হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:14

0
3514
হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:14

হারিয়ে যাওয়া, পথ খুজে পাওয়া part:14

লেখা –সুলতানা ইতি হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া part:14

 

পরদিন সকালে আনুশার ঘুম ভাঙল,

আনুশা: এখন মনে হয় এখন বিকাল, দেখিতো কয়টা বাজে ৭ টা বাজে আচ্ছা,এটা কি সন্ধার ৭ টা, নাকি সকাল ৭ টা কিছুই তো বুঝতে পারছি না

আনুশার আম্মু: কিরে অবশেষ এ তোর ঘুম ভাঙল, তুই তো এতো ঘুমাস না, হঠ্যাৎ লম্বা সময় নিয়ে ঘুমানোর কারন কি

আনুশা: লম্বা সময় কই ঘুমালাম কয়েক ঘন্টা ই তো ঘুমালাম

আনুশার আম্মু: কয়েক ঘন্টা বলছিস,তুই গত কাল দুপুরে ঘুমিয়েছিস আর এখন সকাল

আনুশা: কিইই এখন সকাল জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম হুম সকালই তো ভালো হলো একটু হালকা লাগছে,দুপুরে যত চিন্তা ছিলো মাথায় এখন তা নেই

আনুশার আম্মু: তোর স্যার ফোন করেছিলো বলেছে আজ তোকে দেখা করতে অন্নি ফোন করেছিলো কেউই তোকে পাইনি ফোনে

আনুশা: আচ্ছা অন্নির সাথে পরে কথা বলবো স্যারর এর সাথে আগে দেখা করে আসি, ফ্রেশ হয়ে স্যার এর সাথে দেখা করতে গেলাম। স্যারর এর বাসায়, স্যার আমাকে নিয়ে পার্সপোর্ট অফিসে যায়,সেখানে ফর্মালিটি গুলো শেষ করে বাসায় আসলাম,
চিন্তায় আছি মাকে নিয়ে, মাকে কার কাছে রেখে যাবো, আপুদের কাছে রাখা যাবে না ওরা নিজেই কোন ভাবে শশুড় বাড়ি পড়ে আছে, তার মধ্যে মাকে সেখানে রাখা একদম সেভ নয়, কি করবো কিচ্ছু বুঝতে পারছি না

এই ভাবে গেলো কয়েক দিন, আনুশার চিন্তার কোন কুল কিনারা নেই,মাকে নিয়ে,।এর মধ্যে কাগজ পত্র সব ঠিক হয়ে গেছে দুই একদিনের মধ্য ডেট পড়বে যাওয়ার কথা, আনুশা শিন্ধান্ত নিলো সে যাবে না দেশের বাইরে পড়তে, মাকে একা রেখে যাওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়,,

আনুশার আম্মু:কিরে এতো কি ভাবছিস

আনুশা: ভাবছি যাবো না

আনুশার আম্মু: কোথায় যাবি না

আনুশা: বিদেশে পড়তে যাবো না,তোমাকে কার কাছে রেখে যাবো বলো মা,আমি ছাড়া তোমার আর কে আছে

আনুশার আম্মু: তুই কি বলছিস, পাগল হয়ে গেলি নাকি,সবাই তোকে কি ভাববে, যারা তোর জন্য এতো কিছু করছে তারা

আনুশা: কে কি ভাবলো না ভাবলো তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না, আমি তোমাকে একা রেখে যাবো এটা ই ফাইনাল

আনুশার আম্মু: এই মেয়ে কে নিয়ে কি করি আমি

আনুশা: স্যার কে ফোন করে জানিয়ে দিই সব ক্যানসেল করে দিতে,

স্যারঃতো আনুশার কথা শুনে অভাক এই মেয়ে বলেকি মন্ত্রী সাহেব এর কাছে আমার মুখ থাকবে না, কতো কি বলে মন্ত্রী সাহেব কে কনভেন্স করিয়েছি এখন কি হবে

আনুশা: যাক স্যারর কে জানিয়ে দিলাম, এইবার আমি আমার মতো একটা জব খুজে বের করবো,আবার আগের মতো রুটিং অনুযায়ী কাজ শুরু করবো

বিকেল হয়ে গেলো আনুশার আবার পড়ন্ত বিকেল সূর্যের রক্তিম আভা ধারন করাটা ভিশন প্রিয়,আনুশা সূর্যের দিকে আনমনা হয়ে তাকিয়ে আছে

আনুশার আম্মু: আনু তোর স্যার আর অন্নি এসেছে তোর সাথে দেখা করতে

আনুশা: স্যার, অন্নি কি বলছো, অন্নি এখানে আসবে কি করে ও তো গ্রামে

আনুশার আম্মু:তুই এসে দেখে যা,তা হলেই বুঝবি

আনুশা: আচ্ছা আমি আসছি, বস্তিতে থাকি তো তাই বস্তির পাশে একটা খোলা মাঠের মতো জায়গা আছে সেখানে সূর্য দেখছিলাম,মায়ের কথা শুনে রুমে গেলাম, অন্নিকে দেখে তো আমি অভাক অনেক দিন পর দেখা,কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না স্যারর অন্নি কে পেলো কই

অন্নি: কি অভাক হচ্ছিস তাই না, তোকে চমকে দিবো বলেই হঠ্যাৎ করে আসা, আর আংকেল এর সাথে তো আমার আগের ই জানা শুনা,তোকে বলেছিলাম না বাবার বন্ধু

আনুশা: মনে আছে,বাট

স্যার: কিন্তু কিছুই না আনুশা, তুই যখন বললি তুই দেশের বাইরে পড়তে যাবি না,তখন আমি ব্যাপার টা মেলাতে পারছিলাম না এতো ভালো একটা অফার কেউ রিজেক্ট করে,

তার পর আমি অন্নি কে সব বলি,

অন্নি :আংকেল প্রব্লেম হচ্ছে ওর আম্মু,আনুশা ওর আম্মু কে কই রেখে যাবে কার কাছে রেখে যাবে সেই জন্য নিষেধ করছে

আমি তখন ও সিয়ুর ছিলাম না,আমাকে কনফিউজড হতে দেখে

অন্নি,বলল ট্রাস্ট মি আংকেল,এই টা ই হবে কারন আমার ছেয়ে ভালো ওকে কেউ বুঝে না

তার পর তোদের বাসায় আসলাম অনেক্ষন হলো তোর মায়ের সাথে কথা বলে সিউর হলাম

আনুশা: অন্নি ঠিক বলেছে স্যারর এই জন্য ই আমি যাচ্ছি না, আপনি সব ক্যানসেল করে দিন

অন্নি: না আংকেল কিচ্ছু করতে হবে না,আন্টি আমাদের বাসায় থাকবে কোন প্রব্লেম হবে না

আনুশা: মা তোদের বাসায় থাকবে? কিন্তু তোর আম্মু আব্বু তারা কি ভাববে

অন্নি: তারা কিছুই ভাববে না,আমি তাদের সব বুঝিয়ে বলবো

আনুশা: কি বলবো বুঝতে পারছি না,অন্নি টা সব সময় আমার প্রয়োজনে যে ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ওর এই ঋন আমি কি করে দেবো

অন্নি: কি ভাবছিস, এতো কিছু ভাবতে হবে না,পরশু তোর ফ্লাইট তুই ফেকিং করা শুরু কর

আনুশা: অভাক হয়ে পরশু

স্যারর: হুম পরশু আমি তোকে ফোন করে খবর টা দিতে চাইছিলাম,কিন্তু তার আগেই তুই জানিয়ে দিলি যাবি না,তাই তোকে বলা হয়নি

আনুশার আম্মু: তুই আর কিছু ভাবিস না মা,তুই যা,আমি অন্নির বাসায় থাকবো আর অন্নি কে তুই ভালো করেই চিনিস আমার কোন অসুবিধে হতে দিবে না

আনুশা: ওকে তোমরা সবাই যখন বলছো,তখন আমি যাবো,কিন্তু অন্নি তোকে কিন্তু আমার মায়ের খেয়াল রাখতে হবে

অন্নি: আচ্ছা বাবা রাখবো এই বার হলো তো

স্যার:আমি তা হলে আজ আসি,

স্যারর চলে গেলো

আনুশা: অন্নি তুই থাকবি আমার সাথে

অন্নি: থাকবো মানে পরশু তোকে এয়ারপোর্টে দিয়ে এসে আমি আর আন্টি বাসায় যাবো

আনুশা: কিন্তু তোরা ঢাকায় আসলি কবে

অন্নি: গত কাল,তুই তো আমার কোন খবর রাখিস না, আমি আংকেল এর কাছে থেকে তোর সব খবর পেয়েছি

আনুশা: ও তাইই ম্যাডাম, আপনি গোয়েন্দাগিরি করছেন কবে থেকে

অন্নি: গোয়েন্দাগিরি না করলে জানতে পারতাম আপনি ওতো ভালো একটা অফার হাত ছাড়া করে দিচ্ছেন

আনুশা: তো দিবো না, আমি মায়ের জন্য সব করতে পারি
অন্নি: হুম বুঝলাম,

আনুশা: চা খাবি করে দিবো
অন্নি: খাবো,চল দুজনে গিয়ে চা বানাই,তার পর খেতে খেতে আয়েশ করে গল্প করবো
আনুশা : চল


তানভীর : স্যার এর কাছে শুনলাম আনুশার যাওয়ার ডেট পড়ে গেছে আবার কতো বছরের জন্য ওকে দেখবো না কে জানে, যাই হোক এয়ারপোর্ট এ একবার গিয়ে দেখে আসবো

তানভীরের আব্বু: কিরে তানভীর কি ভাবছিস বাবা

তানভীর : না আব্বু কিছু না

তানভীরের আব্বু: মন খারাফ করে বসে আছিস যে

তানভীর : এমনি আব্বু,চুপ থাকতে ভালো লাগে তো তাই

তানভীরের আব্বু: তা বললে কি হয় বেটা চল, আজকে বাপ বেটা হাটতে বের হবো নিশ্চুপ সন্ধার মুগদ্ধতা নিবো

তানভীর : আব্বু আমার একদম যেতে ইচ্ছে করছে না

তানভীরের আব্বু: আমি তোর কোন কথা, শুনছি না চল তো

তানভীর : মনে মনে ওহ কি আর এখন যেতে হবে,,, ঠিক আছে চলো

to be continue

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে