হৃদয়ের বন্ধন পর্ব-৭+৮

0
966

# হৃদয়ের বন্ধন
#পর্ব:7
#লেখিকা:Afshana Afrin

“”” রাত আটটায় অর্নব বাসাই এসে দেখে তোর্সা আর অরন্য বসে আছে সোপায়। অরন্য অর্নব কে দেখে দৌড়ে গিয়ে কুলে উঠে পরে। তোর্সা অর্নবের কাছে এসে বলল আপনি ফ্রেশ হয়ে আসেন তো,, আর অরন্য বাবু তুমি ভাবী আম্মুর কুলে আসো সোনা ভাইয়ার শরীর এ জীবাণু অনেক। অরন্য কে নিয়ে নেই তোর্সা অর্নব উপরে চলে যাই পিছনে তোর্সা আর অরন্য ও যাই। অরন্য কে বিছানায় বসিয়ে তোর্সা অর্নবের হাতে টাওয়াল দিয়ে বলে হট সাওয়ার নিবেন ঠান্ডা অনেক। অর্নব টাওয়াল টা তোর্সার ঘাড়ের পিছন দিয়ে ফেলে এক টানে অর্নবের বুকে নিয়ে আসে। তোর্সা অবাক হয়ে পশ্ন করে what’s up অর্নব? অর্নব উওর দেই হয়েছে কি তোমাকে না একদম বউ বউ লাগছে এই যে শাসন করছো আমায়,,, আচ্ছা তুমি তো আবার প্রেমে পরে যাও নি আমার? তোর্সা ভেং করে বলে আপনার ধারনা সম্পন্ন ভুল অর্নব বাবু আমি এই গুলো করছি কারন আপনি এক জন ইরেসপন্সিবল মানুষ তাই। অর্নব তোর্সা একবারে কাছে মুখ নিয়ে বলে তোমার এই শাসন পাওয়ার জন্য আমি আরো বেশি ইরেসপন্সিবল হবো বলেই তোর্সার ঠুঁটে চুমু দিয়ে সরে যাই। আচমকা চুমু দেওয়াই তোর্সা চোখ বড়ো বড়ো করে অর্নব কে পশ্ন করে এটা কি করলেন আপনি? অর্নব ডেভিল স্মাইল দিয়ে বলে এই যে সারা দিন লুচু লুচু বলো কিছু না করে লুচ্চা হওয়ার থেকে করে হওয়া ভালো বলে শিশ বাজাতে বাজাতে ওয়াশ রুমে ডুকে যাই। এতো কন এদের কান্ড অরন্য দেখছিলো তোর্সা পাশে বসতেই অরন্য পশ্ন করে ভাবী আম্মু ভাইয়া তোমাকে কিসি কেন করেছে তুমি কি ভাইয়ার সাথে ভালোবাসো? তোর্সা বলে না বাবু তোমার ভাইয়া তো দুষ্ট তাই দুষ্টমি করেছে,, অরন্য বলে ও আচ্ছা ।
অর্নব ফ্রেশ হয়ে নীচে নেমে ডাইনিং এ বসে। তোর্সা খাবার দেই অর্নব এর প্লেটে। খাওয়ার মাজে বার বার অর্নব পা দিয়ে স্লাইড করছে তোর্সার পায়ে তোর্সা রেগে কটমট করে থাকায় অর্নবের দিকে অর্নব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে খেতে থাকে। তোর্সা ভিতরে ভিতরে ফুঁসতে ফুঁসতে বলে একবার অরন্য ঘুমাক পরে দেখছি লুচ্চা বেটা। খাওয়ার পর্ব শেষ করে তোর্সা অরন্য কে নিয়ে উপরে যাই অর্নব তোর্সার দিকে তাকিয়ে চোখ মেরে ভিতরে ডুকে যাই।
তোর্সা অরন্য কে নিয়ে শুয়ে পরে। কিছু কন পর অরন্য ঘুমিয়ে যাই তোর্সা উঠে অর্নবের রুমে ডুকে দেখে কাজ করছে। তোর্সা পিছন থেকে অর্নব কে ধাক্কা মেরে বেডে ফেলে দেই। অর্নব চেঁচিয়ে বলে কি করছো তোর্সা চিৎ এই সব করোনা প্লিজ আমার ইজ্জত নষ্ট করো না। অর্নবের নেকামী দেখে তোর্সা বিছানায় উঠে অর্নবের গলা চেপে ধরে বলে সমস্যা কি হুম লুচ্চা গিরি শুরু করেছো কেন মনে হচ্ছে আমি তোমার বিয়ে করা বউ? অর্নব বলে তোর্সা লাগছে মরে যাবো ছেরে দাও প্লিজ। তোর্সা বলে আরো করবে? অর্নব বলে না প্লিজ ছেরে দাও। তোর্সা অর্নব কে ছেরে দিয়ে যেই উঠবে ওমনি অর্নব তোর্সা কে টান মেরে বেডে ফেলে দিয়ে উপরে উঠে যাই। তোর্সা চোখ বড়ো বড়ো করে বলে এই উঠো বলছি ভালো হবে না। অর্নব বাঁকা হেসে বলে নো বেইব উঠছি না। তোর্সা শান্ত দৃষ্টিতে থাকিয়ে বলে অর্নব প্লিজ ছেরে দাও দেখ আমাদের মাজে কোন রিলেশন নেই যে তুমি এতো কাছা কাছি এসেছো। অর্নব বলে আচ্ছা যদি রিলেশন থাকতো তাহলে আসতে দিতে বুজি। তোর্সা বলে যানি না সরে যাও । অর্নব না নরে বলে আমার গালফেন্ড হয়ে যাও তাহলে সব করতে পারবো বিয়ে তো করবেই না আমাকে । তোর্সা বলে তোমার কোন সপ্ন পূরন হবে না বুজলে এই বার উঠো উপর থেকে না হলে কিন্তু! অর্নব প্রশ্ন করে কিন্তু কি? তোর্সা কিছু একটা ভেবে শয়তানি হাসি দিয়ে অর্নবের গলা জরিয়ে ধরে । অর্নব চোখ বড়ো বড়ো করে চেঁচিয়ে বলে কি করছো কি? তোর্সা বলে কি করছি তুমি ওই সময় যেটা করেছো সেটা রিটান দিবো না! অর্নব বির বির করে বলে এই মেয়েকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেছি। তোর্সা বলে কি হলো জান কি ভাবছো ক্লোজ হও। তোর্সার কথা শুনে অর্নব এক লাফে তোর্সার উপর থেকে উঠে বুকে থুথু দিয়ে বলে চিৎ তোর্সা তুমি তো লুচ্চা উপরের টা চিৎ বের হও বলছি এখনি! আর একটু হলেই মরে যেতাম কি ভয়ানক কান্ড ভাবা যাই । তোর্সা বাঁকা হেসে বলে যেমন কুকুর তেমন মুগুর বলেই নিজের রুমে চলে যাই। অর্নব দরজা বন্ধ করে জুরে জুরে নিঃশ্বাস নেই।
চলমান……

#হৃদয়ের বন্ধ
#পর্ব:8
#লেখিকা:Afshana Afrin

“””” অর্নব দের বাসাই কেঁটে যাই তোর্সার সাত দিন। এই সাত দিনে তোর্সা অর্নবের আচরনের সাথে মানিয়ে নিয়েছে হুট হাট অর্নব এর পাগলামো। তোর্সা ভালোই বুজতে পারছে অর্নব তাকে ভালোবাসে তবুও কিছুই বলে না। অর্নব অফিসে যেতেই তোর্সা অর্নবের রুম গুছিয়ে দিচ্ছে। রুম গুছিয়ে তোর্সার চোখ পরে অর্নবের একটা ছবি তে ফরমাল ড্রেসে । তোর্সা ছবি টা হাতে নিয়ে বলে অসলেই আপনি সুদর্শন অর্নব যা আরো দুই বছর আগে আমার চোখে পরে। দুই বছর আগে থেকে একটা ম্যাগাজিনে আপনাকে প্রথম দেখে ভালো লাগে আমার বলতে গেলে ক্রাশ ছিলেন সব সময় ভাবতাম আপনি যদি আমার বর হতেই আমি আপনাকে একটু ছুঁয়ে দেখতাম। বান্ধবী রা যখন আপনার সৌন্দর্য নিয়ে প্রশংসা করতো খুব হিংসা হতো আমার! সব সময় ভাবতাম আপনি আমার কেন অন্য কেউ প্রশংসা করবে আপনার। আস্তে আস্তে বুজতে পারি আমি আপনাতে অশক্ত হয়ে গেছি খুব বেশি কিন্ত যখন ভেবেছি আপনার সাথে আমার যাই না খুব কষ্ট হতো কেন আপনার মায়াতে পরলাম। এরপর যখন আপনাকে প্রথম দেখলাম একটা বাচ্চা সহ আমি ভেবেছিলাম হয়তো আপনারা বেবি খুব কষ্ট হচ্ছিলো পরে যখন ছোট বাচ্চা টা ভাবী আম্মু বললো অদ্ভুত ভালো লাগা সৃষ্টি হলো মনে হলো আমি সত্যিই আপনার বউ। এরপর যখন আপনার বাসাই চাকরি হলো আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না। আমি আরো অবাক হয় এখানে আসার পর আপনার আচরনে। আমি খুব ভালোবাসি আপনাকে অর্নব তবে সেটা বলবো না কারন বেশি আবেগ প্রকাশ করলে হয়তো দাম কমে যেতে পারে আপনার কাছে আমার। আপনি আমাকে ঠিক কতো ভালোবাসে যানিনা অর্নব ,,””তাই যখন বুজতে পারবো আপনি আমায় সত্যি খুব বেশি ভালোবাসেন তখন আমি বলে দিবো নিজের মনের করা তার আগে আপনি যানতে ও পারবেন না কথা গুলো বলেই অর্নবের ছবিতে চুমু খেয়ে নীচে চলে যাই লান্স তৈরি করতে।
লান্স তৈরি করে প্রতিদিনের মতো আজকে ও খাবার নিয়ে অর্নবের অফিসে যাই তোর্সা আর অরন্য। অর্নব যানতো ওরা আসবে তাই আগেই কাজ শেষ করে রেখেছে। তোর্সা খাবার সার্ভ করে দিয়ে নিজেও খেতে বসে। খাওয়ার মাজে অরন্য উঠে ফোন নিয়ে চলে যাই অর্নবের কেবিনে। অরন্য যেতেই অর্নব শয়তানি হাসি দিয়ে তোর্সার পাশে বসে পরে।।তোর্সা যেন স্বাভাবিক কারন এই সাত দিনে এটাই করে আসছে অর্নব। তোর্সা কিছু না বলে খেতে থাকে। অর্নব এবার বলে আমার মতো এতো সুদর্শন যুবক তোমার পাশে তোর্সা ! আর তুমি চুপ চাপ বসে আছো কোথায় চুমু খাবে তা না। তোর্সা মুখ বাঁকিয়ে বলে অসভ্য লুচ্চা একটা আমার টেকা পরে নাই আপনাকে চুমু খেতে। অর্নব হতাশ সুরে বলে আমার না সন্দেহ হয় তুমি আসলে মেয়েতো? নাহলে এমন হট সুদর্শন ছেলে পাশে রেখে হাত গুটিয়ে বসে আছো। তোর্সা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বলে আমি কেমন আর কি আমি যানি আমি তো আর সবার মতো লুচ্চা না যে পর পুরুষ কে চুমু খাবো। অর্নব তোর্সার কাঁনের কাছে মুখ নিয়ে বলে আমাকে পর পুরুষ না ভেবে নিজের পুরুষ ভাবো একান্ত নিজের আর তারপর চুমু খাও। তোমার চুমু না খেলে মনে হচ্ছে খাবার হজম হবে না। তোর্সা বলে আসলে আপনি পাগল অর্নব আগে ভাবতাম লুচ্চা এখন পাগল ও। অর্নব তোর্সার হাত ধরে বলে পাগল তোমার জন্য তোর্সা বেবি। অর্নবের কথা শুনে তোর্সা খাবার রেখে অর্নবের দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুকন এই ভাবে তাকিয়ে থাকে দুই জন আচমকা অরন্যর কন্ঠে সরে আসে অর্নব তোর্সা ও ঠিক হয়ে বসে। অরন্য এসেই অর্নবের কুলে উঠে পরে। অর্নব অরন্য কে চুমু দিয়ে তোর্সার উদ্দেশ্যে বলে কাল অরন্যর জন্মদিন তোর্সা আজকে বাসাই ডেকোরেশনের লোক আসবে আমি অনেক কে ইনভাইট করেছি। আজকে তোমাকে আর অর্নব কে নিয়ে শপিং এ যাবো। তোর্সা এক্সাইটেড হয়ে বলল কি আমার সোনা বাচ্চার জন্ম দিন কাল? অর্নব উত্তর দেই ইয়েস মেডাম তাই তো আজ শপিং এ যাবো তোমরা দুই জন গেস্ট রুমে শুয়ে থাকো আমি একটা মিটিং শেষ করে আসছি বলেই অরন্যর গালে চুমু দিয়ে কনফারেন্স রুমে ডুকে যাই। তোর্সা কাটে উঠে হেলান দিয়ে বসে অরন্য কে ইশারা করে বুকে শুয়ে পরতে অরন্য ও তোর্সার বুকে শুয়ে টিভি দেখছে তোর্সা অরন্যর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
অরন্য তোর্সা কে পশ্ন করে তুমি আমাকে এতো লাভ করো কেন ভাবি আম্মু? তোর্সা হেসে বলে তুমি যে আমার সোনা বাচ্চা হও সেই জন্য বেবি। অরন্যর হেসে বলে আই লাভ ইউ ভাবী আম্মু তুমি কিন্তু আমাকে ছেরে যাবে না তাহলে আমি মরে যাবো মাম্মী তো নেই তুমি তো আমার মাম্মী। অরন্যর কথা শুনে তোর্সার চোখে জল চলে আসে। তোর্সা অরন্যর মাথায় চু মু দিয়ে কান্না বেজা কন্ঠে বলে কখনো তোমাকে ছেরে যাবো না বাচ্চা তুমি আমার কলিজা আমার অস্তিত্বের সাথে মিশে গেছ।

****** অপরদিকে সোফায় বসে আছি নীলিমা চৌধুরি। আরিশ চৌধুরি নীলিমা চৌধুরি কে বলে কাল অরন্যর জন্মদিন অর্নব ইনভাইট করেছে যাবে না? নীলিমা মুখ বাঁকিয়ে বলে তোমার ইচ্ছে হলে যাও এতো নেকামী করতে পারবো না। আরিশ চৌধুরি কিছু না বলে বেরিয়ে যাই। নীলিমা চৌধুরি কিছু একটা ভাবছে তখনি ফোন বাজার শব্দ হতেই ভাবনা থেকে বেরিয়ে ফোন রিসিভ করে যা শুনে তাঁতে নীলিমা চৌধুরি শয়তানী হাঁসি দিয়ে বলে এবার দেখ কি করি আমি অর্নব চোধুরি আমাকে রক্ষিতা বলা আমার আরিশ কে ছরিএ হীন বলা এবার আমি ও দেখি কাল পার্টির পর তুমি কি করে মুখ দেখাও তোমাকে অপমান করার জন্য হলেও আসবো বি রেডি মাই স্ট্রেপ বাচ্চা।
চলমান……

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে