স্বামীর_বিয়ে ৩

0
1843

#স্বামীর_বিয়ে ৩
#সাখেরীন

জামার হাত টান দিয়ে ছিড়ে ফেলেছে সেখানে স্লাইড করছে আর চুমু দিচ্ছে রুহীনি দু হাত দিয়ে অভ্রকে মারছে কিন্তু পেরে উঠছে না অভ্রের শক্তির কাছে মাতবরের ছেলে জীম যাচ্ছিলো শুটিং দেখতে গঙ্গরানি আওয়াজ পেয়ে রুহীনিদের জানালার ফুটো দিয়ে তাকিয়ে যা দেখলো তার পায়ের নিচে মাটির সরে গেলো জীম (সবে মাএ ১০ ম শ্রেনীতে উঠে) জীম বুঝতে পারলো তার একা ধারা এসব ঠিক করতে পারবেনা তাই গ্রামের সবাইকে গিয়ে বলে দিলো এসব শুনার পর মতবর আদেশ দিলো শুটিং সব লোকদের ধরে বেধেঁ রাখতে গ্রামের লোকেরা মশাল নিয়ে রুহীনির বাড়ির দিকে রওনা দিলো। এতোক্ষনে অভ্র রুহীনির অর্ধেক জামা ছিড়ে ফেলেছে রুহীনি আর সহ্য না করতে পেরে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে মতবরের আদেশে দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ডুকলো কিছু লোক এসব দেখে সবাই অভ্রকে টেনে উঠানে ফেলে বাশঁ লাঠি পা দিয়ে মোট কথা যে যা পারছে দিয়ে মারছে রুহীনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলায় এসব কিছুই টের পায়নি রুহীনি শরীরে চাদর দিয়ে ডাকা হয়েছে আর ডাক্তার ডাকা হয়েছে রুহীনির মা পিলারের সাথে মিশে বসে আছে চুপ করে কোন কথা বলছে না নির্বাক হয়ে গেছে সবাই শান্তা দিচ্ছে রুহীনির বাবা নিজের শরীরে আগুন লাগাতে চেয়েছিলেন রুহীনির এই অবস্থা দেখে কিন্তু পারেনি এখন রুহীনি পাশে বসে আছে ডাক্তার একটা মলম আর কিছু ঔষধ দিলো আর বললো মানসিকভাবে চাপ দিতে না আর এসব কথা ওর সামনে না বলতে। এলাকার মহিলারা রুহীনির গায়ে মলম লাগিয়ে দেই ডাক্তার থাকাকালিন রুহীনির জ্ঞান ফিরে আসে রুহীনি সবাইকে ঈশারা দিচ্ছে আর বলছে আমার কোন দোষ নেই রুহীনি পাগলের মতো করছে সবাই মিলে সামলিয়ে রাখছে অভ্রকে মারার পর শুটিং এর সবলোক নিহাল ও অভ্রকেও বেধঁে রেখেছে তাদের থেকে ফোন ও নেওয়া হয়ে গেছে আজকে রাত তাই বিচার হবে না কালকে ১০ টায় বিচারের সমাবেশ বসবে অভ্রের কোন জ্ঞান নেই তারপর বেধঁে রেখেছে পানি পর্যন্ত দেয়নি….. রুহীনি পাগলামো করেই যাচ্ছে রুহীনিকে অনেক অভাগা বলছে গ্রামে পুরো ছি ছি পরে গেছে রুহীনি বারে বারে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে তাই পারার কাকিমারা ঘুমের ঔষধ খাইয়ে ঘুম পারিয়ে রেখে রুহীনির মাকে ভরসা দিচ্ছে মতবর রুহীনির বাবাকে ভরসা দিচ্ছে পর দিন সকাল রুহীনির বাসা গমগম করছে মানুষে রাত না শেষ হতেই তিন- চার গ্রাম এসব ছড়িয়ে পরেছে মানুষ ঝাকঁে ঝাকেঁ আসছে রুহীনিকে দেখতে আর বিচার সমাবেশের অংশ গ্রহন করতে বিদ্যালয়ে শিক্ষকরাও এসে অংশ গ্রহন করেছে শুধু পারেনি পুলিশরাও এসেছে ওইদিকে অভ্রের মা অভ্র ও নিহালে ফোন কলে কল দিয়েই যাচ্ছে অস্থির হয়ে পরছে বারে বারে পানি খাচ্ছে অভ্রের বাবা: কি গো এতো পানি খাচ্ছো কেনো?? শরীর খারাপ নাকি?? অভ্রের মা:- না কিন্তু মন বলছে অভ্র ভালো নেই ফোন টাও লাগছে না অভ্রের বাবা:-( হেসে হেসে) অভ্র যখনি কোন শুট করতে যায় আর তুমি এমন করা শুরু বলি কি ছেলে দিকে এতো খেয়াল রাখতে হবেনা বড় হয়ে গেছে আর আমার দিকেও একটু তাকাও অভ্রের মা:( ফিক করে হেসে দিলেন আর অভ্রের বাবার বুকে মাথা রাখলেন) সকাল দশটা বাজে সমাবেশ শুরু হবে এখনই পুলিশ ও গ্রামের মতবর আরো কিছু বিশিষ্ট লোক বসে আছে আর সবাই দাড়িয়ে আছে রুহীনির মা বাবা ও ভাই কে সাইডে ও রুহীনিকে চেয়ারে বসিয়ে রেখেছে রুহীনি চুপ করে বসে আছে পাথরের মতো জমে আছে প্রায় অভ্রের রাতেই জ্ঞান ফিরেছিলো অভ্র বার বার বলেছে তাকে ছেড়ে দিতে তার বাবা শুনলে সবাইকে মেরে পুতে রাখবে এসব বললে গ্রামের ছেলেরা আরো লাঠি দিয়ে বারি দেয় নিহালকেও অনেক মারা হয়েছে অভ্র ও বাকিদের হাত বেধে দাড় করিয়ে বিচার সমাবেশ শুরু করেছে বিচারের এক পর্যায়ে রুহীনির মা মুখ ফুটে কেদঁে বলেন : কত কষ্ট করে এই অভাগার মেয়ের বিয়ে ঠিক করছিলা এখন এই কান্ডের পর কে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে?? আমার মেয়েটা মরে যাবে কি?? মতবর: (এই কথা শুনার পর কিছুক্ষন চুপ করে রইলেন
তারপর বললেন)যার জন্য এই গ্রামের মেয়ের এত বড়ো সর্বনাশ হয়েছে সেই বিয়ে করবে সবাই এটা শুনে হয় হয় হয় করতে লাগলো সবাই চিল্লিয়ে বললো এটাই ঠিক হবে অভ্র চিল্লিয়ে বললো সে বিয়ে করবে না এটা শুনে আবারও গ্রামের ছেলেরা বারি দিলো মতবর:( অভ্রের চুল টেনে ধরে বললো) মেরে এখানেই পুতে রাখবো অভ্র: ( কিছু বলার আগেই) নিহাল:- বললো অভ্র বিয়ে করবে অভ্র নিহালের দিকে রেগিয়ে তাকালো নিহাল: চোখ ঈশারা দিলো অভ্র: রাগে ফুসতে লাগলো মতবর অভ্রের সামনে চলে যাওয়া পর নিহাল: শুন এখান থেকে ছুটা আর কেন উপায় নেই তাই তুই বিয়ে করেনে তারপর ওকে আমাদের সাথে নিয়ে কোন এক বারে দিয়ে দিবো অভ্র: (শয়তানি হাসি দিলো)এন্ড সবাইকে বললো বিয়ে করতে রাজি এটা শুনে সবাই খুশি। রুহীনির বাবা আর মা অন্ধকারের মধ্যে আলো খুজে পেলো তারাও খুশি হলো তাদের মেয়ের জীবনটা ঠিক হতে চলেছে মতবর কিছু লোক দিয়ে কাজীসাবেহ ডাকালেন রুহীনি এবার কাদঁতে লাগলেন অভ্রের প্রতি একরাশ ঘৃনা নিয়ে বিয়েতে কবুল কবুল কবুল বললো বলতে খাতায় লিখলো আর পাশে থাকা মহিলারা জোড়ে জোাড়ে বলল অভ্র তার কু মতলবি রেখে কবুল কবুল তিনবার পড়লো রুহীনি ও অভ্রকে রুহীনিদের বাসানিয়ে যাওয়া হলো আর নিহাল ও শুটিং সবাইকে মলম আরো যা লাগা সব করিয়ে দিলো অভ্রকেও দিয়েছে রুহীনি পাথরের মতো বসে আছে চোখের সামনে সব ভাসছে শুটিং এর সব মানুষ রওনা দিয়ে দিছে কারন ডিরেক্টর এই শুট আর অভ্রকে দিয়ে করাবে না তাই চলে গেছে অভ্র রাগটা চেপে রাখলো ডিক্টেটর ও আরো লোকেদের মুখ অফ করার জন্য অনেক টাকা দেওয়া হবে আর কিছু ফরমালিটি করতে হলো অভ্রকে জোরপূর্বক অভ্রকে রুহীনির পাশে বসিয়ে রাখা হয়েছিলো রুহীনি তো পাথরেরই মতো বসে ছিলো আর অভ্র রাগে তাকায়নি আজকের দিন টা এভাবেই কেটে গেলো কালকে ভোর হতেই গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার জন্য রওনা দিলো রুহীনি খুব করে কাদঁলো রুহীনির বাবা ও মা কাদঁলে রুহীনির বাবা অভ্রের থেকে ক্ষমা চেলো যদিও সব দোষ অভ্রের তারপর মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে ক্ষমা চাইলো আর বললো রুহীনিকে কষ্ট দিতে না রুহীনির মা গাড়ি যে পর্যন্ত তাদের গ্রামের বাহিরে না যায় সে পর্যন্ত গাড়ির পিছে পিছে গেছে কেউ আটকিয়ে রাখতে পারেনি মায়ের মন বলে কথা আর রুহীনির মায়ের বুক খালি খালি লাগছে যতই হোক তার মেয়ে রুহীনিকে এক সময় বকতো আরেক সময় তো ঠিকিই বুকে টেনে নিতো এখন কাকে নিবে রুহীনি কানে শুনতো তাই রুহীনির মা রুহীনির সাথে সব কথা শেয়ার করতো রুহীনিও হাত দিয়ে ঈশারা করে কথা বলতো এখন কার সাথে কথা বলবে এখন যে ঘরটা পুরো ফাকা ফাকা লাগছে…..
#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে