হারিয়ে যাওয়া,পথ খুঁজে পাওয়া।
পর্ব-1
লেখা –সুলতানা ইতি
আজ আমার বাসর রাত আর অন্য সব মেয়েদের মতো আমার ও এই রাত টা নিয়ে অনেক সপ্ন হুম একটু পরেই আমার সপ্নটা সত্যি হতে চলছে।, বিয়ে টা আমার পারিবারিক ভাবেই হয়েছে ছেলেকে আমি এখন ও দেখিনি মাকে বলেছি তার পছন্দ ই আমার পছন্দ, উফফ উনি এখন ও আসছে না কেনো আর কতোক্ষন অপেক্ষা করবো,
আচ্ছা যাই হোক উনি আসার আগে আপনাদের কে আমার পরিছয় টা দিয়ে নি,আমি আনুশা রহমান, মায়ের ছোট মেয়ে আমার বড় দুবোন আছে অদের বিয়ে হয়ে গেছে, মা আমাকে অনেক বেশি ভালোবাসে তাই আমি মায়ের কথার বিরুদ্ধে যাইনি কেউ মনে হয় আসছে, পায়ের শব্দ শুনা যাচ্ছে।
নিহাল আসছে হুম আমার বরের নাম নিহাল, দরজা খুলে ভিতরে আসলো নিহাল
আমার মধ্যে অজানা ভয় কাজ করতে লাগলো আসার আগে মুরুব্বিরা বলেছে বাসর রাতে স্বামিকে পায়ে ধরে সালাম করতে হয়, আমি তাই উঠে গিয়ে নিহাল কে সালাম করে উঠে দাড়ালাম অমনি
ঠাসসসসসসসসস
নিহাল আমাকে থাপ্পড় মারলো বাসর রাতে এই প্রথম কোন মেয়ে তার স্বামির হাতে থাপ্পড় খেয়েছে, এই রকম কোন ইতিহাস আমি আগে শুনিনি
আমি থাপ্পড় খেয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে কান্না করতে ভুলে গেছি
আনুশা: তুমিইইইইইই????
নিহাল: হুম আমি মনে পড়ে তোমার কলেজের সেই দিনের কথা
আনুশা: আমি সত্যি টা জানার পর তোমার কাছে বার বার ক্ষমা ছেয়েছি নিহাল
নিহাল: ক্ষমা, আমার ওতো বড় একটা ক্ষতি করলে তুমি কলেজে সবার সামনে আমাকে বদনাম করেছো প্রিন্সিপাল স্যার আমাকে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে তোমার জন্য আমার পুরো লাইফ বরবাদ হয়েছিলো,আর তোমাকে আমি এতো সহজে ক্ষমা করে দিবো এই টা তুমি ভাবলে কি করে
আনুশা: তাই বলে তুমি এই ভাবে প্রতিশোধ নিবে
নিহাল: তুমি আমাকে কলেজে সবার সামনে অপমান করেছো আর আমি তোমাকে সমাজের সামনে অপমান করবো তুমি জানতে না ইট ছুড়লে পাটকেল খেতে হয়,
কাল যখন সবাই জানবে যে বাসর রাতে স্বামি তার স্ত্রী কে ডির্বস দিয়েছে সবাই তোখন তোমাকেই আঙুল তুলবে।
আনুশা: নিহালের পায়ে পড়ে প্লিজ নিহাল এমন করো না, দেখো স্ত্রী মর্যাদা না দাও কিন্তু তুমি আমাকে ডির্বস দিয়ো না, আমি তোমাদের বাড়ির কাজের মেয়ের মতো থাকবো??????
উফফফ পা ছাড়, এই মেয়ে তুই পা ছাড় বলছি ????
এতো অহংকার এখন কোথায় গেলো তোর,,
আনুশা: আমার এই কষ্ট দেখে আমার মা মরে যাবে উনি সইতে পারবে না প্লিজ নিহাল
নিহাল,উফফ ছাড়
নিহাল আমাকে ধাক্কা মেরে চলে যায়,এক নিমিষে আমার সব সপ্ন ভেঙে গেলো আমি ভাবতে ও পারিনি নিহাল আমার থেকে এই ভাবে প্রতিশোধ নিবে
হুম সে দিন কলেজ এ যেতেই দেখি সবাই আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে আমি কিছু বুঝতে পারিনি
অন্নি আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড সে এসে বল্লো আনুশা চল একবার নোটিশ বোর্ড দেখবি
আমি,কি আছে সেখানে
অন্নি আগে চল, গেলেই বুঝতে পারবি নোটিশ বোর্ড এর দিকে তাকিয়ে আমার চোখ তো চড়ক গাছে
মাথায় আমার রক্ত উঠে গেছিলো নোটিশ বোর্ড এ আমার আর নিহাল এর একটা ছবি ছিল তাতে লিখা ছিলো I love you আনুশা,,, নিহাল তোখন সবার সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো ক্যাম্পাসে বসে আমি সবার সামনে নিহাল কে থাপ্পড় মারি
নিহাল কিছু বুঝতে না পেরে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আমি আর ওখানে দাড়ালাম না সোজা বাসায় চলে আসি,পরে ৭দিন আর আমি কলেজে যাইনি,
যখন গেলাম কলেজ এ তখন জানতে পারলাম প্রিন্সিপাল নিহাল কে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে
নিহাল এর চিৎকার এ আমি ভাবনার জগৎ থেকে ফিরে আসি
নিহাল এর হাতে কিছু পেপারস আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না অই গুলা কি
নিহাল প্লিজ আমাকে কি ক্ষমা করা যায় না
নিহাল: তোকে ক্ষমা করবো নো য়ে, এই নে ডির্বস পেপারস এ সাইন করে দিলাম এই বার তুই বেরিয়ে যা তুই জানিস তোর সেদিন কার ভুলের জন্য আমার কতটা সাফার করতে হয়েছিলো আজ ও আমি সাফার করছি তুই বের হো আমার বাড়ি থেকে
আনুশা; নিহাল আমি এতো রাতে কোথায় যাবো প্লিজ আমাকে আজকে রাত টা থাকতে দাও আমি কাল ভোর না হতেই উঠে চলে যাবো,
নিহাল তুই এখন যাবি, নইলে আমি তোকে বাইরে ফেলে আসবো কথা বলেই নিহাল আমাকে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে গেলো,
যাওয়ার পথে নিহাল এর মাকে সামনে পেয়ে আমি কান্না করে বললাম মা আমি এতো রাতে কই যাবো,নিহাল এর মা কিছু না বলে আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো, নিহাল আমাকে বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলো,
আমি অন্ধকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভাবছি এখন কোথায় যাবো আমি
আমার তো বাবার বাড়ি নেই বাবা ও নেই মা মামার বাড়ি থাকে মামার দয়ায় আমাদের তিন বোনের পড়া লিখা আর বিয়ে হয় এখন যদি আমি মামার বাড়ি যাই তা হলে কি ওরা আমায় মেনে নিবে?
ভাবতেই কান্না পাচ্ছে কি ছেয়েছি আর কি হলো উফফ আমি এখন কোথায় যাবো, কি করবো, কিচ্ছু মাথায় আসছে না, মা তো আমায় এখন এভাবে দেখলে উনাকে আর বাঁচাতে পারবো না আর কাল সকালে সবাই যখন জানতে পারবে তখন কি হবে
উফফ নিজের চুল নিজেই টেনে চিড়তে ইচ্ছে করছে এই সব কথা ভাবছি আর অগোছালো পা পেলে হাটছি
আসলে সেই দিন কলেজে আমার এতো টা রাগ না দেখালে ও হতো আজকে আর এই দিনটা দেখতে হতো না অনেক পরে জানতে পারি আসলে সেদিন নিহাল অই কাজ টা করেনি আমাদের ফ্রেন্ড চারকেল এর একজন মজা করে এমন করেছে পরে অনেক খুঁজে নিহাল কে পেয়ে ক্ষমা ও ছেয়ে নিয়েছি,কিন্তু নিহাল যে আমাকে এতো বড় একটা প্রতিদান দিবে আমি বুঝতেই পারিনি
হাটতে হাটতে অনেক দূর চলে এলাম আর বেশি দূর নেই মামার বাড়ি না আর হাটতে পারছি না বসে পড়লাম রাস্তার পাশে
অনেক্ষন বসে থাকলাম তার পর আবার হাটতে লাগলাম,, অবশেষ এ পৌছে গেলাম মামার বাড়িতে না এতো রাতে আর কাউকে ডাকবো না ভোর হতে চলল প্রায় এখন দরজার পাশে বসেই এই টুকু সময় কাটিয়ে দিতে পারবো ভাবছি সকাল হলে যখন সবাই আমাকে দেখবে তখন কি ভাব্বে তারা কেমন হবে তাদের মনের অবস্থা, ভাবতেই গায়ে কাটা দিয়ে উঠলো ভাবতে ভাবতে দরজার পাসে হেলান দিয়ে বসলাম, চোখ টা লেগে এসেছিলো মনে হয়
ভোরে মামির চেঁচা মেছিতে লাফিয়ে উঠলাম
মামি:এইইইই তুই এখানে কি করছিসস
to be continue,