলাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে, আরুশের কাছে আর্দ্র কিছু নয়।
ম্যানেজার- স্যার এই প্ল্যানটা কি আমাদের জন্য ভালো হবে।
আর্দ্র- বুঝতে পারছি না।আরুশের বিজনেস প্ল্যানের কাছে এটা তো কিছু নয়।
ম্যানেজার- হুম।
আর্দ্র- আপনি রেখে যান আমি দেখছি।
ম্যানেজার ফাইলটি রেখে চলে যায়।
আর্দ্র- আরুশ ভাই কোথায় তুই প্লিজ ফিরে আয়,তোকে ছাড়া সবটা জেনো এলোমেলো হয়ে গেছে।তোকে ছাড়া আমরা কেউ ভালো নেয়, আমি একা সবটা সামলাতে পারছিনা। এই কোম্পানিতে, আমাদের প্রত্যেকের জীবনে তোকে যে খুব দরকার প্লিজ ফিরে আয়।জানিস আরুশ অদ্রির একটা মেয়ে হয়েছে তুই চাইতিস তাইনা যে একটা ছোট পুতুল আদোআদো কন্ঠে তোকে মামা বলবে,তুই তার নাম রাখবি রুদ্রি।ভাই রে অদ্রির তোর পছন্দ অনুযায়ী তার নাম রেখেছে রুদ্রি। সবকিছু তোর কথা মতো হচ্ছে শুধু তুই নেয় আমাদের মাঝে। তুই তো কথা দিয়েছিলি যে তরী কে ছেড়ে যাবিনা,কেন চলে গেলি তরী যে ছন্নছাড়া হয়ে গেছে মেয়েটা যে তোকে ছাড়া একটিও ভালো নেয়।প্লিজ ফিরে আয় ফিরে আয়( আরুশের ছবিকে বুকে আঁকড়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে)
আর্দ্র আবার বলতে লাগলো- আরুশ তুই মজা করে বলেছিলিস যে আমি যখন থাকবো না তুই বুঝবি আমি কি জিনিস সেদিন আমি হেসে উড়িয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু আজ বুঝতে পারি তুই ছাড়া আমি কতটা একা। আর্দ্র- আরুশ দুই দেহ এক প্রাণ।আরুশকে ছাড়া আর্দ্র প্রানহীন।আরুশ দেখনা তোর প্রানের বন্ধু- ভাই আর্দ্র জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে আছে। একবার ফিরে আয় না ভাই একবার আয় না।( কাঁদতে কাঁদতে)
একটা ছেলে সহজে কাঁদে না,কতটা আঘাত,কস্ট পেলে একটা ছেলের চোখ থেকে পানি পরে। আর্দ্র আর আরুশ একে অপরের প্রান ছিলো। আর্দ্র কখনোই আরুশের কোনো ক্ষতি করতে পারেনা।
তরীর অফিস….
তরী কোম্পানিতে একটা উচ্চপদে কাজ করে।এই কাজটা করার পর তরী অনেকটা ডিপ্রেশন থেকে বেরিয়ে আসে।
পিওন- ম্যাম আপনাকে ম্যানেজার স্যার ডাকছে।
তরী- আমি আসছি,তুমি যাও
তরী ম্যানেজারের রুমে যায়।
তরী- মে আই কাম ইন স্যার।
ম্যানেজার- হূম এসো।
তরী- স্যার ডেকেছিলেন।
ম্যানেজার- তরী তোমাকে অফিসের কাজের জন্য একবার … এখানে যেতে হবে।
তরী- কেন স্যার।
ম্যানেজার- তুমি তো জানো এই অফিসে কোনো এমডি নেয় আমাকেই সবটা সামলাতে হয়।স্যাররা তো খুব কম আসেন এখানে।
তরী- হুম।
ম্যানেজার- একটা প্রোজেক্ট এর বিষয় নিয়ে একটা কোম্পানির এমডির সাথে মিটিং আছে আমি চাই এই মিটিং এ তুমি যাও।
তরী- আমি।
ম্যানেজার- হুম তুমি আমি জানি তুমি পারবে প্লিজ আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে দিয়ো না।
তরী- ওকে আমি যাবো।
ম্যানেজার- কালকে যাবে আর আজ তোমার ছুটি যাও বাড়ি গিয়ে রেস্ট নাও।
তরী চলে যায়, ম্যানেজার একজনকে ফোন করে- হ্যালো স্যার।
– হুম বলো।
– তরী কে বলেছি কালকে ওহ যাবে।
– ওকে।
ফোনের ওপাশে ছিলেন আরুশের বাবা।এটা আরুশদেরই অফিস তবে সেটা তরী জানে না।তরী যখন চাকরি করতে চাই তখন আরুশের বাবা তরীর চাকরি এখানে করেন কারন তরী কে বাইরে একা ছাড়তে চাননি।তরী যদি জানতো এটা আরুশের অফিস তাহলে ওহ চাকরি করতো না তাই জানাই নি।
চৌধুরী বাড়ি…..
আরুশের মা- কিরে আর্দ্র মন খারাপ নাকি।
আর্দ্র- না বড়মা।
আরুশের মা- মনে হচ্ছে তো।
আর্দ্র ওর বড়মাকে জড়িয়ে ধরে।আরুশের মায়ের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।
আরুশের মা- আমি জানি তুই ভালো নেয়, তোর ওহ কস্ট হচ্ছে।
আর্দ্র- বড়মা আমি ঠিক আছি।
আরুশের মা- আমি জানি,আরুশ তোর জন্য কী ছিলো ।আরুশের চলে যাওয়াটা তোর কাছে খুব কস্টের আমি জানি আমি তো তোর ওহ মা।
আর্দ্র আর নিজেকে সামলাতে পারেনা, আর্দ্র নিজের রুমে চলে যায়। আরুশের মা চোখের পানি ফেলে।
আরুশী ওর মায়ের কাঁধে হাত রাখে।ওর মা চোখের পানি মুছে ওর দিকে তাকায়।
আরুশী- মা কেন কাঁদছো।
মা- কই না তো।
আরুশী- আমি জানি।
মা- আর্দ্রটাকে দেখে কস্ট হচ্ছে,ছেলেটা একদম চুপচাপ হয়ে গেছে। সারাদিন কাজ কাজ করে।
আরুশী- আমাদের সকলের ভালো থাকাটাই যে হারিয়ে গেছে।
মা- সব আমার পোড়া কপাল।
আরুশী- মা এসব বলো না ।
আরুশী ওর মাকে জড়িয়ে ধরে।
রাত্রি বেলা…
তরী আরুশের ছবিকে বুকে আঁকড়ে ধরে শুয়ে আছে।
তরী- কেমন আছো আরুশ।
– …..
– আমি না ভালো নেয়।তোমাকে ছেড়ে আমি একটুও ভালো নেয়।
– ..
– খুব মজা লাগছে তাইনা আমাকে কস্ট দিতে।
–
– আমাকে ছেড়ে তুমি খুব ভালো আছো তাইনা।
–
– প্লিজ একবার আমার কাছে এসো না।আমি আর দুস্টুমী করব না।
–
তরী নিজে নিজেই কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরের দিন….
তরী রেডি হয়ে চলে যায় নিজের গন্তব্যে।
কর্মচারী- ম্যাম আপনার জন্য সবাই ওয়েট করছে।
তরী- ওকে।
তরী মিটিং রুমে যায়।
তরী- হ্যালো।আপনি মিস্টার রায়।
– হুম।
– ওহ
– আপনি কে আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না।
– আমি তরীতা জাহান।
– ওহ তাহলে আপনি তরীতা।
– হুম।
– ওকে তাহলে মিটিং চালু করুন।
–
তরী সেখানে ভালো করে মিটিং শেষ করে।
তরী- আজ তাহলে আসি।
লোকটা- বাই।
তরী বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
মি. রায়- তরীতা জাহান কে আমার একরাতের জন্য হলেও চাই।( বাঁকা হেসে)
একটু সন্ধ্যা হয়ে গেছে।তরী একা আসছে জায়গাটাও ফাঁকা তার উপর তরী গাড়ি পাচ্ছে না। তরী নিজের গাড়ি নিয়ে অফিসের কোনো কাজে যায় না। গাড়ি না পেয়ে ওহ হাঁটতে চালু করলো।
তরী দেখতে পেলো কয়েকজন ছেলে ওর পথ আটকে দাঁড়ালে।
তরী- আপনারা কে??
– আমরা কে জেনে লাভ নেই, তোমাকে আমাদের সাথে যেতে হবে।
– আমি যাবো কেন।
– তোমাকে যেতেই হবে।
– কেন।
ছেলেগুলো তরী কে ধরতে আসে,তরী দৌড়াতে শুরু করলো।ছেলে গুলো ওর পেছনে দৌড়াতে লাগলো।
তরী হঠাৎ কারোর সাথে ধাক্কা খেলো,তরী মুখ তুলে তাকিয়ে চমকে উঠলো….
#চলবে…