#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ২৫
ওরা সবাই রিতাকে খুঁজতে লাগলো। ওরা খুঁজতে খুঁজতে দেখলো রিতা একটা জায়গায় মাটিতে বসে আছে পায়ে হাত দিয়ে। ওরা সবাই দৌড়ে গেলো রিতার কাছে।
আর্দ্র- তুমি এখানে বসে কী করছো
রিতা- পায়ে একটু লেগে গেছে।
আর্দ্র- কি হয়েছে দেখি
আর্দ্র তাড়াতাড়ি করে রিতার পা টাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল।
রিতা- আরে কি করছো ছাড়ো না, ঠিক হয়ে যাবে।আমার জন্য তোমাদের ঘোরা বন্ধ হয়ে গেলো, আমার পা ঠিক হয়ে গেছে ,চলো সবাই আনন্দ করি।
আর্দ্র- একদম তো চলতে পারবে তো।
রিতা- হুম পারবো।
ওরা আবার নদীর ধারে বেড়াতে যায়। তরী রিতার দিকে নজর রাখছে , কেন জানি রিতার কথাগুলো ওর বিশ্বাস হচ্ছে না, মনে হচ্ছে রিতা কিছু একটা জিনিস আড়াল করছে, আর রিতাকে কেমন জানি আনমনা লাগছে।
ওরা অনেকক্ষন ঘোরাঘুরি করে বাড়িতে ফিরে আসে। সবার কথার মাঝে , সুযোগ বুঝে তরী রিতা কে নিয়ে একটা সাইটে আসে।
তরী- রিতা, কি হয়েছে তোর?
রিতা- আমার আবার কি হবে!
তরী- দ্যাখ তুই সবার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখতেও পারলেও, আমার কাছ থেকে পারবি না। বল কি হয়েছে,কেন তুই আমাদের থেকে আলাদা হয়ে গেলি।
রিতা- আমি আজ এমন একটা মানুষ কে দেখেছি, তুই শুনলে অবাক হয়ে যাবি।
তরী- কে?
রিতা- মিতালি, আমি মিতালি কে দেখেছি।
তরী স্বাভাবিক, ওহ এমন কিছুই আন্দাজ করেছিলো।তরীকে স্বাভাবিক থাকতে দেখে রিতা বললো- তরী, তুই অবাক হোস নি।
তরী- না ,অবাক হবো কেন।
রিতা- মানে
তরী- আমি মিতালি কে দুবার দেখেছিলাম, আর একবার এই গ্রামে ঢোকার সময় দেখেছিলাম।
তরীর কথা শুনে রিতা চমকে উঠলো।
রিতা- আমাকে বলিস নি কেন?
তরী- এমনি, আমার না একটা জিনিস সন্দেহ হচ্ছে।
রিতা- কি সন্দেহ
তরী- আমার মনে হচ্ছে, মিতালির সাথে কোনো ভাবে আরুশের অ্যাক্সিডেন্টের কোনো না কোনো যোগসূত্র আছে।
রিতা- কি বলছিস এসব।
তরী- হুম সত্যি বলছি, আরুশের সবটা মনে পড়ে গেছে ,এবার আমি আমার সব প্রশ্নের উত্তর পাবো।
রিতা- কি চাইছিস বল তো
তরী- সত্যি টা খুঁজে বার করতে, দোষীকে শাস্তি দিতে।
তরী ওখান থেকে চলে যায়। আরু আর তরী এক ঘরে থাকে, তরী রুমে গিয়ে দেখলো আরু ফোনে কিছু একটা দেখছে। তরী চুপিচুপি গিয়ে দেখে।
তরী- ও মাগো( একটু জোরে)
তরীর এমন কথা বলায় আরু চমকে উঠে।
আরু- কে,কে
আরুর এমন কান্ডে তরী হাসতে চালু করলো।তরীর হাসির শব্দ পেয়ে আরু রেগে তরীর দিকে তাকিয়ে আছে।
আরু- তুই হাসছিস কেন
তরী- এমনি, কিন্তু তুই কী করছিলি( ভ্রু নাচিয়ে)
আরু- আমি আ.বা.র কি করলাম( আমতা আমতা করে)
তরী- আমি সবটা দেখে ফেলেছি
আরু- কী দেখেছিস( ভীতু কন্ঠে)
তরী আরুকে কিছু না বলে , নিজের ফোন নিয়ে ঘাঁটতে লাগলো।
আরু- তরী বল কি দেখেছিস।
তরী- বলবো
আরু- হুম
তরী বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো তারপর বললো- কিছু দেখেনি।
বলেই একছুটে দৌড়ে চলে গেল,আরু হা করে তাকিয়ে আছে।
তরী আরুর কাছ থেকে গিয়ে আরুশের রুমে যায়।
তরী- আসবো
আরুশ- আরে তরী আসো।
তরী ভেতরে গিয়ে বিছানায় বসলো।
আরুশ- তরী, কিছু বলবে
তরী- হুম
আরুশ- বলো,কি বলবে।
তরী- আজকে তোমাকে তোমার অতীতে ফিরতে হবে।
তরীর এমন কথায় আরুশ তরীর দিকে তাকালো। তরীর এমন কথার মানে আরুশ বুঝতে পারছে না।
আরুশ- মানে
তরী- আজকে আমি তোমার থেকে কিছু সত্যি জানতে চাই।
আরুশ- কি সত্যি বলো
তরী- তরুন কে?
তরীর এমন প্রশ্নে আরুশ চমকে উঠলো ।আজ অনেক বছর পর আবারও তরুনের নামটা ওর সামনে উচ্চারিত হলো, কিন্তু তরী জানলো কেমন করে।
তরী- আরুশ চুপ করে থেকো না।
আরুশ- হুম ,তরুন আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো, আর্দ্র আর তরুন আমার কাছে এক রকম ছিলো। কিন্তু তুমি তরুনের কথা জানতে পারলে কেমন করে।
তরী- আর্দ্র দার কাছ থেকে জেনেছি,তরুনের বাবার বিরুদ্ধে সমস্ত প্রমান তুমি কিভাবে পেয়েছিলে।
আরুশ- জানিনা ব্যাপারটা অদ্ভুত লেগেছিল , আমার কাছে উড়ো চিঠি আসতো আর তাতে ঠিকানা লেখা থাকতো , আমি সেখানে গেলে কিছু না কিছু প্রমান পেতাম। কেউ হয়তো চাইতো উনার শাস্তি হোক।
তরী- হুম , আর তরুনের সুইসাইডটা!
আরুশ- তরুনের এমন করার কারন আমি জানিনা, সবাই এটাই ধরে নেয় যে, আঙ্কেলের এমন কান্ডে তরুন সুইসাইড করে। এছাড়া আর কোনো কারন আমরা পাইনি।
তরী- তোমাকে কে চিঠি গুলো পাঠাতো জানো।
আরুশ- কে?
তরী- তরুন
আরুশ- কি
তরী- হুম, তরুন ওর বাবার অন্যায়টা সবটা জানতে পেরেছিলো অনেক আগে , তাই সে তোমাদের সাথে দূরত্ব বজায় রাখতো, যাতে ওর বাবা তোমাদের কোনো ক্ষতি না করে, যখন পুলিশ ওর বাবাকে ধরলো কিন্তু ছাড়া পেয়ে গেলো ,তখন তরুন চিঠি গুলোর মাধ্যমে তোমাকে সমস্ত প্রমানটার কাছে নিয়ে গেল। যে ছেলে নিজেই চাইতো তার বাবার শাস্তি হোক ,সে কেন বাবার শোকে নিজেকে শেষ করে দেবে ওর উওর দাও আমাকে?
তরীর এমন কথা শুনে আরুশ খুব অবাক হলো। তরী কি বলতে চাইছে।
আরুশ- তারমানে তরী তুমি বলতে চাইছো তরুনের মৃত্যু টা স্বাভাবিক নয়, তরুনকে মেরে ফেলা হয়েছে।
তরী- হুম, আর এটা আমি ১০০% সিওর।
আরুশ- তুমি এগুলো জানলে কি ভাবে
তরী- আমি একটা ডাইরি পায় তরুনের বাড়ি থেকে।
আরুশ- মানে?
তরী আরুশকে সবটা বললো ,আরুশ হা করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। তরী কথা বলা শেষ করে দেখলো আরুশ ওর দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।
তরী- কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
আরুশ- আমি কাকে দেখছি।
তরী- মানে
আরুশ- তুমি তো পুরো গোয়েন্দা হয়ে গেছো।
তরী- মজা করবে না একদম।
আরুশ- আচ্ছা করবো না, এখন বলো তো কেন এসব জানতে চাইছো।
তরী- আমার মনে হচ্ছে তরুনের সাথে তোমার অ্যাক্সিডেন্টের কোনো না কোনো যোগসূত্র আছে।
আরুশ- এসব বলছো কেন,তরুন আজ অনেকগুলো বছর মারা গেছে।
তরী- হুম কিন্তু ওর প্রেমিকা তো জীবিত আছে।
আরুশ- তরুনের প্রেমিকা মানে?
তরী আরুশকে একটা মেয়ের ছবি দেখায়।
আরুশ- এটা কে?
তরী- মিতালি,তরুনের প্রেমিকা আর আমার বন্ধু।
আরুশ তরীর মুখের দিকে তাকায়।
তরী- তরুনের মৃত্যুর পর থেকেই আমরা মিতালির কোনো খোঁজ খবর পাইনি,আর তরুনের মৃত্যু রহস্য খুঁজে বের করতে গিয়ে মিতালি,নাহলে ওর নামটাই সবার আগে চলে আসছে। আর আমি ওকে এখানে আসার আগে দেখেছি এমনকি আজকে রিতা ওকে দেখেছে।
আরুশ- তুমি কি বলতে চাইছো বলো তো।
তরী- এটাই যে মিতালির সাথে তোমার অ্যাক্সিডেন্টের কোনো না কোনো যোগসূত্র আছে।
আরুশ- ওহ, এখন কি করতে চাইছো।
তরী- ………….
আরুশ- সত্যি তরী তোমার জবাব নেয়।
তরী- হুম
তরী চলে যেতে গেলে ,আরুশ ওর হাত ধরে টেনে ওর কাছে নিয়ে আসে।
তরী- কি হলো
আরুশ- দেখছি
তরী- কি
আরুশ- তোমাকে
তরী- কেন
আরুশ- কতদিন পর দেখছি তোমাকে
তরী- তাই নাকি।
আরুশ- হুঁ, তোমাকে আমি হারাতে পারবো না কিছুতেই , যেকোনো উপায়েই তোমাকে আমার চাই। আমার #হৃদয়ে তুমি।
তরী- হুম
আরুশকে তরী জড়িয়ে ধরলো। আরুশ তরীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
আরু বিছানায় শুয়ে ফোনটা এদিক- ওদিক করছে। তরী আরুর মাথায় একটা চাঁটি মারলো।
আরু- কি হলো মারলি কেন?
তরী- কি হ্যা উশখুশ করছিস কেন,কি হয়েছে।
আরু- কিছু না।
তরী- ওহ।
আরু- হুম
দুজনেই চুপচাপ ,তারপর তরী আরুকে একটা কথা বললো । আরু তরীর দিকে গোল গোল চোখ করে তাকালো….
#চলবে….
#হৃদয়ে_তুমি
#লেখিকাঃতানিমা_আক্তার_মিরা
#পার্টঃ২৬
আরু- কি বলছিস তুই ( আমতা আমতা করে)
তরী- থাক নাটক করতে হবে না ,আমি জানি,বুঝতে পেরেছি।
আরু- কি বুঝতে পেরেছিস?
তরী- এটাই যে আপনি …
আরু- কি
তরী- আমাদের সোহাগকে ভালোবাসেন
আরু চমকে উঠলো তরীর কথা শুনে।
আরু- কি যা তা বলছিস?
তরী- একদম ঠিক বলছি আর আমার কাছ থেকে লুকিয়ে কোনো লাভ নেয়।
আরু- হুম
তরী- তা এসব কিভাবে হলো
আরু- কিসের কি কিভাবে হলো
তরী- সোহাগের উপর লাট্টু কিভাবে হলেন।
আরু- তোর বার্থডের দিন
তরী- ওহ বাবা লাভ এট ফাস্ট সাইট
আরু- হুম
তরী- সোহাগ আমি তোমাকে ভালোবাসি প্রিয় ,তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না, আমি তোমাকে খুব খুব ভালোবাসি।( লাজুক স্বরে, একটা বালিশকে জড়িয়ে ধরে)
আরু- ওই তরী( ভীতু কন্ঠে)
তরী- হুম কি হলো
আরু- ওদিকে দ্যাখ( করুন কন্ঠে)
তরী তাকিয়ে দেখলো আরুশ দাঁড়িয়ে আছে,দেখেই মনে হচ্ছে রেগে আছে খুব। তরী ওদিকে তাকানো মাত্রই ওহ ওখান থেকে চলে গেলো।তরী করুন চোখে আরুর দিকে তাকালো, আরু তো ভয়ে আঙ্গুল গুলোই খেয়ে নেবে মনে হচ্ছে।
তরী- আরু রে কি হবে এবার তোর দাদাভাই তো আমাকে মেরেই ফেলবে।
আরু- হুম
তরী- আমার কপাল টাই খারাপ ধূর
আরু- আমার তো অন্য ভয় হচ্ছে
তরী- কি ভয়।
আরু- দাদাভাই যদি তোকে জিজ্ঞেস করে তুই কেন সোহাগকে ভালোবাসিস বলছিলি, দাদাভাই যদি জানতে পারে আমি সোহাগকে তাহলে আমাকে মেরে মাটি চাপা দিয়ে দেবে কি হবে কি বন্ধু(কাঁদো কন্ঠে)
তরী- আগে তো নিজে বাঁচি।
তরী আরুর ঘর থেকে বেরিয়ে আবার আরুশের ঘরে যায়।
তরী- আসবো
আরুশ- না
তরী- কেন( ভেতরে ঢুকে গিয়ে)
আরুশ- এমনি যাও এখান থেকে আমার ভালো লাগছে না।
তরী- আমার কথাটা শোনো
আরুশ- কোনো কথা শুনতে চাই না।
তরী- আরে অদ্ভুত তো তুমি কথা না শুনে
আরুশ- কিছু শুনতে চাই না তোমার সোহাগকে গিয়ে শোনাও
তরী- তুমি জেলাস
আরুশ- আমার বয়ে গেছে জেলাস হতে যাও না এখান থেকে।
তরী- রাগ করছো কেন,
আরুশ- তো কি করবো
তরী- আরে আমি তো ওটা এমনি বলেছিলাম
আরুশ- এমনি কেন বলবে
তরী- কেন মজা করে বললে কি হবে
আরুশ- তোমার মুখে আমি ব্যতিত অন্য কোনো ছেলের নাম না শুনি।
তরী- বললে কি হবে
আরুশ- মুখটা সেলাই করে দেবো একেবারে
তরী- ওমাগো
আরুশ- এখন যাও ভালো লাগছে না,
তরী- এখনো রেগে আছো।
আরুশ- না রাগ করিনি , যাও আমি ঘুমাবো
তরী- ভালো হচ্ছে না কিন্তু বলে দিচ্ছি,আমি এবার সোহাগের সাথে গিয়ে কথা বলবো, বাই।
তরী চলে যেতে গেলে আরুশ হাত ধরে আটকায়।
আরুশ- কি বললে
তরী- সোহাগের সাথে কথা বলবো
আরুশ- কথা বলে দেখো একবার তোমার কি হাল করি দ্যাখো
তরী- কেন ,সোহাগ তো আমার বন্ধু, কথা বললে কি হয়েছে
আরুশ- কীভাবে তোমাকে বলি আমি সোহাগের চোখে তোমার জন্য যা দেখেছি। যেটা আমার চোখেও থাকে তোমার চোখে ।( মনে মনে)
তরী- কি হলো।
আরুশ- আমি বারন করছি তাই কথা বলবে না, আমি চাইনা আমার হবু বউ কারোর সাথে কথা বলুক ,আমি অন্য কারোর সাথে তোমাকে শেয়ার করতে পারবো না।
তরী- হিংসুটে
আরুশ- হুম আমি একটু বেশিই হিংসুটে ,আমার নিজের জিনিস আমি কারোর সাথে শেয়ার করতে রাজি নয়,বুঝলেন ম্যাডাম।
তরী- হুম।
পরেরদিন ওরা সবাই নিজেদের বাড়ি ফিরে আসে। আরুশ আবার ব্যবসার কাজে যোগ দেয়। আরুশ আর আর্দ্র দুজনে মিলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চালু করে।
কয়েকদিন পর….
আরুশের বাবা- এবার তো বিয়েটা করবে।
আরুশ- হুম এবার বিয়ের জোগাড় করো।
আরুশের বাবা- তাহলে সামনের সপ্তাহেই বিয়ের ডেট ঠিক করি।
আরুশ- আমার আর তরীর একটা প্রস্তাব আছে।
আর্দ্রের বাবা- কি প্রস্তাব
আরুশ- আর্দ্র আর রিতার বিয়েটাও দিলে কেমন হয়।
আর্দ্র- আমাদের কেন জড়াচ্ছিস
আরু- হ্যা খুব ভালো হবে।
আরুশের বাবা-আমাদের কোনো আপত্তি নেয় এই প্রস্তাবে।
আরু- ইয়া হু কি মজা দাভাই আর দাদাভাই এর বিয়ে একসাথে।
তিন পরিবারের সদস্যরা মিলে বিয়ের ডেট ফাইনাল করে, সামনের শুক্রবার ওদের বিয়ে।
আরুশের মা- ওই তোরা বিয়ের কেনাকাটা করে নিয়ে আয় না।
আর্দ্রের মা- হুম,তরীকে ফোন করে ডেকে কেনাকাটা করে নিয়ে আয়,আমরা আর যাবো না।
আরু- ওকে আমি তরীকে ফোন করছি।
আরু তরীকে ফোন করে, তরী আর অফিসে কাজ করে না,আর ওহ জানতে পেরে গেছে অফিসটা আরুশদের। এটা নিয়ে একটু রেগে আছে তরী।
তরী- বল
আরু- তরী আমাদের এখানে আজকে আয়,আমরা সবাই মিলে কেনাকাটা করতে যাব।
তরী- আমি যাবো না তোরা যা
আরু- কেন
তরী- এমনি ভালো লাগছে না।
আরু- দ্যাখ এমন বললে হবে কি করে।
তরী- সরি আমি যাবো না।
আরুশের মা- কিরে কি হয়েছে
আরু- মা দ্যাখো না তরী বলছে ওহ যাবে না।
আর্দ্রের মা- কেন রে
আরু- বলছে এমনি
আর্দ্র-আমাকে দে তো
আরু আর্দ্রকে ফোনটা দেয়।
আর্দ্র- হ্যালো,কি হয়েছে তোর কেনাকাটা করতে আসবি না কেন।
তরী- ভালো লাগছে না।
আর্দ্র- মার খাবি নাকি তুই।
তরী- না,যাবো না
আর্দ্র- ওই তুই কি অফিসের ব্যাপারটা নিয়ে রেগে আছিস।
তরী- না
আর্দ্র- দ্যাখ তোকে তো বললাম সবটা তুই এটা নিয়ে রাগ করে থাকলে হবে বল, তোর ওমন অবস্থায় কিভাবে একটা অজানা অচেনা জায়গায় তোকে কাজ করতে দেয়।তাই আমরা তোকে আমাদের ওই অফিসে কাজ দেয় ।আর তুই বল তোকে কেউ আলাদা করে সম্মান দিতো,সবার মতো একজন কর্মচারী হিসাবেই তুই থাকতিস, শুধু ব্যাপারটা জানতো ম্যানেজার সাহেব। এবার ওহ কি রাগ করে থাকবি।
তরী- আমি রাগ করে নেয়।
আর্দ্র- তুই আসবি তুই না আসলে আমরা কিন্তু কেনাকাটা করতে যাব না।
তরী- আচ্ছা আমি আসছি।
আর্দ্র– এই তো ভালো মেয়ে।
তরী- হুম।
তরী ফোন কেটে দেয়।
তরী- আমাকে দয়া দেখিয়ে চাকরি দিয়েছিলো,আমি কি অন্য চাকরি পেতাম না কি।না আর্দ্র দা তো ঠিক বলেছে আমি তো একজন কর্মচারীর মতোই থাকতাম, আমার ভালোর জন্যই এটা করেছিলো আমি রাগ করবো না থাক। যায় রেডি হয়ে নেয় কেনাকাটা করতে যাবো।
ওদিকে.
আরুশ- কি বললো
আর্দ্র- আসবে
আরুশের মা- ওই মেয়ের মাথায় কি ঘোরে কে জানে
আরু- তার কাটা একটা।
আরুশ- তরীকে বলবো আমি তুই ওকে তারকাঁটা বলেছিস।
আরু- এই দাদাভাই না এটা করিস না তরী আমাকে মেরে রাখবে না।
আরুশ- আর বলবি না।
আরু- হূ, বউ এর জন্য ভালোবাসা উতলে পড়ছে( বিরবির করে)
আরুশ- ওই আরু অদ্রিকে ফোন করে ডাক আর তরীকে ও শপিং মলে আস্তে বলে এখানে এসে কি করবে, কেনাকাটা করে বাড়ি এসে খাবে মা কি বলো।
আরুশের মা- হ্যা এটাই ভালো হবে, তোরা যা আমরা রান্নার জোগাড় করি।
শপিং মল….
আরুশরা এসে দাঁড়িয়ে আছে, এখনো তরী আসেনি।
অদ্রি একা এসেছে ওর বর অফিসে তাই।
আরু- এখনো তরী এলো কেন ধূর।
আর্দ্র- একবার ফোন কর না।
আরু ফোন করতে যাবে তখনি তরীর বাড়ি ওদের সামনে দাঁড়ায়। গাড়িটা পার্ক করে, তরী গাড়ি থেকে নামলো। সাথে আরেকজন। তরীর সাথে থাকা মানুষটাকে দেখে সবাই চমকে উঠলো……..
#চলবে……..