#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ৩১
অদ্রি- আরু মনে হয় সোহাগকে লাইন মারছে।
তরী কথাটা শুনে কাশতে শুরু করে।
রিতা- কি হলো আবার তোর
তরী- কিছু নয়।
রিতা- ওহ
তরী- তোরা থাক আমি যায়।
তরী ওখান থেকে চলে যায়,রিতা আর অদ্রি একে অপরের দিকে তাকাতে থাকে।
অদ্রি- এরা দুটো তে মিলে কিছু একটা করছে,রিতা ওদের দিকে একটু খেয়াল রাখবে তো।
রিতা- ওকে।
কিছুক্ষন পর,আরুশের মা ওদের দুজনকে ডাকে।
তরী- আন্টি ডাকছিলে।
আরুশের মা-এখানে তোর কে আন্টি রে
তরী- সরি মা
আরুশের মা- হুম।তোরা দুজনে এখানে বস।
তরী আর রিতা বসে,মা ওদের হাত এ কিছু গহনার বাক্স দিয়ে বললো- দ্যাখ তো এগুলো পছন্দ হয় কিনা।
তরী আর রিতা ওগুলো দেখলো ওদের দুজনের খুব পছন্দ হয়।
বৌভাতের অনুষ্ঠানের জন্য তরী আর রিতাকে সাজানো হয়,তরী একটা মেরুন রঙের বেনারসি আর রিতা লাল রঙের বেনারসি শাড়ি পড়েছে।ওদেরকে খুব মিস্টি লাগছে।আরু সোহাগের পছন্দ করা শাড়িটা পড়েছে। ব্যাপারটা আরুশ,রিতা,অদ্রি খেয়াল করেছে।
রিতা- আরুর শাড়িটা দেখেছো
অদ্রি-এটাই তো সোহাগ তরীকে পছন্দ করে দিয়েছিলো
রিতা- হুম
অদ্রি-মানে আমাদের সন্দেহ টাই ঠিক।
রিতা- হুম
তরী- কি কথা হচ্ছে
অদ্রি- কিছু না চল,নীচে যেতে হবে
ওদের কে নিয়ে অনুস্ঠানের ওখানে নিয়ে যাওয়া হয়,সবাই তরী- আরুশ,রিতা- আর্দ্র কে শুভেচ্ছা জানায়।
আরুশের বন্ধুরা সবাই আসে। অদ্রির বন্ধু মিতা ওহ এসেছে।
মিতা- তরী কেমন আছো
তরী- খুব ভালো তুমি
মিতা- ভালো।
তরী কে মিতা কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু আরু তরী কে নিয়ে চলে যায়,ছবি তোলার জন্য।
মিতা- আমার আরুশকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছো তুমি,তোমাকে আমি কিছুতেই ছেড়ে দেবো না ,তোমাকে আমি সুখে থাকতে দেবো তরীতা জাহান।( মনে মনে)
আরুশের বন্ধু- ভাবিরা আপনাদের খুব সুন্দর লাগছে দেখতে।
তরী- ধন্যবাদ
আরুশ- ওই দূরে থাক আমার বউ এর থেকে
আরুশের বন্ধু- বাবা গো
আর্দ্র – আর আমার বউয়ের থেকে চারহাত দূরে থাক।
আরুশের বন্ধু-ভাই তোরা তো বউ পাগল হয়ে গেছিস।
আরুশের বন্ধু- আরুশের টা না হয় বুঝলাম এত দিনের ভালোবাসা কিন্তু আর্দ্র এই কয়েকদিনেই ভাবির প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিস।
আরুশ- ওহ তো আমার থেকে আগে থেকে রিতার প্রেমে পড়েছে।
আরুশের বন্ধু-মানে।
আরুশ- পড়ে বলবো সব।
ওরা নিজেদের মাঝে কথা বলছে তখন ওখানে সোহাগ আসে।
সোহাগ- তোদের দুজনকে নতুন জীবনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
তরী+রিতা- থ্যাঙ্কস
সোহাগ- হুম।
সোহাগ আরুশ আদ্র এর সাথে কথা বলতে লাগলো।সোহাগ খেয়াল করলো ওর পছন্দ করা শাড়িটা আরু পড়েছে।
সোহাগ- হাই একটা কথা বলার ছিলো
আরু-বলুন
সোহাগ- এটা ওইদিন শপিং মলের শাড়িটা তো
আরু- হুম।কেন
সোহাগ- না এমনি
আরু- আমাকে কি খুব খারাপ লাগছে
সোহাগ- সেটা আমি কখন বললাম,আপনাকে শাড়িটাতে খুব মিস্টি লাগছে
আরু- থ্যাঙ্কস( লজ্জা পেয়ে)
সোহাগ- ওয়েলকাম
সোহাগের ফোন আসায় ওহ চলে যায়,অদ্রি আরুর কাছে যায়।
অদ্রি- বনু কি চলছে
আরু- কি চলবে
অদ্রি- সোহাগকে লাইন মারছিস।
আরু- কে বললো
অদ্রি-বুঝি বুঝি সব বুঝি
আরু- কচু বুঝিস
অদ্রি- এখন তো বলবি সত্যি টা বুঝে গেছি তাইনা।
আরু রাগ করে ওখান থেকে চলে যায়।অদ্রি হাসতে থাকে।
ওদের বৌভাত এর অনুষ্ঠান খুব ভালো করে কেটে যায়।
পরেরদিন সকালে…..
আজকে বাড়িতে কেউ নেয় শুধু মাত্র বাড়ির সদস্যরা ছাড়া আজকে তরী সকলকে বাড়িতে থাকতে বলেছে,আর তরীর আর রিতার বাড়ির লোককে আস্তে বলছে।
আরুশ- তরী তুমি কি করতে চাইছো বলোতো
তরী- সবটা জানতে পারবে।
আরুশ- কি জানতে পারবো
তরী- আমাকে বিশ্বাস করো একটু
আরুশ- করি তো বিশ্বাস
তরী- হুম তাহলে চুপচাপ থাকো
আরুশ- ওকে।
তরী নীচে এসে দেখে সবাই বসার ঘরে উপস্থিত ওহ আসতেই সবাই ওর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালো।
তরী- সবটা জানতে পারবে সবাই একটু অপেক্ষা করো।
তরীর কথা শুনে সবাই চুপ করে বসে যায়।রিতা তরীকে টেনে নিয়ে সাইটে আনে।
রিতা- কি চাইছিস বলতো তুই
তরী- সত্যি টা সবাইকে জানাতে
রিতা- কি সত্যি
তরী- আরুশের অ্যাক্সিডেন্টটা আসলে কিভাবে হলো কে করলো সেটা।
রিতা- কে করেছে
তরী- সবটা বলবো একটু ধৈর্য ধর
রিতা- একটা কথা জানার ছিলো
তরী- কি
রিতা- মিতালির কোনো খোঁজ পাওয়া গেছে
তরী- হুম
রিতা- কোথায় ওহ আর এতদিন বা কোথায় ছিলো
তরী- রিতা আজ অনেক সত্যি সামনে আসবে সবটা আমাকে সহ্য করতে হবে,আমার এই ঘটনার পর বিশ্বাসটাই কেমন উঠে যাচ্ছে সবার উপর থেকে।
রিতা- কিসব বলছিস তুই
তরী নিজের চোখের পানিটা মুছে নিয়ে।
তরী- কিছু না চল।
তরী চলে গেল রিতা তরীর কোনো করার মানেই বুঝতে পারলো না।
কিছুক্ষন পর…
সোহাগ বাড়িতে আসে।
তরী- এসেছিস।
সোহাগ- হুম।
তরী সবার দিকে তাকিয়ে বলতে চালু করলো- সত্যি টা আমি চাইলেই কালকে সবার সামনে আনতে পারতাম কিন্তু সেটা আমাদের পরিবারের জন্য ভালো হতো না।তাই আজকে সবাইকে এখানে আসতে বললাম সমস্ত সত্যি টা জানানোর জন্য।
আরু- কি সত্যি তরী
তরী- আরুশের অ্যাক্সিডেন্টটা আসলে কে করিয়েছে।
অদ্রি- কে?
তরী- কথাটা বলতে আমার খুব কস্ট হচ্ছে,কারন কাজটা আমার খুব কাছের একটা মানুষ করিয়েছে।
সবাই অবাক হয়ে তরীর দিকে তরীর কাছের মানুষ মানে!
তরী- সোহাগ ওকে ভেতরে নিয়ে আয়।
সোহাগ- নিয়ে আসো।
একজন মেয়ে একটা অন্য মেয়েকে ধরে নিয়ে আসলো,মেয়েটাকে দেখে তরী,রিতার পরিবার চমকে উঠলো।
রিতা- মিতালি,তুই?
মিতালি কোনো কথা বলেনা।
রিতার মা- মিতালি কোথায় ছিলি এতদিন,তোকে তরী আর রিতা কত খুঁজে ছে কিন্তু তোকে খুঁজে পাইনি।
তরীর মা- কি হলো কিছু বলছিস না কেন
তরীর বাবা- তরী তুমি মিতালি কে কোথায় পেলে।
তরী- কোথায় পেলাম সেটা পড়ে বলছি।এই মেয়েটা হলো আমাদের বেস্টফ্রেন্ড মিতালি।
সবাই এটা বুঝতে পারছে না,তরীর বেস্টফ্রেন্ড আরুশের অ্যাক্সিডেন্টের সাথে কি সম্পর্ক।
তরী- এই মেয়েটা,এই মেয়েটাকে আমি আমার নিজের বোনের মত ভাবতাম কিন্তু এহ আমার ভালোবাসার মানুষটার এত বড়ো ক্ষতি করলো,ওকে মেরে ফেলার চেষ্টা করলো।
তরীর কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে তাকালো,
রিতা- তরী এসব কি বলছিস।
তরী- ঠিক বলছি,
আর্দ্র- তোর ফ্রেন্ড এসব কেন করবে।
তরীর বাবা- তরী তুমি কিসব বলছো
তরী- একদম আমি ঠিক বলছি,আমার প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিলো যে আরুশের অ্যাক্সিডেন্টটা প্ল্যান করে করা, আর আমি সেই সন্দেহের ভিত্তিতে খোঁজ খবর নিতে চালু করি আর জানতে পারি সবকিছুর পেছনে মিতালির হাত। সেদিন মিতালির কথাতেই ট্রাকটা আরুশের গাড়িকে ধাক্কা মারে আর গাড়িটা খাদে পড়ে যায় ভাগ্য ভালো থাকায় আরুশ বেঁচে যায়।
তরীর কথা শুনে সবাই অবাক হয় ,তরীর চোখ থেকে পানি পড়ছে,তরীর মা মিতালির সামনে গিয়ে মিতালি কে একটা থাপ্পর মারে।
তরীর মা- তোকে আমি আমার নিজের মেয়ের মতো ভাবতাম আর তুই আমার মেয়ের এত বড়ো ক্ষতি করলি, কিসের রাগ তোর আমার মেয়ের উপর।
মিতালি কিছু বলে না,
তরীর মা- বল চুপ করে আছিস কেন বল তরীর উপর তোর কিসের এতো রাগ।
মিতালি- তরীর উপর আমার কোনো রাগ নেয়।
মা- তাহলে কেন এমন করলি।
মিতালি যা বললো তাতে সবাই চমকে উঠলো….
#চলবে……
#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ৩২
মিতালি- আমার তরীর উপর কোনো রাগ নেয়।
রিতার মা- তাহলে কেন করলি এমন
মিতালি- করেছি কারন আরুশ চৌধুরী কে আমি সবথেকে বেশি ঘৃনা করি।
সবাই চমকে উঠলো।
আর্দ্র- আরুশকে ঘৃনা করো কেন?
মিতালি – যে মানুষ টা আমার থেকে আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে ,আমার জীবনটা শেষ করে দিয়েছে।তাকে ঘৃনা করবো না তো কি করবো( রেগে চিৎকার করে)
মিতালির এমন কথা শুনে সবাই খুব অবাক হয়, আরুশ মিতালির জীবন শেষ করে দিয়েছে মানে কি?
আরুশের মা-তোমার জীবন আরুশ শেষ করে দিয়েছে মানে?
আরুশের বাবা-কিসব বলছো তুমি আরুশ তোমার কি করেছে।
মিতালি- সেটা আপনি আপনার ছেলেকেই জিজ্ঞেস করুন।
আরুশের বাবা-আরুশ মেয়েটা কি বলছে এসব।
আরুশ- আমি কিছু বুঝতে পারছি না।
মিতালি- এখন বুঝতে পারছেন না তাই।
রিতা- মিতালি তুই সবটা পরিস্কার করে বল তোর কথার কিছু আমরা বুঝতে পারছি না।
মিতালি- সবাই সবটা জানতে চান তো তাহলে শুনুন,আমি আরুশের বন্ধু তরুনের প্রেমিকা হ্যা আমি সেই তরুনের প্রেমিকা, যে তরুন আরুশের কারনে শুধুমাত্র আরুশের কারনে এই পৃথিবীতে নেয়।
আরুশ- কি সব বলছো তুমি আমার কারনে তরুন পৃথিবীতে নেয় মানে।
মিতালি- হা তোমার কারনেই আজকে আমার তরুন আমার কাছে নেয়।
আর্দ্র- তুমি কি সব আজেবাজে কথা বলছো,আরুশের জন্য তরুন আজ নেয় মানে কি,তরুনের মৃত্যু টা তো সুইসাইড।
মিতালি- হ্যা সুইসাইড কিন্তু কেন করেছিলো আমার তরুন সুইসাইড,এই আরুশের কারনে ,এই আরুশ যদি না তরুনের বাবাকে জেলে পাঠাতো তাহলে তরুন কখনোই সুইসাইড করতো না,আরুশ এই সবকিছুর জন্য দায়ী।
তরী- না আরুশ কোনো কিছুর জন্য দায়ী নয়।
মিতালি- নিজের ভালোবাসার পক্ষ নিচ্ছিস।
তরী- আমি কারোর পক্ষ নিচ্ছি না, আমি যেটা সত্যি সেটা বলছি।
মিতালি- কি সত্যি বলবি তুই
তরী-তরুনের মৃত্যু রহস্য আজ আমি সবার সামনে আনবো।
মিতালি- মৃত্যু রহস্য মানে
তরী- তরুন সুইসাইড করেনি ওকে খুন করা হয়েছে।
মিতালি- কি
তরীর এমন কথা শুনে সবাই অবাক হয়।
আরুশ- তরী কি বলছো এটা তুমি
তরী- ঠিক বলছি,মিতালি তুই আরুশকে ভুল বুঝেছিস,যে তরুন নিজে চাইছিলো ওর বাবা শাস্তি পাক সেই তরুন বাবাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়াতে সে কখনো সুইসাইড করে।
মিতালি- তরুন চাইছিলো মানে
তরী- তরুনের মাকে তরুনের বাবা খুন করেছিলো আর এই সব সত্য কথা তরুন জানতে পারলে তরুনকে ওর বাবা থ্রেট দেয় যে ওর কাছের মানুষদের ক্ষতি করে দেবে,তাই তরুন সবার থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলো,যখন ওর বাবাকে প্রথম বার পুলিশ ধরে নিয়ে যায় কিন্তু প্রমান না থাকায় ছেড়ে দেয় তখন তরুন আড়ালে থেকে আরুশকে সব প্রমান গুলো দিয়ে দেয়।
তরীর কথা শুনে প্রত্যেকে চমকে উঠে।
মিতালি- তরী কি বলছিস এসব তুই এসব জানলি কি করে।
তরী- তরুনের ডাইরি থেকে।
আর্দ্র- তরী তরুনের মৃত্যু টা সুইসাইড নয় তারমানে
তরী- হুম,তরুনের বাড়ার লোক তরুনকে মেরে ফেলে আর ওটাকে একটা সুইসাইড এর রুপ দেয়।
মিতালি- ওরা কেন আমার তরুনকে মেরে ফেললো
তরী- ভয়,যদি তরুনের বাবার সব সত্যি তরুন সবার কাছে প্রকাশ করে দেয় সেই ভয়েতে, কিন্তু তরুনের বাবা জানতো না তরুন আগেই তার বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমান আরুশকে দিয়ে দিয়েছে, সমস্ত প্রমান থাকার জন্য তরুনের বাবার ফাঁসির রায় ঘোষণা হয় তখন তিনি আরুশের বিরুদ্ধে মিতালির মনে বিষ ডেলে দেয় আর সেই বিষ এতদিন ধরে মিতালি নিজের মনের মধ্যে রেখেছিলো যার জন্য আরুশের এতো বড়ো ক্ষতি করতেও ওর হাত কাঁপে নি।
তরীর কথা শুনে মিতালি চমকে উঠলো।
মিতালী- এসব কি বলছিস তুই
তরী -একদম ঠিক বলছি
তরী মিতালির হাতে তরুণের লেখা ডাইরিটা তুলে দেয় আর বলে -এতে সব কিছু লেখা আছে তুই ভালো করে পড়ে নিস
মিতালী- তরী আমার ভুল হয়ে গেছে আমার তরুনের বাবাকে বিশ্বাস করা ঠিক হয়নি আমি ভুল মানুষকে বিশ্বাস করে।ভুল মানুষকে ভুল বুঝে আরুশকে মেরে ফেলতে পর্যন্ত চেয়েছি , তোর কাছ থেকে তোর ভালোবাসার মানুষকে আমি কেড়ে নিয়েছি আমাকে মাফ করে দে আমি সকলের কাছে মাফ চাইছি আমি জানি আমি অনেক বড় ভুল করেছি আমাকে আমাকে এই ভুলের শাস্তি যা দেয়া হবে আমি সেটা মাথা পেতে নেব।
তরী-তোর শাস্তি দেবে আইন-আদালত জাতিক করবে সেটাই হবে সোহাগ এখান থেকে নিয়ে যাও
সোহাগ মিতালীকে নিয়ে চলে যায়। তরীকে রিতা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো
আরু- কিরে তোরা দুটোর কাঁদছিস কেন
রিতা -কি করব বল মিতালি কে আমরা আমাদের নিজের বোনের মত ভালবাসতাম ওর এই অন্যায়টা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা।
আরুশের বাবা- সবটা বাদ দাও আমাদের উপর থেকে সব বিপদ কেটে গেছে আর কোনো বিপদ না আসে আমাদের জীবনে।
তরী,রিতা ওরা ওদের মতো নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে।
রাত্রিবেলা,
তরীকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো আরুশ।
আরুশ- এখন ওহ মন খারাপ করে আছো
তরী- না
আরুশ- আমার থেকে নিজের মন খারাপ লুকাচ্ছো।
তরী- আমি ভেবেছিলাম মিতালি কোনো ভাবে এই সবের সাথে যুক্ত কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি ওই সবটা করেছে।
আরুশ- তা তুমি কিভাবে এই রহস্য উদঘাটন করলে।
তরী- আমরা যেদিন গ্রামে গেলাম সেদিন গ্রামে ঢোকার সময় দেখেছিলাম আমি মিতালি কে তারপর রিতা বলাতে আমি সিওর হয়ে যায় যে মিতালির কোনো যোগসূত্র তো আছেই এই সবকিছুর পেছনে।তোমার সবকিছু মনে পড়া তারপর বিয়ে নিয়ে আমি ব্যাপারটা পুরো ভুলেই গিয়েছিলাম কিন্তু তরুনের ডাইরিটা দেখে আমার সবটা মনে পড়ে যায়।আমার মনে হয়।
তরী একটু থেমে আবার বলতে চালু করে- যে আরুশের ক্ষতি করতে চাই সে কোনোভাবেই আমাদের বিয়েটা হতে দেবে না,কিছু একটা গন্ডগোল তো করবেই কিন্তু কিভাবে করবে।
তারপর আরুর পার্লারে সাজার কথা শুনে আমার মাথায় একটা প্ল্যান আসে।এবং সবটা আমি সোহাগকে বলি।
আমি ইচ্ছা করে বিয়ের দিন পার্লারে সাজতে যায় আমাদের প্ল্যান মতো,আর ওরা আমাদের পাতা ফাঁদে পা দেয়।
আরুশ- কিভাবে।
তরী- পার্লার থেকে বের হবার পর আমরা একটা অন্য গাড়ি করে অন্য রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরি। কিন্তু আমাদের গাড়িটা খালি ছিলো না
আরুশ- মানে
তরী- আমাদের মতো একই মতো সাজ করে দুজন মেয়ে পুলিশ ওই গাড়িতে ছিলো।
আরুশ- কেন।
তরী- মিতালির লোকগুলো আমাদের গাড়িতে ওই দুটো মেয়েকে আমরা ভেবে কিডন্যাপ করে।তারপর….
ফ্ল্যাশব্যাক-
একটা লোক-ম্যাম,ওদের নিয়ে এসেছি।
মিতালি- বেঁধে দাও ওদের
ওদের দুজনকে বেঁধে দেয়।মিতালি ওদের দিকে তাকিয়ে চমকে উঠলো।
মিতালি- এরা কে
লোকটা- ম্যাম আপনি যে গাড়িটার কথা বললেন সেই গাড়িটাতে এই মেয়ে দুটোই ছিলো।
মিতালি- তোমরা কে
প্রথম মেয়ে- আমরা কে সেটা জানলেও হবে কিন্তু নিজেকে কিভাবে বাঁচাবে সেটা দ্যাখো
মিতালি- মানে
সোহাগ- ইউ আর আন্ডার অ্যারেস্ট ( চেঁচিয়ে)
মিতালি চমকে উঠে পেছনে তাকায়,মিতালি পেছনে তাকাতে সোহাগ,মিতালি দুজনেই অবাক হয়।
সোহাগ- মিতালি তুই
মিতালি- সোহাগ
সোহাগ- হা আমি তারমানে এই সবকিছুর পেছনে তুই আছিস।
মিতালি- হা আমি আছি কিন্তু তুই এখানে
সোহাগ- আমি একজন পুলিশ অফিসার
মিতালি চমকে উঠলো।
সোহাগ- কেন তুই তরীর জীবনটা শেষ করে দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিস তরী তো তোকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসে
মিতালি- তরীর উপর আমার কোনো রাগ নেয় সব রাগ আমার আরুশের উপর
সোহাগ- কেন
মিতালি- আমার সবকিছু কেড়ে নিয়েছে ওহ
সোহাগ- মানে
মিতালি- তুই এখানে কেন ,চলে যা এখান থেকে
সোহাগ- তোকেও যেতে হবে,আরুশের অ্যাক্সিডেন্টের জন্য আমি তোকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হচ্ছি।
মিতালি- গ্রেপ্তার করে আর কি করবি আমি তো এমনি তেই মরে গেছি তবে ওই আরুশকে আমি ছাড়বো না।
মিতালি কে মেয়ে পুলিশ নিয়ে যায় আর তরীকে ফোন করে সোহাগ সবটা জানায়।
বর্তমান…..
আরুশ- সত্যি আমরা বউ তো পুরো গোয়েন্দা
তরী-হুম
আরুশ তরীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
তরী-কি হলো
আরুশ- খুব ভালো বাসি তোমায় আমি তোমাকে কোনোভাবেই হারাতে পারবো না।
তরী- হুম আমি ওহ পারবো না আমরা বাঁচতে হলে একসাথে বাঁচবো আর মরতে হলে একসাথে মরবো।
আরুশ- হুম
তরী আরুশকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে থাকে।
পরেরদিন সকালে……
#চলবে…..