হলদে পাখি পর্ব ০৩
#লেখিকা_তাসনীম_তুষার
খুব খুশি মনে জুঁই ও যুথী চকলেট এর প্যাকেট নিয়ে ঘরে ঢুকতে থাকে, আর মনে মনে যুথী ভাবতে থাকে “আচ্ছা, হলদে পাখিটা কি চকলেট খায়? যাই, একটু সেঁধে দেখি খায় কিনা?” ।
যুথীর ভাবনা ওখানেই থমকে দাঁড়ায়, ওদের চোখ আটকে যায় হলদে পাখির ছোট্ট ঘরটাতে যেটা কিনা এই মুহূর্তে মাটিতে পড়ে দু টুকরো হয়ে আছে। ছানাটির পানি আর খাবার ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে চারদিকে সাথে কিছু ছেড়া পালক এবং দুই এক ফোঁটা রক্ত। অবস্থা দেখে দুইবোন ভয়ে চিৎকার ও কান্না জুড়ে দেয়।
দুবোনের কান্না শুনে জুঁই-যুথীর বাবা, মা, মামা, মামী এবং নানুভাই ছুটে আসে ঘরে। মেহেরুন দুই মেয়ে কে কোলে নিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে। ওদিকে মাহ্সিন ও আলতাফ দেখতে পায় একটা সাদা বিড়াল ঘরের এক কোণে দেঁয়ালে আঙ্গুল দিয়ে আঁচড় কাটছে এবং কি যেনো খুঁজছে। জুঁই-যুথীর মামা দৌড়ে বিড়াল টাকে ঘর থেকে বের করে দেয় এবং মাহসিন বিড়াল টা যেখানে ছিল সেখানে যেয়ে একটু ভালো করে দেখার চেষ্টা করে যে বিড়ালটি ঐখানে কি খুঁজছিল। ছানাটি কে কোথাও খুঁজে পাচ্ছেনা। ছানাটিকে না দেখতে পেয়ে দুই বোনের কান্নাও থামছেনা। অনেক ভালো করে খোঁজার পরে মাহ্সিন ঘরের কোণে চালের মটকা রাখা যে স্থানে ঠিক সেই মটকার পিছনে দেখে ছানাটি চুপটি করে দেয়ালের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে থর থর করে কাপছে। মাহ্সিন হাত বাড়িয়ে দিলেও ছানাটি কাছে আসছেনা। জুঁই ও যুথী ছানাটি বেঁচে আছে শুনে চোখের পানি মুছে দৌড়ে কাছে যায়। জুঁই যুথী কে দেখতে পেয়ে ছানাটি ও আস্তে আস্তে তাদের কাছে আসে। জুঁই আদর করে পাখির ছানা টিকে হাতের তালুতে তুলে নেয় এবং মাহ্সিন ভালো করে পরীক্ষা করে দেখে পাখির ডানায় অল্প আঘাত ও শরীরে আঁচড়ের দাগ রয়েছে। মাহসিন ছানাটির ক্ষতস্থান ধুয়ে অ্যান্টিসেপটিক লাগিয়ে দেয়।
হলদে পাখির ছানাটি বিড়ালের আঁচড়ে এখন আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছে, তাই জুঁই ও যুথী জান প্রান দিয়ে সেবা করে যাচ্ছে। এক মুহূর্তের জন্য ও ছানাটিকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছেনা।
এভাবেই চলে আরো দুই দিন, ছানাটি এখন বেশ সুস্থ হয়ে উঠেছে জুঁই যুথীর যত্ন ও ভালোবাসায়। এখন ছানাটি হাঁটতে পারে এবং অল্প অল্প ডানাও ঝাপটাতে পারে। ছানাটির সুস্থতা দেখে দুইবোনের খুশি যেনো আর ধরেনা। তাদের বাবা মাহসিন ও ছানাটির জন্য আরেকটি ঘর বানিয়ে দেয়।
এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।
গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা
◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।
আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share
সেদিন বিকেলে তাদের মামা চলে যাবে তাই বিদায় জানাতে যাবার আগে ছানাটিকে একটা স্টোররুমে এ রেখে দরজা আটকে দিয়ে আসে যাতে করে কোনো বিড়াল অথবা কাক ক্ষতি করতে না পারে।
মামাকে বিদায় দিয়ে জুঁই যুথী ফিরে আসে স্টোর রুমে। ছোট একটি স্টোর রুম, তাতে অনেক প্রয়োজনীয় অপ্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এ বোঝাই হয়ে রয়েছে। ঘরটিও অন্ধকারাচ্ছন্ন, প্রয়োজন না পড়লে সেই রুমে কেউ খুব একটা যায়না। তাই এই রুমটাকে সবচেয়ে বেশি নিরাপদ মনে করেছে দুইবোন ছানাটিকে রাখার জন্য সে সময়। ছানাটিকে নিয়ে ফিরে আসার সময় জুঁই হঠাৎ করে তীব্র ব্যাথায় জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে। যুথী দেখতে পায় জুঁই এর ডান পায়ের পেছনে উরু থেকে রক্ত বের হচ্ছে, তাইনা দেখে যুথী ও ভয়ে কান্না জুড়ে দেয়।
মাহ্সিন দৌড়ে ছুটে স্টোর রুম এ এসে দেখে জুঁই পাখিটি নিয়ে বসা থেকে উঠে দাঁড়ানোর সময় সেই রুমে থাকা তারকাটার একটি কাটা গেঁথে গেছে জুঁই এর ডান উরুর পৃষ্ঠভাগে এবং সেখানেই ফুটো হয়ে গল গল করে রক্ত বের হচ্ছে। যুথিকে সরিয়ে জুঁই এর হাত থেকে ছানাটি নিচে রেখে তারকাটাটি বের করে মাহ্সিন তাকে কোলে করে সেখান থেকে বের হয়ে আসে।
“যুথী আম্মু, আমার সাথে চলে আসো দরজা টা লাগিয়ে দিয়ে। তোমার আপু ব্যাথা পেয়েছে, আম্মুকে ডেকে নিয়ে আসো। আপুকে ঔষধ দিতে হবে।”
মাহ্সিন কথা গুলো বলতে বলতে জুঁইকে নিয়ে তার নানুভাই এর ঘরে চলে যায়।
পর্ব ০৪ আসছে…
[বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ ০৪ পর্বেই গল্পটি শেষ হয়ে যাবে।আপনারা পড়ে অবস্যই মতামত জানাবেন গল্পটি কেমন হয়েছে। এই গল্পটি লেখিকার শৈশবের ছায়া অবলম্বনে লিখা।আগের পর্ব গুলো পড়তে চাইলে কমেন্ট এ জানাবেন, আমি লিংক দিয়ে দিবো।]