হার্টলেস পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব

0
2230

#হার্টলেস🖤
#Writer_Laila_Aungoman_Eti
#Part_11 [ Last Part ]
,,
,,
,,
,,
হঠাৎ চোখ খুলে গেলো নীড়ের, শরীর ঘেমে একাকার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো মাঝ রাত ৩ টা বাজে পাশে তাকিয়ে দেখলো ইতু ছোট বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে আছে। নীড় শান্তির নিঃশ্বাস ফেলল, নিজেই নিজেকে বলতে লাগল, ওফ এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম, মামুন তো জেলে, কি ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্ন দেখলাম।

নীড় ইতুর কাছে গিয়ে ইতুকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।ইতুর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগল,তোকে ছাড়া আমার থাকা সম্ভব না ইতু জীবনের ভালো খারাপ সব সময়ে আমার তোকে চাই খুব খুব ভালোবাসি। বলে ইতুর কপালে ভালোবাসা দিয়ে দিলো।অনেক সময় ধরে শুয়ে থেকেও নীড়ের চোখে ঘুম আসলো না।তাই আস্তে করে উঠে বারান্দায় চলে গেল।

আকাশের দিকে আপন মনে তাকিয়ে রইলো, হঠাৎ পিছন থেকে কেউ জরিয়ে ধরলো। নীড়ের বুঝতে বাকি রইলো না কে, নীড়ের ঠোট প্রসারিত হলো ইতুর হাতের উপর হাত রেখে বলল, কখন উঠলি।ইতু আগের ন্যায় থেকে বলল,

– মাএ হঠাৎ চোখ খুলে গেলো একটা খুব সুন্দর স্বপ্ন দেখেছি

– তাই কি দেখেছিস

– বলব আগে তুমি বল এত রাতে এখানে কেন?

– খারাপ স্বপ্ন দেখেছি তাই আর ঘুম আসছে না।

– ওহ কি দেখেছো

– ওইসব না হয় বাদ দে, তুই কি দেখেছিস

– দেখেছি আমার টুইন বেবি হয়েছে

– কি???? হাহা খুব ভালো কথা।

ইতু মুচকি হেসে নীড়ের কাঁধে মাথা রাখলো।নীড় ও শান্তিতে পূর্ণরায় আকাশের দিকে তাকালো।
হঠাৎ ইতু বলল,

– শোনো

– হুম বল

– তুমি আমাকে তুমি করে বলবা নইলে আমাদের ছেলে মেয়েরা কি ভাববে

– ওকে তাহলে তোকেও ভাইয়া বলা বন্ধ করতে হবে নইলে আমার বাচ্চারা আমাকে মামু ডাকবে

– হিহিহিহি হিহিহি

– এমন করে হাসিস না বুকে চিনচিন ব্যথা করে

– হুম ঢং। আচ্ছা শোনাে

– হুম বলো

– আমি মা হতে চাই, কত সুন্দর হবে বল যদি আমাদের টুইন বেবি হয়

– কি? এখনি আগে আরো কিছু দিন যাক

– না এখনি

– ভেবে বলছিস তো

– ওই তুমি আবার তুই বলছো

– তুমি না হয় বাহিরে বলব, কিন্তু তোকে তুই ডাকতে বড্ড ভালো লাগে

– হুম বুঝলাম কিন্তু আমার বেবি চাই

– ওকে আমার কোনো প্রবলেম নেই।

বলেই ইতুকে পাজ কোলে উঠিয়ে নিলো।ইতু নীড়ের গলা জরিয়ে ধরে মাথা লুকালো নীড়ের বুকে।

______________________________________

বৃষ্টি আর মেঘ অনেক খন ধরে চুপচাপ বসে আছে, সাথে আছে ধোয়া উঠা কফি।এসির মাঝেও মেঘ প্রচুর ঘামছে।বৃষ্টির অপেক্ষার প্রহর শেষ করার জন্য আবার বলল,

– মেঘ ভাইয়া

– হুম

– কি বলবেন বলেন

– হুম বলছি

– কতক্ষণ ধরেই তো বলছেন, বলছি বলছি কিন্তু কিছুই তো বলছেন না।

– হুম আসলে বৃষ্টি আমি তোমাকে বলতে চাই যে যে

– হুম বলেন

– আসলে বৃষ্টি আমি তোমাকে খুব পছন্দ করি, আসলে পছন্দ না ভা,ভ,,ভালোবাসি।

-…………………………………………….

– প্লিজ তুমি রাগ কর না, আমি তোমাকে জোর করছি না। আমি শুধু আমার অনুভূতি গুলো তোমাকে জানাচ্ছি, বাকি সব তোমার ইচ্ছে।

বৃষ্টি বসা থেকে উঠে বলল, আমি আসি।বলে উঠে গেল। মেঘ মুখটা বাচ্চাদের মতো ছোট করে মাথা নিচু করে ফেলল। বৃষ্টি একটু পিছনে ঘুরে দেখলো মেঘ বেখেয়ালি হয়ে কফির দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘের মুখ দেখে বৃষ্টি মৃদু হেসে চলে গেল।

____________________________________________

ফুল দিয়ে মোড়ানো বিছানায় বসে আছে বৃষ্টি। হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজে গুটিসুটি হয়ে বসলো।মেঘ এসে আস্তে করে বসলো তারপর বলল,

– বৃষ্টি

– হুম

– থ্যাংক ইউ সো মাচ

-??????????

– আমার জীবনে আসার জন্য, তুমি আমাকে একবার ভালোবেসে বিশ্বাস করতে পারো কখনো কষ্ট দেবো না প্রমিস।একটা সুযোগ দেবে আমাকে।

বৃষ্টি মুচকি হেসে মেঘের দিকে তাকালো। মেঘ বৃষ্টির চোখের সামনে পড়া চুল গুলো আলতো করে সরিয়ে দিলো।বৃষ্টি খানিকটা ভড়কে গেলো।মেঘ মুচকি হেসে বলল, আজ খুব সুন্দর চাঁদ উঠেছে। চাঁদ দেখার সঙ্গী হবে।বলে মেঘ বৃষ্টির দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো,বৃষ্টি আস্তে করে মেঘের হাতে হাত রাখলো।দুজন এক সাথে বারান্দায় গিয়ে চন্দ্রবিলাস করতে লাগল।বৃষ্টি চাদ দেখতে দেখতে হঠাৎ মেঘের দিকে তাকালো, মেঘের দৃষ্টি বৃষ্টির দিকে।বৃষ্টি লাজুক ভঙ্গিতে বলল, ওভাবে কি দেখছেন।মেঘ হঠাৎ বৃষ্টির হাত ধরে ভালোবাসার আবেশে বলল,বৃষ্টি ভালোবাসবে আমাকে। বৃষ্টি কিছু বলল না মাথা নিচু করে লাজুক হেসে মেঘকে জরিয়ে ধরলো। মেঘ প্রথমে অবাক হলেও নিজেকে সাভাবিক করে মুখে হাসি নিয়ে আগলে ধরলো বৃষ্টিকে।

____________________________________________

এক রমণী বৃষ্টি বিলাসে মাতোয়ারা হয়ে আছে, চারপাশের সব ভুলে আনন্দে বৃষ্টির শুভ্র বিন্দুর মতো চকচক করছে। বৃষ্টির বিন্দুরা যখন আলতো করে ছুয়ে দেয় চোখে মুখে তখন তার মর্মদেশে ছেয়ে যায় এক রাশ প্রশান্তি, মোহনীয় এক হাসি বিরাজ করে তার অধরে।নীড় অনেক ক্ষণ ধরে দেখে চলেছে ইতুর পাগলামো।নীড় পিছন থেকে জরিয়ে ধরে বলল,

– আমি ভাবছি তুই বেবি সামলাবি কিভাবে

– কেন

– তুই তো নিজেই একটা বেবি

– আগ্গে নয় মহাশয়, আমি আমার বেবি সামলাতে পারব, এই দেখো আমি আমার পেট ভিজতে দেই নিই।

ইতুর কথা শুনে নীড় নিজের হাসি অনেক কষ্টে আটকালো তারপর ইতুর গাল একটা ভালোবাসা দিয়ে বলল, খুব ভালোবাসি পাগলি তোকে আর আমাদের বেবি টাকে।ইতু মুচকি হেসে নীড়ের বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে বলল, আমিও ভিশন ভিশন ভালোবাসি।

★★★সমাপ্ত★★★

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে