হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া পর্ব:5

0
7653

হারিয়ে যাওয়া পথ খুজে পাওয়া

পর্ব:5

লেখা –সুলতানা ইতি

 

পরদিন সকাল বেলা আনুশা তাড়া তাড়ি রেডি হচ্ছে কলেজ এ যাওয়ার জন্য
আনুশার মা: কিরে কই যাচ্ছিস তুই এতো সকাল সকাল?

আনুশা: কোথায় সকাল মা আটটা বাজে,আর আমি কলেজ এ যাচ্ছি আর একটা দিন ও নস্ট করতে চাই না

মা: তাই বলে এতো তাড়া তাড়ি

আনুশা: মা রাস্তায় জ্যাম থাকে তো অনেক

আনুশার আম্মু: ওকে যা মন দিয়ে পড়া শুনা কর

আমি মায়ের কাছে থেকে বিদায় নিয়ে কলেজ এর পথে রওনা হলো
এ যেন আমার নতুন জীবনে পা রাখলাম আমি, কখন ও কি ভেবেছি আবার পড়া শুনা করবো আগের মতো, আল্লাহ সব কিছু তোমার রহমতেই সম্ভব হয়েছে,তুমি না চাইলে কিচ্ছু হতো না, শুকরিয়া আল্লাহ তোমার দরবারে, কলেজ এসে পৌঁচলাম দেখলাম ক্যাম্পাসে বসে অনেকই আড্ডা দিচ্ছে,যাই হোক আমি ঐ সব আড্ডা টাড্ডার মধ্যে নাই সোজা চলে গেলাম ক্লাস এ

পুরো ক্লাস টা পাকা কেউ নেই তবে সবার বই গুলো ঠিক আছে যাই হোক গিয়ে বসলাম একটা ব্যান্সে , পাশে একটা বইয়ের ব্যাগ রাখা আছে এটা কার ছেলের না মেয়ের দূর আমার এতো কিছু জানার দরকার নাই,ক্লাস শুরু হতে এখন ও লেট তার ছেয়ে বরং বই খুলে একটু পড়ি
কিছুক্ষন পর

ক্লাস সব স্টুডেন্ট রা আসা শুরু করছে শুধু আমার পাশের টা আসেনি
স্যার চলে আসছে ক্লাস এ

হঠ্যাৎ একটা ছেলে বল্লো আসবো স্যার

(আসো)

স্যার: সবাই শুনো তোমাদের এক্সাম অতি সন্নি নিকটে সো তোমরা মন দিয়ে পড়া শুনা করো এই কয়টা দিন আউট সব প্লেন বাদ দিয়ে পড়া শুনাতে মন দাও
স্টুডেন্ট : ইয়েস স্যার
স্যার আর ও কিছুক্ষন লেকচার দিয়ে চলে গেলো, আমি স্যার পড়াটা নিজে নিজে আবার করে বুঝবার চেস্টা করছি

?????আরেএএএএ miss attitude তুমি এখানে?

কথাটা শুনে তাকালাম,হুম আমার পাশে সেই ছেলেটা, যার সাথে প্রথম দিন ধাক্কা খেয়েছিলাম, সেই ছেলেটা বসেছে আর আমি খেয়াল ই করিনি,ওহ নো এতো বড় blunder আমি কি করে করতে পারি,

ছেলেটি: এই যে mis attitude এতো কি ভাবছো?বাই দা য়ে নাম কি তোমার?

আনুশা: আমার নাম যাই হোক না কেনো আপনাকে বলবো কেনো আর আমি মটেই Attitude দেখাচ্ছিনা সো আমাকে ঐ নামে ডাকবেন্না, আর আপনি আমার পাশে কি করছেন? (ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস কিরলো আনুশা)

ছেলেটি: এই যে হ্যালো, আমি আপনার পাশে না আপনি আমার পাশে এসে বসেছেন,কেনোনা আপনার আগে আমি এসেছি

আনুশা: ওকে ফাইন আপনার জায়গাতে আপনি থাকুন আমি গেলাম এই বলে আমি একদম পিচনে গিয়ে বসলাম,এই ছেলেটার গায় পড়ে কথা বলার ভাবটা আমার একদম ভালো লাগছে না কি যে করি

ছেলেটি: সেই প্রথম ধাক্কা খেয়ে এই মেয়ের চোখের দিকে নজর পড়েছিলো উদ্ভট মায়াবি চোখ, যেন চোখেই তার কথা বলে,আচ্ছা ওর চোখ গুলো কি ওর নাম টা আমায় বলে দিতে পারে না নাকি, দূর কি সব ভাবছি আমি

আনুশা: ক্লাস শেষ তাই চলে যাচ্ছিলাম হঠ্যাৎ

এই যে miss Attitude, একটু শুনবেন,

আনুশা: আসে পাশে তাকালাম দেখলাম ছেলেটা আমাকেattitude বলে ডাকাতে সবাই আমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে আছে, আমার তো রাগ চরমে উঠে যাচ্ছে, অনেক কস্টে নিজেকে কন্ট্রোল করে বললাম

হাই আমি আনুশা আর ভুল করে ও আমাকে ঐ সব নামে ডাকবেন্না, এই বলে চলে যাচ্ছিলাম

ছেলেটি: আনুশা শুধু নিজের নাম টা ই বললে আমার নামটা শুনবে না,

আনুশা: আমি না শুনার মতো করে হাটছি
ছেলেটি চিৎকার করে বলল, হেই মিস আনুশা আমার নাম তানভির, তানভির মাহমুদ

আনুশা,; আমি আমার মতো করে চলে এলাম বাসায় এই সব ফালতু ছেলেদের কথা ভাবার সময় আমার হাতে নেই

আনুশার আম্মু: কিরে নতুন কলেজ নতুন সব কিছু কেমন লাগলো তোর,

আনুশা: ভালো
আনুশার আম্মু: ভালো হলে মুখটা এই রকম পেচার মতো করে রাখছিস কেনো

আনুশা: তুমি ও না মা,মানুষ এর মুখ কখন ও পেচার মতো হয়,আচ্ছা যাও খেতে দাও খিদে পেয়েছে( কথা গুরানোর জন্য)

আনুশার আম্মু: কথা গুরাচ্ছে মেয়ে আমার খুব বড় বড় ভাব নিচ্ছে সত্যি কি বড় হয়েছে

আনুশা: মা যাও তো খাবার দাও,

আনুশার আম্মু: দিচ্ছি আয়
খেয়ে দেয়ে একটু শুতে যাবো অমনি মনে হলো আজ ডায়েরী টা তে কিছু লিখবো অনেক দিন হয় তেমন করে ডায়েরী লিখা হয় না
ডায়েরী খুলে লিখতে বসলাম
ইসস যা সেই কবে যে ডায়েরীর পেজ গুলো শেষ হয়েছে মনে নেই
ঠিক আছে কোন ব্যাপার না,কাল কলেজ এ যাওয়ার সময় একটা কিনে নিবো
আনুশার আম্মু: কিরে কি এতো বিড় বিড় করছিস বল তো,

আনুশা: না আম্মু তেমন কিছু ই না

আনুশার আম্মু: তা হলে যা ঘুমা একটু,বিকেল এ তো আবার টিউশনি করতে বের হবি,

আনুশা: হুম,ইসস কি যে করি, চাকরি টা ও ছেড়ে দিয়েছি নতুন টিউশনি ও তো পাইনি,এই দুই টা দিয়ে তো আর সব খরচ চলবে না, কি করি,?

পরদিন আনুশা কলেজ এ যাওয়ার পথে ডায়েরী কিনবে কি না ভাবছে,যদি ডায়েরি না কিনি তা হলে কিছু টাকা বেছে যাবে, এখন কি করি? দেখি তো ব্যাগের মধ্যে জমিয়ে রাখা কোন টাকা পাই কি না,আরেবাস এই তো পেয়ে গেছি এই দিয়ে হয়ে যাবে যাই কিনে নিয়ে আসি, ডায়েরী কিনে সোজা কলেজ এ চলে গেলাম, গিয়ে ক্লাস বসলাম,

প্রিন্সিপাল স্যার: আনুশা একটু এই দিকে আয় তো
আনুশা: স্যার কেনো ডাকছে শুনে আসি

তানভীর ক্লাস এ এসে আরে এই টা miss attitude na কিন্তু কই গেলো ও তো ক্লাস ছাড়া অন্য কোথায় যায় না

এমন সময় অন্য আরেক টা ছেলে যাওয়ার সময় তার ধাক্কা খেয়ে আনুশার বই পড়ে যায়,তানভীর ছেলেটা কে কিছু বলতে গিয়ে ও বল্লো না,তানভীর এর চোখ আটকে গেলো একটা ডায়েরীর উপর

তানভীর ; আরে mis.attitude আবার ডায়েরী ও লিখে দেখিতো ডায়েরি তে কি আছে,( যদি ও অন্যের ডায়েরী পড়া ঠিক নয়) তবু ও এই ডায়েরী টা খুলে দেখি,সে কি কিছুই তো লিখা নেই,তার মানে এটা miss Attitude আজ কিনেছে, আচ্ছা যদি এই ডায়েরী টার প্রথম লিখা আমার হয়,,তা হলে ত বেশ ভালো হবে, miss attitude, একটু চমকে যাবে যেই ভাবা সেই কাজ, কাজ শেষ করে সব কিছু আগের মতো করেই রেখে দিলো

আনুশা: উফফ স্যারর কে যে কি বলে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না,আমাকে আর ও দুটো টিউশনি পাইয়ে দিলো, যদি ও যাতায়াত করা টা একটু কঠিন তবু ও ভালো

তানভীর : হেই মিস a,সরি আনুশা, কেমন আছো

আনুশা: এ আবার এখানে হায় আল্লাহ আজ আবার আমার সাথে বসে নি তো

তানভীর; হেই মিস সারা দিন কি এতো ভাবো,

আনুশা: সেটা আপনাকে বলবো কেনো?

তানভীর : না বলতে চাইলে তো আর ঝোড় করে শুনতে পারবো না

আনুশা: তাই তো,এতো যাতে বুঝেন তা হলে আমার সাথে সেধে সেধে কথা বলতে আসেন কেনো

তানভীর : আচ্ছা ও কোথায় থাকে কিছুই তো জানি না, একবার জিজ্ঞাস করবো।
এমন সময় স্যার এন্ট্রি
তানভীর : উফফ এই স্যার টা একটু পরে আসলে কি হতো মনে মনে স্যার এর চৌদ্দ গুস্টি উদ্ধার করলো তানভীর
তার পর গিয়ে নিজের জায়গাতে বসলো

ক্লাস শেষ এ আনুশা চলে যাচ্ছিলো

তানভীর : আরে ও তো চলে যাচ্ছে এই মিস এ,,না না আনুশা প্লিজ দাড়াও

আনুশা: না শুনার মতো করে হাটছে,

তানভীর : দৌড়ে গিয়ে হাফাতে হাফাতে, হেই ললনা কোথায় থাকো বলো না
আনুশা: ( কি পাগল ছেলেরে এই কথা বলার জন্য এতো দূর দৌড়ে আসে কেউ)

তানভীর : বলো না..?

আনুশা: আমার নাম পাকি অই আকাশে থাকি,( আমি কি কম জানি নাকি,দিলাম বলে, এইই বার বুঝো ঠেলা)এই বলে চলে গেলো

তানভীর : যাক বাবা কি জিজ্ঞাস করলাম আর কি বলে গেলো, তবে যাই বলো না কেনো ললনা আমি তোমার পিছু ছারছি না,এই তানভীর যাকে মন থেকে চায় তাকে পেয়ে তার পর শান্ত হয়

to be continue

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে