#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকিঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্ট_৭
আরুশ- কী বলবে।
তরী- সরি।
আরুশ- কেন??
তরী- আসলে তখন আমি আপনাকে ইচ্ছা করে ধাক্কা মেরেছিলাম।
আরুশ অবাক হয়ে যায় তরীর কথা শুনে।
আরুশ- মানে।
তরী- মানে টানে জানিনা,আমি আমার বন্ধুদের খুঁজছিলাম কিন্তু পাচ্ছিলাম না তাই আপনাকে ধাক্কা দেয় আর শাস্তি স্বরুপ আমার বন্ধুদের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে আস্তে বলি।
তরী কথাটি বলেই আবার দৌড়ে চলে যায়।আরুশ তরীর দুস্টুমী দেখে মুচকি হাসি দেয়।ওই বাচ্চা মেয়েটা কয়েকটা মুহূর্তে ওর মনে অনেকটা জায়গা করে নিয়েছে।
আরুশকে ওখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আর্দ্র ওর কাছে আসে।
আর্দ্র-কোথায় চলে গিয়েছিলি।
আরুশ- আর বলিস না একটা পিচ্চি মেয়ে।
আর্দ্র- আরুশ চৌধুরী একটা মেয়ের কথা বলছে( অবাক হয়ে)
আরুশ- দূর
আর্দ্র- আরে রাগ করিস না কি হয়েছে বল।
আরুশ আর্দ্রকে সবটা বলে আর্দ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আরুশ- কি হলো চুপচাপ হয়ে গেলি কেন।
আর্দ্র – আরুশকে এসব বলে একটা মেয়ে চলে গেলো আর আরুশ কিছু বললো না এটা মানা যাচ্ছে না কেসটা কি বল।
আরুশ- কিছু না।
আরুশ চলে যায়।আর্দ্র নিজের মনে ভাবে – আমিও যে একজনের উপর ক্রাশ খেয়েছি। কিন্তু তাকে পাবো কোথায় তাকে যে আমি দেখেনি।
*( আর্দ্র কার উপর ক্রাশ খেলো,তরী উপর নয় তো।
আমি জানিনা কার উপর আর্দ্র ক্রাশ খেলো আপনারা জানলে বলবেন অবশ্যই)
এভাবে কেটে যায় কয়েকটা দিন। আরুশ তরীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে আর আর্দ্র তার ক্রাশের মুখ খোঁজার চেষ্টা করছে।ওদিকে তরী তো বেমালুম ভুলে গেছে আরুশের কথা। কিন্তু বেশিদিন আর ভুলে থাকতে পারলো কোথায় আবারো ধাক্কা আরুশের সাথে তবে এটা ইচ্ছা করে নয়,অসাবধানতাবশত হয়ে গেছে।তরীকে দেখে আরুশ খুব খুশি হলো আর তরী ম্যাডাম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে বুঝতে পারছে না ছেলেটা এতো খুশি কেন হলো।
আরুশ- হাই কেমন আছো।
তরী বুঝতে না পেরে সামনে পেছনে সাইটে কোনো মানুষকে খুঁজতে লাগলো কিন্তু পেলো না।
তরীকে এদিক- ওদিক তাকাতে দেখে আরুশ বললো- এই আমি তোমাকেই বলছি।
তরী- আমাকে??
আরুশ- হুম আমাকে চিনতে পারছো না
তরী- না।
আরুশ- মেলাতে ধাক্কা।
তরীর সবটা মনে পড়ে যায়, বেচারি ভাবতে পারেনি আরুশের সাথে ওর আবার দেখা হয়ে যাবে।সেদিন ওহ ভালো করে আরুশকে দেখেনি। যদি জানতো আরুশের সাথে আবার দেখা হবে তাহলে এখানে আসতো না জীবনে।
আরুশ- এবার চিনতে পারছো।
তরী মাথা নাড়ল,আরুশ তরীর দিকে তাকিয়ে আছে ওর বিশ্বাস হচ্ছেনা এই তরীই কী সেই তরী যাকে ওহ ভালোবাসে।
আরুশ- তোমার নাম কী?
তরী- কেন??
আরুশ- কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে তাকে নাম না বলে কেন বলতে হয় বুঝি।
তরী- না।
আরুশ- তাহলে বলো।
তরী- তরীতা জাহান,সবাই তরী বলে ডাকে।
আরুশ- কোন ক্লাসে পড়।
তরী- ৯ এ
আরুশ- আমি ভাবলাম ৫- ৬ এ পড়ো।
তরী আরুশের দিকে বাঁকা চোখে তাকালো আরুশ মিটমিট করে আসছে।
তরী- আমি আসছি বাই।
আরুশ- আরে দাঁড়াও
আবার তরী কে পাই।আরুশ হতাশ হলো।
আরুশ- যাক নামটা তো জানতে পেরেছি।
এরপর প্রায় আরুশের সাথে তরীর দেখা হয়।তরী তো বেজায় বিরক্ত কিন্তু আরুশ আমাদের খুব খুশি তার ভালোবাসার মানুষটার সাথে তার দেখা হচ্ছে।তরী এসব আর নিতে পারছেনা ওহ আরুশকে বললো- আপনার সমস্যা কোথায় বলবেন,এভাবে কেন আমার পেছনে পড়েছেন।
আরুশ- এমনি
তরী- কেউ আবার এমনি এমনি করে নাকি।
আরুশ- হুম আমি করি।
তরী- ভালো।
তরী রাগ করে চলে যায়।তার দিন পনেরো পর আরুশ, আর্দ্র আর আরুশের বাবা তরীদের বাড়িতে আসেন এই পনেরো দিনে আরুশ তরীর সামনে যাইনি।
আরুশের বাবা- তুই সিওর এটাই ওদের বাড়ি।
আরুশ- হুম।
আরুশের বাবা আর কিছু বললেন না।ওরা বাড়ির ভেতরে গেলো আরুশের বাবাকে দেখে তরীর বাবা জড়িয়ে ধরলেন।আরুশ আর আর্দ্র হা করে তাকিয়ে আছে ওরা বুঝতে পারছেনা তরীর বাবার সাথে আরুশের বাবার কি সম্পর্ক।
তরীর বাবা- তুই হঠাৎ আমার বাড়িতে।
আরুশের বাবা – তোর কাছে একটা ইচ্ছা নিয়ে এসেছি।
তরীর বাবা-কী ইচ্ছা।
আরুশের বাবা- তরী মাকে আমি আমার পুত্রবধূ হিসাবে নিয়ে যেতে চায়।
তরীর বাবা- এটা তো ভালো খবর কিন্তু
আরুশের বাবা- কী
তরীর বাবা- তরী এখন ছোটো আমি এখন ওর বিয়ে দেবো না।
আরুশের বাবা- না এখন বিয়ে হবে না, কিন্তু কথা বলা থাক।
আরুশ খুব খুশি হয় ও ভাবতে পারেনি এত সহজে তরী কে পেয়ে যাবে ।
তরীর বাবা তরী কে ডেকে পাঠালেন।আরুশকে এখানে দেখে তরী খুব অবাক হয় ওহ বুঝতে পারছে না ব্যাপারটা কি।
তরীর বাবা তরীর সাথে সকলের পরিছূ করিয়ে দেয়।তারপর বলেন..
তরীর বাবা-তরী মা আরুশ আর আর্দ্র কে আমাদের বাড়িটা ঘুড়িয়ে দেখাও তো।
তরী- ওকে।
ওরা তরীর সাথে যেতে লাগলো মাঝপথে আর্দ্র বললো- আমার ফোনটা ওখানে রেখে চলে এসেছি আমি যায় নিয়ে আসি।
আর্দ্র ওদেরকে রেখে চলে গেলো।
আরুশ- আমরা এবাড়িতে কেন এসেছি এটা জানেন।
তরী- না।
আরুশ- ওহ
তরী- হুম।
আরুশ- মিস তরীতা জাহান আপনার বিয়ের কথা চলছে আমার সাথে এটা আপনি কী জানেন।
তরী শক খায় এমন কথা শুনে।
তরী- কী.??
আরুশ- হুম ,সবাই রাজি আর আমিও।
তরী- আমি রাজি নয়।
আরুশ- তুমি রাজি হও আর না হও তোমাকে আমি বিয়ে করবোই।
আরুশ চলে যায় তরী তো রেগে বোম।তরী ওর বাবার কথা ফেলতে পারেনি বিয়ের জন্য রাজি হয়ে যায়।
এরপর আরুশ তরীর বিয়ে ঠিক হয়ে যায়।তরীর সাথে আর্দ্র,আরুশী আর অদ্রির ভালো সম্পর্ক হয়ে যায়।আরুশের সাথে তরীর প্রথম প্রথম কথা বললেও পরে কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৩ বছর ওদের কোনো যোগাযোগ ছিলো না। অবশ্য এর একটা কারন ছিলো সেটা পড়ে জানতে পারবো। অদ্রির বিয়েতে আবার কথা হয় ওদের…. তারপর সবার সবটা জানা।
ফ্ল্যাশব্যাক এন্ড…
_______________________
বর্তমান-
তরী রিতার ডাকে ভাবনা ত্যাগ করে।
রিতা- কি ভাবছিস।
তরী- কিছু না।
রিতা- আমি জানি তুই আগের কথা ভাবছিলি আরুশ দার সাথে তোর দেখা হওয়া এগুলো তাই না।
তরী- হুম।
রিতা- আমি বুঝতে পারছি না যে ছেলেটা তোকে পাগলের মত ভালোবাসে সে কেন এরকম করলো।
তরী- জানিনারে আমার ওর সাথে কথা বলতে হবে কিন্তু ওহ আমার ফোন তুলছে না।
রিতা- দ্যাখ চেষ্টা কর আর আরুশদার রাগ কমলে ঠিক তোকে ফোন করবে দেখবি।
তরী- হুম।
পরেরদিন সকালে –
রিতার মা- তরী আজকে থেকে যেতে পারতি।
তরী- না আন্টি মা বকবে।আমি পড়ে আসবো আজ যাই।
তরী রিতার বাড়ি থেকে নিজের বাড়ি চলে যায়। আর আরুশ…
আর্দ্র- আরুশ তুই কোথায়??
আরুশ- আমার একটা কাজ আছে তাই আমি … চলে এসেছি।
আর্দ্র- কি হয়েছে গলা এমন লাগছে কেন?
আরুশ- কিছু হয়নি ভালো লাগছে না।আমি একটু রেস্ট নেবো বাই।
আর্দ্রকে কিছু বলতে না দিয়ে কেটে দেয়। আর্দ্রের ব্যাপারটা কিরকম লাগে।
আর্দ্র- যাইহোক কিছু তো হয়েছে কালতো তরীর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলো ,তরী কে একবার ফোন করি।আর্দ্র তরী কে ফোন করে দেখা করতে বলে।
তরী আর আর্দ্র দেখা করতে আসে।
তরী- কী ব্যাপার এখানে আসতে বললে কেন?
আর্দ্র- তোদের মাঝে কী হয়েছে রে।
তরী কিছু বলে না চুপ করে থাকে।
আর্দ্র- তরী কি হয়েছে বল আমাকে।
তরী আর্দ্রকে বলে কিন্তু ওকে চড় মারার কথাটা গোপন করে যায়।
আর্দ্র- এই আরুশ রাগটা কবে কমবে কে জানে কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না আরুশ তোর উপর কেন রাগ করলো তুই তো সারাদিন আমাদের সাথে ছিলি।
তরী- আমিও বুঝতে পারছি না,আমি কি করবো আরুশ আমার কথা শুনতে চাইছেই না।
মিলিকে ফোন করে ওর লোক..
– ম্যাম, আর্দ্র আর তরী আবার দেখা করতে এসেছে।
– কি কথা বলছে শোনো।
– ম্যাম আরুশ তরীর উপর খুব রেগে আছে কোনো কারনে খুব তরী কে যাতা কথা বলেছে।
– ওহ।
ফোনটা কেটে দিলো।
মিলি- আমি তো আরুশকে কোন ছবি এখনো পাঠায়নি, তাহলে ওদের মাঝে কী নিয়ে ঝগড়া হলো।
আরুশ তরীর উপর রাগ করে ফোনে আসা কিছু একটা দেখে ফোন এ পাঠিয়েছে মানে কোনো ছবিই হবে হয়তো। কিন্তু মিলি যদি আরুশকে ছবি গুলো না দিয়ে থাকে তাহলে কে পাঠালো ছবিগুলো??
#চলবে…
#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ৮
আর্দ্র কিছুতেই বুঝতে পারছে না তরী কে আরুশ কেন ভুল বুঝলো।ওহ ঠিক করে আরুশের সাথে কথা বলবে।আর্দ্র আরুশকে একটা মেসেজ পাঠালো।
– আরুশ তোকে এখনি বাড়ি আসতে হবে,তরীর শরীর খুব খারাপ।
আরুশ মেসেজ টা দেখে খুব ঘাবড়ে যায় যতইহোক তরী ওর ভালোবাসার মানুষ তো।আরুশ কোনো কিছু না ভেবে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। গাড়িতে বসে আর্দ্রকে ফোন করে।
আরুশ- আর্দ্র তরী কোথায়?
আর্দ্র- আমাদের বাগানবাড়িতে।
আরুশ- কী।
আর্দ্র- হূম। তাড়াতাড়ি আয়।
আরুশ বাইরে কোথাও যাইনি তার ওর বাগানবাড়িতে আসতেও বেশি সময় লাগলো না। আর্দ্র ওহ আন্দাজ করেছিলো আরুশ বাইরে যায়নি।
আরুশ- আর্দ্র আমার তরী কোথায়।
আর্দ্র- তরী ঠিক আছে।
আরুশ- কোথায় ওহ
আর্দ্র- ওর নিজের বাড়ি।
আরুশ- তাহলে আমাকে এখানে আসতে বললি কেন।
আর্দ্র- কথা আছে তাই।
আরুশ- কি এমন কথা যার জন্য এভাবে আমাকে আনতে হলো। জানিস আমি কীভাবে এলাম এখানে।
আর্দ্র- সরি এটা ছাড়া কোন উপায় ছিল না।
আরুশ- কেন??
আর্দ্র- তরী কে ভুল বোঝার কারন কি??
আরুশ- তুই জানলি কি করে।
আর্দ্র- তরী কে ওসব কথা কেন বলেছিস তরী কী করেছে।
আরুশ- আমি তোকে বলতে পারবো না।
আর্দ্র- আরুশ আমি জানতে চাই কারনটা বল।
আরুশ- শুনবি তাহলে শোন তরী একটা ছেলের সাথে প্রাবলিক প্রেসে ছিঃ।
আর্দ্র- কী বল।
আরুশ- আমি পারবো না।
আর্দ্র- ওকে বলতে হবেনা, তুই এটা বল তুই ওটা জানলি কি করে।
আরুশ- আমার কাছে একটা ছবি এসেছে।
আর্দ্র- আমাকে দেখা তো।
আরুশ- না।
আর্দ্র- প্লিজ।
আরুশ- এই দ্যাখ..
আর্দ্র ছবি গুলো দেখে চমকে উঠলো,ছবিটা ওর আর তরীর, কিন্তু আর্দ্রের পেছনটা দেখা যাচ্ছে আর তরীর মুখটা। ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে ওরা কিস করছে।
আর্দ্র- ছেলেটা কে ভালো করে দ্যাখ…
আরুশ ভালো করে দেখে আর্দ্রের দিকে তাকিয়ে বললো- এটা তো তুই।
আর্দ্র- হুম।কাল সারাদিন তরী আমার সাথে ছিলো।
আরুশ- তাহলে কি…..
আর্দ্র আরুশকে বলতে না দিয়ে বললো- আরুশ পাগল হয়েছিস আমি তরী কে বোনের মতো ভাবি আর আমি এরকম করবো ভাবলি কি করে।
আরুশ- ছবিটা কী??
আর্দ্র- তরীর চোখে কী পড়েছিলো সেটা আমি দেখছিলাম কিন্তু ছবিটা এমন ভাবে তোলা হয়েছে মনে হচ্ছে কিস করছি।
আরুশ- হুম।
আর্দ্র- আরুশ এই তোর ভুল তোর রাগ উঠে গেলে কোনোকিছু ঠিক ভুল বিচার না করে যেকোন স্টেপ নিয়ে ফেলিস।
আরুশ- আর্দ্র আমি রাগ করেও কোন ভুল স্টেপ নেয়না, যা নেয় সেটাই সবার ভালোই হয়।
আর্দ্র- কিন্তু এবারে…
আরুশ-হুম তরীর সাথে ওরকম করা ঠিক হয়নি আমার ওর সাথে কথা বলা উচিত ছিলো।
আর্দ্র- তরী খুব কষ্ট পাচ্ছে,ওকে তোর মনের কথা বলে সরি বলে দে।
আরুশ- হুম।
আর্দ্র- এবার বাড়ি চল।
আরুশ- ওকে চল।
ওদিকে….
তরী একদম চুপচাপ হয়ে গেছে। খাওয়া দাওয়া করছেনা ঠিক মতো।
তরীর মা- তরী মা কী হয়েছে তোর।
তরী- কিছু হয়নি মা।
তরীর মা- মাকে বলবি না তো।
তরী- মা সত্যি কিছু হয়নি।
তরীর মা-ওহ।
কয়েকদিন কেটে যায়। আরুশের সাথে তরীর কোনো কথা হয়নি।তরী মনমরা হয়ে থাকে সবসময়।তরী কলেজ থেকে আনমনা হয়ে হাঁটছিলো হঠাৎ ওর সামনে দুজন লোক এসে দাঁড়ায়।
তরী- কে আপনারা।
——-সেটা আপনার না জানলেও চলবে এখন আমাদের সাথে চলো।
তরী- আমি কোথাও যাবো না।
লোকগুলো তরীর মুখে একটা রুমাল দেয় আর তরী অজ্ঞান হয়ে যায়।
তরীর যখন জ্ঞান ফেরে ওহ দেখে ওহ একটা রুমের মধ্যে আছে।
তরী- আমি কোথায়।
একটা মেয়ে তখনই ওই রুমে প্রবেশ করে।
তরী- কে আপনি আর আমাকে এখানে কেন এনেছেন।
মেয়েটা- ম্যাম আপনি ভয় পাবেন না আপনার কোন ক্ষতি হবে না।আপনি আমার কাছে আসুন আমি আপনাকে রেডি করে দেয়।
তরী- কেন।
মেয়েটা- প্লিজ ম্যাম।
তরী- আমাকে বলুন আগে।
আরুশ- আমি বলছি।
তরী আরুশকে দেখে চমকালো।
তরী- আপনি।
আরুশ- হুম।তরী তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে এসো।
তরী- কেন।
আরুশ- আমি বলছি তাই।
তরী- আমি পারবো না।
আরুশ- তরী প্লিজ।
তরী আর না করেনি।মেয়েটা তরীকে একটা ব্ল্যাক শাড়ি পড়িয়ে দেয়, মাথায় কোন হিজাব নেয় লম্বা চুল গুলো খোলে আছে।
মেয়েটা তরী কে নিয়ে আরুশের কাছে আসে।
মেয়েটা- স্যার আমার কাজ শেষ আমি আসি।
আরুশ-হূম।
মেয়েটা চলে যায় আরুশ তরীর দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে।তারপর তরীর কাছে গিয়ে তরীর হাত দুটোকে ধরে একটা রুমে নিয়ে আসে।
রুমটা বেলুন আর গোলাপ দিয়ে সাজানো।
তরী- এসব কী।
আরুশ- তরী সরি সেদিনের ঘটনার জন্য।
তরী- হুম।
আরুশ- আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।
তরী- হুম বলুন।
আরুশ তরীর সামনে হাঁটু গেড়ে বসলো।তরী আরুশের দিকে তাকিয়ে আছে আরুশ কী করতে চাইছে সেটা তরী ঠিক বুঝতে পারছে না।
আরুশ- দ্যাখো আমি এতো ভালো ভাবে বলতে পারবো না।আমি আমার মতো করে বলছি।
তরী আরুশের দিকে তাকায় আরুশ আবার বলতে শুরু করল -আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি,আমার #হৃদয়ে_তুমি। ভালোবাসবে কী আমায়,হবে কি আমার মনের রানি।
আরুশ তরীর দিকে তাকিয়ে আছে তরীর উওরের আশায়।
তরী আরুশকে হ্যা বলে আরুশ তরী কে জড়িয়ে ধরে।
আরুশ- তরী পাখিকে আমি খুব ভালোবাসবো,কেউ আমাকে তোমার থেকে আলাদা করতে পারবে না কেউ না।
তরী- হুম তরী শুধু আরুশের।
আরুশের- হুম।
ওরা ওদের মতো দিনটা সেলিব্রেট করে।
১ সপ্তাহ পর…
আরুশ- আজ তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
তরী- কি সারপ্রাইজ?
আরুশ- বলে দিলে সারপ্রাইজ থাকে না।
তরী- হুম।
তরী বাড়ি ফিরে দেখে ওদের বাড়ি সাজানো হচ্ছে।
তরী- মা কি হচ্ছে এগুলো।
তরীর মা- কিছু না তুই রুমে যা।
তরী- কেন
তরীর মা-যেটা বলছি সেটা কর।
তরী- হুম।
তরী মুখ গোমড়া করে চলে যায়। ওহ বুঝতে পারছে না কী হচ্ছে বাড়িতে । ওহ আর কিছু না ভেবে ফেসবুক ঘাটতে লাগলো।
কিছুক্ষণ পর ওর রুমে রিতা আসে।
তরী- রিতা তুই।
রিতা- বারে আমার বেস্টুর এনগেজমেন্ট আর আমি আসবো না।
তরী- কার এনগেজমেন্ট।
রিতা- তোর আবার কার।
তরী- এ্যা
রিতা- হুম।
তরী- আমার এনগেজমেন্ট আমিই জানি না।
রিতা- আমি কী জানি।এখন চুপচাপ ফ্রেশ হয়ে নে আমি তোকে সাজাবো।
তরী মুখ গোমড়া করে ফ্রেশ হয়ে আসে।তখনি আরুশের ফোন আসে।
আরুশ- কেমন লাগলো সারপ্রাইজটা
তরী- খারাপ
আরুশ- কেন
তরী- আমি শপিং করতে পারলাম না।
আরুশ- রাগ করো না আমি নিজে সব শপিং করছেই দ্যাখো পছন্দ হয় কিনা।
তরী- হুম।
আরুশ- এখন একটা হাসি দিয়ে সাজুগুজু করে নাও তো।
তরী- হুম।
ফোনটা কেটে দিলো রিতা তরীকে সাজিয়ে দেয়।
সাজানো শেষে…
রিতা- তরীরে তোকে কী লাগছে আমিও ফিদা হয়ে গেলাম তাহলে জিজু তো লাট্টু হয়ে যাবে।
তরী- ধূর।
রিতা- আরে সত্যি তুই আয়নায় দ্যাখ।
তরী আয়নায় নিজেকে দেখে অবাক হলো তরী পুরো ব্ল্যাক লেহেঙ্গা তার উপর গোল্ডেনের কারুকাজ করা। তারসাথে হালকা মেকআপ। দারুন লাগছে।
তরী- আমার থেকে লেহেঙ্গাটাকে বেশি সুন্দর লাগছে।
রিতা- নো তোর উপর লেহেঙ্গাটাকে সুন্দর লাগছে জিজুর পছন্দ আছে বলতে হবে।
তরী- হুম।
রিতা তরীকে নীচে নিয়ে আসে ততক্ষণে সবাই চলে এসেছে।অদ্রি আর আরুশী তরী কাছে আসে।
অদ্রি- তরী তোকে যা লাগছে না।
আরুশী- দাদাভাই কেমন করে তাকিয়ে আছে দ্যাখ।
তরী- কি হচ্ছে আরু।
রিতা- ঠিকই বলছে।
আরুশী- এই তো রিতা আমার দলে।
রিতা- হুম।
আর্দ্র সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলে- হ্যালো, শুভ সন্ধ্যা। আজকের সন্ধ্যায় আমরা সবাই একসাথে উপস্থিত হয়েছি একটা সুন্দর মুহূর্তের সঙ্গী হবার জন্য। আজকে সবার প্রিয় আরুশ চৌধুরী ও তরীতা জাহান এর এনগেজমেন্ট।আমি ওনাদের এখানে আসার জন্য অনুরোধ করছি।
তরীকে ওরা নিয়ে যায় আর আরুশকে ওর বন্ধুরা।ওরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে।ওদের ভাবনা থেকে বার করে আনতে রিতা বলে- পরে চোখে চোখে কথা বলবেন এখন আংটিটা পড়ান।।
ওরা দুজন লজ্জায় পড়ে যায় আর ওদের বাকি বন্ধুরা হাসতে থাকে।
আরুশ তরীর হাতে আংটি পরিয়ে দেয়।আর তরী আরুশকে।
তরী আর আরুশের বিয়ে তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে যায়, ১৫ দিন পর ওদের বিয়ে।
আরুশ- তরী আমার খুব ভয় লাগছে আমার কেন মনে হচ্ছে আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলবো আমি কোনো ভাবেই তোমাকে হারাতে পারবো না,তাই যত তাড়াতাড়ি পারি তোমাকে আমার নিজের করে নেবো।( মনে মনে তরীর দিকে তাকিয়ে)
পর্দার আড়ালে….
– মিস্টার আরুশ চৌধুরী তোমার থেকে আমি সবকিছু কেড়ে নেবো ঠিক যেভাবে আমার থেকে আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছো। তৈরি হও নিজের ধ্বংসের জন্য তোমার জীবনে আর কোনো ভালো দিন, ভালো মূহুর্ত আসবে না আর না তুমি থাকবে এই পৃথিবীতে তোমার সময় শেষ। নিজের মৃত্যুর সময় গুনতে থাকো মিস্টার আরুশ গুনতে থাকো( পৈশাচিক হাসি দিয়ে)
___________________
তরী আর আরুশ জমিয়ে প্রেম করছে।ওদের বিয়ের আর মাত্র ১০ দিন বাকি। কেনাকাটা, আয়োজন চলছে।একমাত্র ছেলে মেয়ের বিয়ে দুই পরিবার কোনো কমতি রাখছেনা।সবাই বিয়েটা নিয়ে খুব খুশি। কিন্তু আরুশের মনে ভয় হচ্ছে তরীকে হারিয়ে ফেলার।
তরী সবার সাথে কথা বলছে হঠাৎ বুকটা কেমন করে উঠলো ।যেন মনে হচ্ছে ওর দম বন্ধ হয়ে আসছে।
তরী- এমন হচ্ছে কেন মনটা এতো কু ডাকছে কেন।
তরী পানি খাবে বলে ডাইনিং টেবিলের কাছে গেলো,ওহ শুনতে পেলো টিভিতে প্রচারিত একটা খবর।ওহ তাড়াতাড়ি টিভির সামনে গেলো আর যা দেখলো ……..
তরী- না এটা হতে পারেনা।( চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যায়)
*( তরী কী এমন দেখলো যে অজ্ঞান হয়ে গেলো?? আর পর্দার আড়ালে কে আছে?)
#চলবে…
( ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। কেমন হয়েছে জানাবেন। )