হঠাৎ বৃষ্টিতে পর্ব-১৩ এবং শেষ পর্ব

2
1617

#হঠাৎ_বৃষ্টিতে⛈️
#Last_Part
#Writer_NOVA

— আমি আদনান। যে মারা গেছে সে আমার জমজ ভাই আফনান।

ত্রিবু চোখ দুটো কপালে তুলে আদনানের দিকে তাকিয়ে রইলো। এতদিন সে কত আজগুবি চিন্তা করেছে। কিন্তু কখনও এই বিষয়টা মাথায় আনেনি। ত্রিবু কিছু সময় মুখটা কুচোমুচো করে বললো,

— আমি আপনাকে ভূত ভেবে নিয়েছিলাম।

আদনান স্মিত হাসলো। কোন উত্তর দিলো না। প্যান্টের পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে ত্রিবুর পাশে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি দেখায় মনোযোগ দিলো। বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বললো,

— আজও কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে দেখা হয়ে গেলো।

— হ্যাঁ, বিষয়টা খুব অদ্ভুত তাই না?

প্রশ্নসূচক বাক্য নিক্ষেপ করে আদনানের মুখের দিকে তাকালো ত্রিবু। আদনান একবার ওর দিকে তাকিয়ে ছোট করে উত্তর দিলো,

— হুম।

— আচ্ছা, আপনি আমার নাম জানলেন কি করে?

— আপনার কলেজে খোঁজ করে।

ত্রিবু বিস্মিত গলায় বললো,
— আপনি কলেজে আমার খোঁজও করেছেন?

— জ্বি।

— কেনো?

— প্রয়োজন আছে বলেই করেছি।

— কি প্রয়োজন?

— সময় হলে বলবো।

আদনান উত্তর না দেওয়ায় ত্রিবু কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন হলো। মুখ বাকিয়ে মনে মনে বললো,”বললে কি হতো?আমি কি কারো কাছে বলে দিতাম😏।” কিন্তু মুখে চুপ। তবে ত্রিবুর মনটা খুশিতে বাগডুম বাগডুম করছে। ছেলেটা যে বেঁচে আছে তাও বা কম কিসের। হঠাৎ আরেকটা কথা মনে আসতেই সে দ্রুত আদনানকে প্রশ্ন করলো,

— আপনি আমাদের বাসার রাস্তা থেকে হুট করে হাওয়া হয়ে যেতেন কিভাবে?

আদনান এক ভ্রু উঁচু করে ত্রিবুর দিকে তাকালো। ত্রিবু ওকে তাকাতে দেখে চোখ নামিয়ে ফেললো। আদনান মুচকি হেসে বললো,

— আপনি হয়তো ভুলে গেছেন ম্যাডাম আপনাদের বাসার রাস্তার মাঝে একটা সরু গলি আছে। যেটা দিয়ে আমাদের গ্রামে আসা যায়। ঐ গলিতে ঢুকলে আপনাদের রাস্তা থেকে কিছু দেখা যায় না। তাহলে আমাকে কি করে দেখবেন বলুন তো?

ত্রিবুর টনক নড়লো। আদনানের টেনশনে সে তো ভুলেই গিয়েছিলো সরু গলির কথাটা। এতোটা ভাবনায় বিভোর ছিলো যে এই গলির কথা মাথা থেকে চলে গিয়েছে। ত্রিবু থেমে আদনানের সাথে বৃষ্টি দেখায় মন দিলো। আদনান চোখ না সরিয়ে কিছু সময় পর বিষন্ন কন্ঠে বললো,

— আমিও আফনান মাত্র তিন মিনিটের ছোট-বড়। আমি বড় ও ছোট। ও ভীষণ দুষ্ট প্রকৃতির ছিলো। সবসময় দুষ্টামী করে আমাকে ফাঁসিয়ে দিতো।ওর বহুদিনের শখ ছিলো একটা বাইকের।কিন্তু বাবা রাজী হচ্ছিলো না। যদি কোন দূর্ঘটনা ঘটে তাই। মা ও আমি বাবাকে রাজী করিয়ে ওকে একটা বাইক কিনে দিয়েছিলাম। সেদিন আফনানের খুশি দেখে কে। মা কে প্রথম বাইকে চড়িয়ে বড় বাজার থেকে ঘুরিয়ে এনেছিলো। কিন্তু কে জানতো বাবার কথায় ঠিক হয়ে যাবে। বন্ধুদের সাথে বাইকে করে কলেজ যাচ্ছিলো। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে বাজি ধরেছিলো কার আগে কে যেতে পারে। রাস্তার বাঁক নিতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করে।সাথে সাথে স্পট ডেথ।

আদনান চোখের কোণে জমানো জল মুছলো। ত্রিবুর খারাপ লাগছে। যে ছেলেটা কথায় কথায় হাসতো তার বুকের ভেতরে ভাই হারানো পাহাড় পরিমাণ কষ্ট জমে আছে। অথচ সে তা টের পায়নি। আদনান গলার স্বর বদলে বললো,

— হাঁটতে হাঁটতে সেদিন অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম।ভীষণ একা একা লাগছিলো। নিজেকে একটু সময় দিচ্ছিলাম।ছাতা হাতে পুরনো বাস স্টপেজে দাঁড়াতেই দেখতে পেলাম তুমি ছুটে বিশাল ব্রীজের দিকে ছুটছো। তারপরের ঘটনা তো তুমি জানোই।

আদনান কথাটা শেষ করে জিহ্বায় কামড় দিয়ে অপরাধী ভঙ্গিতে বললো,

— সরি সরি আপনাকে তুমি করে বলে ফেললাম।

— না কোন সমস্যা নেই। তুমি করে বলতে পারেন।

— অনুমতি যখন দিয়েছো তাহলে এখন তুমি করেই বলবো।

— ওকে।

— দেখো আল্লাহর কি লিলাখেলা! তোমার সাথে তিনদিন দেখা হলো। আর তিনদিন হঠাৎ বৃষ্টি।

— এটা আমার কাছেও অবাক করার বিষয়।

ত্রিবু বৃষ্টির ফোঁটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আদনানের সাথে থাকতে তার ভীষণ ভালো লাগছে। ইচ্ছে করছে সময়টাকে এখানেই থমকে দিতে।আদনানের মনে অনেকক্ষণ ধরে একটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু কিভাবে বলবে তা বুঝে উঠতে পারছে না। মাথা চুলকে বোকা ফেস করে বলে ফেললো,

— তোমার মোবাইল নাম্বারটা কি দিবে?

ত্রিবু চোখ বড় করে আদনানের দিকে তাকালো। এতে আদনান কিছুটা নার্ভাস হয়ে গেলো। তার চোখ দুটো ছটফট করছে। তাকে এমন করতে দেখে ত্রিবু ফিক করে হেসে উঠলো। তারপর ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করলো,

— কেনো?

আদনান ফটাফট উত্তর দিলো,
— আম্মুকে বলতাম তার ছেলের বউ খুঁজে পেয়েছি। তারপর কল দিয়ে আম্মুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলবো, “নাও,ছেলের বউয়ের সাথে কথা বলো।”

ত্রিবু অবিশ্বাস্য চোখে আদনানের দিকে তাকালো। আদনান ভুবন ভুলানো এক হাসি দিলো। ত্রিবু এদিক সেদিক তাকিয়ে ছটফট করতে লাগলো। তার ভেতরে তোলপাড় চলছে। আদনান নিষ্পলক চোখে ত্রিবুর দিকে তাকিয়ে আছে। ত্রিবুর সাধ্যি নেই সেই চোখের দিকে তাকানোর। তাহলে সে যে স্ট্রোক করবে। একবার বলতে ইচ্ছে হলো, “এই যে মিস্টার আদনান চোখটা নামান। আমি পাগল হলে কিন্তু তার দায় আপনার।” কিন্তু কথাগুলো গলায় আটকে রইলো। ঠোঁটে আর এলো না। ত্রিবুর মনটা এখন পালাই পালাই করছে। মন চাইছে এক দৌড়ে এখান থেকে পালাতে। বাইরে তাকিয়ে দেখলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পরছে। এই বৃষ্টিতে ভিজবে না। তাই দিলো এক দৌড়। আদনানের বিষয়টা বুঝতে একটু দেরী হলো। যখন বুঝলো তখন চেচিয়ে বললো,

— মোবাইল নাম্বার না দিলে সমস্যা নেই। আমি খুব শীঘ্রই আমার পরিবার নিয়ে তোমাদের বাসায় আসছি।

আদনানের কথা শুনে ত্রিবু একবার ঘাড় ঘুরিয়ে ওর দিকে তাকালো। আদনান সেই সুযোগে একটা চোখ মেরে দিলো। ত্রিবু চোখ পাকিয়ে ফের ছুটলো। তার এখন তাতাথৈথৈ করে নাচতে ইচ্ছে করছে।কিছু দূর যাওয়ার পর দুই হাত মেলে আকাশের দিকে তাকিয়ে কয়েকবার গোল গোল করে ঘুরলো। তারপর খুশিমনে লাফাতে লাফাতে বাড়ির পথ ধরলো।

☔☔☔

দিন কাটে, মাস কাটে, এমন করে কয়েক বছরও কেটে যায়। কতকিছু বদলে গেছে। ত্রিবু এখন তার জেলার মেজিস্ট্রেট। যার পুরো অবদান আদনানের। প্রতিটা সফল পুরুষের পিছনে একজন নারীর অবদান থাকে। কিন্তু ত্রিবুর সাফল্যের পেছনে রয়েছে আদনানের হাত। আজ তাকে কেউ গায়ের রং নিয়ে কথা শুনায় না, মায়ের চরিত্রহীন অপবাদ দেয় না। বরং সম্মানের সাথে তাকে ম্যাডাম বলে সম্বোধন করে। গ্রামে তার অনেক সম্মান। যারা তাকে নিচু নজরে দেখতো তারা এখন তাকে সমীহা করে চলে। ত্রিবু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে আপোষ করে না। এখন সে একজন প্রতিবাদী মেয়ে।

তার সাথে যারা খারাপ ব্যবহার করেছে তারা কিন্তু ভালো নেই।বছরখানিক আগে হিমেলের একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে। সেই এক্সিডেন্টে হিমেলের শরীর পুরে গেছে। সাথে এক হাত, পা প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পরে আছে,কন্ঠনালিতে সমস্যা হওয়ার কারণে কথা বলতে পারে না,মুখ বেঁকে গেছে ঠিকমতো খেতে পারে না। সে এখন পুরো অচল। তার বাবা খালেক ব্যাপারি ছেলের চিন্তায় চিন্তায় দুইবার স্ট্রোক করেছে। এতো সম্পদ জমিয়ে কি লাভ হলো তার? যেই ছেলের জন্য সে এতোকিছু করেছে সেই ছেলে পুরো অচল। কথা বলতে পারে না, হাঁটতে পারে না। বেঁচে থাকা না থাকা সমান। ছেলের চিকিৎসার খরচ দিতে দিতে সর্বস্ব হারিয়ে কাঙাল জীবন-যাপন করছে। হামিদা বেগমও ভালো নেই। অসাবধানতা বশত কলার খোসায় পা পিছলে পরে কোমড়ের হাড্ডি ভেঙে গেছে। হুইল চেয়ারে চলাচল করতে হয়। ছেলের বউরা ঠিকমতো খেতে দেয় না, যত্ন নেয় না।যেই ব্রিটিশ মহিলার ভয়ে গ্রামের সবাই কাপতো, তাকে এখন ঘরের এক কোণায় পরে মৃত্যুর প্রহর গুণতে হয়। ভালো থাকতে তো ছেলের বউদের কম জ্বালায়নি। তার উসুল বউরা তুলছে।

শ্রাবণ, মারিয়া ভালো আছে। তাদের একটা মেয়ে হয়েছে। সুখের সংসার তাদের। ত্রিবু, আদনানের বিয়ে হয়েছে প্রায় তিন বছর হলো। ত্রিবু এখন চার মাসের প্রেগন্যান্ট।আদনান একটা মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিতে বড় পোস্টে চাকরি করে।আদিবার বিয়ে দিয়েছে ভালো জায়গায়। আদনানের বাবা-মা, আদনানকে নিয়ে ত্রিবুর একটা ছোট সংসার। ত্রিবুর দাদী মারা গেছে এক বছর আগে।দাদী মারা যাওয়ার পর ত্রিবু অনেক ভেঙে পরেছিলো। আদনান ছায়ার মতো পাশে থেকে তার সবটা দিয়ে ত্রিবুকে সামলিয়েছে।

আফিসের কাজ শেষ করে বাইরে আসতেই ঝুপঝাপ করে বৃষ্টি নেমে গেলো। আজও হঠাৎ বৃষ্টি! শরৎকালে এমন বৃষ্টি অস্বাভাবিক কিছু নয়। বাংলাদেশে এখন সব ঋতুতে কম-বেশি বৃষ্টির দেখা মিলে। ত্রিবুকে অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এক কর্মচারী এগিয়ে এসে বললো,

— ম্যাডাম, আমি পৌঁছে দিবো?

— না লাগবে না। আমার স্বামী আসবে।

— আচ্ছা, সাবধানে যাবেন।

— জ্বি নিশ্চয়ই।

ত্রিবু সামনের এক বেঞ্চে বসে পরলো। স্মৃতির পটে ভেসে উঠলো কয়েক বছর আগের স্মৃতি। যেদিন আদনানের সাথে প্রথম দেখা হয়েছিলো। তারপর একে একে কত দিন,মাস, বছর কেটে গেলো। তবুও মনে হচ্ছে এই তো সেদিনের ঘটনা। বৃষ্টির বেগ কমে আসছে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পরছে।ত্রিবু কয়েকবার আদনানের নাম্বারে কল দিলো। কিন্তু আদনান ধরলো না। রিং হয়ে আপনাআপনি কেটে গেলো।ত্রিবু আর কল দিলো না। মোবাইলটা সাইড ব্যাগে রেখে গুটি গুটি পায়ে বাইরে এসে খুব সাবধানে দাঁড়ালো। চোখ বন্ধ করে আকাশের দিকে মুখ তুলে দুই হাত মেলে দাঁড়ালো। কিছু সময় পর হঠাৎ খেয়াল হলো তার শরীরে বৃষ্টির পানি পরছে না। চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো বছর খানিক আগের মতো লাল টুকটুকে ছাতা নিয়ে প্রিয় মানুষটা দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা ধমকের সুরে বললো,

— তুমি বদলালে না ত্রিবু। এই অবস্থায় তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে ভিজছো? পরে গেলে কি হবে বলো তো?একবার কি তা ভেবে দেখেছো?

ত্রিবু মুচকি হাসলো। তারপর এগিয়ে এসে আদনানের গলা দুই হাতে জড়িয়ে ধরে বললো,

— আমার কিচ্ছু হবে না। তুমি আছো তো।

— আরে করছোটা কি? কেউ দেখলে কি বলবে?

— কেউ দেখলে তো বলবে। তুমি, আমি ছাড়া এখানে কেউ নেই।

— বাসায় চলো। ঠান্ডা বাতাস বইছে। তোমার ঠান্ডা লাগবে। এখন অন্ততপক্ষে একটু বাচ্চামো কম করো।দুদিন পর বাচ্চার মা হবে। কিন্তু এখনও নিজেই বাচ্চা। তুমি অসুস্থ হলে তো আমাদের অনাগত অতিথিও অসুস্থ হয়ে পরবে। ওর কথাও তো তোমার ভাবতে হবে।

ত্রিবু গলার থেকে হাত সরালো না। আরেকটু শক্ত করে ধরে কপালে কপাল ঠেকালো। বৃষ্টির দিন হওয়ায় আশেপাশে মানুষ নেই। একেবারে জনশূন্য বলা যায়।সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ত্রিবু এমন করছে। আদনানের নাকের ডগায় হালকা করে ঘষা দিয়ে বললো,

— তোমার মনে আছে আদনান,আমাদের দেখাটা কিন্তু এই হঠাৎ বৃষ্টিতে হয়েছিল।

— তা কি আমি ভুলতে পারি বলো? সেদিন তোমার সাথে দেখা না হলে আমি এতো গুণবতী একটা বউ পেতাম না। আল্লাহর কাছে লাখো কোটি কোটি শুকরিয়া তার জন্য।

— আমি তো সুন্দরী নই তবু কেনো এতো ভালোবাসো?

— আমার চোখে তুমি বিশ্ব সুন্দরী। বিশ্বাস না হলে আমার চোখ দুটো তুমি লাগিয়ে দেখো।

ত্রিবু খিলখিল করে হেসে উঠলো। এই মানুষটার প্রেমে সে বারবার পরে। আদনান অনেক কেয়ারিং একজন ছেলে। ত্রিবুর যথেষ্ট যত্ন নেয়। এখন তো প্রেগন্যান্ট। তাই যত্ন আরো বেড়েছে। আদনান তাড়া দিয়ে বললো,

— এই যে মহাশয়া বাসায় চলেন। এতখন বাইরে থাকলে আমাদের বেবী অসুস্থ হয়ে যাবে।

ত্রিবু গাল ফুলিয়ে অভিমানী গলায় বললো,
— ইস, বাচ্চার জন্য দরদ দেখানো হচ্ছে। আর আমি বুঝি বানের জলে ভেসে আসছি।

আদনান মুচকি হেসে ত্রিবুকে এক হাতে জড়িয়ে নিলো। তারপর কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁয়ে নিচুস্বরে বললো,

— তুমি আমার ফুসফুস। আর সে হবে আমার নিঃশ্বাস। ফুসফুস ছাড়া কি নিঃশ্বাস নেওয়া যায় বলো?

ত্রিবুর মুখটা খুশিতে চকচক করে উঠলো। সে আসলেই ভাগ্যবতী, তাইতো আদনানকে পেয়েছে। যে তার সবটুকু দিয়ে ত্রিবুকে ভালোবাসে।ত্রিবু আদনানের এক বাহু জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রাখলো।নিচের দিকে তাকিয়ে সাবধানে পা ফেলে ধীর গতিতে হাঁটতে লাগলো।আদনান তার প্রাণপ্রিয় স্ত্রীকে এক হাতে জড়িয়ে আরেক হাতে ছাতা ধরে বাড়ির পথে রওনা দিলো। লাল টুকটুকে ছাতার নিচে একজোড়া সুখী দম্পতি। দেখতে কি যে সুন্দর লাগছে! তা বলার মতো নয়। মনে হচ্ছে, পৃথিবীর সব সুখ এসে তাদের কাছে ধরা দিয়েছে। এই রোমান্টিক ওয়েদারে আরজিৎ সিং-এর “মোহাব্বত বার্সা দে না তু, সাবান আয়া।” গানটা হলে মন্দ হতো না।

পরিশিষ্টঃ নিজেকে নিয়ে কখনো হীনমন্যতায় ভুগবেন না। আপনার গায়ের রং, চেহারার গঠন, এমনকি কোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আপনি বানাননি। এটা আল্লাহর প্রদত্ত। আল্লাহর সৃষ্টি কখনও অসুন্দর হতে পারে না। তাই যা আছে তা নিয়ে খুশি থাকুন। মানুষের কথা এড়িয়ে যেতে শিখুন। ভালো কাজে উৎসাহ দেওয়ার মানুষ খুব কমই পাবেন। কিন্তু উৎসাহ দমনের মানুষের আকাল নেই। কঠিন সময়ে একাই সংগ্রাম করতে হয়।সবার জীবনে আদনান কিংবা শ্রাবণ আসে না।

জীবন এক অদ্ভুত গোলকধাঁধা। যারা এই ধাঁধা মিলিয়ে নিতে পারে তাদের জন্য জীবন হয়ে যায় সহজ। খুব কম মানুষ এই ধাঁধা মেলাতে পারে। আর বেশিরভাগ মানুষ ধাঁধায় পেচিয়ে যায়, তাদের জন্য জীবনটা মোটেও সহজ হয় না। সোনার চামচ মুখে নিয়ে তো সবাই জন্মগ্রহণ করে না। তবে পরিশ্রম করলেই সফলতা মিলবে। যদি জীবনে হেরেও যান তাহলে ভেঙে পরেন না। নিজেকে শক্ত করে এগিয়ে যান। জিত একদিন হবেই। আপনি হেরে গেলে হাতেগোনা কয়েকজন দেখবে, কিন্তু জিতে গেলে পুরো বিশ্ব দেখবে। আর আত্মবিশ্বাসী মানুষরা কখনো হারে না।

~~~~~~~~~~~~#সমাপ্ত~~~~~~~~~~~

2 মন্তব্য

  1. আপনার কথা গুলো ভালো লেগেছে। আজকাল মানুষ কালো মানুষকে মানুষ মনেই করে না। আল্লাহ তো সবাইকে পারফেক্ট করে নি।কয়কন বুঝে যে কালো র’ মানুষ তাদেরও ইচ্ছা অনিচ্ছা আছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে